শুক্রবার, ৮ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২
শুক্রবার, ৮ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

নতুন জাতির স্বপ্ন দেখছেন

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:২১ পিএম | 111 বার পড়া হয়েছে
নতুন জাতির স্বপ্ন দেখছেন

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই-আগস্টে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর তার জীবনের গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার আভাস দিয়েছেন।

সোমবার অধ্যাপক ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে মার্কিন পাবলিক ব্রডকাস্টিং সংস্থা এনপিআর।

স্বৈরাচারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগস্টের শুরুতে ভারতে পালিয়ে যান যখন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী তার নেতৃত্ব ও নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর পক্ষে চাকরির কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করে দলে দলে তার বাসভবনে ঢুকে পড়ে।

ইউনূস গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে যোগদান করার প্রেক্ষিতে প্যারিসে আবস্থানকালে প্রায় ৫,০০০ মাইল দূর থেকে এসব ঘটনা দেখছিলেন। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তিনি তখন অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশে সম্ভাব্য কারাবাসের ঝুঁকির মধ্যে ছিলেন।
কিন্তু গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার কয়েক ঘণ্টা পর ইউনূসের কাছে একটি ফোন কল আসে। তাকে অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।

তিনি গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সিটিতে এনপিআর-এর মর্নিং এডিশনে বলেছিলেন, এটি ছিল ‘ঘটনার খুব অদ্ভুত পরিবর্তন’।

২০০৬ সালের নোবেল বিজয়ী ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করার উপায় হিসাবে স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য ছোট ঋণের ব্যবস্থা চালুর পথিকৃৎ হিসাবে পরিচিত। তিনি যখন বাংলাদেশে আইনি ঝামেলায় জর্জরিত, তখন বারাক ওবামা থেকে শুরু করে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন পর্যন্ত বিশ্ব নেতারা সংহতি প্রকাশ করেন।

ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা করার পরে এনপিআর-এর মিশেল মার্টিনের সাথে আলাপচারিতায় বসেছিলেন। সাক্ষাৎকারটি স্পষ্টতার জন্য কিছুটা সম্পাদনা করা হয়েছে।

মিশেল মার্টিন: গত গ্রীষ্মে যখন আমরা কথা বলেছিলাম আপনি দুর্নীতির অভিযোগে বিচারাধীন ছিলেন এবং এখন আপনি বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। এসব কিছুই ঘটনার পালাবদল। নিজেকে এই অবস্থানে পেয়ে অবাক হচ্ছেন কি?

মুহাম্মদ ইউনূস: ঘটনার খুবই অদ্ভুত পালাবদল। আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে শপথ নেওয়ার আগে আমি প্যারিসে ছিলাম, আমি দেখার চেষ্টা করছিলাম যে আমি ফিরে যাব কি-না, আমাকে গ্রেপ্তার করা হবে, কারণ তিনি আমার ওপর রাগান্বিত হবেন এবং আমাকে জেলে পাঠাবেন। তাই ভাবছিলাম ফিরতে দেরি করব। আর হঠাৎ বাংলাদেশ থেকে একটা ফোন পেলাম যে তিনি (শেখ হাসিনা) এখন চলে গেছেন। আমরা চাই, আপনি সরকার প্রধান হন। এটি একটি বড় চমক ছিল।

মার্টিন: আপনি যখন ফোনটি পেয়েছিলেন তখন আপনার মনে কী হয়েছিল?

ইউনূস: দেশ পরিচালনায় আমার আদৌ যুক্ত হওয়া উচিত কি-না। এটা খুবই কঠিন রাজনৈতিক পরিস্থিতি। কিন্তু যখন ছাত্ররা আমাকে ডেকে ব্যাখ্যা করল যে পরিস্থিতি কী, অবশেষে আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, তোমরা এর জন্য জীবন দিয়েছ। তোমরা যদি জীবন দিতে পার, তবে আমি আমার সকল অন্যান্য বিবেচনা বাদ দিতে পারি। আমি তোমাদের সেবা করতে পারি। আমি এটা করব।’

মার্টিন: আপনি যখন বলেন যে আপনি জীবন দিয়েছেন আপনি অতিরঞ্জিত করেননি এবং এটি কোন রূপক নয়।

ইউনূস: না, এটা কোনো রূপক নয়। মানুষ মারা যায়। প্রায় এক হাজার যুবক মারা গেল, বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে বুলেটে বুক পেতে দিলো। আক্ষরিক অর্থে, যুবকরা এসে আত্মাহুতি দিয়েছে। তারা যখন বিক্ষোভে যোগ দিতে তাদের বাড়ি থেকে বের হচ্ছিল, তারা তাদের বাবা-মাকে বিদায় জানাচ্ছিল। তারা তাদের ভাইবোনদের বিদায় বলছে; ‘আমি হয়তো ফিরে আসব না।’ এটাই সেই চেতনা যার মধ্যে পুরো ব্যাপারটা ঘটেছে। অবশেষে, এটি এতটাই অবিশ্বাস্য ছিল। প্রধানমন্ত্রী দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন কারণ পুরো জনতা তার বাড়ির দিকে আসছিল।

মার্টিন: একদিকে এসব বিক্ষোভ আন্দোলনে খুবই অজনপ্রিয় কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত নেতার প্রস্থানের পথ প্রশস্ত করেছিল। সেইসব বিশৃঙ্খলতার প্রথম দিনগুলোতে আহমদিয়া ও হিন্দুদের ওপর হামলা হয়েছিল। এসব ঘটনার কিছু অংশ ছিল শেখ হাসিনার দলের প্রতি তাদের আনুগত্যের কারণে। এর কিছু ঘটনা কেবলমাত্র সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ বলে মনে হয়েছে। সেসব ঘটনাও কমে গেছে। কিন্তু তারপর থেকে আরও হামলা হয়েছে, এইবার সুফি মাজারে। আমাদের প্রতিবেদন অনুসারে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে ২০টিরও বেশি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, উত্তেজিত জনতার হাতে হত্যা হয়েছে। কেন এমন হচ্ছে?

ইউনূস: জনগণ বিপ্লবের মেজাজে আছে। সুতরাং এটি একটি বিপ্লবী পরিস্থিতি। তাদের অনেককে হত্যা করা হয়েছে। তাই তারা এমন লোকদের খুঁজছে যারা তাদের সহকর্মীদের মৃত্যু ঘটিয়েছে। তাই জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলের অনুসারীদের ওপর হামলা চালাচ্ছিল। আপনি যখন বলেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হচ্ছে, সেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায় শেখ হসিনার সঙ্গে যুক্ত ছিল। সুতরাং আপনি পার্থক্য করতে পারবেন না যে, তারা শেখ হাসিনার অনুসারী হওয়ার কারণে তাদের উপর হামলা হয়েছে নাকি তারা হিন্দু বলে তাদের ওপর হামলা হয়েছে। কিন্তু তাদের ওপর হামলা হয়েছে, এটা নিশ্চিত। কিন্তু তারপর আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করি। আমি সবাইকে বলতে থাকি যে, আমাদের মতভেদ থাকতে পারে। এর মানে এই নয় যে, আমাদের একে অপরকে আক্রমণ করতে হবে।

মার্টিন: আপনি কি মনে করেন যে আপনি জনগণকে প্রতিশোধের পরিবর্তে সংস্কারের দিকে মনোনিবেশ করার পথে ফিরিয়ে আনতে পারেন?

ইউনূস: প্রতিশোধের সময় মাত্র কয়েক সপ্তাহ ছিল। কিন্তু তারপর স্বাভাবিকতা ফিরে আসতে শুরু করে। তাই আমরা দেশ চালাচ্ছি। কিন্তু বিক্ষোভ আছে, প্রতিশোধমূলক বিক্ষোভ নয়। বেশিরভাগ বিক্ষোভ তাদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে, তাদের চাকরির দাবিতে, যাদেরকে সরকার আগে বরখাস্ত করেছিল।

তাই তারা বলেছিল, অতীতের সরকার আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে এবং আমরা বিনা কারণে আমাদের চাকরি হারিয়েছি। কারণ আমরা অন্য রাজনৈতিক দলের সদস্য। তাই বঞ্চিতরা সবাই তাদের দাবি মেটানোর চেষ্টা করছে। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলাম। দেখুন এগুলো আপনাদের ১৫ বছরের ক্ষোভ। আমরা ১৫ দিনের মধ্যে এটি সমাধান করতে পারি না। আমাদের কিছু সময় দিন যাতে আমরা ফিরে যেতে পারি। আপনারা একটি খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন এবং আমাদের এটি এমনভাবে সমাধান করতে হবে যাতে এটি পদ্ধতিগতভাবে সম্পন্ন হয়।

মার্টিন: সময়ের কথা বলছি, সেনাবাহিনী আপনার পেছনে রয়েছে। সামরিক নেতারা বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ১৮ মাস শাসন করতে হবে। বিরোধী দলগুলো তা চায় না। তারা নভেম্বরে নির্বাচন চেয়েছিল। আপনার যা করতে হবে তা করার জন্য কি ১৮ মাস যথেষ্ট সময় আছে?

ইউনূস: জনগণ এই সংখ্যাগুলো বিবেচনা করছে না। কত মাস, কত বছর তাদের প্রয়োজন মনে হয়। কেউ কেউ বলে যে এটি দ্রুত করা উচিত, কারণ আপনি যদি দীর্ঘায়িত করেন আপনি অজনপ্রিয় হবেন এবং সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাবে। কেউ কেউ বলেন যে না, আপনাকে সংস্কার শেষ করতে হবে। সুতরাং আপনি দীর্ঘ সময় ধরে থাকুন। কারণ আমরা সবকিছু ঠিক না করে বাংলাদেশ ২.০-এ যেতে চাই না। তাই এই নিয়ে বিতর্ক চলছে।

মার্টিন: আপনি জানেন, আপনি প্রায় সুশীল সমাজের মতো করে সম্পূর্ণ পুনর্গঠনের কথা বলছেন।

ইউনূস: সংস্করণ ২-এর অর্থ ঠিক এটাই। আমরা পুরনো স্টাইলে ফিরে যেতে চাই না। তাহলে এত জীবন দেওয়ার মানে কী? এর কোনো মানে নেই কারণ আমরা যা করেছি, সবকিছু ধ্বংস করেছি। তাই একটি নতুন দেশ নির্মাণ আমাদের শুরু করতে হবে।

মার্টিন: আপনি জানেন, এটি চ্যালেঞ্জিং, কিন্তু এটি উত্তেজনাপূণর্, তাই না?

ইউনূস: এটা খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। আপনি নেতিবাচক দিক দেখছেন। আমি এটাকে খুবই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখি। আমি বলেছিলাম এই জাতি সবচেয়ে বড় সুযোগ পেয়েছে। এসব মানুষ, দেশ একটি বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ: আমাদের পরিবর্তন দরকার।

মার্টিন: আপনি ৮৪ বছর বয়সী। আমি জানি না যে, আপনি কখনো নিজেকে সরকার প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ভেবেছেন কি-না। আপনি কি মনে করেন যে, আপনি বাংলাদেশকে সেই দেশে পরিণত হতে দেখবেন যা আপনি আশা করেন, আপনার জীবদ্দশায়?

ইউনূস: সব কিছু নয়। তবে আমি খুব খুশি হব এটি হওয়ার পথে। প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিক আছে। নীতি সঠিক। তরুণেরা বিশ্বকে পরিবর্তন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে তারা দেশের মধ্যে এবং বিশ্বব্যাপী ভূমিকা পালন করে। জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বললে, আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ভুক্তভোগী। তবে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি সবসময় তরুণদের গুরুত্ব দেই কারণ তারাই ভবিষ্যৎ গড়বে এবং যেভাবেই হোক তাদের নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা উচিত। কারণ তাদের উত্তরাধিকারসূত্রে এই গ্রহে থাকতে হবে। আপনি উল্লেখ করেছেন যে, আমি ৮৪ বছর বয়সী। আমার সামনে দীর্ঘ সময় নেই, তাদের সামনে পুরো জীবন রয়েছে।

সূত্র: বাসস

ঢাকা গাজীপুরে এক সাংবাদিককে জবাই করে হত্যা ক্রাইম রিপোর্টারদের উদ্বেগ

তালাত মাহামুদ বিশেষ প্রতিনিধি প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:১৯ এএম
ঢাকা গাজীপুরে এক সাংবাদিককে জবাই করে হত্যা ক্রাইম রিপোর্টারদের উদ্বেগ

ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫ খ্রী: গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিন কে জবাই করে হত্যা করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। এ ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্র যন্ত্রের অচলাবস্থাকে দায়ী করেছেন।

গাজীপুরে একদিনের ব্যবধানে আনোয়ার হোসেন নামে বাংলাদেশের আলো পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধিকে ইট দিয়ে থেঁতলে আহত করা হয়েছে থানার সামনে। তার পরদিন আজ বৃহস্পতিবার রাতে আসাদুজ্জামান তুহিন কে জবাই করে হত্যা করা হয়।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নরসিংদী জেলা ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মাসুদ রানা বাবুল এ ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রতি রাষ্ট্র যন্ত্রের নীরবতাকে দায়ী করে অবিলম্বে হত্যাযজ্ঞের নৃশংস ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।

বিলাইছড়িতে ২ দিনের সফরে জেলা প্রশাসক– মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ 

সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৬:২৩ এএম
বিলাইছড়িতে ২ দিনের সফরে জেলা প্রশাসক– মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ 

বিলাইছড়ি (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি- রাঙ্গামাটির দুর্গম বিলাইছড়ি উপজেলায় শিক্ষা ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শনে ২ দিন সফর করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। প্রশাসক গত ৬ আগস্ট বুধবার ২ দিনের সফরে ফারুয়ার সাইচল ও ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন এবং দুর্গম ফারুয়া বাসীর সঙ্গে মত বিনিময় করেন। এছাড়াও ৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা চত্বরে পুলিশের একটি চৌকস দল প্রশাসককে গার্ড অব অনার করেন। পরে বিলাইছড়ি কলেজে প্রভাষক – অভিভাবক- শিক্ষার্থীদের ত্রিপক্ষীয় সভায় যোগদেন এবং কলেজের সুবিধা -অসুবিধার কথা জানেন। পরে গাছের চারা রোপণ করেন। এছাড়াও সফরে দুপুরে বিলাইছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে কুশল বিনিময়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ব্যাগ বিতরণ, উপজেলা কর্মকর্তা ও জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময় এবং বিকালে মুপ্প্যাচড়া ঝর্ণা পরিদর্শন করেন।

সফরে বিলাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন, কর্মকর্তা- কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা পুষ্পমাল্য দিয়ে প্রশাসককে বরণ করেন। এবং তাদের প্রাণের দাবি,উপজেলায় আবু সাইদ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ, বিলাইছড়ি কলেজটি জাতীয়করণ, দুর্গম বড়থলি ও ফারুয়া ইউনিয়নসহ বিদ্যুৎ বিহীন এলাকাগুলো সোলার প্যানেলে সৌর বিদ্যৎতের সু-ব্যবস্থা এবং মোবাইল নেটওয়ার্কে আওতায় নিয়ে আসা। হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য জনবল বাড়ানো। এছাড়াও বিলাইছড়ি টু ফারুয়া পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ উন্নত করা। গাছকাটা ছড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সকল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ এবং বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো এমপিওভূক্তকরণের দাবি তুলে ধরেন।

জবাবে প্রশাসক হাবিব উল্লাহ বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠাপনে উপজেলা সকলের অবদানের কথা স্বীকার করেন।ইতোমধ্যে শিক্ষা প্রকৌশল থেকে একটি ভবন বরাদ্দ হয়েছে। খুব শ্রীঘ্রই ৩ তলা ১ টি ভবন হবে।পাশাপাশি উন্নয়ন বোর্ড হতে ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।তবে উন্নয়ন বোর্ডের এই ভবনটি হবে হোস্টেল। সেটি কোন দিকে হোস্টেল ও ভবন হবে স্থানীয়দের ঠিক করার দায়িত্ব দেন।তিনি শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্যে বলেন, স্বপ্ন দেখতে হবে, চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। দারিদ্র তোমার দূর্বলতা নয়।দারিদ্র কোনো অপরাধ নয়। “চেষ্টা” তোমাকে সফলতায় পৌঁছাতে পারবে। তিনি আরো বলেন, দারিদ্র বিমোচনের জন্য অন্যান্য পেশা পাশাপাশি ট্যুরিজমের উপর গুরুত্ব দেন এবং সিএইচটি রেগুলেশনের কথা বলেন।পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নে আশ্বাস দেন এবং গণ-অভ্যুত্থানে নিহত আবু সাইদ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণে প্রতিশ্রুতি দেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মামুনুল হক, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম ফকির, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.সুরজিত দত্ত, উপজেলা কৃষি অফিসার রাজেশ প্রসাদ রায়, থানা অফিসার ইনচার্জ মানস বড়ুয়া,১ নং বিলাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান,উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিরালা কান্তি চাকমা, বিলাইছড়ি কলেজের প্রভাষক ইয়াসমিন সুলতানা মনি, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সুবিনয় চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শান বিজয় চাকমা, কার্বারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুপকুমার চাকমা, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অসীম চাকমাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা – কর্মচারী, জন প্রতিনিধি এবং শিক্ষকবৃন্দ ।

রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৮৭৮কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

মো: রাসেল মোল্লা রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৬:২০ এএম
রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৮৭৮কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, আওয়ামীলীগ নেতা ও রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল ৭আগস্ট বৃহস্পতিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ(সিআইডি) বাদী হয়ে গুলশান থানায় এ মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশে তাদের ১৩টি ব্যাংক হিসাব এবং যমুনা ফিউচার পার্কের ১ লাখ বর্গফুট কমার্শিয়াল স্পেস ক্রোক করা হয়েছে।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জমি ক্রয় বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি গ্রহণ করে তা বিক্রয় করা হয়। রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ অপু ও মেহেদী হাসান দিপু ২০২২ সালের ৮মার্চ বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুরুখী সমবায় সমিতির কাছে ৭দশমিক ৫৭৫১ একর জমি বিক্রি করেন। পরবর্তীতে ওই জমির মধ্য থেকে ৬ দশমিক ৩৩৭৫ একর জমি ২০২২ সালের ১ জুন বসুন্ধরা গ্রুপের ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের কাছে পুনরায় বিক্রি করে ৫৭ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া পুলিশের বহুমুখী সমবায় সমিতিতে বালিভরাটের ভূয়া কার্যাদেশ দেখিয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করেন। একইভাবে ইসলামী ব্যাংক বারিধারা শাখা থেকেও ভূয়া মূল্যায়ণ কপির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহন করেন।

অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা এসব অর্থ ফেরত না দিয়ে বিদেশে পাচার করেন। এদের একজন ক্যারাবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ অ্যান্টিগা ও বারবুডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করে।

অর্থ পাচার, জালিয়াতি ও প্রতারণা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ২(৫)(৬)(১৪) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধে গতকাল ৭আগস্ট বৃহস্পতিবার সিআইডি গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৪।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অর্থ ও সম্পত্তি ক্রোকের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে৷

error: Content is protected !!