রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২
রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠের ফযীলত

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫, ১:১১ পিএম | 107 বার পড়া হয়েছে
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠের ফযীলত

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠের ফযীলত
এক.
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর একবার দরূদ পাঠে আল্লাহর পক্ষ থেকে দশবার রহমত নাযিল হয়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ “‏مَنْ صَلَّى عَلَىَّ وَاحِدَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ عَشْرًا”‏.‏
আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ তার ওপর দশবার রহমত নাযিল করেন।” [সহীহ মুসলিম- ৪০৮]
দুই.
যারা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠ করেন না তাদের তিনি অভিশাপ দিয়েছেন।
وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : «رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ»
আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “সেই ব্যক্তির নাক ধূলা-ধূসরিত হোক, যার কাছে আমার নাম উল্লেখ করা হলো, অথচ সে (আমার নাম শুনেও) আমার প্রতি দরূদ পড়লো না।” (অর্থাৎ ﷺ বললো না।)” [সহীহুল জামে‘- ৩৫১০]
তিন.
প্রকৃত কৃপণ তারা, যারা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নাম উচ্চারণের পরেও তাঁর ওপর দরূদ পাঠ করে না।
وَعَنْ عَلِيّ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : «البَخِيلُ مَنْ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ، فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ»
আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “প্রকৃত কৃপণ সেই ব্যক্তি, যার কাছে আমি উল্লেখিত হলাম (আমার নাম উচ্চারিত হলো), অথচ সে আমার প্রতি দরূদ পাঠ করলো না।” [সহীহুল জামে‘- ২৮৭৮]
চার.
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর সালাম পাঠকারীদের জবাব দেওয়ার জন্য আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রূহ ফিরিয়ে দেন।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ: مَا مِنْ أَحَدٍ يُسَلِّمُ عَلَيَّ إِلَّا رَدَّ اللَّهُ عَلَيَّ رُوحِي حَتَّى أَرُدَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ
আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “কেউ আমার ওপর সালাম পেশ করলে আল্লাহ আমার ‘রূহ’ ফিরিয়ে দেন এবং আমি তার সালামের জবাব দেই।” [হাসান; সহীহুল জামে‘- ৫৬৭৯]
পাঁচ.
প্রত্যেক দু‘আ অবরুদ্ধ থাকে যতক্ষণ নবী ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠ করা না হয়।
أنس بن مالك رضي الله عنه عن النبي ﷺ قال: «كُلُّ دُعَاءٍ مَحْجُوبٌ، حَتَّى يُصَلَّى عَلَى النَّبِيِّ ﷺ»
আনাস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “প্রত্যেক দু‘আ অবরুদ্ধ থাকে যতক্ষণ নবী ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠ করা না হয়।” [হাসান লি শাওয়াহিদিহি; সিলসিলাহ সহীহাহ- ২০৩৫]
ছয়.
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠ করলে তা ফেরেশতার মাধ্যমে তাঁর কবরে প্রেরণ করা হয়।
وعن أبي بكر الصديق أن النبي ﷺ قال : (أكثروا الصلاة علي، فإن الله وكل بي ملكا عند قبري، فإذا صل علي رجل من أمتي قال لي ذلك الملك : يا محمد إن فلان بن فلان صلى عليك الساعة)
আবূ বকর সিদ্দীক্ব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নবী ﷺ বলেছেন, “তোমরা আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরূদ পাঠ করো, কেননা আল্লাহ তা‘আলা আমার কবরের নিকট একজন ফেরেশতা নিযুক্ত করেছেন, কেউ যদি আমার ওপর দরূদ পাঠ করে তখন ফেরেশতা বলে, ‘হে মুহাম্মাদ! আপনার ওপর অমুকের পুত্র অমুক এই সময়ে দরূদ পাঠ করেছে।” [হাসান; সহীহুল জামে‘- ১২০৭]
সাত.
জুমু‘আর দিনে ও রাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠ করার জন্য বিশেষভাবে বলা হয়েছে।
أكثروا الصَّلاةَ عَلَيَّ يوم الجمعة وليلة الجمعة، فمن صلى علي صلاة صلى الله عليه عشراً
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “তোমরা জুমু‘আর দিনে ও রাতে আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরূদ পাঠ করো; কেউ আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করলে তার ওপর দশটি রহমত নাযিল হয়।” [হাসান; সহীহুল জামে‘- ১২০৯]
আট.
ক্বিয়ামতের দিন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সবচেয়ে নিকটবর্তী হবেন যিনি তাঁর ওপর অধিক পরিমাণে দরূদ পাঠ করেছেন।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ ‏”‏أَوْلَى النَّاسِ بِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَكْثَرُهُمْ عَلَىَّ صَلاَةً”‏.‏
আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “ক্বিয়ামতের দিন আমার নিকটতম ব্যক্তি হবে যে আমার প্রতি অধিক পরিমাণে দরূদ পাঠ করেছে।” [হাসান লিগাইরিহি; সহীহুত তারগীব- ১৬৬৮]
নয়.
পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে কেউ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি দরূদ পাঠ করলে তা তাঁর কাছে পৌঁছানো হয়।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ : لَا تَجْعَلُوا بُيُوتَكُمْ قُبُورًا، وَلَا تَجْعَلُوا قَبْرِي عِيدًا، وَصَلُّوا عَلَيَّ فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ تَبْلُغُنِي حَيْثُ كُنْتُمْ
আবূ হুরাইরাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে কবরস্থানে পরিণত করো না এবং আমার কবরকে উৎসবের স্থানে পরিণত করো না, তোমরা আমার ওপর দরূদ পাঠ করো; তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌঁছানো হবে।” [সহীহুল জামে‘- ৩১৬৪]
দশ.
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠ না করা জান্নাতের পথ হারানোর মতো একটি কাজ।
من ذكرت عندَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيَّ؛ فَقَدْ خطئ طريق الجنة.
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমাকে স্মরণ হওয়ার পরেও আমার ওপর দরূদ পাঠ করলো না, সে জান্নাতের পথ হারিয়ে ফেললো।” [সহীহুত তারগীব- ১৬৮১]
এগারো.
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ওপর দরূদ পাঠে রহমত বর্ষণ, গুনাহ মাফ ও জান্নাতে মর্যাদা সমুন্নত করা হয়।
عن أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ،‏‏‏‏ قَالَ:‏‏‏‏ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ :‏‏‏‏ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً وَاحِدَةً صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ عَشْرَ صَلَوَاتٍ وَحُطَّتْ عَنْهُ عَشْرُ خَطِيئَاتٍ وَرُفِعَتْ لَهُ عَشْرُ دَرَجَاتٍ
আনাস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তা‘আলা তার ওপর দশবার রহমত নাযিল করবেন, তার দশটি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তাকে দশটি সম্মানে উন্নীত করা হবে।” [সহীহুত তারগীব- ১৬৫৭]

দিনাজপুরে বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

মো: মেহেদী হাসান ফুয়াদ দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫৫ পিএম
দিনাজপুরে বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

২ আগষ্ট শনিবার বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- রাজ-২২৬৭) এর নব নির্বাচিত কার্য্যকরী কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নব- নির্বাচিত সভাপতি- মোঃ আব্দুস সাত্তার, সহ সভাপতি- মোঃ শরিফুল ইসলাম সেলি, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনিসুর রহমান, সহ সাধারণ সম্পাদক, আবুল কালাম (১), সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ এনামুল হক, অর্থ সম্পাদক- আবুস সালাম ও কার্র্য্যনির্বাহী পরিষোধের সদস্য মোঃ কমর আলী শেখ ও মোঃ বিশালকে ইউনিয়নের গঠনতন্ত্র অনুর্যায়ী শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশান দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি রবিউল আউয়াল খোকা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবিবর রহমান। উল্লেখ্য, বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- রাজ-২২৬৭) এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২ জুলাই ‘২০২৫। নির্বাচনে উপরোক্ত ৮জন প্রার্থী বিজয়ী হন।

দেশের উন্নয়ন ও ন্যায় বিচারে ধানের শীষের প্রতি জনগণের আস্থা : ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ

বগুড়া থেকে মোঃ হাফিজুর রহমান প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫১ পিএম
দেশের উন্নয়ন ও ন্যায় বিচারে ধানের শীষের প্রতি জনগণের আস্থা : ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ

গাবতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, গাবতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জনাব ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ জানিয়েছেন —
আমাদের দেশ চলে মানুষের ঘাম আর পরিশ্রমের করের টাকায়। প্রতিটি রাস্তা, স্কুল, হাসপাতাল, সরকারি সেবা ও অবকাঠামো জনগণের টাকায় গড়ে উঠেছে।
কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট শাসন আর আজকের কর্তৃত্ববাদী মনোভাব দেশের মানুষের ন্যায্য অধিকারকে অবমূল্যায়ন করেছে — মানুষের ভোটাধিকার হরণ হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়েছে, গণতন্ত্রকে পদদলিত করা হয়েছে। স্বজনপ্রীতি, লুটপাট আর দুর্নীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে জিম্মি করে রেখেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিশ্বাস করে—গণতন্ত্র মানে শুধু ভোট নয়, মানুষের কথা শোনা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
আমাদের আপোষহীন নেত্রী, তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার রক্ষায় আজও আপোষহীনভাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। বিএনপি জনগণের অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে সবসময়ই জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপি সরকারের সময় দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পথে ছিল, গণতন্ত্র ও মানুষের কথা বলার অধিকার সুরক্ষিত ছিল — যা আজ হরণ হয়েছে।
আগামী নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাই—আপনাদের শক্তি ও অধিকারকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়ন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিজয়ের প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিন, আপনার আস্থা ও বিশ্বাস প্রকাশ করুন।
বিএনপি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পক্ষে। দেশের প্রতিটি টাকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করাই আমাদের অঙ্গীকার। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকাটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তি।
আমরা বিশ্বাস করি—ধানের শীষে জনগণের এই আস্থা গণতন্ত্র, উন্নয়ন আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হয়ে উঠবে।

মধ্যবয়স্ক নারীর ভালবাসা এক নীরব নদীর মতো

Masud Parves প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৪৯ পিএম
মধ্যবয়স্ক নারীর ভালবাসা এক নীরব নদীর মতো

মধ্যবয়সী নারীকে বাইরে থেকে দেখে কেউ বুঝতে পারে না, তার ভেতর কতটা জীবন বয়ে চলে। তার মুখে হয়তো একরাশ শান্তি, চোখে একটুখানি ক্লান্তি—কিন্তু এই চেহারার ভেতরে আছে এক গভীর নদী, যেটা ধীরে ধীরে বয়ে যায়। এই নদী যেন নীরব, তবে থেমে নেই। প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, ভালোবাসা, হারানো-বিলুপ্ত কিছু স্মৃতি—সব মিলে তার কামনা তৈরি হয় এক নতুন রূপে, এক অনন্য ভাষায়।
এই বয়সে সে আর কারো মন জেতার জন্য হাসে না। সে নিজেকে লুকিয়ে রাখে না, সাজিয়ে তোলে না কেবল কারো নজর কাড়ার জন্য। বরং সে নিজেকে ভালোবাসে গভীরভাবে। জানে—তার শরীর ঠিক যেমন, তেমনটাই সুন্দর। তার যৌনতা এখন আর দেহের খেলায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে বোঝাপড়ার, সম্মান আর সংবেদনের জায়গা।
তরুণ বয়সের কামনা হঠাৎ জ্বলে ওঠে, হঠাৎ নিভেও যায়। সেখানে থাকে আবেগের ঝড়, না বুঝে ফেলার এক উন্মাদনা। কিন্তু মধ্যবয়সী নারীর কামনা অনেক বেশি ধৈর্যের, অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসের। সে জানে, কীভাবে তার শরীরের প্রতিটি প্রতিক্রিয়া বোঝে নিতে হয়। সে জানে, কখন আগলে রাখতে হয় নিজেকে, আর কখন খুলে দিতে হয় সমস্ত দরজা।
এই নারী কাউকে ছুঁতে চায়—কিন্তু ছোঁয়াটার আগে সে বোঝে নেয় সেই মানুষটার ভেতরটা। সে শুধু শরীর খোঁজে না—সে এমন একজন সঙ্গী খোঁজে, যার স্পর্শে থাকে শ্রদ্ধা, যার চোখে থাকে নিরাপত্তা। সে জানে কার পাশে ঘুমালে শান্তি নামে, আর কার পাশে থাকলে ভালোবাসা শুকিয়ে যায়।
তার কামনা আর শিশুর মতো নিষ্পাপ নয়। বরং তাতে এক ধরনের প্রাপ্তবয়স্ক মমতা থাকে, থাকে বোঝাপড়া। সে জানে কখন চাওয়া, কখন না বলা। সে জানে, ‘না’ বলাটাও নিজের প্রতি এক রকম ভালোবাসা। তার ভালোবাসা এখন আর পাগলামি নয়—তা গভীর, সযত্নে বাছাই করা, বোধসম্পন্ন।
সমাজ হয়তো ভাবে এই বয়সের নারী নিঃসাড়, নিঃস্পৃহ। কিন্তু তারা জানে না, তার ভেতরটায় প্রতিদিন ঢেউ খেলে যায়। তার চোখে জমে থাকা পুরনো গল্পের আলো ঝিলমিল করে, তার হাসিতে মিশে থাকে না বলা ভালোবাসার রেশ। এই নারী চাইলেই কারো জীবনে নীরবে ঢুকে যেতে পারে, আবার কাউকে বিদায়ও জানাতে পারে নিঃশব্দে—এক বিন্দু তিক্ততা ছাড়াই।
তার যৌনতা আজ আর কারো কাছ থেকে অনুমতি চায় না। সে নিজের শরীর, নিজের কামনা, নিজের মনের দায়িত্ব নিজেই নেয়। সে জানে—কে তার জলের গভীরে স্নান করার যোগ্য, আর কে কেবল পাথর ছুড়ে জল ঘোলা করতে চায়।
মধ্যবয়স মানে ক্ষয় নয়, সেটি এক নবজন্ম। একজন নারী এই বয়সে এসে হয়তো সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল হয়—যেন সন্ধ্যার আলোয় জ্বলে ওঠা দীপ, যা সারা দিনের ক্লান্তিকে শান্ত করে। তার কামনা আগুন নয়—তা আলো। তা জ্বলিয়ে দেয় না, তা গায়ে মেখে থাকে।
এক নদী, যে জানে কখন কার দিকে পথ খুলে দিতে হয়, আর কখন নিজেকে আগলে রাখতে হয়।
যে জানে, ভালোবাসা মানে কারো হাত ধরা নয়—বরং কারো হাতে নিজের হাত রাখার মতো আত্মবিশ্বাস অর্জন করা।

error: Content is protected !!