রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বিয়ের পাত্রী খুঁজতে গিয়ে জুয়ার সাইটে

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫:৪৫ পিএম | 100 বার পড়া হয়েছে
বিয়ের পাত্রী খুঁজতে গিয়ে জুয়ার সাইটে

ইতালি ফেরত পাত্রীর জন্য পাত্র খোঁজা হচ্ছে ফেসবুকে। পাত্রীর বয়স ২৯ এবং নিজের নামে দোতলা বাড়িসহ ৪ বিঘা জমি আছে। তিনি ইতালিতে একটি কফিশপেরও মালিক। বিয়ের পর পাত্রকে ইতালিতে নিয়ে যাবেন। ফেসবুকে দেওয়া এমন একটি পোস্টের কমেন্টবক্সে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগের জন্য একটি লিঙ্কও দেওয়া রয়েছে। কিন্তু ওই লিঙ্কে ক্লিক করলেই চলে যাচ্ছে বিদেশি মুদ্রা (ফরএক্স) ক্রিপ্টোকারেন্সি বেচাকেনা এবং বিভিন্ন অনলাইন জুয়ার সাইটে।

স্বাধীন গবেষণা প্ল্যাটফর্ম ডিসমিসল্যাব বলছে, তারা গত জুলাই থেকে ফেসবুকের বিভিন্ন পেজে অন্তত ৩৫টি পোস্টে এই ইতালি ফেরত পাত্রীর জন্য পাত্র খোঁজার বিবরণ পেয়েছে। তবে কোথাও বয়স বদলেছে, কোথাও পাত্রীর জমির পরিমাণ, আর কোথাও ছবি বদল করা হয়েছে।

পাত্র চাই পোস্টগুলোতে বিভিন্ন রকমের পাত্রীর বিবরণ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১২টি বাক্য বা কি-ফ্রেজকে নমুনা হিসেবে নিয়ে ফেসবুকে সার্চ করে মোট ৪৩০টি পোস্ট পেয়েছে ডিসমিসল্যাব। সংস্থাটি বলছে, গবেষণার নমুনা হিসেবে গৃহীত ৪৩০টি পোস্টের মধ্যে ৩৯৭টি, অর্থ্যাৎ ৯২ শতাংশই জুয়া বা বিদেশি-মুদ্রা লেনদেনের সাইটে নিয়ে গেছে। এই প্রচারণার সঙ্গে একাধিক নেটওয়ার্ক বা চক্রে বিভক্ত একশর বেশি ফেসবুক পেজ, প্রোফাইল ও গ্রুপের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এই প্রচারণার সঙ্গে একাধিক নেটওয়ার্ক বা চক্রে বিভক্ত একশর বেশি ফেসবুক পেজ, প্রোফাইল ও গ্রুপের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

অ্যাফিলিয়েট গ্যাম্বলিং প্রচারণায় মূলত একটি লিংকের সাহায্যে গ্রাহকদের অনলাইন জুয়ার সাইটে নিয়ে আসা হয়। এই লিংকগুলোকে বলা হয় রেফারেল লিংক, যার প্রতিটিতে একটি পরিচিতিমূলত কি (Key) থাকে। রেফারেল লিংকে কেউ ক্লিক করলে প্রচারণাকারী (যিনি রেফারেল লিংকটি তৈরি ও প্রচার করেছেন) সেখান থেকে আয় করতে পারেন। এদের মধ্যে কয়েকটি লিংক আবার ফিশিং বা তথ্যচুরির সাইটেও নিয়ে যায়।

গতকাল রোববার ডিসমিসল্যাবের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৩০টি পোস্ট ১১ হাজারের বেশিবার শেয়ার হয়েছে এবং তাতে হাজার হাজার মন্তব্য এবং দুই লাখের বেশি রিয়্যাকশন রয়েছে। পোস্টগুলোতে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী এ ধরনের প্রচারণা সমস্যাজনক। ব্যাংকের নীতিমালায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, অনলাইন জুয়া এবং ফরেক্স ও ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ অবৈধ।

মেটা বলছে, এ ধরনের প্রচারণা স্প্যাম (প্রতারণামূলক) ও ক্লোকিং (লিংকে মূল গন্তব্য গোপন করা) নীতিমালা পরিপন্থী।

ডিসমিসল্যাব জানিয়েছে, তাদের গবেষণায় বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে এমনভাবে প্রচারণা চালানোর নজির পাওয়া গেছে, যা মেটার নীতিমালা অনুযায়ী কো-অর্ডিনেটেড ইনঅথেন্টিক বিহেভিয়র বা সমন্বিত বিরূপ আচরণের সঙ্গে মেলে। কিন্তু প্রায়-বিশ্বাসযোগ্য গল্প এবং সর্ট (সংক্ষিপ্ত) লিংক ব্যবহার করে, এই প্রচারণাটি ফেসবুকের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে।

ডিসমিসল্যাবের গবেষণায় আরও দেখা গেছে, পাত্র চাওয়া পোস্টগুলোতে ব্যবহৃত একই লিংকগুলো একেকবার একেক সাইটে নিয়ে যায়। বেটিং সাইটগুলোর মধ্যে রয়েছে—ক্রিকিয়া, জিতবাজ, বাবু ৮৮, বাজি, সিক্স৬ বিডি, সিক্স৬এসবিডিটি অনলাইন ইত্যাদি। এর বাইরে কোটেক্স ও পকেট বাইন্যান্সের মতো ক্রিপ্টো ও ফরেক্স ট্রেডিং সাইটও রয়েছে।

প্রচারণার আসল লিংকগুলোকে গোপন করতে টাইনি ইউআরএল, কাটলি, ইউক্লিক.লিংকের মতো বেশকিছু ইউআরএল শর্টনার দিয়ে ছোট করা হয়েছে।

এসব সাইটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ভিজিটরের ক্লিক বা ট্রাফিকের মাধ্যমে আয় করা। এ ধরনের ওয়েবসাইটগুলো, সাধারণত, বিভিন্ন বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে কাজ করে এবং ব্যবহারকারীদের রিডাইরেক্ট করিয়ে বা বিভিন্ন পপ-আপ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন সাইটে নিয়ে যায়।

ডিসমিসল্যাব বলছে, অনুসন্ধানে বিভিন্ন ডোমেইনের মোট ১৯টি ভিন্ন রেফারেল কি নাম্বার (লিংকের শেষে পরিচিতমূলক কি) পাওয়া গেছে। ৫৪টি পেজ ও প্রোফাইল ঘুরেফিরে এসব ডোমেইন ও কি নাম্বার ব্যবহার করেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা এনগেজ মিডিয়ার ডিজিটাল নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আশরাফুল হক বলেন, এই কি নাম্বারগুলো মূলত অ্যাফিলিয়েট গ্যাম্বলিংয়ে জড়িতদের পরিচয় বহন করে।

গবেষণায় অন্তত চারটি চক্র বা নেটওয়ার্ক দেখা গেছে যারা প্রতিদিন একই পোস্ট ও একই লিংক শেয়ার করে থাকে। যেমন, এমএন মিডিয়া, ক্রিয়েটিভ মাইন্ডস, মুনমুন, আজাইরা পিপল, রিনা আক্তার, গোল্ডেন ভিউ, স্নেহা পল, গোল্ডেন ভিউ পেজগুলো প্রতিদিন খুব কাছাকাছি সময়ে পাত্রচাই প্রচারণার পোস্টগুলো করে থাকে।

ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারি আটক: ৫০ পিস ইয়াবা জব্দ

মোঃ মিজানুর সরকার টাঙ্গাইল প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:০১ এএম
ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারি আটক: ৫০ পিস ইয়াবা জব্দ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে উপজেলার ফসলান্দি এলাকার ইব্রাহীম খাঁ সরকারি কলেজের ২নং গেটের পাশের একটি নির্মাণাধীন দোতলা ভবনে মাদক কেনাবেচার সময় শাকের আলী (৩৭) কে আটক করা হয়। সে ফসলান্দি গ্রামের শুকুর হাজীর ছেলে। অপর জন মুন্নাফ (৫২) মাটিকাটা গ্রামের আনছের আলীর ছেলে, তাকে তার নিজ এলাকা মাটিকাটা থেকে আটক করা হয়। দুই জনকে মাদক দ্রব্য আইনে রবিবার ৭ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভূঞাপুর থানা পুলিশের একটি অভিযানিক দল দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়। উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে তার দেহ তল্লাশি করা হলে, তার পরিহিত কালো ট্রাউজারের ডান পকেট থেকে একটি সাদা পলিথিনে মোড়ানো ৫০ পিস হালকা কমলা রঙের ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়। ডিজিটাল পরিমাপক যন্ত্রে এর ওজন ৫ গ্রাম এবং আনুমানিক বাজার মূল্য ১৫ হাজার টাকা বলে জানা যায়।স্থানীয় দুই সাক্ষী এবং একজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে জব্দ তালিকা তৈরি করে আলামত জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শাকের আলী দাবি করে, এই ইয়াবা ট্যাবলেটগুলি সে মুন্নাফের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ মুন্নাফকেও তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। জানা যায়, আটককৃত উভয় আসামীর বিরুদ্ধেই আগে একাধিক মামলা রয়েছে। শাকের আলীর বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা রয়েছে। মুন্নাফের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, দ্রুত বিচার আইন এবং দণ্ডবিধির ধারায় মোট পাঁচটি মামলা বিচারাধীন আছে।

স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, এই দুই জন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং তারা যুবসমাজসহ সাধারণ মানুষকে মাদকের জালে ফেলছে। এ-ই বিষয়ে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিনিময়যোগ্য নয় শিশুপ্রাণ: ভূঞাপুরে মানবিকতার টোলবাজি

মোঃ আব্দুল হান্নান মিলন তালুকদার প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২:৫৭ পিএম
বিনিময়যোগ্য নয় শিশুপ্রাণ: ভূঞাপুরে মানবিকতার টোলবাজি

ভূঞাপুরে যমুনা সেতুর আঞ্চলিক সড়কের জিগাতলা নামক একটি স্থানে সংঘটিত এক করুণ ঘটনা আমাদের জাতীয় বিবেকের মূলে কুঠারাঘাত করেছে। মাত্র দশ বা পাঁচ টাকার জন্য-পথচারীদের, সম্ভবত নিরীহ শিশুদের পর্যন্ত ছুরিকাঘাতের এই চিত্র আমাদের সমাজের এক শ্রেণির মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের যে গভীরতা ও নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে, তা ভাষাহীন করে দেয়। এ কেবল একটি আইনি অপরাধ নয়, এ হল আমাদের সামষ্টিক মনুষ্যত্বের বিপর্যয়ের প্রতীকী অভিব্যক্তি। যেখানে অবকাঠামো উন্নয়ন ও মানবিকতার বিপর্যয় মিলিত হয় এই নির্মমতা যে স্থানে সংঘটিত, তা নিছক কাকতালীয় নয়। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকা দীর্ঘদিন যাবৎ যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম দুরবস্থা ও জনদুর্ভোগের কেন্দ্রস্থল। প্রধান মহাসড়কে যানজট এড়াতে উত্তরবঙ্গ থেকে আগত যানবাহনগুলোকে প্রায়শই ভূঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক সড়কের ২৯ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। এই বর্ধিত পথেও পাথাইলকান্দি, সিরাজকান্দি, ন্যাংড়া বাজার, ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ডের মতো এলাকায় যানজট ও ধীরগতির যন্ত্রণা পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। এমনকি সাম্প্রতিক সময়েও যমুনা সেতুর আগে ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহন ধীরগতিতে ও থেমে থেমে চলাচল করছে। একদিকে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলেও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রেল সংযোগ, অন্যদিকে দুর্বল তদারকিতে বারবার দূর্ঘটনাকবলিত সেতু-এসব দৃশ্যপট আমাদের সামনে অবকাঠামোগত সাফল্য ও ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতার এক দ্বৈত চিত্র উপস্থাপন করে। কিন্তু জিগাতলার ঘটনা আমাদের দেখিয়ে দিল, এই ব্যবস্থাপনাগত ও নৈতিক ব্যর্থতা কখনও কখনও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পথচারীদের হাতে ছুরে ফেলা উরটাকা ধরতে কমল মতি শিশু দের ব্যাবহার করা হচ্ছে। শিশুটি প্রানের যুকি নিয়ে সে-ই টাকা ধরতে ছুটা ছুটি করতে দেখা যায়। শিশু নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের মুখে। দশ টাকার লোভে একজন মানুষের জীবন বিপন্ন করার এই মানসিকতা সমগ্র জাতির জন্য এক ভয়াবহ সতর্কবার্তা। বাংলাদেশে

শিশুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট আইন ও নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু আইনের বইয়ের পাতা এবং রাস্তার বাস্তবতার মধ্যে এক দুস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। আইন তখনই কার্যকর হয় যখন তা সমাজের প্রতিটি স্তরে মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিক চেতনার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকে। একটি শিশুর জীবনকে দশ টাকার বিনিময়যোগ্য মনে করা যে পতিত মানসিকতার পরিচয় দেয়, তার বিরুদ্ধে কেবল ফৌজদারি বিধিই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন গোটা সমাজের এক ঐক্যবদ্ধ, সাহসী ও নৈতিক অবস্থান।

জিগাতলার ঘটনার মতো যেকোনো নৃশংসতার বিরুদ্ধে শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সীমিত না থেকে সক্রিয় ও জোরালো সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলা খুবই প্রয়োজন।

আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজের আশেপাশের শিশুদের নিরাপত্তার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা। পথেঘাটে শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং প্রয়োজনে সামাজিকভাবে বাধা দেওয়া। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ, সহমর্মিতা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধার শিক্ষা জোরদার করা খুবই প্রয়োজন।

এধরণের ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে একটি উদাহরণ স্থাপিত হয় যে শিশুর প্রতি সহিংসতার কোনো সহ্যযোগিতা নেই।ভূঞাপুরের এই করুণ ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রকৃত উন্নয়ন শুধু সেতু, সড়ক বা রেললাইনে মাপা যায় না। প্রকৃত উন্নয়নের মাপকাঠি হল, একটি শিশু তার বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে কতটা নির্ভয়ে ও নিরাপদে হাঁটতে পারে। আসুন, আমরা সম্মিলিত কণ্ঠে বলি-একটি শিশুর প্রাণ, একটি পরিবারের ভবিষ্যৎ, আমাদের জাতির সম্ভাবনা, কোনোভাবেই দশ কিংবা পাঁচ টাকার বিনিময়যোগ্য নয়। আমাদের সমবেত সচেতনতাই পারে এই নৈতিক টোলবাজি রোধ করতে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।

টাঙ্গাইলে বিরল দৃষ্টান্ত: বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আপন দুই ভাই পিন্টু ও টুকু

মোঃ খন্দকার আউয়াল ভাসানী, টাঙ্গাইল প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:০৮ এএম
টাঙ্গাইলে বিরল দৃষ্টান্ত: বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আপন দুই ভাই পিন্টু ও টুকু

টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এক অভূতপূর্ব ঘটনা—একই দলে আপন দুই ভাইয়ের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে দুই ভাইকে প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে পাঠিয়েছে। টাঙ্গাইল–২ (ভূঞাপুর–গোপালপুর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। দীর্ঘ ১৬ বছরের কারাবরণ শেষে তিনি ইতোমধ্যে “মজলুম জননেতা” হিসেবে এলাকায় বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছেন। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও তৃণমূল রাজনীতিতে তার সক্রিয় ভূমিকা মনোনয়নের পর এলাকা জুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে। অন্যদিকে টাঙ্গাইল–৫ (সদর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তার ছোট ভাই, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। ছাত্রদল থেকে রাজনীতির দীর্ঘ পথচলায় টুকু বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত মুখ। তার মনোনয়ন প্রাপ্তিতে দলে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের কাছে তিনি যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে বিবেচিত। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দুই ভাইয়ের একসাথে মনোনয়ন পাওয়া শুধু টাঙ্গাইলেই নয়, সারাদেশেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনাকে বহুজন ‘টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই ভূঞাপুর, গোপালপুর ও টাঙ্গাইল শহরে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়। দলীয় কার্যালয়গুলোতে ভিড়, মিষ্টি বিতরণ এবং শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। স্থানীয় নেতাদের আশা—পিন্টু ও টুকুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, জনপ্রিয়তা ও মাঠ-পর্যায়ের কর্মক্ষমতা দলকে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করবে এবং টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক সমীকরণেও গুরুত্বপূর্ণ বদল আনতে পারে। বিএনপির তৃণমূল মনে করছে, দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবেই দুই ভাইয়ের এ মনোনয়ন দলীয় সংগঠনকে সামনে নতুন প্রাণশক্তি দেবে এবং নির্বাচনী প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।