ইলমে মারেফত علم معرفة


ফোরাত নদীর তীরে হযরত হাসান বসরী (রহঃ) দেখতে পেলেন হযরত রাবেয়া বসরী (রহঃ)-কে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বসে আছেন। হযরত হাসান বসরী (রহঃ), যিনি আধ্যাত্মিকতার এক উচ্চ মার্গের সাধক ছিলেন, অলৌকিকভাবে তাঁর জায়নামাজটি নদীর জলের উপর বিছিয়ে দিলেন। হাসিমুখে রাবেয়াকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “আসুন, হে রাবেয়া, এখানে দুই রাকাত নামাজ আদায় করি।”
হযরত রাবেয়া বসরী (রহঃ), যিনি প্রকৃত জ্ঞান ও বিনয়ের প্রতিমূর্তি ছিলেন, শান্তভাবে প্রত্যুত্তর দিলেন, “হে হযরত, যখন আখিরাতের প্রার্থীর সামনে দুনিয়ার বাজার উপস্থাপন করা হয়, তখন এমন কারামত প্রদর্শন করা উচিত যা আপনার সমকক্ষ আর কেউ করতে না পারে।”
এই কথা বলার পরপরই, এক অভাবনীয় দৃশ্যের অবতারণা হলো। হযরত রাবেয়া বসরী (রহঃ) তাঁর জায়নামাজটি হাওয়ায় উড়িয়ে দিলেন, যা মুহূর্তে আকাশের দিকে উড়তে শুরু করলো। তিনি হযরত হাসান বsrী (রহঃ)-কে আহ্বান করে বললেন, “আসুন হযরত, এবার আকাশে ভ্রমণ করি।”
হযরত হাসান বসরী (রহঃ)-কে বিনয়ী রাখতে এবং প্রকৃত আধ্যাত্মিকতার মর্ম বোঝাতে, রাবেয়া বসরী (রহঃ) এরপর বললেন, “হে মাননীয় হযরত! আপনি যা প্রদর্শন করলেন, তা তো একটি মাছ বা হংসও করে থাকে। আর আমি যা দেখালাম, তা তো একটি মাছিও অনায়াসে করতে পারে। মনে রাখবেন, প্রকৃত অলৌকিকতা বা কারামত এই সব তুচ্ছ প্রদর্শনের বহু ঊর্ধ্বে। সত্যিকারের কাজ হলো আত্মশুদ্ধি, আল্লাহর প্রতি অগাধ প্রেম এবং বিনয়।”
এই ঘটনাটি কেবল দুটি অলৌকিক প্রদর্শনীই ছিল না, এটি ছিল আধ্যাত্মিকতার গভীরতার এক অনুপম দৃষ্টান্ত—যেখানে বাহ্যিক শক্তির চেয়ে আত্মিক পরিশুদ্ধি ও খোদাভীতিকেই শ্রেষ্ঠত্বের আসনে বসানো হয়েছে।