বিএনপি নেতা মতিন কাজী: ভোটযুদ্ধের সৈনিক অন্যায়ের শিকার


বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার ৬নং গোহাইল ইউনিয়নের একজন জনপ্রিয়, সাহসী এবং ত্যাগী রাজনৈতিক নেতা মোঃ মিজানুর রহমান মতিন কাজী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গোহাইল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং গোহাইল ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তিনি এলাকাবাসীর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।
২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সেই নির্বাচনে এলাকার জনগণের বিপুল সমর্থন পেলেও ভোটের ফলাফলে দেখা যায়, তিনি সামান্য ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে। উল্লেখ্য, ঐ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন গোহাইল ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু। এলাকাবাসীর অভিযোগ—‘ফজুবাহিনী’ নামে পরিচিত একটি চক্র ভোট কেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান এবং প্রশাসনকে প্রভাবিত করে নির্বাচনে অনিয়ম ঘটায়, যার ফলে প্রকৃত বিজয়ী ধানের শীষের প্রার্থী মতিন কাজীকে পরাজিত ঘোষণা করা হয়। বগুড়ার মাটিতে ধানের শীষের ঘাঁটিতে এ ধরনের ভোট কারচুপি বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
মতিন কাজী নিজেও বিশ্বাস করেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তিনি নিশ্চিতভাবে বিজয়ী হতেন। তার বক্তব্যে উঠে আসে, “জনগণ আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছে, কিন্তু প্রশাসনিক প্রশ্রয়ে দখলদাররা সেই ভোটের রায় ছিনিয়ে নিয়েছে। আমি হারিনি, আমার জয় কেড়ে নেওয়া হয়েছে।”
তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, বগুড়া জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু এমপির অনুসারী হিসেবে এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়।
এমন একটি প্রেক্ষাপটে, ৫ই আগস্ট ২০২৪ তারিখে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং দেশের মানুষ ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারে আন্দোলন করে সফল হয়। এর মধ্য দিয়ে গঠিত হয় একটি নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যাদের প্রতি জনগণের বিশ্বাস জন্মেছে যে তারা একটি সুস্থ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারবে। এই আশাবাদ থেকেই গোহাইল ইউনিয়নের জনগণ আবারো দেখতে চান মোঃ মিজানুর রহমান মতিন কাজীকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে।
আগামী নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মতিন কাজী এগিয়ে রয়েছেন বলেই অনেক নেতাকর্মী বিশ্বাস করেন। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে মনোনয়নের দৌড়ে তার সঙ্গে রয়েছেন গোহাইল ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও শাহিন গ্রুপের নেতা আব্দুল মান্নান। তবে এলাকাবাসীর মতে, মতিন কাজী একজন ভালো, সৎ এবং জনগণের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত মানুষ—তাকে ধানের শীষের মনোনয়ন দিলে এবং নির্বাচনে নেতৃত্বে আনলে দল যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক উন্নয়ন ও জনকল্যাণ নিশ্চিত হবে।
মতিন কাজী হলেন সেই নির্ভীক সৈনিক, যিনি ভোটযুদ্ধে জয়ী হয়েও অন্যায়ের শিকার হয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা, নেতৃত্বগুণ এবং রাজনৈতিক স্পষ্টতা আজও গোহাইল ইউনিয়নে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। জনগণ বিশ্বাস করে, ন্যায়বিচার একদিন প্রতিষ্ঠা হবেই—আর সেদিন বিজয়ী হবে মতিন কাজীর মত সাহসী ও ত্যাগী নেতারাই।