রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

হাকিকুল ইসলাম খোকন

জনগণের মেয়র’ বনাম ‘অভিজ্ঞ প্রশাসক’ কাকে বেছে নেবে সিটিবাসী

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৩২ এএম | 72 বার পড়া হয়েছে
জনগণের মেয়র’ বনাম ‘অভিজ্ঞ প্রশাসক’ কাকে বেছে নেবে সিটিবাসী

নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনের সময় যতই এগিয়ে আসছে, ততোই স্পষ্ট হচ্ছে এক পুরনো সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভাজন। অর্থাৎ জন্মসূত্রে নিউইয়র্কার বনাম নতুন প্রজন্মের অভিবাসী ভোটারদের দ্বন্দ্ব। শহরের চরিত্র, শ্রেণি, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির এই ফাঁকফোকর এখন পুরো নির্বাচনের কেন্দ্রবিন্দুতে। উগান্ডায় জন্ম নেয়া ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম জোহরান মামদানি বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত মুখ। তাঁর উত্থান শুধু স্থানীয় রাজনীতিতে নয়, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় দিকনির্দেশনা নিয়েও নতুন বিতর্ক ছড়িয়েছে।
জুন মাসের ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমোকে ৭ পয়েন্টে হারিয়ে স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান জোহরান মামদানি চমক দেখান।
তরুণ ও নবাগত ভোটারদের মধ্যে তিনি বিশাল সমর্থন পান- বিশেষত ব্রুকলিনের বুশউইক, উইলিয়ামসবার্গ ও বেডফোর্ড-স্টাইভেসান্টের মতো গেন্ট্রিফায়েড এলাকায়।
এই এলাকাগুলোতে বসবাসরত বহু তরুণ পেশাজীবী, শিল্পী ও প্রযুক্তি-খাতের কর্মী মামদানির প্রগতিশীল নীতিকে নতুন প্রজন্মের কণ্ঠস্বর হিসেবে দেখছেন।
অন্যদিকে, ক্যুমো শক্ত সমর্থন পেয়েছেন বহির্বোরোর (কুইন্স, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কস ও স্টাটেন আইল্যান্ড) কৃষ্ণাঙ্গ ও লাতিনো অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে। যেখানে গেন্ট্রিফিকেশন তুলনামূলক কম হয়েছে।
তাছাড়া ম্যানহাটনের আপার ইস্ট সাইড ও আপার ওয়েস্ট সাইডের মতো ঐতিহ্যবাহী, উচ্চবিত্ত এলাকাতেও ক্যুমো এগিয়ে আছেন।
এই অঞ্চলগুলোর ভোটাররা তুলনামূলকভাবে বয়স্ক, শহরের অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্থিতিশীল নেতৃত্বের পক্ষে।
সিবিএস নিউজের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, যারা গত ১০ বছরের মধ্যে নিউইয়র্কে এসেছেন, তাদের মধ্যে মামদানি ক্যুমোর চেয়ে ৫১ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। আর যারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে শহরে আছেন, তাদের মধ্যে এই ব্যবধান কমে ১৯ পয়েন্টে রয়েছে।
জন্মসূত্রে নিউইয়র্কারদের মধ্যে ব্যবধান আরো কম, যা শহরের রাজনৈতিক মানচিত্রে এক নতুন বাস্তবতা তৈরি করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিভাজন কেবল প্রজন্ম বা পাড়া পরিবর্তনের নয়- এটি শহরের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পুনর্গঠনেরও প্রতিফলন।
নতুন প্রজন্ম যেখানে ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, গণপরিবহন ভর্তুকি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের মতো ইস্যুতে সরব, সেখানে পুরনো বাসিন্দারা নিরাপত্তা, ট্যাক্স ও গৃহহীনতা কমানোয় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
এক বিশ্লেষকের ভাষায়, এই নির্বাচন কেবল একজন মেয়র নয়, বরং নিউইয়র্কের আত্মা কে ধারণ করবে- সেই প্রশ্নেরও উত্তর খুঁজছে।
জোহরান মামদানি তাঁর প্রচারে নিজেকে ‘জনগণের মেয়র’ হিসেবে তুলে ধরছেন। অন্যদিকে ক্যুমো নিজেকে ‘অভিজ্ঞ প্রশাসক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। আসছে নভেম্বরের মেয়র নির্বাচন এখন নিউইয়র্ক সিটির দুই ভিন্ন বাস্তবতার সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে- একদিকে দ্রুত পরিবর্তিত তরুণ ও প্রগতিশীল শহর, অন্যদিকে পুরনো, অভিজ্ঞ ও ঐতিহ্যনির্ভর শহর। যে প্রার্থী এই দুই দুনিয়াকে এক সেতুবন্ধনে আনতে পারবেন, তিনিই নির্ধারণ করবেন নিউইয়র্কের আগামী অধ্যায়।

মামদানি জিতলে নিউইয়র্ক দখল করবেন
ট্রাম্প, বিস্ফোরক মন্তব্য ক্যুমোর
মামদানির প্রচার শিবির দ্রুত ক্যুমোর বক্তব্যের জবাব দিয়ে জানায়, আসলে ‘ট্রাম্প ও তাঁর ধনী দাতারা ক্যুমোকেই তাঁদের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে দেখছেন।’
এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ট্রাম্প যখন লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড পাঠিয়েছিলেন, ক্যুমো তখন নিউইয়র্কবাসীকে আতঙ্কিত না হতে বলেছিলেন। ট্রাম্প যখন অভিবাসী প্রতিবেশীদের দেশছাড়া করছিলেন, তখন ক্যুমো তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক পরামর্শে ব্যস্ত ছিলেন।
তাদের বক্তব্য, নিউইয়র্কবাসী জানেন- অ্যান্ড্রু ক্যুমো ট্রাম্পের জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে দেবেন, আর মামদানি হবেন সেই মেয়র, যিনি ট্রাম্পের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়বেন এবং নাগরিকদের জন্য আরো সাশ্রয়ী শহর গড়বেন।
ক্যুমো এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তিনি ট্রাম্পের পছন্দের প্রার্থী নন এবং নিউইয়র্ক টাইমস-এ প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনও মিথ্যা। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে নির্বাচনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ক্যুমোর মতে, এখন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে এক ধরণের গৃহযুদ্ধ চলছে- একদিকে ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্টরা, অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী ডেমোক্র্যাটরা।
তিনি বলেন, ‘মামদানি ও তাঁর গ্রুপের লক্ষ্য- পার্টিকে চরম বামপন্থায় ঠেলে দেয়া, যা মূল ডেমোক্র্যাটিক আদর্শ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।’
মেয়র এরিক অ্যাডামস নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত তিনজন- ক্যুমো, মামদানি ও রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়ার মধ্যে।
ক্যুমো বলেন, অ্যাডামস সরে দাঁড়িয়ে মহানুভবতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু এখন নিউইয়র্কবাসীর উচিত মামদানির জয়ের আশঙ্কা নিয়ে চিন্তিত হওয়া, কারণ এর ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে।
গভর্নর পদ ছেড়ে দেয়ার পর থেকে ক্যুমো নানা বিতর্কে জর্জরিত। ২০২১ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ১১ নারীর ওপর যৌন হয়রানির অভিযোগে তদন্ত হয়, যদিও তিনি কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত হননি।
‘দ্য ভিউ’ অনুষ্ঠানে ক্যুমো বলেন, ‘ওই সময় আমাকে কঠিন শিক্ষা নিতে হয়েছে। এখন আমি অনেক বেশি সতর্ক- কোনো রসিকতা বা মন্তব্য করার আগে শতবার ভাবি।’
অন্যদিকে, মামদানি ইতিমধ্যেই গভর্নর ক্যাথি হোকুলসহ বহু প্রভাবশালী ব্যক্তির সমর্থন পেয়েছেন। জরিপে দেখা যাচ্ছে, এখনও তিনি এগিয়ে আছেন।
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচন ঘিরে এখন এক জটিল ও তীব্র রাজনৈতিক লড়াই শুরু হয়েছে। একদিকে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমোর ‘ট্রাম্প আতঙ্কের’ বক্তব্য, অন্যদিকে মামদানির শিবিরের ‘প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতি’- এই দ্বন্দ্বই আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে নিউইয়র্কের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।

মামদানিকে ঘিরে ডেমোক্র্যাটশিবিরে অস্থিরতা
মামদানিকে ঘিরে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরেও তীব্র অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। পার্টির শীর্ষ নেতাদের একাংশ প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে অবস্থান না নেয়ায় স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বিভক্তি আরো স্পষ্ট হচ্ছে।
অ্যাক্সিওস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্কের অনেক ডেমোক্র্যাটিক নেতা অভিযোগ করেছেন, পার্টির নেতৃত্ব- বিশেষত ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কমিটির (ডিএনসি) চেয়ারম্যান কেন মার্টিন- মামদানির প্রচারে যথেষ্ট সহায়তা করছেন না।
তাঁদের দাবি, মার্টিন ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা অতিরিক্ত সতর্ক এবং মামদানির প্রগতিশীল অবস্থান নিয়ে বিব্রত।
নাম প্রকাশ না করে একজন নেতা বলেন, কেন মার্টিনের টিম কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না। তাঁরা খুবই সীমাবদ্ধভাবে কাজ করছেন।
ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে পরিচয় দেয়া মামদানি নিউইয়র্কের প্রগতিশীল রাজনীতিতে নতুন মুখ। তবে তাঁর কিছু প্রতিশ্রুতি পার্টির ভেতরেই তীব্র বিতর্ক তৈরি করেছে।

মামদানির কিছু বক্তব্যে অস্বস্তিতে
কতিপয় ডেমোক্র্যাট নেতা
নিউইয়র্কে সফররত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করার অঙ্গীকার, সরকারি অর্থে পরিচালিত গ্রোসারি স্টোর স্থাপন, ভাড়া-নিয়ন্ত্রিত অ্যাপার্টমেন্টে ভাড়া স্থগিত রাখা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘গিফটেড’ শিক্ষা কর্মসূচি বাতিল, অতীতে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগকে ‘বর্ণবাদী ও জননিরাপত্তার জন্য হুমকি’ বলে আখ্যা দেওয়া- এ ধরনের অবস্থান জাতীয় পর্যায়ের অনেক ডেমোক্র্যাটকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। বিশেষ করে যারা মনে করেন, তাঁর বক্তব্য ইসরায়েল-বিরোধী বা অতিবাম ঘরানার ইমেজ তৈরি করছে। প্রাইমারিতে জয়ী হওয়ার পর ডিএনসি চেয়ারম্যান কেন মার্টিন মামদানিকে অভিনন্দন জানালেও পরে তাঁর প্রচারে সরাসরি আর অংশ নেননি। এমনকি অভিনন্দন বার্তা প্রকাশের ক্ষেত্রেও ডিএনসি নির্বাহী পরিচালক রজার লাও-এর চাপের পরই তা প্রকাশিত হয় বলে সূত্র জানিয়েছে। রজার লাও বলেন, ডিএনসি সবসময় প্রাইমারি ভোটারদের সিদ্ধান্তের পাশে থাকে। ভোটাররা যখন মামদানিকেই বেছে নিয়েছেন, তখনই আমরা তাঁকে সমর্থন জানিয়েছি।
নিউইয়র্ক স্টেট ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান জে জ্যাকবস গত সেপ্টেম্বর মাসে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন যে, তিনি মামদানিকে সমর্থন করবেন না। তাঁর ভাষায়, ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্টদের প্ল্যাটফর্ম ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নীতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তার এই অবস্থান দলেই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তবে নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের সাবেক স্পিকার ক্রিস্টিন কুইন প্রকাশ্যে মামদানির পক্ষে অবস্থান নেন এবং বলেন, জ্যাকবসের অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়।
মামদানির সাফল্য কংগ্রেসনাল ডেমোক্র্যাটিক নেতৃত্বকেও বিভক্ত করেছে।
নিউইয়র্কের দুই শীর্ষ নেতা- হাউস মাইনরিটি লিডার হাকিম জেফরিজ ও সিনেট মাইনরিটি লিডার চাক শুমার এখন পর্যন্ত মামদানিকে সমর্থন করেননি।
অন্যদিকে, সিনেটর ক্রিস্টিন গিলিব্র্যান্ডও নীরব। তবে নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল আনুষ্ঠানিকভাবে মামদানির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
একদিকে প্রগতিশীল ভোটারদের উচ্ছ্বাস, অন্যদিকে দলীয় নেতৃত্বের অস্বস্তি- এই দুই বাস্তবতার মাঝখানে মামদানির প্রচার এখন পুরো ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জন্য এক ধরনের পরীক্ষা ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ক্যুমোকে ভোট দেবেন রিপাবলিকান মুকেসি
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে এক চমকপ্রদ অবস্থান নিয়েছেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও প্রবীণ রিপাবলিকান নেতা মাইকেল বি. মুকেসি।
তিনি ঘোষণা করেছেন, দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তে তিনি ভোট দেবেন অ্যান্ড্রু ক্যুমোকে। ক্যুমো ডেমোক্র্যাট হলেও এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মুকেসি বলেন, এবারের নির্বাচন দলীয় আনুগত্যের নয়, শহর রক্ষার লড়াই। মাইকেল মুকেসি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে রিপাবলিকান পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি রোনাল্ড রিগান প্রশাসনে ফেডারেল জাজ এবং পরে জর্জ ডব্লিউ বুশ সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ইহুদি ভোটারদের আস্থা ফেরানোর চেষ্টা মামদানির
ইসরায়েল নিয়ে মামদানির অবস্থানের কারণে যে সংশয় ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, তা প্রশমিত করতেই তিনি ইহুদি নেতৃবৃন্দ ও কমিউনিটির সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে যাচ্ছেন।
আগস্টের মাঝামাঝি ব্রুকলিনে এক ইহুদি চলচ্চিত্র পরিচালকের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় সীমিত-পরিসরের এক সভা। এই সভায় অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। যাঁদের অর্ধেকের বেশি ছিলেন মডার্ন অর্থডক্স ধারার ইহুদি। তাদের অনেকেই মামদানির প্রগতিশীল রাজনীতির প্রতি সংশয় প্রকাশ করেন।
একপর্যায়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, তাঁর প্রশাসনে কি পুলিশকে সিনাগগ পাহারার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হবে? জবাবে মামদানি বলেন, ‘না, সিনাগগগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে। প্রয়োজনে পুলিশ মোতায়েন করা হবে।’ একজন অতিথি জানান, তিনি এক ইহুদি নারীর হয়রানির ঘটনার কথা তুললে মামদানি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বলেন, ইসরায়েল বা ফিলিস্তিনের সমর্থকরা নিজেদের শহরেই নিরাপদে চলাচল করতে না পারলে তাদের কেউই লাভবান হয় না ।
তিনি ইসরায়েলবিরোধী বয়কট আন্দোলনের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করলেও শহরের ইসরায়েল ডে প্যারেডে পুলিশি নিরাপত্তা বহাল রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
মামদানি একদিকে প্রগতিশীল ইহুদি রাজনীতিকদের সঙ্গে কাজ করছেন, অন্যদিকে রক্ষণশীল ও হ্যাসিডিক নেতাদের সঙ্গেও দেখা করছেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তিনি উইলিয়ামসবার্গের সাটমার কমিউনিটির দুই বিশিষ্ট রাব্বির সঙ্গে বৈঠক করেন।
রোশ হাশানায় তিনি ব্রুকলিনের প্রগতিশীল সিনাগগ কোলট খায়েনুতে উপস্থিত ছিলেন, আর ইয়োম কিপুর উপলক্ষে ল্যাব শুল-এর প্রার্থনায় যোগ দেন। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেসম্যান জেরি ন্যাডলার এবং সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার। তারা দুজনেই ইহুদি এবং মামদানির প্রকাশ্য সমর্থক। নিউইয়র্ক জ্যুইস অ্যাজেন্ডার নির্বাহী পরিচালক ফিলিসা উইজডম বলেন, ইহুদি সমাজের মধ্যে মামদানিকে নিয়ে একক কোনো অনুভূতি নেই। কেউ কেউ তাঁকে আশাবাদীভাবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। তবে প্রার্থী হিসেবে তিনি যে বৈচিত্র্যময় কমিউনিটির সঙ্গে সংলাপে আগ্রহী, সেটা ইতিবাচক। তবু বাস্তবতা হলো- বামঘেঁষা ভোটারদের মধ্যেও মামদানিকে ঘিরে কিছুটা অস্বস্তি রয়েছে। বিশেষত ইসরায়েলবিরোধী মন্তব্যের কারণে। চাপের মুখে মামদানি ইতোমধ্যেই হামাসের নৃশংসতার নিন্দা করেছেন এবং ‘গ্লোবালাইজ দ্য ইন্তিফাদা’ স্লোগান ব্যবহার না করতে সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন।এখন সবার নজর আগামী ৪ নভেম্বরের দিকে। সেদিনই নির্ধারিত হবে- কে পরবেন বিজয়মাল্য- জোহরান মামদানি, নাকি অ্যান্ডু ক্যুমো।

সুলেখা আক্তার শান্তা

ভাঙনের পর গাঁথন

সুলেখা আক্তার শান্তা প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:৩০ এএম
ভাঙনের পর গাঁথন

ইমরান ঘুমিয়ে ছিল। হঠাৎ করেই চিৎকার-চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায় তার। চোখ কচলাতে কচলাতে বাইরে এসে দেখে, তার বড় ভাই জামাল, স্ত্রী শেফালীকে মারছে। ভাইয়া, ভাবিকে মারেন কেন? জামাল রাগ শরীর নিয়ে বলে, আমার কথা শোনে না। শুনে না বলেই কি গায়ে হাত তুলবেন?
শেফালী কাঁদতে কাঁদতে বলে, কী কথা শুনি না আমি? যে স্বামী গায়ে হাত তোলে, তার কথা শোনার দরকার কী? আমি আর পারছি না। রান্না ঝাড়ু মারি, আমি আর রান্না করতে পারব না। গাটা আর চলছে না। আমি শেষ। ইমরান এগিয়ে এসে বলল, ঠিক আছে ভাবি, এবার থামেন। ভাইরে আমি বলছি। তুমি ভালো করে বোঝাও তোমার ভাইরে। আচ্ছা যেটা বলার আমি বলছি।
শেফালী বলল, তোমার ভাইরে ভালো করে বলো। এরপর আমারে কিছু বললে আমি চলে যাব বাপের বাড়ি। জামাল কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল, আমিও চাই তুই বাপের বাড়ি চলে যা। তুই থাকলেই শুধু ঝামেলা। শেফালী চোখ সরিয়ে বলল, ঠিক আছে, আমি চলে যাই। ইরমান একটু নরম হয়ে বলল, ভাবি, তোমারে বললাম, তুমি থামো। ভাই যাই বলুক, তার জন্য তুমি চলে যাবে? শেফালী চুপ, চোখে অশ্রু। ইমরান ঘরের কোণে দাঁড়িয়ে আছে। শেফালী তাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার ভাই কী বলে, তুমি শোনো না? তোমাদের এই ক্যাচাল দেইখা আমার নিজের বিয়ের ইচ্ছাটাই মরে গেছে। জামাল মুখ নিচু করে থাকে। কিছু বলে না।
শেফালী চোখের পানি আঁচলে মুছে, ধীরে বলে ইমরানকে, দেবর, আমি তোমার জন্য ভালো মেয়ে দেখে দেব। তবে একটা কথা মনে রাখবা। তোমার ভাবির মতো আর যেন কাউকে চোখের পানি ফেলতে না হয়। ইমরান মাথা তোলে, চোখে দৃঢ়তা। ভাবি, আমি একটা কথা বলি, আমি আমার স্ত্রীকে কখনও মারব না। আমি তাকে সুখেই রাখব। শেফালী একটু হেসে দেয়। তা জানি। তুই আলাদা। তোমার ভিতরটা ভালো।
ইমরানের বিয়ের পর, জীবন যেন নতুন আলোয় রঙিন হয়ে উঠলো ইমরানের কাছে। লিজা তার কাছে শুধু স্ত্রী নয়, যেন এক হৃদয়বন্ধু, এক নিঃশর্ত ভালোবাসার প্রতীক। ইমরান প্রতিদিন নিজের ভিতর থেকে এই প্রার্থনাই করে, লিজার যেন কখনও কোনো অভিযোগ না থাকে তার প্রতি। আমি চাই তার সব ইচ্ছা পূরণ করতে।
এক সন্ধ্যাবেলায়, চা হাতে বারান্দায় বসে লিজা হেসে বলল, তুমি তো আমার সব কথা শোনো? সব চাওয়া পূরণ করো। ইমরান জবাবে বলে, না শোনার কোনো কারণ নেই। এক মেয়ে যখন স্বামীর ঘরে আসে, তার বুকভরা আশা থাকে। আর সেই আশা পূরণ করা স্বামীর কর্তব্য। লিজার চোখে তৃপ্তি। সে বলে, তাহলে তো তুমি আমায় সত্যিই ভালোবাসো। বলো, তুমি কি আমার কথা শুনবে?
হ্যাঁ শুনব, উত্তর ইমরানের।
তবে একটা কথা বলি, তুমি বিদেশে যাবে।
চমকে ওঠে ইমরান। বিদেশ!
আমি চাই তুমি বিদেশ যাবে।
বিদেশ? ধীরে বলে সে, তুমি চাইলে যাব। কিন্তু জানো তো, তোমাকে রেখে আমার কোনো কিছু ভালো লাগে না।
লিজা বলে, আমি চাই তুমি যাও। আমার স্বপ্ন, আমার ভবিষ্যৎ সব তোমার ওপর ভরসা করেই সাজানো।
ইমরান একটু থেমে বলল, তোমার স্বপ্ন যদি বিদেশে যাওয়ার সঙ্গে জড়িত হয়, তাহলে আমি সেই পথেই হাঁটব।
ইমরান পাড়ি দেয় বিদেশে। নতুন দেশের আকাশে, সে ভবিষ্যতের সন্ধানে ছুটে চলে। তার মনের গোপনে একটাই ভাবনা, লিজাকে খুশি করা। বেতন হাতে পেলেই লিজার কথা ভাবে। বিদেশি মুদ্রার প্রতিটি টাকাই যেন তার ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। পাঠিয়ে দেয় লিজার কাছে, নাও, তুমি যেভাবে খুশি, খরচ করো।
লিজা টাকা পেয়ে আনন্দে উচ্ছ্বসিত। মার্কেট করে, বন্ধুর সঙ্গে রেস্টুরেন্টে খায়। ফোনে ইমরান বলে, তোমার মনের আশা পূরণ করতে পারি আমি?
লিজা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, হ্যাঁ, তুমি পারো। আমার কথাগুলো শুনো বলেই তো তোমায় ভালো লাগে। তবে বেশি ফোন কোরো না, বলে, লিজা। ইমরান হেসে ফেলে, কথা না বললে বউয়ের সঙ্গে, তাহলে কার সঙ্গে বলবো? ফোন করে বেশি টাকা খরচ করার দরকার নেই। টাকা যদি খরচ না করি তোমার জন্য, তাহলে কার জন্য করব?
বহু বছর ধরে প্রবাসে দিন কাটাচ্ছে ইমরানের। ক্লান্তি, একাকিত্ব, আর স্মৃতির ঘোরে সে বারবার দেশে ফিরতে চায়। এখন সে আর থাকতে চায় না বিদেশের নিঃস্ব শূন্যতায়, সে দেশে ফিরতে চায়।
ফোনে লিজাকে জানায়, আমি এবার দেশে ফিরতে চাই। মনটা আর থাকতে চায় না।
লিজা হেসে বলে, দেশে আসবা? কী করতে? ওইখানে তো ভালোই আছো। দেশে এসে তো কিচ্ছু করতে পারবা না। ইমরান থেমে যায় একটু। তারপর বলে, আমি দেশে এসে একটা ব্যবসা শুরু করতে চাই। তোমার সঙ্গে জীবনের বাকিটা সময় কাটাতে চাই। লিজার উত্তর তির্যক, তুমি ব্যবসা করবা? দেশে এসে ব্যর্থ হবে। থাকো ওইখানেই। ইমরানের বুকের ভেতর যেন কিছুটা বয়ে বেড়ায়। সে বাস্তব বুঝতে পারলো। ইমরান দিনশেষে শুধু টাকা পাঠায় না, সে পাঠায় নিজের শ্রম, স্বপ্ন আর আশা। ভাবছিল, ফিরবে দেশে, পাশে থাকবে প্রিয়জন। কিন্তু লিজার কথা যেন প্রতিদিন একটু একটু করে আশাকে ঝাপসা করে দেয়। তুমি ওইখানে ভালোই আছো। যখন দরকার হবে তখন বলব আসতে, লিজার কথায় যেন শুধু নির্দেশ, কোনো উষ্ণতা নেই।
ইমরানের জমানো টাকা দিয়ে লিজা জমি কিনে নিজের নামে। ইমরান জিজ্ঞেস করে, টাকাটা দিয়ে তুমি জমি কিনছো, ভালো কথা। কিন্তু তুমি তো আমার নামেও দিতে পারতে। লিজা রেগে যায়। জমি আমার নামে যে কথা তোমার নামেও সেই একই কথা! তুমি চিন্তা কোরো না, জমি কোথাও যাবে না। তবুও, কোথায় যেন একটা দাগ পড়ে যায় হৃদয়ের পাতায়। জমি আর বিশ্বাস দুটোই যেন এখন প্রশ্নের মুখে।
লিজার কথায় ভেতরে ভেতরে চুপসে যায় ইমরান। এত বছর বিদেশে থেকে যা অর্জন করেছে, সে সবই তো পাঠিয়েছে লিজার কাছে। বাড়ি, জমি, সঞ্চয় সবই তার শ্রম আর ঘাম দিয়ে গড়া। ইমরান কাঁপা গলায় বলে সে। তোমার নামে নিছো, নাও। বিদেশ থেইকা টাকা-পয়সা যা কামাইলাম, সবই তো তোমার কাছে। তোমার ইচ্ছা, তুমি যেটা ভালো বোঝো, সেটাই করো।
লিজা একটু থেমে বলে, শোনো, একটা কথা জানাই, তোমার টাকা-পয়সা আমার দ্বারা নষ্ট হবে না। এই আশ্বাস যেন ইমরানের বিষণ্নতায় এক বিন্দু শান্তি দেয়। কিন্তু জমি শুধু এক টুকরো মাটি নয়, সেটাতে ছিল তার ফিরে আসার স্বপ্ন, একসাথে থাকার আশা।
ইমরান ফোন করে, বারবার। কিন্তু লিজার সাড়া নেই। পরিচিত জনেরা নানা কথা বলে, কখনো সতর্কতা, কখনো কুৎসা। তোমার বউ তো এখন অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘোরাফেরা করে। মনটা ধীরে ধীরে ভারী হয় ইমরানের। দূরদেশে রোজরাত তার মনে শুধু লিজা, আর সেই ছোট্ট সংসারের স্বপ্ন। কিন্তু লিজা কোথায় গেছে তার খবর ইমরান জানে না। একদিন খবর আসে লিজা অন্য একজনকে বিয়ে করেছে, সংসার করছে। ইমরান থমকে যায়। নিঃশব্দে ফাটে তার বুকের ভিতর আগুন। হায় হায়… এ কী সর্বনাশ হলো আমার! কাঁপা কণ্ঠে বলে সে। আমার বউ চলে গেল, আমার টাকা গেল, আমার জমিও গেল। যার জন্য এত বছর বিদেশে গলা শুকিয়ে কাজ করলাম, সেই আমারে ধোঁকা দিলো! হায়রে বিশ্বাস—কতটা নষ্ট, কতটা নিষ্ঠুর!
ভাই জামালের চোখে শুধু ভাইয়ের ভবিষ্যৎ নয়, আছে অভিজ্ঞতার আলো। সে ইমরানকে দেশে নিয়ে আসে, এবং নিজের হাতেই ছোট ভাইয়ের বিয়ে ঠিক করে দেয়।
শোন ইমরান, জামাল বলে, একজনের কাছে তো সব কিছু দিয়েছিলি টাকা, জমি, মন। এবার একটু হিসাব করে চল। নিজের ক্ষমতা নিজের কাছে রাখ। ইমরান হালকা হেসে বলে, ভাইয়া, সেই ভুল আর করব না। যা বোঝার দরকার ছিল, বুঝে গেছি। এবার অন্তরে হিসাবের খাতা খুলেছি।
বউ আসমা, শান্তশিষ্ট কিন্তু গভীর। সে স্বামী ইমরানকে বলে, শোনো? আমি সব চাই না। একটা মানুষ যতটুকু দিলে সে ভালো থাকতে পারে, ততটুকু আমাকে দিও। আমি বিশ্বাসের মূল্য বুঝি, মোহের নয়।
এই কথাগুলো যেন ইমরানের ভেতরে নতুন বিশ্বাসের বীজ বপন করে। এখন সে শুধু সম্পর্ক রাখে না, সম্পর্ক বুঝে চলতে শিখছে।
ইমরানের চোখে দুঃসহ ইতিহাসের ছায়া এখনো ঘোরে। আমার কাছে আর কিছু নাই, কাঁপা কণ্ঠে বলে সে, যেটা রোজগার করেছিলাম, সব গলে গেছে বিশ্বাসের আগুনে।
আরও একবার বিদেশের পথে পা বাড়ায় সে। তবে এবার আর আগের মতো না। বউয়ের কাছে আগের মতো টাকা পাঠায় না। পাঠালেও, প্রয়োজনের চেয়ে কম। আসমা ব্যথিত কণ্ঠে বলল, এই কিপটামি আমার ভালো লাগছে না। এইভাবে সংসার হয় না। তুমি ঠিক করো, শান্তিতে সংসার করবে কিনা? না আমাকে সাইড করে দেবে! ইমরান মাথা খারাপ হয়ে যায়, যেন আত্মদহন থেকে এক ধোঁয়া বেরিয়ে আসে, “হায় হায়… সর্বনাশ তো! একবার বউ চলে গেছে টাকা-পয়সার ভারে। এবার বউ যাবে কিপটামির কারণে।
দেশে ফিরে এসেছে ইমরান। ক্লান্ত হৃদয়ে একটাই চাওয়া আসমার, আমি একটা সুন্দর জীবন যাপন করতে চাই। আর টাকার লেনদেন নয়, একটু সুখের নিঃশ্বাস নিতে চাই। আসমা তাকিয়ে ইমরানের দিকে মৃদু হাসিতে বলে, তুমি হতাশ হয়ো না ইমরান। সব মানুষ একরকম হয় না। একজন চলে গেছে, তার মানে এই না যে সবাই একরকম। তোমার পাশে আছি তোমার পাশে থাকব। আসমার চোখে ছিল আশার দীপ্তি, আর ইমরানের চোখে ছিল যন্ত্রণার ছায়া। ইমরান বুঝে যায়, ভালোবাসা আর আস্থার জায়গায় যদি সঠিক মানুষ থাকে, তবে জীবনে সুখ আসে। তাদের জীবনে আসে একটি সন্তান। আর দুজনের মিলিত হৃদয়ে গড়ে ওঠে এক সংসার, যেটা শুধু ইট, কাঠ নয়, আত্মার স্থাপত্য।

মো : রাজিকুল ইসলাম, ​সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

সিংড়ায় প্রফেসর সাইদুর রহমানের পক্ষে জামায়াতের উঠান বৈঠক

মো : রাজিকুল ইসলাম, ​সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৮ এএম
সিংড়ায় প্রফেসর সাইদুর রহমানের পক্ষে জামায়াতের উঠান বৈঠক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থীর উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিংড়া উপজেলার ১২ নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের ভোগা গ্রামে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

​১২ নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত এই উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী প্রফেসর সাইদুর রহমান। ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর হাবিবুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং ইউনিয়ন যুব জামায়াতের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভাটি পরিচালিত হয়।
​অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য আফছার আলী, উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আ ব ম আমান উল্লাহ, উপজেলা সেক্রেটারী অধ্যাপক এনতাজ আলী সহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

​সভায় বক্তারা আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ন্যায় এবং ইনসাফ এর প্রতীক দাঁড়িপাল্লাকে বিজয়ী করার মধ্য দিয়ে দুর্নীতি চান্দাবাজ ও বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এছাড়াও এলাকার বিভিন্ন সমস্যা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন এবং আসন্ন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী প্রফেসর সাইদুর রহমানের পক্ষে সাধারণ মানুষের কাছে সমর্থন ও দোয়া কামনা করেন।

প্রকাশকঃ কামরুন নেছা তানিয়া

হ্নীলা নৌবাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও গ্রেনেড উদ্ধার

প্রকাশকঃ কামরুন নেছা তানিয়া প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৫ এএম
হ্নীলা নৌবাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও গ্রেনেড উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক: টেকনাফের হ্নীলায় নৌবাহিনীর বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে হ্নীলা ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডের উলুচামারি কোনাপাড়া এলাকার শির্ষ সন্ত্রাসী মিজান ওরফে লম্বা মিজানের বাড়ীতে এ অভিযান চালানো হয়।
মিজান ওরফে লম্বা মিজানের বসতবাড়িতে বিপুল অস্ত্র মজুদ রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে নৌবাহিনীর বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াডস এবং নৌবাহিনী কনটিনজেন্ট টেকনাফ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে।
১টি বিদেশি ও ২টি দেশি পিস্তল, ১টি একনলা বন্দুক,১০ টি গ্রেনেড,গোলাবারুদসহ দেশী ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা অস্ত্র ও গোলাবারুদ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।