গ্যাঁড়াকলে বিসিবি সভাপতি
আমিনুল ইসলাম বুলবুল যেন গ্যাঁড়াকলের মধ্যে পড়ে গেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন বিসিবি সভাপতি থাকাকালে তেমন বিতর্কে তাকে পড়তে হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বিসিবি সভাপতি হওয়ার পর ঝামেলা যেন তাকে ঘিরে ধরেছে।
অবস্থা এমন যে, পাঁচদিনের মধ্যে এক ঘটনায় ক্ষমা চাওয়ার পর দ্বিতীয় আরেক ঘটনায় তাকে দুঃখপ্রকাশ করতে হয়েছে!
দুটি পৃথক ঘটনা কিন্তু ঘটেছে একই অনুষ্ঠানস্থলে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৫ বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে ঢাকায় ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্স ২০২৫’ আয়োজন করেছিল ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেখানেই ঘটে অঘটন!
ওই কনফারেন্সে বিসিবি পরিচালক আসিফ আকবর ফুটবল ও ফুটবলারদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বসেন। এ নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয় ফুটবলাঙ্গন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আসিফের বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠায় বিসিবিতে।
কনফারেন্সের শেষদিন (১০ নভেম্বর) সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানস্থলে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করা হয়। এ নিয়ে প্রতিবাদ করেন সাংবাদিকরা। এই ঘটনায় গত বুধবার (১২ নভেম্বর) বিসিবির পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
এরপর আজ আসিফের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দুঃখপ্রকাশ করে বাফুফেকে চিঠি দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি বুলবুল।
বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বরাবর পাঠানো চিঠিতে বুলবুল লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্স ২০২৫ অনুষ্ঠানে যে তথাকথিত বক্তব্যটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, সেই বক্তব্যটি তিনি প্রদান করেছিলেন জেলা প্রতিনিধিত্বকারী কাউন্সিলর হিসেবে, একজন বোর্ড পরিচালক হিসেবে নয়। আমার জানা মতে, তিনি তাঁর নিজ জেলার ক্রিকেট কার্যক্রম ও মাঠ ব্যবহার-সংক্রান্ত কিছু দীর্ঘদিনের হতাশা ও জটিলতা থেকে ব্যক্তিগত ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে সম্ভবত উক্ত বক্তব্য প্রদান করেছেন।’
আসিফের মন্তব্যের সঙ্গে ক্রিকেট বোর্ডের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে উল্লেখ করেছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত মতামত কখনোই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না। আপনার অবগতির জন্য আমি সুদৃঢ়ভাবে আরও জানাতে চাই, বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্স ২০২৫-এ প্রদানকৃত বক্তব্যটি ছিল সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি এবং সেটিকে বাংলাদেশে ক্রিকেট বোর্ডের বক্তব্য হিসেবে বিবেচনা করা সম্ভব হবে না।’
দায় না নিলেও দুঃখপ্রকাশ করতে কার্পণ্য করেননি বিসিবি সভাপতি, ‘যদি উক্ত বক্তব্যের কারণে ফুটবল পরিবার বা ভক্তদের মনে কোনো ধরনের আঘাত বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়ে থাকে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
বিসিবির কনফারেন্সের উদ্বোধনী দিনে ক্রিকেটকে ‘আভিজাত্যের খেলা’ আখ্যা দিয়ে ফুটবলকে যেন তুচ্ছতাচ্ছিল্যই করেন আসিফ। ফুটবলারদের কারণে ক্রিকেট খেলা যাচ্ছে না দাবি করে আসিফ বলেছিলেন, ‘ফুটবলারদের কারণে গোটা দেশে ক্রিকেট খেলা যাচ্ছে না। তারা উইকেট ভেঙে ফেলে এবং প্রতিটি জেলার স্টেডিয়াম দখল করে রেখেছে। এমনকি যেখানে ফুটবলের আয়োজন নেই, সেখানেও স্টেডিয়াম ব্যবহার করছে।’











