রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২
রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

আশুরার মহত্ত্ব ও উম্মাহর অনুধাবন

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৫:২০ পিএম | 141 বার পড়া হয়েছে
আশুরার মহত্ত্ব ও উম্মাহর অনুধাবন

আশুরা বা ১০ই মহররম মুসলিম উম্মাহর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ দিন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই আশুরার মূল প্রেক্ষাপট সম্পর্কে অবহিত নয়।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহানবী (সা.) যখন হিজরত করে মদিনা পৌঁছেন, তখন তিনি দেখলেন যে মদিনার ইহুদি সম্প্রদায় আশুরার দিনে রোজা পালন করছে।
তিনি তাদের জিজ্ঞেস করেন, আশুরার দিনে তোমরা রোজা রেখেছ কেন? তারা উত্তর দিল, এই দিনটি অনেক বড়। এই পবিত্র দিনে মহান আল্লাহ মুসা (আ.) ও বনি ইসরাইলকে ফিরআউনের কবল থেকে রক্ষা করেছিলেন আর ফিরআউন ও তার বাহিনী কিবতি সম্প্রদায়কে ডুবিয়ে মেরেছিলেন।
এর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ হজরত মুসা (আ.) সিয়াম রাখতেন, তাই আমরাও আশুরার সিয়াম পালন করে থাকি।
তাদের উত্তর শুনে নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, হজরত মুসা (আ.)-এর কৃতজ্ঞতার অনুসরণে আমরা তাদের চেয়ে অধিক হকদার। অতঃপর তিনি নিজে আশুরার সিয়াম রাখেন এবং উম্মতকে তা পালন করতে নির্দেশ প্রদান করেন। (বুখারি-৩৩৯৭, মুসলিম-১১৩৯)।
আশুরার রোজার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এ বিষয়ে কয়েকটি হাদিস শুনি- ‘হজরত আবু কাতাদা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-কে আশুরার রোজার ফজিলত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এই রোজা বিগত বছরের গুনাহ মুছে দেয়। (মুসলিম-১১৬২)। ‘রাসুল (সা.) বলেন- ‘রমজান মাসের রোজার পর সর্বোত্তম রোজা আল্লাহর মাস মহররমের আশুরার রোজা।’ (সুনানে কুবরা-৪২১০)
আশুরার রোজা ও ইহুদি সম্প্রদায়: মুসলিম শরিফে হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত- ‘মহানবী (সা.) যখন আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করেন, তখন সাহাবিরা অবাক হয়ে বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইহুদি-নাসারারা তো এই দিনটিকে বড়দিন মনে করে। (আমরা যদি এই দিনে রোজা রাখি, তাহলে তো তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য হবে। তাদের প্রশ্নের উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, ‘তারা যেহেতু এদিন একটি রোজা পালন করে) আগামী বছর ইনশাআল্লাহ আমরা এই ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে দুই দিন রোজা পালন করব। (মুসলিম-১১৩৪)।
তার মানে হাদীস অনুযায়ী – ফেরাউন ও তার বাহিনীর পতনের খুশিতে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মুসা (আঃ) সিয়াম পালন ও পরবর্তীতে রসুলুল্লাহ (সাঃ) তা পালনের নির্দেশ দেন। কিন্তু আমাদের অধিকাংশ মানুষই ফেরাউনের চরিত্র ও তার ধ্বংসের কারণ সম্পর্কে জানে না।
আসুন ফেরাউনদের নীতিরীতি বা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য জেনে নিইঃ
১. জাতিকে বিভক্ত করা – আল্লাহ বলেন, “ফেরাউন তার দেশে উদ্ধত হয়েছিল এবং সে দেশবাসীকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে তাদের একটি দলকে দূর্বল করে দিয়েছিল। সে তাদের পুত্র-সন্তানদেরকে হত্যা করত এবং নারীদেরকে জীবিত রাখত। নিশ্চয় সে ছিল অনর্থ সৃষ্টিকারী।” [সুরা কাসাস – ২৮:৪)। মূলত ফেরাউন ছিল কিবতী জাতি আর ইউসুফ (আঃ) ছিল বনী ইসরায়েল। ওহীর জ্ঞানের ভিত্তিতে ইউসুফ (আঃ) শাসন করতেন পরবর্তীতে বনী ইসরায়েলের কাছে তাওরাতের জ্ঞান থাকায় ওরা ছিল সম্মানিত।
কিন্তু বনী ইসরায়েল কিতাবের জ্ঞান হতে দূরে সরে যায়, আর ফেরাউনরা তাদের দলে দলে বিভক্ত করে দূর্বল করে রাখে।
কারণ তারা ভয় পেত বনী ইসরায়েলের কাছে ওহীর জ্ঞান ছিল, তারা এই ভিত্তিতে শাসন করতো, তাই ফেরাউনদের ক্ষমতার জন্য তারা সবচেয়ে বড় বাধা হবে। একসময় মুসলিমরা অর্ধবিশ্ব শাসন করতো, পবিত্র কিতাব দ্বারা। মুসলিমরা ছিল ঐক্যবদ্ধ জাতি। এই যুগের ফেরাউনরা আমাদের দলে দলে বিভক্ত করে দুর্বল করে রেখেছে আর আমরাও বনী ইসরায়েলের মত কিতাবের অনুসরণ হতে দূরে সরে এসেছি তাই পতিত হয়েছি।
২. রিজিক নিয়ে মিথ্যাচার – ফেরাউনকে যখন দাওয়াত দেওয়া হল- তখন ঈমান আনার পরিবর্তে উল্টো যুক্তি দিল-
ফির‘আউন বলল, ‘আমরা কি তোমাকে শৈশবে আমাদের মাঝে লালন পালন করিনি? আর তুমি তোমার জীবনের অনেক বছর আমাদের মধ্যে অবস্থান করেছ’। (সুরা শুআর-১৮)। অথচ ফেরাউন আল্লাহর জমিনে আল্লাহর সম্পদ ভোগ করে বনী ইসরায়েল জাতিকে দাসে পরিণত করেছিল।
তাই মুসা (আঃ) বলেছিল- আর আমার প্রতি তোমার যে অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করে তুমি দয়া দেখাচ্ছ তা তো এই যে, তুমি বনী ইসরাঈলকে দাসে পরিণত করেছ। (সুরা শুআরা- ২২)।
আজ দেখুন- ফেরাউনদের যখন দাওয়াত দেওয়া হয়- তখন ওরা বলে এদেশের সম্পদ ভোগ করে বড় হয়ে এদেশের আইন, চেতনা, ঐতিহ্যের বিরোধিতা করে। অথচ ওরা আল্লাহর জমিনের সম্পদ ভোগ করেছে আর জাতিকে করের দাসে পরিণত করছে।
তাদের ক্ষমতাসীনরা কর ফাকি দিয়ে চলছে। আর বিশ্ব ফেরাউনরা মুসলিমদের সম্পদ লুন্ঠন করে ওদের দরিদ্র্য করে রাখছে, কেউ যদি প্রতিবাদী হয় তখন বলে – তোমাদের দেশে এত এত টাকা অনুদান দিতাম, সব বন্ধ করে দিবো।
৩. দেশদ্রোহীতার অভিযোগ – মুসা (আঃ) ও হারুন (আঃ) যখন ফেরাউনদের শিরকী নিয়মনীতি বাদ দিয়ে এক আল্লাহর দিকে আহ্বান করছিল তখন তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ তুলে। এমনকি জাদুকররা ঈমান আনলেও একই অভিযোগ তুলে।
কুরআনে বর্নিত – “সে বললঃ হে মূসা, তুমি কি যাদুর জোরে আমাদেরকে দেশ থেকে বহিষ্কার করার জন্যে আগমন করেছ?” (সুরা ত্বাহা-৫৭)।
সুরা আরাফে আছে – “ফেরাউন বলল, তোমরা কি (তাহলে) আমার অনুমতি দেয়ার আগেই ঈমান আনলে! এটা প্রতারণা, যা তোমরা এ নগরীতে প্রদর্শন করলে। যাতে করে এ শহরের অধিবাসীদিগকে শহর থেকে বের করে দিতে পার। সুতরাং তোমরা শীঘ্রই বুঝতে পারবে।” (আয়াত- ১২৩)। আজও ফেরাউনদের রাষ্ট্রীয় শিরকী নিয়মনীতির বিরোধিতা করলে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ও মামলা দেয়।
৪. আল্লাহকে রব মানার কারণে হত্যার চেষ্টা – ফেরাউনদের এক আল্লাহর আনুগত্য ও নিয়মনীতিরই দিকে ডাকা হতো তারা তা প্রত্যাখান করে উল্টো হত্যার পরিকল্পনা করতো। সুরা মুমিনে রয়েছে,
“অতঃপর মূসা যখন আমার কাছ থেকে সত্যসহ তাদের কাছে পৌঁছাল; তখন তারা বলল, যারা তার সঙ্গী হয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তাদের পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা কর, আর তাদের নারীদেরকে জীবিত রাখ। কাফেরদের চক্রান্ত ব্যর্থই হয়েছে। ফেরাউন বলল; তোমরা আমাকে ছাড়, মূসাকে হত্যা করতে দাও, ডাকুক সে তার পালনকর্তাকে! আমি আশংকা করি যে, সে তোমাদের ধর্ম পরিবর্তন করে দেবে অথবা সে দেশময় বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। মূসা বলল, যারা হিসাব দিবসে বিশ্বাস করে না এমন প্রত্যেক অহংকারী থেকে আমি আমার ও তোমাদের পালনকর্তার আশ্রয় নিয়ে নিয়েছি। ফেরাউন গোত্রের এক মুমিন ব্যক্তি, যে তার ঈমান গোপন রাখত, সে বলল, তোমরা কি একজনকে এজন্যে হত্যা করবে যে, সে বলে, আমার পালনকর্তা আল্লাহ, অথচ সে তোমাদের পালনকর্তার নিকট থেকে স্পষ্ট প্রমাণসহ তোমাদের নিকট আগমন করেছে? যদি সে মিথ্যাবাদী হয়, তবে তার মিথ্যাবাদিতা তার উপরই চাপবে, আর যদি সে সত্যবাদী হয়, তবে সে যে শাস্তির কথা বলছে, তার কিছু না কিছু তোমাদের উপর পড়বেই। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালংঘনকারী, মিথ্যাবাদীকে পথ প্রদর্শন করেন না।” (২৫-২৮)।
আজও কেউ একমাত্র রব আল্লাহর শরীয়া চাইলে জালেমরা একই ষড়যন্ত্র করে।
৫. ছেলে শিশুদের হত্যা কর- ফেরাউনরা ছেলেশিশুদের হত্যা করতো যেন কেউ মুসলিম হয়ে তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করার কারণ না হয় আর নারীদের জীবিত রেখে ওদের নিজের ভোগে পরিণত করত যেন ওদের গর্ভে জালেমদের সন্তানগুলো ফেরাউনদের দ্বীনে (জীবন-বিধান) দীক্ষিত হয়। এভাবে মুসলিমদের নিধন আর ওদের অনুসারী বাড়াতে চাইতো। আজও অনেক মুসলিম দেশগুলোতে শিশুদের এমনভাবে হত্যা করা হয় ভবিষ্যতে যেন মুজাহিদ তৈরি হতে না পারে। চীনসহ বহুদেশে নারীদের বন্দী করে কাফেরের সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করা হয়।
৬. কুফরী শিক্ষা দিয়ে দ্বীনী শিক্ষাকে প্রতিরোধের চেষ্টা – মুসা (আঃ) এর দাওয়াতকে ভুল প্রমাণ করতে ফেরাউন জাদুকরদের কুফরী জাদু শিক্ষাকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল উল্টো জাদুকররা দ্বীনে ফিরে আসে।
বর্তমানে বিভিন্ন জাতীয়তাবাদ, তন্ত্রমন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রসারের চেষ্টা চলছে অথচ এসব শিক্ষায় দীক্ষিতরা হেদায়েত পেয়ে ইসলামের সত্যতা ছড়াচ্ছে।
৭. পূর্বপুরুষের আত্মীয়তা নিয়ে বড়াই – ফেরাউনরা মমি তৈরি করতো। আর প্রচার করতো অমুক পূর্বপুরুষের বংশধর তাই তারাও ক্ষমতার হক্বদার।
ফেরাউন শব্দের অর্থ হল রা দেবতার পুত্র। ঐতিহাসিকদের মতে- তখন মিশরের সূর্য দেবতা মানতো আমন রা কে। আর ফেরাউন নিজেদের এই দেবতার সাথে সম্পর্কিত করে ক্ষমতার দাবি করতো। আজ দেখুন- কারো পূর্বপুরুষের মূর্তি, কবরকে মাজারে পরিণত করে তাদের কীর্তি শুনিয়ে ক্ষমতার দাবি করছে।
৮. বিপদে মুসলিমদের কাছে দোয়া প্রার্থনা – ফেরাউনদের কাছে কোন আসমানী বালা মুসিবত এলে মুসা (আঃ) এর কাছে গিয়ে দোয়া করতে বলত। আল্লাহ বলেন- “আর তাদের উপর যখন কোন আযাব পড়ে তখন বলে, হে মূসা আমাদের জন্য তোমার পরওয়ারদেগারের নিকট সে বিষয়ে দোয়া কর যা তিনি তোমার সাথে ওয়াদা করে রেখেছেন। যদি তুমি আমাদের উপর থেকে এ আযাব সরিয়ে দাও, তবে অবশ্যই আমরা ঈমান আনব তোমার উপর এবং তোমার সাথে বনী-ইসরাঈলদের যেতে দেব।” [৭:১৩৪]।
মাত্র কয়েক মাস আগে যখন করোনায় বিশ্ব ফেরাউনরা ভয়ে কাপছিল তখন বহুদেশে প্রকাশ্যে আযান, সালাত পড়তে দিল আর বহুদেশের সংসদ হতে মুসলিমদের দোয়া করতে বলল। যখন কোভিড কমে এল মুসলিম নির্যাতন বেড়ে গেল যেমনটা ফেরাউনদের অনুসারীরা করতো।
৯. সমূলে হত্যার চেষ্টা – ফেরাউন যখন বনী ইসরায়েলকে দ্বীন হতে ফিরাতে ব্যর্থ হলো তখন তাদের সমূলে হত্যা করতে চেয়েছিল। কারণ বনী ইসরায়েল যদি তার প্রভুত্ব বাদ দিয়ে চলে যেতে সমর্থ হয়, ধীরে ধীরে সবাই হয়তো তার প্রভুত্বকে অস্বীকার করবে। আজও কেউ শক্তিশালী রাষ্ট্রের বিরোধিতা করলে তাদের জনগণকে সমূলে হত্যার চেষ্টা করা হয় যাতে অন্যরা তাদের প্রভুত্ব অস্বীকার করার সাহস না পায়।
অপরদিকে আশুরায় হসাইন (রাঃ) শাহাদাতকে কেন্দ্র করে বাড়াবাড়ি ও শিরকে লিপ্ত হচ্ছে অনেকে। রাসুলের (সাঃ) জীবদ্দশায় দ্বীন পূর্নাঙ্গ হয়ে গেছে – আর হোসেন (রাঃ) এর শাহাদাত এর পরে ঘটে।
এটা সত্যি হুসাইন (রাঃ) এর প্রতি ভালোবাসা ঈমানের পরিচয়, তিনি শহীদ যুবকদের সর্দার ও আমাদের অনুকরণীয় চরিত্র।
যখন মুসলিমদের আল্লাহ প্রদত্ত ইসলামসম্মত মতপ্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছিল, জুলুম চলছিল। তখনই হোসেন (রাঃ) প্রতিবাদী হোন, শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বন্ধ হলে তিনি সংগ্রাম করে শহীদ হোন।
অথচ বর্তমানে ফেরাউনদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক প্রকাশ করা হয়।
আবার ফেরাউনদের পতন ঘটলে নতুন কেউ ক্ষমতা এসে ফেরাউনের ভূমিকা অবর্তীন হয়।
জালেমের পরিবর্তন হলেও মানবরচিত জুলুমই আইন রয়ে যায়।
একই আইনে নতুন ফেরাউনরা জুলুম করে চলে।
পূর্বে ফেরাউনদের ভাস্কর্য, মূর্তি ভেঙ্গে ফেললেও সংস্কৃতি,
দেশীয় ঐতিহ্যের নামে মূর্তি, শির্কী অনুষ্ঠান রয়ে যায় বা নবরুপ পায়।
আর হুসাইন (রাঃ) এর আর্দশের অনুরূপ সংগ্রামরত হয়ে শাহাদাত বরণ আমাদের স্বপ্ন।
যিনি বিদআত রাজতন্ত্র,জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলেন যদিও রাষ্ট্রীয় ক্ষেএে কুরআনের বেশিরভাগ আইন বিদ্যমান ছিল।
আজ রাষ্ট্রে কুরআনের আইন নেই, তবু রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াহ,প্রচারণা চালালে বহু পথভ্রষ্ট আলেম ফেরাউনদের পক্ষ নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী/উগ্রবাদী ঘোষণা করবে।
আসলে কি আমরা আশুরার মর্ম বুঝেছি?!!

দিনাজপুরে বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

মো: মেহেদী হাসান ফুয়াদ দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫৫ পিএম
দিনাজপুরে বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

২ আগষ্ট শনিবার বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- রাজ-২২৬৭) এর নব নির্বাচিত কার্য্যকরী কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নব- নির্বাচিত সভাপতি- মোঃ আব্দুস সাত্তার, সহ সভাপতি- মোঃ শরিফুল ইসলাম সেলি, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনিসুর রহমান, সহ সাধারণ সম্পাদক, আবুল কালাম (১), সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ এনামুল হক, অর্থ সম্পাদক- আবুস সালাম ও কার্র্য্যনির্বাহী পরিষোধের সদস্য মোঃ কমর আলী শেখ ও মোঃ বিশালকে ইউনিয়নের গঠনতন্ত্র অনুর্যায়ী শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশান দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি রবিউল আউয়াল খোকা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবিবর রহমান। উল্লেখ্য, বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- রাজ-২২৬৭) এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২ জুলাই ‘২০২৫। নির্বাচনে উপরোক্ত ৮জন প্রার্থী বিজয়ী হন।

দেশের উন্নয়ন ও ন্যায় বিচারে ধানের শীষের প্রতি জনগণের আস্থা : ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ

বগুড়া থেকে মোঃ হাফিজুর রহমান প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫১ পিএম
দেশের উন্নয়ন ও ন্যায় বিচারে ধানের শীষের প্রতি জনগণের আস্থা : ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ

গাবতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, গাবতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জনাব ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ জানিয়েছেন —
আমাদের দেশ চলে মানুষের ঘাম আর পরিশ্রমের করের টাকায়। প্রতিটি রাস্তা, স্কুল, হাসপাতাল, সরকারি সেবা ও অবকাঠামো জনগণের টাকায় গড়ে উঠেছে।
কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট শাসন আর আজকের কর্তৃত্ববাদী মনোভাব দেশের মানুষের ন্যায্য অধিকারকে অবমূল্যায়ন করেছে — মানুষের ভোটাধিকার হরণ হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়েছে, গণতন্ত্রকে পদদলিত করা হয়েছে। স্বজনপ্রীতি, লুটপাট আর দুর্নীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে জিম্মি করে রেখেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিশ্বাস করে—গণতন্ত্র মানে শুধু ভোট নয়, মানুষের কথা শোনা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
আমাদের আপোষহীন নেত্রী, তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার রক্ষায় আজও আপোষহীনভাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। বিএনপি জনগণের অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে সবসময়ই জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপি সরকারের সময় দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পথে ছিল, গণতন্ত্র ও মানুষের কথা বলার অধিকার সুরক্ষিত ছিল — যা আজ হরণ হয়েছে।
আগামী নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাই—আপনাদের শক্তি ও অধিকারকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়ন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিজয়ের প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিন, আপনার আস্থা ও বিশ্বাস প্রকাশ করুন।
বিএনপি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পক্ষে। দেশের প্রতিটি টাকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করাই আমাদের অঙ্গীকার। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকাটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তি।
আমরা বিশ্বাস করি—ধানের শীষে জনগণের এই আস্থা গণতন্ত্র, উন্নয়ন আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হয়ে উঠবে।

মধ্যবয়স্ক নারীর ভালবাসা এক নীরব নদীর মতো

Masud Parves প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৪৯ পিএম
মধ্যবয়স্ক নারীর ভালবাসা এক নীরব নদীর মতো

মধ্যবয়সী নারীকে বাইরে থেকে দেখে কেউ বুঝতে পারে না, তার ভেতর কতটা জীবন বয়ে চলে। তার মুখে হয়তো একরাশ শান্তি, চোখে একটুখানি ক্লান্তি—কিন্তু এই চেহারার ভেতরে আছে এক গভীর নদী, যেটা ধীরে ধীরে বয়ে যায়। এই নদী যেন নীরব, তবে থেমে নেই। প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, ভালোবাসা, হারানো-বিলুপ্ত কিছু স্মৃতি—সব মিলে তার কামনা তৈরি হয় এক নতুন রূপে, এক অনন্য ভাষায়।
এই বয়সে সে আর কারো মন জেতার জন্য হাসে না। সে নিজেকে লুকিয়ে রাখে না, সাজিয়ে তোলে না কেবল কারো নজর কাড়ার জন্য। বরং সে নিজেকে ভালোবাসে গভীরভাবে। জানে—তার শরীর ঠিক যেমন, তেমনটাই সুন্দর। তার যৌনতা এখন আর দেহের খেলায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে বোঝাপড়ার, সম্মান আর সংবেদনের জায়গা।
তরুণ বয়সের কামনা হঠাৎ জ্বলে ওঠে, হঠাৎ নিভেও যায়। সেখানে থাকে আবেগের ঝড়, না বুঝে ফেলার এক উন্মাদনা। কিন্তু মধ্যবয়সী নারীর কামনা অনেক বেশি ধৈর্যের, অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসের। সে জানে, কীভাবে তার শরীরের প্রতিটি প্রতিক্রিয়া বোঝে নিতে হয়। সে জানে, কখন আগলে রাখতে হয় নিজেকে, আর কখন খুলে দিতে হয় সমস্ত দরজা।
এই নারী কাউকে ছুঁতে চায়—কিন্তু ছোঁয়াটার আগে সে বোঝে নেয় সেই মানুষটার ভেতরটা। সে শুধু শরীর খোঁজে না—সে এমন একজন সঙ্গী খোঁজে, যার স্পর্শে থাকে শ্রদ্ধা, যার চোখে থাকে নিরাপত্তা। সে জানে কার পাশে ঘুমালে শান্তি নামে, আর কার পাশে থাকলে ভালোবাসা শুকিয়ে যায়।
তার কামনা আর শিশুর মতো নিষ্পাপ নয়। বরং তাতে এক ধরনের প্রাপ্তবয়স্ক মমতা থাকে, থাকে বোঝাপড়া। সে জানে কখন চাওয়া, কখন না বলা। সে জানে, ‘না’ বলাটাও নিজের প্রতি এক রকম ভালোবাসা। তার ভালোবাসা এখন আর পাগলামি নয়—তা গভীর, সযত্নে বাছাই করা, বোধসম্পন্ন।
সমাজ হয়তো ভাবে এই বয়সের নারী নিঃসাড়, নিঃস্পৃহ। কিন্তু তারা জানে না, তার ভেতরটায় প্রতিদিন ঢেউ খেলে যায়। তার চোখে জমে থাকা পুরনো গল্পের আলো ঝিলমিল করে, তার হাসিতে মিশে থাকে না বলা ভালোবাসার রেশ। এই নারী চাইলেই কারো জীবনে নীরবে ঢুকে যেতে পারে, আবার কাউকে বিদায়ও জানাতে পারে নিঃশব্দে—এক বিন্দু তিক্ততা ছাড়াই।
তার যৌনতা আজ আর কারো কাছ থেকে অনুমতি চায় না। সে নিজের শরীর, নিজের কামনা, নিজের মনের দায়িত্ব নিজেই নেয়। সে জানে—কে তার জলের গভীরে স্নান করার যোগ্য, আর কে কেবল পাথর ছুড়ে জল ঘোলা করতে চায়।
মধ্যবয়স মানে ক্ষয় নয়, সেটি এক নবজন্ম। একজন নারী এই বয়সে এসে হয়তো সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল হয়—যেন সন্ধ্যার আলোয় জ্বলে ওঠা দীপ, যা সারা দিনের ক্লান্তিকে শান্ত করে। তার কামনা আগুন নয়—তা আলো। তা জ্বলিয়ে দেয় না, তা গায়ে মেখে থাকে।
এক নদী, যে জানে কখন কার দিকে পথ খুলে দিতে হয়, আর কখন নিজেকে আগলে রাখতে হয়।
যে জানে, ভালোবাসা মানে কারো হাত ধরা নয়—বরং কারো হাতে নিজের হাত রাখার মতো আত্মবিশ্বাস অর্জন করা।

error: Content is protected !!