বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২
বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

খেলোয়াড়দেরও কেন হার্ট অ্যাটাক হয়?

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫, ৮:১৩ এএম | 107 বার পড়া হয়েছে
খেলোয়াড়দেরও কেন হার্ট অ্যাটাক হয়?

হার্ট অ্যাটাক জানান দিয়ে আসে না। অফিসে, যানবাহনে, ঘুমের মধ্যে, বক্তৃতার মঞ্চে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল নয়। এমনকি খেলার মাঠে, খেলাধুলার সময়ও হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হঠাৎ হৃৎপিণ্ড বন্ধ হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারলে বন্ধ হয়ে যাওয়া হৃৎপিণ্ডকে আবার সক্রিয় করা যায়। জীবন বাঁচানোর এই প্রাথমিক চিকিৎসাকে বলে কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন বা সিপিআর।

ক্রিকেটার তামিম ইকবালের ক্ষেত্রে এই জীবন রক্ষাকারী সিপিআর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর তারপর দ্রুততম সময়ে করা এনজিওগ্রাফি ও স্টেন্টিং হার্টের ব্লক দ্রুত খুলে দিয়ে তাঁর জীবন বাঁচিয়েছে। কিন্তু দুই দিন ধরে অনেকেরই মনে প্রশ্ন জেগেছে, যাঁরা নিয়মিত খেলাধুলা করেন, স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করেন, যাঁদের আমরা ‘ফিটেস্ট পারসন’ বলেই জানি, তাঁরা কেন কম বয়সে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন?

তামিম ইকবালের উদাহরণটি তো আছেই; ২০২১ সালের জানুয়ারিতে মৃদু হার্ট অ্যাটাক হয় ভারতীয় ক্রিকেট তারকা সৌরভ গাঙ্গুলীর। একই বছরের এপ্রিলে হার্টে ব্লক ধরা পরে লঙ্কান স্পিন কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরনের।

নিয়মিত ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রমই শেষ কথা নয়
হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে আমরা নিয়মিত ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রমের কথা বলি বটে, কিন্তু এটা হার্ট অ্যাটাকের একটা ঝুঁকি মোকাবিলার উপায় মাত্র। হার্ট অ্যাটাকের আরও অনেক ঝুঁকি আছে। সময়মতো গুরুত্বের সঙ্গে সেসবও নির্ণয় করে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। আমরা যদি ভাবি, নিয়মিত ব্যায়াম, খেলাধুলা তো করিই, সে কারণে আমি যথেষ্ট ফিট; আদতে তা সত্য নয়। জানতে হবে শরীরে হৃদ্‌রোগের অন্য ঝুঁকিগুলোর অবস্থা কেমন।

আজকাল অপেক্ষাকৃত কম বয়সেও যে এমন হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে, বংশগতির প্রভাব এখানে উল্লেখযোগ্য একটা ঝুঁকি। বংশগতির প্রভাব বলতে বোঝায়, কারও মা–বাবা, ভাইবোন বা রক্তের সম্পর্কের ৫৫ বছরের কম বয়সী পুরুষ বা ৬৫ বছরের কম বয়সী নারীদের মধ্যে হৃদ্‌রোগ, হার্ট অ্যাটাক বা হঠাৎ মৃত্যুর ইতিহাস থাকলে তাঁরও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে। আমরা জেনেছি, তামিম ইকবালের বাবাও অল্প বয়সে আকস্মিকভাবে মারা যান। সম্প্রতি তাঁর ভাই নাফিস ইকবালও স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

হার্ট অ্যাটাক ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কি এক জিনিস
হার্ট অ্যাটাক ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এক জিনিস নয়। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলো হঠাৎ হার্টের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া, যা হৃদ্‌যন্ত্রের অন্য কিছু রোগেও হতে পারে। বিশেষ করে অ্যারিদমিয়া বা অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন এ ক্ষেত্রে একটি বড় কারণ। হার্ট অ্যাটাক হলে তাৎক্ষণিকভাবে হৃৎস্পন্দনও অনিয়মিত হতে পারে, যা থেকে মুহূর্তেই হার্টের অ্যারেস্ট হতে পারে। অন্যান্য ঝুঁকির মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে উচ্চমাত্রার খারাপ কোলেস্টেরল ও স্থূলতা তো আছেই; ধূমপান, মদ্যপান, বিভিন্ন মাদক সেবন, অত্যধিক মানসিক চাপ, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। যত দিন যাচ্ছে, হার্ট অ্যাটাকের নতুন নতুন ঝুঁকি খোঁজার গবেষণা চলছে। রক্তের লাইপোপ্রোটিন ও বায়ুদূষণের কথা এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা যেতে পারে। সুতরাং শুধু খেলাধুলা, ব্যায়াম, পরিশ্রম করলেই যে কেউ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে মুক্ত বা শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ ফিট থাকবেন, এ কথা হলফ করে বলা যাবে না।

খেলাধুলার সময় কেন হয়
হার্ট অ্যাটাকে হার্টের পেশিতে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। রক্তনালির ভেতরের দেয়ালে দীর্ঘদিন ধরে চর্বি জমতে জমতে এমনটা হয়। যার পরিণতিতে একসময় হয় হার্ট অ্যাটাক। খুব ভারী কাজ, দৌড় কিংবা খেলাধুলার সময় হার্টকে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি শক্তি নিয়ে কাজ করতে হয়। এ জন্য আগে থেকে বা নিয়মিত হার্টের ফিটনেস পরীক্ষা করা না থাকলে খেলাধুলাকালীন হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এ অবস্থায় অনেক সময় হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিক দ্রুত বা অনিয়মিত হতে পারে। কোনো কিছু বোঝার আগেই হার্ট অ্যাটাক থেকে এভাবে হার্টের অ্যারেস্ট বা অজ্ঞান হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।

হঠাৎ অজ্ঞান হলে: হৃদ্‌রোগে হঠাৎ কেউ অজ্ঞান হলে ওই মুহূর্তে যাঁরা কাছে আছেন, তাঁদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। রোগীর সাড়াশব্দ না পাওয়া, নাড়ির স্পন্দন না পাওয়া, শ্বাস–প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাগুলো হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে হার্টের অ্যারেস্ট হওয়ার লক্ষণ। এমন অবস্থায় হার্টকে সবার আগে সচল করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে সিপিআর দিতে হবে। তিনটি ছন্দোবদ্ধ কাজ হলো সিপিআর। কাজ তিনটি হলো জোরে জোরে বুকের মাঝখানে চাপ দেওয়া, শ্বাসনালি খোলা রাখা এবং মুখে মুখ লাগিয়ে অথবা মাস্কের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর আক্রান্ত ব্যক্তিকে শ্বাস দেওয়া। আক্রান্ত ব্যক্তিকে শক্ত কিছুর ওপর চিত করে শোয়াতে হবে। হাঁটু গেড়ে বসে এক হাতের ওপর আরেক হাতের তালু রেখে দুই হাত দিয়ে বুকের মাঝখানে প্রতি মিনিটে ১০০ বারের মতো চাপ দিতে হবে। প্রতি ৩০ বার চাপ দেওয়ার পর দুইবার আক্রান্ত ব্যক্তির মুখে নিজের মুখ লাগিয়ে শ্বাস দিতে হবে। এক সেকেন্ডে দুইবার শ্বাস দিতে হবে। এ রকম ছন্দোবদ্ধ বুকে চাপ এবং শ্বাস দেওয়ার কাজ টানা দুই মিনিট করার পর নাড়ির গতি এবং শ্বাস–প্রশ্বাস আবার পরীক্ষা করে দেখতে হবে। শ্বাস–প্রশ্বাস ও নাড়ির গতি ফিরে না আসা পর্যন্ত কাজটি করে যেতে হবে। দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে সিপিআর দেওয়া অবস্থায়ই হাসপাতালে নিতে হবে।

হঠাৎ বুকে ব্যথায়: হঠাৎ বুকের মাঝখানে ব্যথা, যা কোনোভাবেই যাচ্ছে না; সঙ্গে শরীরে ঘাম, বমি বা বমির ভাব, বুক ধড়ফড়, শ্বাসকষ্ট হওয়া হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ। এ অবস্থায় দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যেতে হবে। হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় সময়ের হিসাব করা হয় মিনিটের সঙ্গে। রোগী হাসপাতালে পৌঁছালে ইসিজি, টপ্রোনিন আইসহ দু–একটি জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে হার্ট অ্যাটাক নিশ্চিত হওয়া যায় এবং দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়। হার্ট অ্যাটাকে বুকে ব্যথা শুরুর প্রথম ১২ ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে এনজিওগ্রাম করে স্টেন্টিং বা রিং লাগিয়ে চিকিৎসা করতে পারলে রোগীর জন্য তা সবচেয়ে ফলপ্রসূ হয়। বিশ্বব্যাপী এটাই স্বীকৃত এবং আদর্শ চিকিৎসাপদ্ধতি। তবে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসার সুবিধা সব হাসপাতালে একরকম নয়। সুতরাং রোগীর অবস্থাভেদে এবং হাসপাতালের সক্ষমতা অনুযায়ী রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কখনো হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে উচ্চমানের হাসপাতালে পাঠানো হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রোগীকে সুযোগ–সুবিধাসংবলিত হাসপাতালে নেওয়া গেলে, জীবনরক্ষাকারী ধমনির জমাটবাঁধা রক্ত তরল করার ওষুধ ব্যবহার করেও চিকিৎসা করা যায়।

সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ: যাঁরা অ্যাথলেট, খেলোয়াড় কিংবা ব্যায়ামবিদ, তাঁদের অধিকতর সচেতন হতে হবে। নিজের হার্ট খেলাধুলা বা অন্য কোনো ভারী পরিশ্রমের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর মতো যথেষ্ট উপযুক্ত কি না, তা কার্ডিওপালমোনারি এক্সারসাইজ টেস্ট করে দেখতে হবে। প্রয়োজনে একজন হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে নিয়মিত রুটিন করে হার্টের ফিটনেস টেস্ট (ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি এবং এক্সারসাইজ টলারেন্স টেস্ট বা ট্রেড মিল টেস্ট) করে দেখতে হবে। ৩০ বছর বয়সের পর প্রতিবছর একবার এটা করা উচিত। অনেক সময় দীর্ঘদিন ভারী কাজ, পরিশ্রম বা খেলাধুলা করা ব্যক্তি যখন এসব বন্ধ করে দেন, তখন তাঁর ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মুটিয়ে যাওয়া এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এসবও বছর বছর চেক করে দেখতে হবে।

ডা. শরদিন্দু শেখর রায়, সহকারী অধ্যাপক, হৃদ্‌রোগ বিভাগ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা

কক্সবাজার থেকে : কামরুন তানিয়া

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের বর্ষপূর্তিতে উখিয়া উপজেলা বিএনপির গণমিছিল পরিণত হয় জনসমুদ্রে

কক্সবাজার থেকে : কামরুন তানিয়া প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৩৪ এএম
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের বর্ষপূর্তিতে উখিয়া উপজেলা বিএনপির গণমিছিল পরিণত হয় জনসমুদ্রে

৫ ই আগস্টকে কেন্দ্র করে “” গণ অভ্যুত্থানের”” বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কক্সবাজার জেলার উখিয়ায় বিএনপির গণমিছিল এবং জন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত মিছিলে লাখো মানুষের তথা বিএনপির অঙ্গ,সংগঠনের লোক জমায়েত হয়। উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে উখিয়া স্টেশন চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির আসনে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী।
তিনি বলেন, “গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে,চলমান থাকবে ইনশাআল্লাহ। জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির লড়াই শেষ হয়নি। এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে জানান। পাশাপাশি তিনি উখিয়া টেকনাফের মানুষের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানান।তিনি আরও বলেন যে,
তিনি উখিয়াকে পৌরসভা হিসেবে আগামীতে দেখতে চান।তিনি পৌরসভার ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “উখিয়াকে একটি পূর্ণাঙ্গ পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা হবে ইনশাআল্লাহ। সাবেক হুইপ আরও বলেন যে,দেশের কল্যাণে বিএনপির পাশে থাকার জন্য আমি উখিয়াবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি।সেই সাথে তিনি তুলে ধরেন বিগত আমলে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচারিত মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “ফেসবুকে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এসব মিথ্যাচারে কান না দিয়ে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিন। সত্যের পথে থাকুন, আন্দোলনের পথে থাকুন।অদ্য
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আরও উখিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব সোলতান মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থান আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি মাইলফলক নজির সৃষ্টি করেছে।সেই দিনের চেতনাকে সামনে রেখেই আমাদের বর্তমান আন্দোলনকে সফল করতে হবে।এ সময় বক্তারা ৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি গভীর শোক, শ্রদ্ধা জানিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ হাজারো জনতা। সমাবেশর আগে বর্ণাঢ্য গণমিছিল রাজা পালং ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার সামনে থেকে শুরু হয়ে উখিয়া স্টেশনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
শৃঙ্খলাবদ্ধ এ মিছিলে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং দলীয় শ্লোগানে মুখরিত ছিল। সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে উখিয়াজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল।উখিয়ার পরিবেশ পরিস্থিতি খুবই টানটান এবং সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই সমাবেশ সমাপ্তি ঘোষণা করেন আছরের আজানের একটু আগে।

তাড়াশে ফসল বাঁচাতে রাস্তা কেটে দিল কৃষক

উজ্জ্বল বাংলাদেশ প্রতিবেদকঃ প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:১৫ এএম
তাড়াশে ফসল বাঁচাতে রাস্তা কেটে দিল কৃষক

গত কয়েকদিনের টানা প্রবল বর্ষণে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কাটাগাড়ী আঞ্চলিক সড়কে মহিলা কলেজ সংলগ্ন যাতায়াতের সড়ক কেটে দিয়েছে কৃষকগণ। প্রায় ৩০- ৪০ গ্রামের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা প্রায় ২০০ হেক্টর আবাদি জমি তলিয়ে গেছে এতে চরম বিপাকে পড়েন কৃষক। রোপা আমন ধান যেন নষ্ট না হয় সেজন্য কোদাল সাবল দিয়ে রাস্তা কেটে আটকে থাকা ঢলের পানি বের করার ব্যবস্থা করলেন কৃষকগণ। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের এমন বেহাল দশা মেনে নিতে পারছেন না সাধারণ মানুষ, কাটাগাড়ী, আড়ংগাইল, কাস্তা, সেরাজপুর, গুরমা সহ প্রায় ২০-৩০ গ্রামের মানুষ সহ মহিলা কলেজ জে আই টেকনিক্যাল স্কুল যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই রাস্তাটি। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো যাত্রীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ দীর্ঘদিন যাবত এখানে এই ব্রিজটি র কাজ শেষ হচ্ছে না ফলে মাঝে মাঝেই যানবাহন উল্টে আহত হন মানুষ। চলনবিল উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক আব্দুল আজিজ বলেন এই ব্রিজ নিয়ে অনেক লেখা লেখি হয়েছে ঠিকাদার ও কতৃপক্ষের গাফিলতিতে আমাদের মত সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি। এটার দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত। স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন বলেন রাস্তার পাশেই বমার বাড়ি এখানে খুব তারাতাড়ি বিকল্প সড়কের ব্যাবস্থা করার জন্য কতৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি তানাহলে যে বাঁশের ব্রিজ টি করা হয়েছে মানুষ পড়ে স্রোতে তলিয়ে মারা যাওয়ায় ঘটনা ঘটতে পারে। মাহবুবুল হক মিনু বলেন স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী রা কিভাবে যাতায়াত করবেন এই এলাকার কেউ অসুস্থ হলে কিভাবে হাসপাতালে নিবে দ্রুত এর একটা সমাধান হওয়া উচিত। জনগুরুত্বপূ্র্ণ ভুক্তভোগীরা দ্রুত উভয় সড়ক সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

এলজিইডি নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প ব্রিজ নির্মাণের কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বাঁধের ওপর দিয়ে যান চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তার তেমন ব্যাবস্থা নেই, পানি যাওয়া-আসার সুযোগও রাখা হয়নি। এতে বাঁধের পূর্বদিকের অংশের ফসলি মাঠে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিজটির কাজ অনেক আগেই কাজ শেষ হবার কথা ছিল স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ পেলেও এলজিইডি বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেয়ায় আজ লাখ লাখ মানুষের এই অসুবিধা।

এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

✍ শোয়েব হোসেন

কালীগঞ্জে জমি দখলের ভয়ংকর চক্র সক্রিয়

✍ শোয়েব হোসেন প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
কালীগঞ্জে জমি দখলের ভয়ংকর চক্র সক্রিয়

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার চুয়ারিখোলা ও দরিপাড়া এলাকা বর্তমানে একদল দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর নিয়ন্ত্রণে। দিনের আলোতেই ঘটে চলেছে চুরি, ছিনতাই, হামলা ও মাদক ব্যবসার মতো ভয়ংকর অপরাধ। দীর্ঘদিন ধরে এইসব অপকর্মে লিপ্ত একটি চক্র প্রশাসনের নাকের ডগায় থেকে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এই চক্রের বিরুদ্ধে বারবার প্রতিবাদ জানিয়ে আসা স্থানীয় ব্যবসায়ী মামুন মোল্লা ও তাঁর পরিবার সম্প্রতি প্রাণঘাতী হামলার শিকার হন। মামুনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে এলেম হোসেন, সৌরভ হোসেন, জামান মিয়া, বাবুলসহ আরও কয়েকজন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী মামুনের বাড়িতে হামলা চালায়। তার বৃদ্ধ পিতাকে মারধর করে, বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং মামুনসহ তিনজনকে পাইপ ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

আহত মামুন বর্তমানে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, সন্ত্রাসীরা হামলার সময় ১০ আনার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং চিকিৎসা ব্যয়ে মামুনের পরিবার ইতোমধ্যে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই অপরাধীচক্র ৫–৭ বছর ধরে তেল চুরি, জমি দখল, মাদক পাচার, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে লিপ্ত। বারবার অভিযুক্ত হয়েও তারা জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় একই অপরাধে যুক্ত হয় এবং রাজনৈতিক পরিচয় পাল্টে প্রশাসনের একাংশের প্রশ্রয়ে কার্যত ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে।

প্রতিবেশীরা জানান, এলাকায় এমন অবস্থা যে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। মামুন মোল্লা হচ্ছেন ব্যতিক্রম – যিনি চরম ঝুঁকি নিয়ে বারবার প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছেন। তার এই অবস্থার জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের নিরবতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

এছাড়া “হিউম্যান এইড এন্ড ট্রাস্ট ইন্টারন্যাশনাল” এর অনুসন্ধানে উঠে আসে, এই সন্ত্রাসীদের পেছনে প্রবাসী অর্থদাতা ও রাজনৈতিক শক্তির হাত রয়েছে। চুয়ারিখোলা এলাকার একটি পুরোনো টিনের ঘর ঘিরে রয়েছে বহু রহস্য। জনশ্রুতি অনুযায়ী, এর মালিক সৌদি প্রবাসী সাইফুল নামে এক ব্যক্তি, যিনি মাসে ৪০ হাজার টাকায় ওই ঘর ভাড়া দিয়ে সন্ত্রাসীদের সহায়তা করছেন।

স্থানীয়রা আতঙ্কিত। একজন বলেন, “আমাদের সন্তানরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়। প্রশাসন সব জেনেও নীরব কেন?”

সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো। এখন প্রশ্ন একটাই—এই অন্ধকার থেকে মুক্তি পাবে তো কালীগঞ্জ?

অনুসন্ধান চলমান…

error: Content is protected !!