মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২
মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

মোঃ আব্দুল কাদের শিক্ষক ও গবেষক

বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও প্রেসিডেন্ট জিয়া

মোঃ আব্দুল কাদের শিক্ষক ও গবেষক প্রকাশিত: রবিবার, ১ জুন, ২০২৫, ৫:১৫ পিএম | 219 বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও প্রেসিডেন্ট জিয়া

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এক অগ্রণী ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়কালে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, একদলীয় শাসন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে স্থবির করে তোলে। এই প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭৫-১৯৮১ সাল পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, তা শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নয়, বরং বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠারও পথপ্রদর্শক ছিল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী পালাবদলের মধ্য দিয়ে দেশ এক রাজনৈতিক সংকটে পড়ে। ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান প্রথম দৃশ্যমান নেতৃত্বে আসেন। সে সময় রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমেদের পর বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম রাষ্ট্রপতি হন এবং জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং একটি মৌলিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন—গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়কালে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংবিধানে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় শাসনব্যবস্থা তথা ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল)’ গঠন করা হয়, যা বহুদলীয় রাজনীতিকে বিলুপ্ত করে দেয়। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রুদ্ধ করা হয়, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হয়, রাজনৈতিক বিরোধিতা নিষিদ্ধ করা হয়। এই শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালের শেষ দিকে একে একে রাজনৈতিক দল গঠনের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। তিনি মনে করতেন, গণতন্ত্রের প্রকৃত ভিত্তি হলো রাজনৈতিক মতের বহুমাত্রিকতা এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন।
১৯৭৭ সালের ৩০ মে অনুষ্ঠিত গণভোটে জিয়াউর রহমান ৮৮.৫৭ শতাংশ ভোটে বিজয়ী হন। এ গণভোট ছিল তার জনপ্রিয়তার একটি জনসমর্থিত প্রমাণ এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্তির একটি মাধ্যম। এ সময় থেকেই তিনি জাতীয় ঐক্য গঠনে মনোনিবেশ করেন।
১৯৭৮ সালের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল রাজনৈতিক দল গঠনের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি। সে বছর জিয়াউর রহমান ঘোষণা দেন, প্রতিটি নাগরিক তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠনের অধিকার এবং শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকার পাবে।
একই বছর ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ সালে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’ গঠিত হয়। এই দলই পরবর্তীতে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়। বিএনপির জন্মের মধ্য দিয়ে দেশে পুনরায় একটি শক্তিশালী বিরোধী দল এবং নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির সূচনা হয়, যার ভিত্তি ছিল জাতীয়তাবাদ, বহুমাত্রিক মতবাদ এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণ।
১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে শুরু করেন। এ নির্বাচনে দেশের ২৯৯টি আসনে ৪২টি রাজনৈতিক দল ও ১৮৭০ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। এই নির্বাচনকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তুলনামূলক স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়। ২৮৭টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং বিএনপি জোট ২০৭টি আসনে জয়লাভ করে। এটি ছিল বহুদলীয় অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যা দেশে গণতান্ত্রিক ধারার পুনর্জাগরণ ঘটায়।
জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও ক্রমশ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। নিষিদ্ধ ঘোষিত বেশ কয়েকটি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা পুনরায় প্রকাশিত হয়। তৎকালীন সময়কার সংস্কারমূলক সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে ‘বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)’-এর ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনা এবং সরকারি প্রচারযন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণহীন করার চেষ্টা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
শুধু রাজনৈতিক পরিসরে নয়, গ্রামীণ উন্নয়ন, শিক্ষা বিস্তার এবং শ্রমিক-কৃষক শ্রেণির ক্ষমতায়নেও জিয়াউর রহমানের অবদান গণতন্ত্রের ভিত্তিকে মজবুত করে। তিনি ‘গ্রাম হবে শহর’ এই কর্মসূচি চালু করেন এবং ১৯৭৭ সালে “স্বাধীন পল্লী সরকার” গঠনের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক বিকাশে ভূমিকা রাখেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, শহীদ জিয়াউর রহমান জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনঃগঠনে কূটনৈতিকভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস তার সরকারের বৈশ্বিক নীতিতে প্রতিফলিত হয়।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর একটি অংশের হাতে শহীদ জিয়াউর রহমান নিহত হন। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একটি যুগের অবসান ঘটে, কিন্তু বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে ভিত্তি তিনি গড়ে দেন তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির স্থায়ী উপাদানে রূপ নেয়।
পরিশেষে বলা যায়, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠায় এক ঐতিহাসিক অবদান রেখেছেন। তার শাসনামলে গৃহীত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও সংস্কারসমূহ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি একদিকে বহুদলীয় রাজনীতির মুক্ত পথ উন্মুক্ত করেন, অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি স্থাপন করেন। গণভোট, দল গঠন, নির্বাচনী ব্যবস্থা পুনরায় চালু, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক চর্চা—এই সবই বহুদলীয় গণতন্ত্রের সূচনার শক্ত ভিত্তি হিসেবে ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

“হংকং থেকে ১২৩ কোটি টাকার চোরাচালান! ন্যাশনাল প্রতারক ইব্রাহিম এখন পলাতক

টঙ্গী প্রতিনিধি প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫, ২:০৪ পিএম
“হংকং থেকে ১২৩ কোটি টাকার চোরাচালান! ন্যাশনাল প্রতারক ইব্রাহিম এখন পলাতক

২০১৫ সালে ইতালি পাঠানোর নামে বাংলাদেশ থেকে ৪২ জনের পাসপোর্ট ও নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয় ইব্রাহিম শেখ নামের এক প্রতারক। প্রতারণার সেই অঙ্ক তখনই দাঁড়িয়েছিল প্রায় দুই কোটি তিন লাখ টাকায়। এরপর থেকেই ইব্রাহিম যেন হয়ে ওঠেন আন্তর্জাতিক চোরাকারবারির ‘প্রতীক’।

পরবর্তীতে ২০১৬ সালে অবৈধ পথে দালালের মাধ্যমে হংকং পাড়ি জমান তিনি। হংকংয়ে পৌঁছেই সেখানে গড়ে তোলেন একাধিক প্রতারণার নেটওয়ার্ক। ইউরোপ পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাৎ, নকল আইফোন ও সোনা বিক্রি, এমনকি বাংলাদেশ থেকে নকল পণ্য পাচার—সবই চলতে থাকে একই ছকের ভেতরে।

স্থানীয় সূত্র বলছে, হংকং-এ অবস্থানকালে ইব্রাহিম একাধিক বিয়ে করেছেন পরিচয় গোপন করে। তার প্রতিটি প্রতারণার পেছনে ছিল সুপরিকল্পিত জালিয়াতি।

সম্প্রতি গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসেছে, হংকং থেকে বাংলাদেশে ফিরেও থেমে থাকেননি এই ‘ন্যাশনাল প্রতারক’। আনুমানিক ১২৩ কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দেশে এনে লুকিয়ে রেখেছেন একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এমনকি মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতারণা, মাদক, চোরাচালান—সবকিছুতে সম্পৃক্ত এই ইব্রাহিম এখন দেশের ভেতরেই অবস্থান করছেন ছদ্মবেশে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে এতদিন ধরেই তার অপকর্ম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হলো? প্রতারিত পরিবারগুলো চাইছেন দ্রুত এই চক্রের মূলহোতা ইব্রাহিমকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হোক।

কাহালুতে ভাসমান অবস্থায় যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

মো:স্বাধীন খান বিশেষ প্রতিনিধি প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫, ২:০১ পিএম
কাহালুতে ভাসমান অবস্থায় যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

বগুড়ার কাহালুতে জমির ড্রেনের পানিতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে কর্নিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের বয়স আনুমানিক ৩০-৩৫ বছর। তাঁর পরিচয় শনাক্তে কাজ করছে পুলিশ বলে জানিয়েছেন কাহালু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিতাই চন্দ্র সরকার।

কুড়িগ্রাম সদরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বেতারাঘাতে ছাত্র অসুস্থ 

রুহুল আমিন, রুকু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫, ১:৫৪ পিএম
কুড়িগ্রাম সদরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বেতারাঘাতে ছাত্র অসুস্থ 

কুড়িগ্রাম সদরের হরিম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকার বেতারাঘাতে এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গত ৪ আগস্ট ২০২৫ ইং দুপুরে বিদ্যালয়ের শ্রেনী কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

জানাযায়, বিদ্যালয়ের ৫ ম শ্রেনীর ক্লাসে হাসিনা খাতুন নামের এক শিক্ষিকা বেতারাঘাত করেন। এ সময় হাতে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হলে রাকিবুল হাসান রাকিবকে বিদ্যালয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাটিয়ে দেয়া হয়। এর পর বাড়িতে হাত ফুলে গিয়ে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হলে তাকে সন্ধ্যায় তার অভিভাবক কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। রাকিব বলেন, হাসিনা আপা বড় বড় তিনটি প্রশ্ন লেখতে বলেন। আমি একটু পড়ে লেখতে চাইলেই বেত দিয়ে আমাকে খুব জোড়ে মারেন।এখন আমার হাতে অনেক ব্যাথা হচ্ছে। রাকিবের বাবা আব্দুস সালাম বলেন, আমার ছেলেকে পড়া-লেখা শিখানোর জন্য স্কুলে দিয়েছি। শিক্ষকের মার খেয়ে হাসপাতালে আসার জন্য নয়। আমি এর বিচার চাই। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম বলেন,ঘটনার সময় আমি স্কুলের বাহিরে ছিলাম। শুনেছি হাসিনা বেত দিয়ে মেরেছে এতেই রাকিব ব্যাথা পায়। হাসিনা বেগম বলেন, আমি তাকে পড়ার জন্য মারিনি,মেরেছি নির্দাশিকা লাঠি দিয়ে দুষ্টুমি করার জন্য। উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলহাজ্ব বুলবুল হোসেন বলেন,আমি আমার অফিসের এক স্টাফ এর নিকট বিষয়টি শুনলাম। প্রধান শিক্ষিকাকে ফোনে পাইনি। কাল ছুটি আছে অফিস খুললেই জেনে ব্যবস্তা নিবো।

error: Content is protected !!