সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

খলিফার কাঁধে আটার বস্তা

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩:১০ পিএম | 46 বার পড়া হয়েছে
খলিফার কাঁধে আটার বস্তা

ইসলামের ইতিহাসে হযরত উমর (রা.)-এর নাম আসলেই যে ছবিটি চোখের সামনে ভেসে ওঠে, তা হলো ন্যায়বিচার আর দায়িত্ববোধের এক জ্বলন্ত প্রতিমূর্তি। তিনি ছিলেন খলিফা, কিন্তু নিজেকে কখনো “রাজা” ভাবেননি। তিনি ভাবতেন নিজেকে প্রজার “দায়িত্বপ্রাপ্ত রাখাল” হিসেবে। আর সেই দায়িত্ববোধই তাঁকে রাতের অন্ধকারে মদিনার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে বাধ্য করত।
একবার মদিনায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। শস্যের দাম আকাশছোঁয়া। গরিব-দুঃখী মানুষের ঘরে চুলা জ্বলছে না। খলিফা উমর (রা.) দিনে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, আর রাতে গোপনে বেরিয়ে পড়েন—শুধু দেখার জন্য তাঁর প্রজারা কেমন আছে।
এক রাতে, গভীর রাত। চাঁদের আলোয় মদিনার পথ ধূসর। উমর (রা.) আর তাঁর সঙ্গী (কেউ কেউ বলেন আসলাম, কেউ বলেন আবদুর রহমান ইবন আউফ রা.) শহরের বাইরে একটি উপত্যকার দিকে যাচ্ছিলেন। দূর থেকে শোনা যাচ্ছে বাচ্চাদের কান্না। কাছে গিয়ে দেখেন, একটি ছোট্ট তাঁবু। ভিতরে এক মহিলা আর তার কয়েকটি বাচ্চা। বাচ্চারা পেটে হাত দিয়ে কাঁদছে, “মা, খাবার! খাবার!”
মা বারবার বলছে, “ঘুমাও বাবা, এখনই রান্না হয়ে যাবে।”
কিন্তু হাঁড়িতে কিছুই নেই—শুধু পানি আর কয়েকটা পাথর। পাথর গরম করে সে বাচ্চাদের মিথ্যে আশ্বাস দিচ্ছে যে, খিচুড়ি হচ্ছে।
উমর (রা.) দূর থেকে পুরো দৃশ্য দেখলেন। তাঁর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। সঙ্গীকে বললেন, “চলো, একটু দাঁড়াও।” তারপর তিনি নিজেই এগিয়ে গিয়ে মহিলাকে জিজ্ঞেস করলেন,
“তোমার বাচ্চারা কেন কাঁদছে?”
মহিলা চিনতে পারেননি যে খলিফা এসেছেন। রাগে-দুঃখে বললেন,
“আমার স্বামী মারা গেছে। খাবার নেই। উমর কোথায়? সে কি জানে না তার প্রজারা না খেয়ে মরছে? আল্লাহ তার হিসাব নেবেন!”
এ কথা শুনে উমর (রা.) আর দাঁড়াতে পারলেন না। তিনি সঙ্গীকে বললেন, “চলো, তাড়াতাড়ি।”
দুজনে দৌড়ে মদিনায় ফিরলেন। বায়তুল মালের গুদামে গিয়ে উমর (রা.) নিজের হাতে এক বস্তা আটা, এক বোয়াম ঘি, খেজুর, মাংস—যা পাওয়া গেল সব তুলে নিলেন। তারপর নিজের কাঁধে বস্তা তুলে নিলেন।
সঙ্গী বললেন, “আমিরুল মুমিনিন! আমাকে দিন, আমি বয়ে নিয়ে যাব। আপনি খলিফা।”
উমর (রা.) গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,
“তুমি আমার এই বোঝা বইতে পারো, কিন্তু কিয়ামতের দিন যখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন, ‘আমার বান্দারা না খেয়ে কাঁদছিল, তুমি কী করেছিলে?’—তখন আমার গুনাহর বোঝা কে বইবে?”
সঙ্গী আর কথা বাড়ালেন না। দুজনে মিলে জিনিসপত্র নিয়ে আবার সেই তাঁবুতে পৌঁছালেন। উমর (রা.) নিজে হাঁড়ি চড়ালেন, আগুন জ্বালালেন, নিজের হাতে রুটি বানালেন, মাংস রান্না করলেন, খিচুড়ি তৈরি করলেন। বাচ্চাদের হাতে তুলে দিলেন।
কিছুক্ষণ আগেও যে বাচ্চারা কাঁদছিল, এখন তাদের মুখে হাসি। পেট ভরে খেয়ে তারা খেলা শুরু করল। মায়ের চোখেও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার পানি।
কিন্তু উমর (রা.) হাসছিলেন না। তিনি চুপ করে বসে আছেন, চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। সঙ্গী জিজ্ঞেস করলেন, “আমিরুল মুমিনিন, বাচ্চারা তো হাসছে, আপনি কাঁদছেন কেন?”
উমর (রা.) ধরা গলায় বললেন,
“আজ যদি আমি এদের কান্না না শুনতাম… যদি এই রাতে ঘুমিয়ে থাকতাম… তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ যখন জিজ্ঞেস করতেন, ‘আমার এই ক্ষুধার্ত বান্দী আর তার সন্তানদের জন্য তুমি কী করেছিলে?’—আমি কী জবাব দিতাম?”
তারপর তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন,
“ইয়া আল্লাহ! তুমি জানো, আমি চেষ্টা করেছি। যদি কোথাও কোনো প্রজা না খেয়ে থেকে থাকে, তবে তার গুনাহ আমার ঘাড়ে নিও না।”
সেই রাতে খলিফা বাড়ি ফিরলেন অনেক রাতে। কিন্তু তাঁর মন শান্তি পেয়েছিল। কারণ তিনি জানতেন—নেতা মানে ক্ষমতার মালিক নয়, নেতা মানে দায়িত্বের বোঝা কাঁধে নেওয়া মানুষ।
এই গল্প শুধু উমর (রা.)-এর নয়, এ গল্প প্রতিটি শাসকের জন্য, প্রতিটি দায়িত্বশীল মানুষের জন্য। যারা ক্ষমতায় থেকেও নিজেকে “খাদেম” মনে করে, তারাই ইতিহাসে অমর হয়ে থাকে।
রাদিয়াল্লাহু আনহু।

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ

রাণীনগরে আদর্শ কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের ৫শ্রেণীর বিদায় অনুষ্ঠিত

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ প্রকাশিত: সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫:৫৬ পিএম
রাণীনগরে আদর্শ কিন্ডারগার্ডেন স্কুলের ৫শ্রেণীর বিদায় অনুষ্ঠিত

নওগাঁ রাণীনগরের পারইল ইউনিয়নের বগারবাড়ী বাজারের আদর্শ কিন্ডারগার্টেন স্কুলের আয়োজনে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান,অভিভাবক ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার সকাল ১০ টায় স্কুল প্রাঙ্গনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ সভাপতিত্বে করেন, মো:এসাহক আলী সরদার, সহকারী জয়ন্ত কুমার রায়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন,শুভেচ্ছা বক্তব্য অধ্যক্ষ জনাব সুকমল চন্দ্র সাহা। বিশেষ বক্তব্য রাখেন আব্দুল্লাহ- আল-মামুন,মো:শেখ বাবু (অভিভাবক সদস্য)। মূল্যবান বক্তব্য রাখেন মো:আব্দুস সামাদ(শিক্ষক প্রতিনিধি)। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের উদ্যােক্ত ও পরিচালকএনামুল হক রানা আকন্দ ।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুস সোবহান(প্রধান শিক্ষক) আবাদ পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়,জুলফিকার বারী শাহীন (সহকারী শিক্ষক) ভেটি মাদ্রাসা,মো:ফরিদ আলী(অব:প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) তানজিলা আকন্দ লাকি,নন্দিতা রানী,রামকৃষ্ণ পাল, মোঃফাহিম ইসলাম, প্রান্তোষ কুমার সহপ্রমথ।

বক্তারা বলেন, শিক্ষিত মা এক সুরভিত ফুল, প্রতিটি ঘর হবে এক একটি স্কুল। স্কুলের শিক্ষক, পরিচালনা পরিষদের সদস্য এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের চেষ্টায় ও সহযোগীতায় প্রতিটি স্কুল সঠিকভাবে পরিচালিত করলে আগামীতে এসব শিক্ষার্থীরা স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

মো: রেজাউল করিম, ঠাকুরগাঁও

পীরগঞ্জে ভারতীয় ইয়াবাসহ বাইসাইকেল আটক

মো: রেজাউল করিম, ঠাকুরগাঁও প্রকাশিত: সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫:৫১ পিএম
পীরগঞ্জে ভারতীয় ইয়াবাসহ বাইসাইকেল আটক

বিশেষ অভিযানে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ৪২ বিজিবি কর্তৃক ভারতীয় ইয়াবাসহ বাইসাইকেল আটক।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দেশের সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের জানমাল ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চোরাচালান, মাদক, মানব ও অস্ত্র পাচারসহ বিভিন্ন আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে বাহিনীটি বরাবরই প্রশংসনীয় সাফল্য প্রদর্শন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল আনুমানিক ৭টার সময় দিনাজপুর ব্যাটালিয়ন (৪২ বিজিবি) এর অধীনস্থ দানাজপুর বিওপি’র একটি টহল দল অভিযান পরিচালনা করলে ৩৩৯ নং পিলার হতে আনুমানিক ৭০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চন্দ্রাগ্রাম এলাকায় তল্লাশী চালিয়ে মালিকবিহীন অবস্থায় ৪৭ পিস ভারতীয় ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ০১টি বাইসাইকেল উদ্ধার করেছে বিজিবি।

উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য এবং বাইসাইকেল এর বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। একই সঙ্গে পালিয়ে যাওয়া সংশ্লিষ্ট মাদক ব্যবসায়ীদের শনাক্তকরণ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

বাড়ির রাস্তায় বাঁশ ও টিনের বেড়া

তাড়াশে ১৫ দিন ধরে অরুদ্ধ দু’টি পরিবার

মোঃ জিপরুল হোসাইন চলনবিল প্রকাশিত: সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫:৪৮ পিএম
তাড়াশে ১৫ দিন ধরে অরুদ্ধ দু’টি পরিবার

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তায় বাঁশ ও টিনের বেড়া দিয়ে ১৫ দিন ধরে অরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে দু’টি পরিবারকে। ফলে ওই দু’টি পরিবারের স্কুলগামী ছেলে-মেয়েসহ অন্যান্য লোকজন একান্ত প্রয়োজনীয় কাজেও বাড়ির বাইরে যেতে পারছে না। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার তালম ইউনিয়নের উপর সিলোট গ্রামে।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের সাইফুল ইসলামের নামে আইনুল হক মিথ্যা মামলা দায়ের করলে উভয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। খলিলুর রহমান ও আব্দুল জলিল চাচাতো ভাই সাইফুলে পক্ষ অবলম্বন করে। এরই জের ধরে আইনুল তার ভাই ওর্য়াড আ’লীগের সভাপতি জয়নুলের পরামর্শে বাঁশ ও টিনের বেড়া দিয়ে প্রতিবেশি খলিলুর রহমান ও আব্দুল জলিল পরিবারকে অবরুদ্ধ করে। বিষয়টি একাদিকবার গ্রামে সালীশ বৈঠক হলেও তারা ওই দুই প্রতিবেশি পরিবারকে মুক্ত করে দেয়নি।
এ ব্যাপরে অবরুদ্ধ পরিবার প্রধান খলিলুর রহমান বলেন, আইনুল আমার চাচাতো ভাই সাইফুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিলে আমার সাইফুলের পক্ষ অবলম্বন করি। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে আইনুল আমাদের দ্’ুটি পরিবারকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তায় বাঁশ ও টিনের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ রেখেছে। পরিবারের ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। আমরাও একান্ত প্রয়োজনীয় কাজেও বাড়ির বাইরে যেতে পারছি না।
এ প্রসঙ্গে আইনুল হক বলেন, আমার জায়গার উপর দিয়ে ওদের চলাচলের পথ। সে পথ আমি বেড়া দিয়ে বন্ধ করেছি। এতে কার বাপের কি ? আমি বেড়া উঠাবো না।
তালম ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নাজির উদ্দিন বলেন, ঘটনা স্থলে গ্রাম পুলিশ প্রধানকে পাঠিয়েছি। উভয় পক্ষকে নিয়ে সমস্য সমাধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তাড়াশ থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মিজানুর রহমান বলেন, অবরুদ্ধ থাকা পরিবারের বিয়ষটি নিয়ে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।