বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২
বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

কলমে: শেফালী সাথী

মোবাইল আসক্তি সন্তানের সাথে বাবা-মায়ের দূরত্ব বাড়ায়

কলমে: শেফালী সাথী প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১০:৪৫ এএম | 36 বার পড়া হয়েছে
মোবাইল আসক্তি সন্তানের সাথে বাবা-মায়ের দূরত্ব বাড়ায়

ভয়ংকর এক প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে। যাদের ভিতরে সভ্যতা, ভদ্রতা,লজ্জা, বিনয় কিংবা মনুষ্যত্ব কিছুই নেই।
আছে ব্যক্তি স্বার্থের নির্মম এক পেশে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের বেড়াজাল।
বলছি বর্তমান সময়ের সন্তানদের কথা। প্রতিনিয়ত স্ট্রাগেল আর প্রতিযোগিতার বাজারে অভিভাবকরা সন্তান লালন পালনে জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে যাচ্ছেন।
তাদের সন্তান যেন উজ্জ্বল ও নিরাপদ একটা ভবিষ্যৎ জীবন পায়।
প্রতিটি স্কুল কলেজ পড়ুয়া সন্তানদের হাতে স্মার্টফোন ইন্টারনেট ।
যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে তৈরি হয়েছে ছোট পরিবার ।
প্রতিনিয়ত ভালো থাকার দৌড়ে মা-বাবার ব্যস্ততা ;সুযোগ তৈরি হচ্ছে একা থাকার, মোবাইলে নেটওয়ার্ক তৈরি, চ্যাটিং ,ভিডিও চ্যাটিং, গ্রুপিং, রাত জেগে নেট ব্যবহার, সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা ,ক্ষুধা মন্দা, ধুমপান , মাদক,স্কুল কলেজ ফাঁকি, পড়াশোনায় অনীহা।
আর এসব করতে করতে মা-বাবা ও পরিবারের সাথে তৈরি হয় এক মানসিক দূরত্ব।
সন্তানরা উপলব্ধি করতে ভুলে যায়,
তাদের জীবনে তাদের মা-বাবার ত্যাগ। নিজেদের খুশি ,ইচ্ছা, পছন্দ,কেই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়।
তাদের প্রতিনিয়ত চাহিদা পূরণের চাপে বাবা-মা ব্যর্থ হলে, তারা উশৃঙ্খলাচরণ করতেও পিছুপা হন না ।
সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে, সন্তানের জন্য কিছু করার মানসিকতাই এই প্রজন্মকে অধঃপতনের দাড় গোরায় এনে ফেলেছে।
এই প্রজন্ম নিজেরা বাবা-মায়ের কাছ হতে এত বেশি গুরুত্ব পেয়েছে; যে এরা নিজেদেরকে প্রথম শ্রেণীর পর্যায়ে চিন্তা করে।
আর বাবা মাকে চতুর্থ শ্রেণী। নিজেদেরকে বাবা-মায়ের চেয়ে উৎকৃষ্ট মানের কিছু ভাবতে শুরু করে।
তার উপর দেখা যায় ,’বাবা মা নিজেরা হয়তো সাধারন পরিবার হতে এসে, স্ট্রাগল করে বড় হয়েছেন ।
সেক্ষেত্রে বাবা-মায়ের আত্মীয় স্বজনদের আর্থিক অবস্থা অনেকটা দুর্বল।
এদিকে মা-বাবা তাদের সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বেস্ট স্কুল, কলেজ, বেস্ট পরিবেশে রাখার ফলে সন্তানদের চারপাশের পরিবেশ এবং বন্ধুবান্ধব, যাতায়াত একটা তথাকথিত উন্নত বলয় তৈরি হয়।
ফলে ওই সন্তানদের কথাবার্তা, চালচলন, পোশাক পরিচ্ছদ, ইত্যাদির সাথে তার শিকড়ের মানুষগুলোর সাথে ব্যাপক ব্যবধান তৈরি হয়।
তারা আর কিছুতেই তাদের সাথে মিশতে পারে না। তাদের সংস্কৃতির সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে না।
এরপর শুরু হয় উচ্চাকাঙ্ক্ষা; অধিকাংশ সন্তান তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে। বাবা-মা তা পূরণে ব্যর্থ হলে, চলে অসন্তোষ, উশৃঙ্খল আচরণ, বেয়াদবি।
তার প্রতিচ্ছবি আমরা দেখেছি মেহেরিন কিংবা ঐশী সহ হাজার হাজার জানা-অজানা সব সন্তানের অধঃপতন থেকে ।
ঐশী তবু বাবা-মাকে হত্যা করে তাদেরকে চিরতরে বাবা-মা হিসেবে সন্তানের অধঃপতন দেখার যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করে দিয়েছিল।
কিন্তু মেহরিন বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে বাবা মাকে জীবন্ত মৃত্যু দান করেছেন।
বাবা-মায়ের এতদিনের অর্জিত পারিবারিক শিক্ষা, সভ্যতা, আত্মসম্মান, মান -সম্মান এক নিমিষে সারা দেশবাসীর কাছে ধুলিষ্যৎ করে দিয়েছে।
অথচ এই বাবা-মা হয়তো রাত জেগে; দিনের পর দিন অসুস্থ মেয়েকে সেবা করেছেন। দিনের পর দিন তার স্বপ্ন পূরণের জন্য পরিশ্রম করে গেছেন।
দিনের পর দিন পরিশ্রম শেষে বাড়িতে ফিরে সন্তানের জন্য উৎকণ্ঠা করেছেন। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য চেষ্টা করে গেছেন। আজ তারা তার প্রতিদান পাচ্ছেন।
উত্তোরণের উপায়:
বর্তমান এই অস্থির সময়ে এই সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ সবারই অজানা। তবু বলি,
* নিজেদের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কিছু করাটা বোকামি।
* আপনার যা আছে তার মধ্য দিয়ে আপনার সামর্থ্য এবং দায়িত্ব পালনের মধ্যে একটা ভারসাম্য রক্ষা করুন।
* সমস্ত পরিশ্রম ও কর্মব্যস্ততার মাঝে একটু সময় বের করে সন্তানের সাথে কাটান।
* এইচএসসি পরীক্ষার শেষের আগে সন্তানের হাতে স্মার্টফোন দিবেন না। একান্ত দরকার হলে, যোগাযোগ রক্ষার জন্য বাটন ফোন দিতে পারেন।
* সন্তানদের বন্ধু বান্ধবীদের আচার-আচরণ চাল -চলন সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখুন ।এবং সেই মোতাবেক সন্তানকে মিশতে দিন।
* প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ সন্তানের হাতে দিবেন না।
* মাঝে মাঝে সন্তানদের সাথে খোলামেলা আলাপ আলোচনা করুন। বিভিন্ন পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার পরামর্শ চান।
মনে রাখবেন;
সম্পদ হারিয়ে গেলে হয়তো মানুষ কষ্ট পায়। কিন্তু সেটা সাময়িক ।
কিন্তু সন্তান হারালে সেই যন্ত্রণা সইবার ক্ষমতা কোন বাবা-মায়ের থাকে না। সন্তান আমাদের স্নেহের, ভালোবাসার ধন ।
সময় থাকতে সাবধান হোন।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সব সন্তানেরা । ভালো থাকুক সব বাবা মায়েরা।

কক্সবাজার থেকে : কামরুন তানিয়া

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের বর্ষপূর্তিতে উখিয়া উপজেলা বিএনপির গণমিছিল পরিণত হয় জনসমুদ্রে

কক্সবাজার থেকে : কামরুন তানিয়া প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৩৪ এএম
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের বর্ষপূর্তিতে উখিয়া উপজেলা বিএনপির গণমিছিল পরিণত হয় জনসমুদ্রে

৫ ই আগস্টকে কেন্দ্র করে “” গণ অভ্যুত্থানের”” বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কক্সবাজার জেলার উখিয়ায় বিএনপির গণমিছিল এবং জন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত মিছিলে লাখো মানুষের তথা বিএনপির অঙ্গ,সংগঠনের লোক জমায়েত হয়। উখিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সরওয়ার জাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে উখিয়া স্টেশন চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির আসনে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী।
তিনি বলেন, “গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে,চলমান থাকবে ইনশাআল্লাহ। জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির লড়াই শেষ হয়নি। এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে বলে জানান। পাশাপাশি তিনি উখিয়া টেকনাফের মানুষের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানান।তিনি আরও বলেন যে,
তিনি উখিয়াকে পৌরসভা হিসেবে আগামীতে দেখতে চান।তিনি পৌরসভার ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “উখিয়াকে একটি পূর্ণাঙ্গ পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা হবে ইনশাআল্লাহ। সাবেক হুইপ আরও বলেন যে,দেশের কল্যাণে বিএনপির পাশে থাকার জন্য আমি উখিয়াবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি।সেই সাথে তিনি তুলে ধরেন বিগত আমলে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচারিত মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “ফেসবুকে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এসব মিথ্যাচারে কান না দিয়ে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিন। সত্যের পথে থাকুন, আন্দোলনের পথে থাকুন।অদ্য
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আরও উখিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব সোলতান মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, “৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থান আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে একটি মাইলফলক নজির সৃষ্টি করেছে।সেই দিনের চেতনাকে সামনে রেখেই আমাদের বর্তমান আন্দোলনকে সফল করতে হবে।এ সময় বক্তারা ৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি গভীর শোক, শ্রদ্ধা জানিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ হাজারো জনতা। সমাবেশর আগে বর্ণাঢ্য গণমিছিল রাজা পালং ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার সামনে থেকে শুরু হয়ে উখিয়া স্টেশনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
শৃঙ্খলাবদ্ধ এ মিছিলে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং দলীয় শ্লোগানে মুখরিত ছিল। সমাবেশ ও মিছিলকে কেন্দ্র করে উখিয়াজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল।উখিয়ার পরিবেশ পরিস্থিতি খুবই টানটান এবং সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই সমাবেশ সমাপ্তি ঘোষণা করেন আছরের আজানের একটু আগে।

তাড়াশে ফসল বাঁচাতে রাস্তা কেটে দিল কৃষক

উজ্জ্বল বাংলাদেশ প্রতিবেদকঃ প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:১৫ এএম
তাড়াশে ফসল বাঁচাতে রাস্তা কেটে দিল কৃষক

গত কয়েকদিনের টানা প্রবল বর্ষণে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কাটাগাড়ী আঞ্চলিক সড়কে মহিলা কলেজ সংলগ্ন যাতায়াতের সড়ক কেটে দিয়েছে কৃষকগণ। প্রায় ৩০- ৪০ গ্রামের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা প্রায় ২০০ হেক্টর আবাদি জমি তলিয়ে গেছে এতে চরম বিপাকে পড়েন কৃষক। রোপা আমন ধান যেন নষ্ট না হয় সেজন্য কোদাল সাবল দিয়ে রাস্তা কেটে আটকে থাকা ঢলের পানি বের করার ব্যবস্থা করলেন কৃষকগণ। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের এমন বেহাল দশা মেনে নিতে পারছেন না সাধারণ মানুষ, কাটাগাড়ী, আড়ংগাইল, কাস্তা, সেরাজপুর, গুরমা সহ প্রায় ২০-৩০ গ্রামের মানুষ সহ মহিলা কলেজ জে আই টেকনিক্যাল স্কুল যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই রাস্তাটি। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো যাত্রীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ দীর্ঘদিন যাবত এখানে এই ব্রিজটি র কাজ শেষ হচ্ছে না ফলে মাঝে মাঝেই যানবাহন উল্টে আহত হন মানুষ। চলনবিল উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক আব্দুল আজিজ বলেন এই ব্রিজ নিয়ে অনেক লেখা লেখি হয়েছে ঠিকাদার ও কতৃপক্ষের গাফিলতিতে আমাদের মত সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি। এটার দ্রুত সমাধান হওয়া উচিত। স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন বলেন রাস্তার পাশেই বমার বাড়ি এখানে খুব তারাতাড়ি বিকল্প সড়কের ব্যাবস্থা করার জন্য কতৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি তানাহলে যে বাঁশের ব্রিজ টি করা হয়েছে মানুষ পড়ে স্রোতে তলিয়ে মারা যাওয়ায় ঘটনা ঘটতে পারে। মাহবুবুল হক মিনু বলেন স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী রা কিভাবে যাতায়াত করবেন এই এলাকার কেউ অসুস্থ হলে কিভাবে হাসপাতালে নিবে দ্রুত এর একটা সমাধান হওয়া উচিত। জনগুরুত্বপূ্র্ণ ভুক্তভোগীরা দ্রুত উভয় সড়ক সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

এলজিইডি নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প ব্রিজ নির্মাণের কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বাঁধের ওপর দিয়ে যান চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তার তেমন ব্যাবস্থা নেই, পানি যাওয়া-আসার সুযোগও রাখা হয়নি। এতে বাঁধের পূর্বদিকের অংশের ফসলি মাঠে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিজটির কাজ অনেক আগেই কাজ শেষ হবার কথা ছিল স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ পেলেও এলজিইডি বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেয়ায় আজ লাখ লাখ মানুষের এই অসুবিধা।

এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

✍ শোয়েব হোসেন

কালীগঞ্জে জমি দখলের ভয়ংকর চক্র সক্রিয়

✍ শোয়েব হোসেন প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
কালীগঞ্জে জমি দখলের ভয়ংকর চক্র সক্রিয়

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার চুয়ারিখোলা ও দরিপাড়া এলাকা বর্তমানে একদল দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর নিয়ন্ত্রণে। দিনের আলোতেই ঘটে চলেছে চুরি, ছিনতাই, হামলা ও মাদক ব্যবসার মতো ভয়ংকর অপরাধ। দীর্ঘদিন ধরে এইসব অপকর্মে লিপ্ত একটি চক্র প্রশাসনের নাকের ডগায় থেকে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এই চক্রের বিরুদ্ধে বারবার প্রতিবাদ জানিয়ে আসা স্থানীয় ব্যবসায়ী মামুন মোল্লা ও তাঁর পরিবার সম্প্রতি প্রাণঘাতী হামলার শিকার হন। মামুনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে এলেম হোসেন, সৌরভ হোসেন, জামান মিয়া, বাবুলসহ আরও কয়েকজন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী মামুনের বাড়িতে হামলা চালায়। তার বৃদ্ধ পিতাকে মারধর করে, বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং মামুনসহ তিনজনকে পাইপ ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।

আহত মামুন বর্তমানে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, সন্ত্রাসীরা হামলার সময় ১০ আনার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং চিকিৎসা ব্যয়ে মামুনের পরিবার ইতোমধ্যে প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই অপরাধীচক্র ৫–৭ বছর ধরে তেল চুরি, জমি দখল, মাদক পাচার, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে লিপ্ত। বারবার অভিযুক্ত হয়েও তারা জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় একই অপরাধে যুক্ত হয় এবং রাজনৈতিক পরিচয় পাল্টে প্রশাসনের একাংশের প্রশ্রয়ে কার্যত ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে।

প্রতিবেশীরা জানান, এলাকায় এমন অবস্থা যে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। মামুন মোল্লা হচ্ছেন ব্যতিক্রম – যিনি চরম ঝুঁকি নিয়ে বারবার প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছেন। তার এই অবস্থার জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের নিরবতা ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

এছাড়া “হিউম্যান এইড এন্ড ট্রাস্ট ইন্টারন্যাশনাল” এর অনুসন্ধানে উঠে আসে, এই সন্ত্রাসীদের পেছনে প্রবাসী অর্থদাতা ও রাজনৈতিক শক্তির হাত রয়েছে। চুয়ারিখোলা এলাকার একটি পুরোনো টিনের ঘর ঘিরে রয়েছে বহু রহস্য। জনশ্রুতি অনুযায়ী, এর মালিক সৌদি প্রবাসী সাইফুল নামে এক ব্যক্তি, যিনি মাসে ৪০ হাজার টাকায় ওই ঘর ভাড়া দিয়ে সন্ত্রাসীদের সহায়তা করছেন।

স্থানীয়রা আতঙ্কিত। একজন বলেন, “আমাদের সন্তানরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে ভয় পায়। প্রশাসন সব জেনেও নীরব কেন?”

সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো। এখন প্রশ্ন একটাই—এই অন্ধকার থেকে মুক্তি পাবে তো কালীগঞ্জ?

অনুসন্ধান চলমান…

error: Content is protected !!