রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতার পুনর্গঠনে ৩১দফার নবম দফার তাৎপর্য


রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতার পুনর্গঠনে ৩১দফার নবম দফার তাৎপর্যঃ
বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফার নবম দফাটি— “স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণে সকল রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন ও শক্তিশালীকরণ”—একটি রাষ্ট্রনৈতিক অঙ্গীকার, যা আধুনিক গণতান্ত্রিক শাসনের ভিত্তিকে পুনর্নির্মাণের ঘোষণা হিসেবে দেখা উচিত।
বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো দীর্ঘদিন ধরে আমলাতান্ত্রিক প্রভাব, রাজনৈতিক দখলদারিত্ব ও জবাবদিহির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশন বা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো সংস্থাগুলো জনআস্থার সংকটে পড়েছে। এই বাস্তবতায় বিএনপির নবম দফা একটি নীতিগত পুনর্গঠনের রূপরেখা দেয়—যেখানে স্বচ্ছতা কেবল প্রশাসনিক শব্দ নয়, বরং নীতিনির্ধারণের ভিত্তি।
এই দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাধীন নিয়োগ কমিশন, কার্যকর সংসদীয় কমিটি, নিরপেক্ষ অডিট ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক সংস্কারের সুযোগ তৈরি হবে। এর ফলে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
গণতন্ত্র তখনই টিকে থাকে, যখন প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয় নয়, রাষ্ট্রীয় স্বার্থে পরিচালিত হয়। নবম দফা সেই বাস্তবতার দিকে ফেরার আহ্বান জানায়—যেখানে রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ হবে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক।
অতএব, নবম দফাটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়; এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপান্তরের দর্শন—যা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভিত্তি আবারও দৃঢ় ও আধুনিক রূপ পাবে।