কারবালার যুদ্ধ


কারবালার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ৬১ হিজরীর ১০ই মহররম, যা ৬৮০ খ্রিস্টাব্দের ১০ই অক্টোবর শুক্রবার ছিল।
* এটি বর্তমান ইরাকের কারবালা নামক প্রান্তরে সংঘটিত হয়।
**২. মূল চরিত্র:**
* **ইমাম হুসাইন (রা.):** মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র। তিনি ইয়াজিদের অন্যায় শাসনের আনুগত্য স্বীকার করতে রাজি হননি এবং সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে লড়াই করেন।
* **ইয়াজিদ:** হযরত মুয়াবিয়া (রা.)-এর মৃত্যুর পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী শাসক। সে ইসলাম বিরোধী এবং জুলুমবাজ হিসেবে পরিচিত ছিল।
* **ইয়াজিদ বাহিনী:** ইবনে জিয়াদ-এর নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল।
**৩. ঘটনার প্রেক্ষাপট:**
* হযরত মুয়াবিয়া (রা.)-এর মৃত্যুর পর ইয়াজিদ জোরপূর্বক ক্ষমতা গ্রহণ করে।
* ইয়াজিদ ইমাম হুসাইন (রা.)-কে তার আনুগত্য স্বীকার করতে নির্দেশ দেয়, কিন্তু ইমাম হুসাইন (রা.) তা প্রত্যাখ্যান করেন।
* কুফার লোকেরা ইয়াজিদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অসন্তুষ্ট হয়ে ইমাম হুসাইন (রা.)-কে বহু চিঠি পাঠিয়ে তাদের নেতা হওয়ার আমন্ত্রণ জানায়।
* ইমাম হুসাইন (রা.) কুফাবাসীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেখানে যান, কিন্তু তারা তাকে বিপদের মুখে ফেলে নীরব ও নিষ্ক্রিয় থাকে।
**৪. শাহাদাতের ঘটনা:**
* ইয়াজিদ বাহিনী ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তার সঙ্গীদের ফোরাত নদীর পানি থেকে বঞ্চিত করে অবরুদ্ধ করে রাখে।
* ১০ই মহররম ইয়াজিদ বাহিনী ইমাম হুসাইন (রা.)-এর ওপর আক্রমণ করে।
* এই অসম যুদ্ধে ইমাম হুসাইন (রা.) এবং তার ৭২ জন সঙ্গী শাহাদাত বরণ করেন। তাদের মধ্যে ইমাম হুসাইন (রা.)-এর ছয় মাস বয়সী ছেলে হযরত আলী আসগরও ছিলেন, যিনি তীরের আঘাতে শহীদ হন।
* শাহাদাতের পর ইমাম হুসাইন (রা.)-এর দেহ মোবারকে ৩৩টি বর্শা ও ৩৪টি তরবারির আঘাত এবং অসংখ্য তীরের জখমের চিহ্ন দেখা গিয়েছিল।
* ইমাম হুসাইন (রা.)-এর একমাত্র ছেলে হযরত জয়নুল আবেদিন (রা.) এই ঘটনা থেকে বেঁচে যান।
**৫. তাৎপর্য ও শিক্ষা:**
* কারবালার শাহাদাত অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করা এবং ধৈর্য্য ধারণ করার শিক্ষা দেয়।
* এটি সত্যের পথে অবিচল থাকার এবং জালিমের বিরুদ্ধে লড়াই করার অনুপ্রেরণা হিসেবে বিবেচিত হয়।
* কারবালার ঘটনা মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এবং শিয়া মতবাদের সূত্রপাত হয়।
* মুসলিম উম্মাহ আজও এই ঘটনাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।