বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২
বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

ইউনূস-মোদির বৈঠক কী বার্তা দিচ্ছে

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৪:০৫ পিএম | 111 বার পড়া হয়েছে
ইউনূস-মোদির বৈঠক কী বার্তা দিচ্ছে

গত বছর ৫ আগস্টের পর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের চরম টানাপড়েন শুরু হয়। দুই দেশের মধ্যে কোনোমতেই গোলছিল না বরফ। এই টানাপড়েনের মধ্যেই থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাসের মাথায় দুই দেশের সরকার প্রধানের এটি প্রথম বৈঠক। এই বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, এক বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্কে সব অস্বস্তি দূর হয়ে যাবে না। কিন্তু এটি দুই পক্ষকে ভবিষ্যতে গঠনমূলক আলোচনার জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা এবং উৎসাহ দেবে। অস্বস্তিকে পাশ কাটিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক কিংবা অস্বস্তি পুষে রেখেই কাজের সম্পর্ক স্থাপন যাই হোক না কেন দুই দেশের পথচলা শুরু হয়ে গেল ব্যাংককের এই বৈঠক থেকে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তার ভারতে আশ্রয় নেওয়াকে ঘিরে দুই দেশের মধ্য অস্বস্তি শুরু হয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে – এমন বক্তব্য দিতে দেখা যায় ভারতের গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে। মূলত এ ধরনের পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্কের অস্বস্তি বাড়ে। সম্পর্কেও চরম টানাপড়েন শুরু হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করতে চাইছে। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে ভারতের অবস্থান পরিষ্কার নয় বলে অভিযোগ করে আসছে বাংলাদেশ।

এছাড়া ভারতে বসে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার বিষয় নিয়েও ঢাকা আপত্তি জানিয়েছে একাধিকবার। এ নিয়ে দুই দেশই একে অন্যের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে এর আগে। সেই সাথে গত বছরের জুলাই থেকেই বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভারতের ভিসা দেওয়া প্রায় বন্ধ রয়েছে। সেইসাথে সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গ তো আছেই। আর সবশেষ সম্প্রতি চীন সফরের সময় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য সম্পর্কে অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বেড়ে যায় বলে বিশ্লেষকরা বলছেন। সেখানে তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যকে ‘ল্যান্ডলকড” বা ভূ-বেষ্টিত এবং এই অঞ্চলে বাংলাদেশ হলো সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

ড. ইউনূসের কথার সূত্র ধরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিমসটেকে ভারতের কৌশলগত ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি মূলত দেশটির ৬৫০০ কিলোমিটার উপকূলরেখা এবং বিমসটেকের ৫টি সদস্য দেশের সঙ্গে ভৌগোলিক সংযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন। এমন নানা ইস্যুতে গত আট মাস ধরে দুই দেশের সম্পর্কে আস্থার ঘাটতি দেখা দেয়ার প্রেক্ষাপটে ব্যাংককে ড. ইউনূস এবং নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার বৈঠকের রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে ড. ইউনূস ও মোদির মধ্যে বৈঠক হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। সে সময় দুই নেতার সফরসূচির মধ্যে ভিন্নতার কারণে বৈঠক হয়নি। ডিসেম্বরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশ সফর করেছেন। এছাড়া পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন একাধিকবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ড. ইউনূস ও মোদির বৈঠক ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক হয়েছে : প্রেস সচিব
গত শুক্রবার দুপুরে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ইউনূস-মোদি বৈঠক নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যতগুলো ইস্যু আছে, তার সব কটি নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব কটি বিষয় আলোচনায় তুলেছেন। আলোচনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, ভারতে বসে তিনি যেসব উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন সে প্রসঙ্গ, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, গঙ্গার পানি চুক্তির নবায়ন, তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গ এসেছে। দুই শীর্ষ নেতার আলোচনা ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ হয়েছে।’ প্রথমবারের মতো দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে হওয়া এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ড. ইউনূসের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ব্যাংককে ইউনূস-মোদির বৈঠকের বিষয় নিয়ে গতকাল শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে এমনটাই জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, ‘শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যু উত্থাপনের সময়ও নেতিবাচক ছিলেন না মোদি। তাই হাসিনাকে ঢাকায় প্রত্যর্পণ করা হবে বলে বিশ্বাস প্রেস সচিবের। সেই সঙ্গে তিনি বিশ্বাস করেন হাসিনার বিচার দেখতে পাবেন। বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাজের প্রশংসা করেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মোদি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক থাকাকালীন আমরা আপনার প্রতি তার (শেখ হাসিনার) অসম্মানজনক আচরণ দেখেছি। কিন্তু আমরা আপনাকে সম্মান জানিয়েছেন।”

ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ একটু নতুন বাস্তবতায় নিজেদের তৈরি করার চেষ্টা করছে। ফলে প্রতিবেশী, বন্ধু, সহযোগী সবার সাথে নতুন করে আন্ডারস্ট্যান্ডিং দাঁড় করানোর ব্যাপারে তারা আন্তরিক। নতুন সম্ভাবনায় সহযোগীদের তারা পাশে পেতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, শীর্ষ পর্যায়ে পারস্পরিক আলোচনা হলে এক ধরনের দায়বদ্ধতা তৈরি হয়। তারা আগের বক্তব্যের পুনরুল্লেখ করেছেন মোটা দাগে। তারপরও একটা কমন (সাধারণ) জায়গা তৈরি করতে হবে। দুই পক্ষই কিছু কিছু ছাড় দিলে আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে পৌঁছানো সম্ভব।’

ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবতার নিরিখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত শুক্রবার দুপুরে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই দেশের শীর্ষ দুই নেতার এই বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক খারাপ হয় বা পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন বক্তব্য পরিহার করার আহ্বানও জানিয়েছেন। তিনি নিজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এ অধ্যাপক ইউনূসের সাথে তার বৈঠক সম্পর্কে লিখেছেন।

নরেন্দ্র মোদী এক্স এ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেছি। ভারত বাংলাদেশের সাথে একটি গঠনমূলক ও জনগণ কেন্দ্রিক সম্পর্কের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ-ও লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা, অন্তর্ভুক্তি ও গণতন্ত্রের প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা রোধের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’

এই বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সাবেক কূটনীতিকেরা। তারা বলছেন, বৈঠকে দুই নেতা নিজ নিজ দেশের অবস্থানই তুলে ধরেছেন। তবে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা শুরুর বিষয়কে দুই দেশই গুরুত্ব দিচ্ছে বলে তারা মনে করেন। ব্যাংককে দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকের পর সেখানে প্রেসব্রিফিং করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

তিনি জানান, নরেন্দ্র মোদি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ পুনরায় ব্যক্ত করেন এবং বাংলাদেশ সরকারকে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখার আহ্বান জানান।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ দেখতে চায় ভারত। বৈঠকে সে কথা তুলে ধরেছেন নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি জনগণের কল্যাণের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এবং বাংলাদেশ-ভারত দীর্ঘদিনের সহযোগিতার মাধ্যমে পারস্পরিক সুসম্পর্ক নিশ্চিত করেছে।

তিনি আরো বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবতানির্ভর, ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। সীমান্ত নিরাপত্তার প্রশ্নও আলোচনায় এসেছে দুই নেতার বৈঠকে। সীমান্তে সাধারণ বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। আর ভারত এবার সীমান্তে অবৈধ যাতায়াত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র সচিব জানান, সীমান্তের ক্ষেত্রে সীমান্ত নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য আইনের কঠোর প্রয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। একই সাথে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপরও নরেন্দ্র মোদী গুরুত্বারোপ করেছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের প্রসঙ্গ তুলেছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের কাছে। তিনি এই প্রশ্নে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেছেন, এটি আলোচনার বিষয়বস্তু নয় এবং এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

বিমসটেকের পরবর্তী সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের নেতৃত্বে জোটের আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
ইউনূস-মোদি বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠককে বিএনপি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহজাহানপুরে নিজ বাসায় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ইউনূস-মোদি বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি। তবে যদি দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আলোচনা হয়, তবে সেটা ভালো। সামনে ড. ইউনূস আরও ভালো কিছু বয়ে আনবেন বলে প্রত্যাশা করি।’

ড. ইউনূস-মোদি বৈঠক নিয়ে যা জানাল এনসিপি
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘থাইল্যান্ডে ড. ইউনুস ও মোদির বৈঠককে আমরা প্রাথমিকভাবে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। সরকারের পক্ষ থেকে উত্থাপিত শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, গঙ্গার পানি চুক্তির নবায়ন, তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গ বিষয়ে কথা বলেছে সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ।’ ভারতকে অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খা ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বৈঠকটি দেশের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসবে : পার্থ
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপক্ষীয় যে আলোচনার হয়েছে, তা আমাদের দেশের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসবে। শনিবার বিকেলে ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে ভোলায় এসে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আন্দালিব রহমান পার্থ।

পূর্বধলায় বর্ণিল আয়োজনে গণ অভ্যুত্থান দিবস পালিত

মোঃ মনিরুল ইসলাম খান, প্রতিনিধি ময়মনসিংহ প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ৯:২৮ এএম
পূর্বধলায় বর্ণিল আয়োজনে গণ অভ্যুত্থান দিবস পালিত

কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসাবে নেত্রকোনার পূর্বধলায় ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস বর্ণিল আয়োজনে পালন করে পূর্বধলা উপজেলা বি এন পি তার বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠন। পূর্বধলা উপজেলা বিএনপির চারটি বিভক্ত গ্রুপ চারভাবে পৃথক বিজয় র‍্যালির আয়োজন করে।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ রাবেয়া আলী, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবু তাহের তালুকদার, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব বাবুল আলম তালুকদার ও জেলা বিএনপির সদস্য এ এস এম শহিদুল্লাহ ইমরান এর নেতৃত্বে পৃথক চারটি বিজয় মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অধ্যক্ষ রাবেয়া আলী’র নেতৃত্বে সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম ডাঃ মোহাম্মদ আলী বাসভবন, আলহাজ্ব আবু তাহের তালুকদার’র নেতৃত্বে হেলিপ্যাড মাঠ, আলহাজ্ব বাবুল আলম তালুকদার’র নেতৃত্বে পাটবাজার ও নেত্রকোনা জেলা বি এন পির সম্মানিত সিনিয়র সদস্য এ এস এম শহীদুল্লাহ ইমরান এর নেতৃত্বে রেলওয়ে স্টেশন ঈদগা মাঠ থেকে বিজয় মিছিল বের হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মিছিল গুলো শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।

‘গণঅভ্যুত্থানের বিজয়’ উদযাপন করতে গিয়ে প্রত্যেক গ্রুপ নিজস্ব ব্যানার ফেস্টুন ব্যবহার করে।

প্রতিটি গ্রুপ তাদের কর্মসূচিতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানায় এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সকল গ্রোপ মিলে যোথভাবে প্রোগ্রাম করলে আরো সুন্দর হতো।

নিউইর্য়ক মহানগর দক্ষিন বিএনপি, যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ৯:২৪ এএম
নিউইর্য়ক মহানগর দক্ষিন বিএনপি, যুক্তরাষ্ট্র

“জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উদযাপন” উপলক্ষে এক সমাবেশ ও র‍্যালি-র আয়োজন করা হয়েছে নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিন বিএনপির উদ্যোগে গত ৪ আগস্ট সোমবার বিকালে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস এর ডাইভারসিটি প্লাজায়। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলমের সন্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বহির্বিশ্ব বিএনপির সাংগঠনিক সমন্বয়ক সাবেক ছাত্রনেতা জনাব আনোয়ার হোসেন খোকন।

প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিন বিএনপির সংগ্রামী সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা জনাব হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা।

উক্ত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন মৃধা, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এমলাক হোসেন ফয়সাল, রুহুল আমিন নাসির, জিয়াউল হক মিশন, নাছির উদ্দিন, কামাল উদ্দিন দিপু, ব্রুকলিন বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম মাহমুদ, সদস্য সচিব মিজানুর রহমান মানিক এবং মহানগর দক্ষিন বিএনপির সাবেক সদস্য ফারদিন রনি।

উক্ত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল হক মিশন, সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব ছাইদুর খান ডিউক, সাবেক সদস্য মোঃ আব্বাস উদ্দিন, মিজানুর রহমান মিজান, নুরুল হুদা, জামালপুর রহমান চৌধুরী সহ হাসান মাহমুদ, মনিরুল ইসলাম মনির, মোঃ অহেদুজ্জামান নিলু, রাশেদ মিয়া, মোঃ আক্তারুজ্জামান, তোফাজ্জল রহমান, মোঃ সোহেল রানা ইমন, নুরে আলম চৌধুরী, মো: নাজমুল , মোঃ আমিনুল ইসলাম মিঠু , এস এম লুৎফর, চৌধুরী সিদ্দিক, আবু বকর, ইকবাল হোসাইন, শেখ উজ্জ্বল,জাহাঙ্গীর আলম অপু, মোঃ তারেক, মোঃ ওসমান গনি, মোঃ আরিফুল, ব্রুকলিন বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির, মোঃ বাহার, গোলাম কাদের, মোঃ মাহরুফ, শাফিয়াল ফামিন, মোঃ কামাল সহ আরো অনেকে।

লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি এক ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রধান অতিথি জনাব আনোয়ার হোসেন খোকন তার বক্ত‍ব‍্যে বলেন ফ্যাসিবাদের পতন হলেও এক বছরে দেশে বিপ্লব পরবর্তী কাংখিত লক্ষ অর্জিত হয়নি। এখনো দেশী বিদেশী চক্রান্ত চলছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।জুলাই বিপ্লবকে ব্যর্থ করে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো ফায়দা নিতে চায়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের দুরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বদ্ধ পরিকর। বাংলাদেশে নির্বাচন পুর্ব বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয়তাবাদী দলের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান জনাব আনোয়ার হোসেন খোকন।

বাংলাদেশ থেকে ভার্চুয়ালি ভিডিও কলের মাধ‍্যমে প্রধান বক্তা জনাব সেলিম রেজা তার বক্তব‍্যে বলেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা গত ১৬ বছর আন্দোলন সংগ্রামে লিপ্ত ছিলাম, তারই ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্ত ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে চান। কিন্তু দেশ বিরোধী যে কোন চক্রান্ত রুখে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে যথাশীঘ্র সুষ্ঠ নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়ে গনতান্ত্রিক ধারায় ফিরতে আহ্বান জানান।

এবং তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন দেশনায়ক তারেক রহমান অচিরেই বীরের বেশে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন তখন সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ৩১ দফার ভিত্তিতে রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মাণের মাধ্যমে জাতিকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিবেন।

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য। গনতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে সুষ্ঠ নির্বাচন অপরিহার্য তাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন। নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিন বিএনপির উপস্থিত সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে এবং সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে সমাবেশ সমাপ্ত করেন।

বিদ্যালয়ের সময়ের আগেই শিক্ষকদের বিদ্যালয় ত্যাগ! অভিভাবকদের উদ্বেগ

মোঃ পলাশ শেখ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫, ৭:৫৯ পিএম
বিদ্যালয়ের সময়ের আগেই শিক্ষকদের বিদ্যালয় ত্যাগ! অভিভাবকদের উদ্বেগ

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত শ্রেণিকক্ষ চলাকালীন সময়ের আগেই শিক্ষকদের বিদ্যালয় ত্যাগ করার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয়ের সময় শেষ হয় বিকেল ৪টায় ১৫ মিনিট , কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতিদিনই প্রায় দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বিদ্যালয় ত্যাগ করছেন।

এ ঘটনা ঘটে ৪ আগস্ট, সোমবার। অভিযোগ পাওয়া বিদ্যালয়গুলো হলো:

বিলধনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় – সহকারী শিক্ষক রুবেল ও রাসেল

ভাটিমেওয়াখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় – সহকারী শিক্ষক সবুজ ও ইউসুফ

বিশুড়ীগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় – সহকারী শিক্ষক হাবিব ও মিজান

উজান মেওয়াখোলা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় – সহকারী শিক্ষক আইয়ুব হোসেন

এ বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবকদের অভিযোগ, “শিক্ষকরা সময়মতো বিদ্যালয়ে আসেন না এবং সময়ের আগেই চলে যান। এতে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে পাঠদান পাচ্ছে না।”

এ প্রসঙ্গে কাজিপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন,

> “আমি ইতোমধ্যে বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো শিক্ষক নিয়ম ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

error: Content is protected !!