এফ শাহজাহান ২৮ জুলাই ২০২৫
দক্ষিণপন্থী এবং বামপন্থীদের ভবিষ্যত পরিনতি


বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘দক্ষিণপন্থীদের উত্থানে’ বামপন্থীরা এখন বেশ উদ্বিগ্ন। ৫ই আগস্টের পর থেকে দক্ষিণপন্থীদের বিষ্ময়কর উত্থানে বামপন্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ পরিনতি নিয়েও দু:শ্চিনাতায় আছেন।
এমতাবস্থায় সময় এসেছে, আপনি দক্ষিণপন্থী না বামপন্থী সেটা নির্ধারন করার। আপনি বামপন্থীদের দলে নাকি দক্ষিণপন্থীদের দলে, সেটা নির্ধারণ করাও মানবজীবনের একটা জরুরী বিষয়। কেননা,এবিষয়ে মহান আল্লাহ সুবহানুহু ওয়া তা’আলার সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।
আপনি কীভাবে জানবেন যে আপনি দক্ষিণপন্থী না বামপন্থী ?
এবিষয়ে আপনি মহবিশ্বের মহান স্রষ্টা আল্লাহ সুবহানুহু ওয়া তায়ালার কাছেই জানতে চাইতে পারেন। আল্লাহ খুবই স্পষ্টভাবে পবিত্র কুরআনে বলে দিয়েছেন, কারা ডানপন্থী আর কারা বামপন্থী।
আল্লাহ শুধু এটুকু বলেই খান্ত হননি। আল্লাহ সুবহানুহু ওয়া তায়ালা পবিত্র কুরআনে দক্ষিণপন্থী এবং বামপন্থীদের ভবিষ্যৎ পরিনতির কথাও সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন ।
আল্লাহ ডানপন্থী এবং বামপন্থীদের বৈশিষ্ঠ্য উল্লেখ করে তাদের চিহ্নিত করার ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন।
যারা ভালো কাজ করে, আল্লাহর আদেশ নিষেধ পালন করে, তাদেরকেই দক্ষিণপন্থী বা ডানপন্থী বলা হয়েছে। অপরদিকে যারা আল্লাহর আদেশ নিষেধ অমান্য করে, তাদেরকে বামপন্থী বলা হয়েছে।
ডান ও বামপন্থীদের সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কুরআনে সূরা আল ওয়াকিয়ার ৭, ৮ এবং ৯ নং আয়াতে বলেন,“সে সময় তোমরা তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে যাবে। ডান দিকের লোক। ডান দিকের লোকেরা কতই সৌভাগ্যবান,তাদের সৌভাগ্যের কথা আর কতটাই বলা যাবে। বাম দিকের লোক, বাম দিকের লোকরা কত হতভাগা! তাদের দুর্ভাগ্যের পরিণতি আর কতটাই বলা যাবে!
এই আয়াতের তাফসীরে আল্লামা ইবনে কাসীর বলেন, কেয়ামতের দিন সব মানুষ তিন দলে বিভক্ত হয়ে পড়বে। এক দল আরশের ডানপার্শ্বে থাকবে। তারা আদম (আ:) এর ডানপর্শ্বে থেকে পয়দা হয়েছিলেন এবং তাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে দেয়া হবে। তারা সবাই জান্নাতী হবেন।
দ্বিতীয় দল আরশের বামদিকে একত্রিত হবেন। তারা আদম (আ:)এর বামপার্শ্ব থেকে পয়দা হয়েছিলেন। তাদের আমলনামা তাদের বাম হাতে দেয়া হবে। তারা সবাই জাহান্নামী হবেন।
তৃতীয় দল হবে অগ্রবর্তীদের দল। তাঁরা আল্লাহর সামনে বিশেষ স্বাতন্ত্র্য ও নৈকট্যের আসনে থাকবেন। তাঁরা হবেন নবী, রাসূল, সিদ্দীক, শহীদগণ। তাদের সংখ্যা প্রথমোক্ত দলের তুলনায় কম হবে।
কুরআন এবং হাদীস অনুযায়ী বামপন্থীরা আল্লাহর কাছে লাঞ্ছনার শিকার হবেন এবং আল্লাহর দরবারে তাদেরকে বাম দিকে দাঁড় করানো হবে। এরাই দুর্ভাগা বামপন্থী।
আল্লাহ তা’আলা সূরা আল বালাদের ১৭-২০ নং আয়াতে বলেন, “তারপর এই সংগে তাদের মধ্যে শামিল হওয়া যারা ঈমান এনেছে এবং যারা পরস্পরকে সবর ও আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি রহম করার উপদেশ দেয়।এরাই ডানপন্থী।’’
আর যারা আমার আয়াত মানতে অস্বীকার করেছে তারা বামপন্থী। এদের ওপর আগুন ছেয়ে থাকবে।”
পবিত্র কুরআনের উল্লেখিত সূরার আয়াতে ছোট ছোট বাক্যে আল্লাহতায়ালা ডানপন্থীদের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি বৈশিষ্ট্যের কথা বর্ণনা করেছেন। প্রথম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, ডানপন্থীরা পরস্পরকে সবর করার উপদেশ দেবে এবং দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা পরস্পরকে রহম ও পরস্পরের প্রতি স্নেহার্দ্র ব্যবহারের উপদেশ দান করবে।
ডানপন্থী হওয়ার জন্য ঈমানদার হওয়া জরুরী। কারণ, ঈমান ছাড়া কোন কাজ সৎকাজ হিসাবে চিহ্নিত হতে এবং আল্লাহর কাছে গৃহীত হতে পারে না।
কুরঅনের বিভিন্ন স্থানে এর ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে ঈমান সহকারে যে সৎকাজ করা হয় একামত্র সেটিই নেকী ও মুক্তির উপায় হিসেবে গৃহিত হয়।
যেমন : আল্লাহ তা’আলা বলেন: “পুরুষ বা নারী যে ব্যক্তিই সৎকাজ করে সে যদি মু’মিন হয়, তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
এখন আশা করা যায় সহজেই বুঝতে পারছেন বাংলাদেশে কারা দক্ষিণপন্থী আর কারা বামপন্থী। সেইসঙ্গে স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছেন যে, দক্ষিণপন্থীদের ভবিষ্যৎ পরিণতি কী হবে এবং বামপন্থীদের ভবিষ্যৎ পরিণতি কী হবে।
এখন আপনি সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
আপনি ডানপন্থী হবেন নাকি বামপন্থী হবেন।