বগুড়ার কৃতি সন্তান সালমান হৃদয়: অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী, পরিচালক, নাট্যশিল্পী ও গীতিকারের বহুমুখী প্রতিভা

 
                                                                    
বগুড়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একজন বহুমুখী প্রতিভার পরিচয় হিসেবেই পরিচিত সালমান হৃদয়। ৬ অক্টোবর ১৯৮৮ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন মৃত আব্দুস সাত্তার মোল্লা ও মোছাঃ ফাতেমা তুজ জহুরার একমাত্র সন্তান হিসেবে। জন্মস্থান ছিল সাবেক নিশিন্দারা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিশিন্দারা কারবালা পাড়া, যা বর্তমানে বগুড়া পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মায়ের অতি আদরের সন্তান ছিলেন সালমান।
শৈশব থেকেই খেলাধুলায় তার বিশেষ আগ্রহ ছিল। ক্রিকেট ও ফুটবলে জেলা পর্যায়ে খেলার মাধ্যমে তিনি নিজেকে পরিচিত করেছিলেন। ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলংকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রস্তুতি ম্যাচে বগুড়া জেলা দলের হয়ে অংশগ্রহণ করেন। তবে ২০০৯ সালে হার্নিয়ার কারণে খেলাধুলার জীবন শেষ হয়। কিন্তু স্বপ্ন ও প্রতিভার পথে থামেননি তিনি।
সালমান হৃদয়ের মঞ্চ ও অভিনয় জীবনও সমানভাবে সমৃদ্ধ। ১৯৯৭ সালে তিনি আন্তঃস্কুল সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় একক অভিনয়ে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে বগুড়া জেলা, রাজশাহী বিভাগ এবং জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি পান। ২০০৫ সালে উত্তম আকাশ পরিচালিত ‘জজের ছেলে কেন মাস্তান’ চলচ্চিত্রে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান, যদিও প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার পর ছবিটির প্রযোজকের মৃত্যুতে কাজ অসমাপ্ত থাকে। অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা ও দৃঢ় মনোবল তাকে সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
২০০৯ সালে চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ অডিশনে সেরা চল্লিশের একজন হিসেবে নির্বাচিত হন। এরপর বিভিন্ন নাটক, গানের ভিডিও ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেকে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ২০২২ সালে নাট্য পরিচালক শাফিন আহমেদের হাত ধরে একুশে টেলিভিশনের ‘লাভ স্পোর্টস’ নাটকের মাধ্যমে তিনি পুনরায় অভিনয়ে ফিরেছেন।
বর্তমানে সালমান হৃদয় একজন সফল নাট্য পরিচালক, গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী। ১৮টি নাটকে অভিনয় করেছেন এবং তার গাওয়া ১৭টি গান প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য ‘সবার জন্য শিক্ষা’ ধারাবাহিক নাটক নির্মাণের কাজেও তিনি এগিয়ে চলেছেন।
সালমানের ব্যক্তিগত জীবনও সমান অনুপ্রেরণামূলক। স্ত্রী রেজভীর সঙ্গে সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে নতুন গান ও নাটকের শুটিংয়ের কাজ চলছে, যা দর্শকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসবে।
বহুমুখী প্রতিভা, দৃঢ়সংকল্প ও সংস্কৃতিমনা মনোভাবের কারণে সালমান হৃদয় বগুড়া জেলা এবং দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একজন অনন্য প্রতিভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তার জীবন কেবল একজন শিল্পীর নয়, বরং নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
 
         
        
 
                                 
                                     
                                    



 
                                        
 
                             
                             
                             
                             
                            

