রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২
রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২

স্বাধীনতা পেয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না: মাহমুদুর রহমান

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪, ৮:১৯ পিএম | 108 বার পড়া হয়েছে
স্বাধীনতা পেয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না: মাহমুদুর রহমান

অতি উৎসাহীদের বাড়াবাড়ি না করার আহ্বান জানিয়েছেন দৈনিক ‘আমার দেশ’ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেছেন বলেন, অতি ইসলামিকও হবেন না।

ফ্যাসিবাদের সময় আপনারা কিছু করতে পারেননি। এখন স্বাধীনতা পেয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। এর কারণে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। যারা বাড়াবাড়ি করছেন আস্তিক আর নাস্তিক, হিন্দু ধর্ম নিয়ে; এতে ভারতীয় যে কৌশল তা আপনারা বাস্তবায়ন করবেন।

রোববার (৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মাহমুদুর রহমান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে আসার পর যে পাঁচ দিন আমি কারাগারে ছিলাম। আমার জন্য যে পরিমাণ ভালোবাসা দেশের মানুষ ও দেশের বাইরে থেকে মানুষ দেখিয়েছেন, তার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমি এর যোগ্য নই। আমি বিশিষ্ট ব্যক্তি নই, রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। এরকম কোনো আকাঙ্ক্ষাও আমার নেই। আমি এদেশের আম-জনতার বর্ষীয়ান একজন প্রতিনিধি মাত্র।

তিনি বলেন, আমার দেশ স্বাধীনতার কথা বলে, এই বার্তা আমরা পত্রিকা থেকে দিতাম। এই কথাটা ছিল আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতের আধিপত্যবাদের বিরোধী কথা বলার ক্ষেত্রে একটি মেসেজ। এটি তারা বুঝতে পেরেছিল। বাংলাদেশের অধিকাংশ মিডিয়া এখনো ভারতীয় ফ্যাসিবাদীরা দখল করে বসে আছে। এটিই সত্য। মিডিয়ার মালিক বা সম্পাদক, এদের বেশিরভাগই ভারতের এজেন্ট।

‘মৌলবাদ’ শব্দ ব্যবহার না করতে সরকারকে সতর্ক করে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক বলেন, অতি ইসলামিক এবং মৌলবাদ ট্যাগ ব্যবহারকারীদের প্রতিহত করতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের একটি সংস্কার কমিটির দায়িত্বে আছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বললেন, দেশে নাকি ‘মৌলবাদের’ উত্থান হচ্ছে। সরকারে থেকে এ ধরনের ব্যক্তিগত কথা বলা যায় না। তার বক্তব্য সরকারের বক্তব্য হয়ে যায়। তিনি এই ‘মৌলবাদ’ কোথায় পেলেন। এই ‘মৌলবাদ’র কার্ড ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছে, এটি ব্যবহার করে আয়নাঘর হয়েছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে তারা। এখন ইফতেখারুজ্জামান আবার ‘মৌলবাদ’ কার্ড ব্যবহার করছেন, আপনার উদ্দেশ্য কী। নতুন কায়দায় ভারতীয় আধিপত্যবাদ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা আপনার উদ্দেশ্য। আপনি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলেন, আমরা আপনার সঙ্গে আছি। ‘মৌলবাদ’ শব্দ ব্যবহার করবেন না। তাই সরকারকে এ বিষয়ে আমি সতর্ক করে দিতে চাই।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এতই পাওয়ারফুল যে তাকে এক এগারোর সরকারে নিতে আইন পরিবর্তন করতে হয়। বর্তমান সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আমেরিকায় সফরসঙ্গী হিসেবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ যাননি, গেছেন দেবপ্রিয়। এই দেবপ্রিয় ২০০৫ সাল থেকে এক-এগারোর সরকারের সময় পর্যন্ত দেশে ইন্ডিয়ান করিডোর দিতে প্রতিদিন ক্যাম্পেইন করতেন। বিদেশের টাকা নিয়ে প্রতিদিন ক্যাম্পেইন করেছেন তিনি। তার বক্তব্য সেদিন ছিল যে, করিডর থেকে দেশ যে শুল্ক পাবে তা দিয়ে বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাবে। তার কাছে আমরা জানতে চাই, গত ১৬ বছরে ট্রানজিট থেকে কত ডলার বাংলাদেশ আয় করেছে। এখন পর্যন্ত কেউ সরকারকে এ প্রশ্ন করেননি। আমরা দেখেছি সংবাদ সম্মেলনে কী করা হতো। আমার দেশ থাকলে এই প্রশ্ন করা হতো। এই দেবপ্রিয়কে তার মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।

মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, যে দলই ক্ষমতায় আসুক, বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামায়াত—যারাই আসুক; দিল্লির পক্ষে যারা কথা বলবে তাদের সঙ্গে আমাদের লড়াই চলবে। আমি যতদিন জীবিত আছি ততদিন আমার লড়াই চলবে। আমি সবাইকে কথা দিচ্ছি, জনগণের কাতারে থেকে জনগণের জন্য মৃত্যু পর্যন্ত লড়াই করবো।

সভায় মাহমুদুর রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো
১. ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করতে হবে;
২. বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এক সপ্তাহের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে;
৩. যমুনা সেতুকে শহীদ আবু সাইদের নামে নামকরণ করতে হবে, যাতে মানুষ সেখান দিয়ে পার হওয়ার সময় শতাব্দীর পর শতাব্দী আবু সাইদকে দেখতে পায়;
৪. ২০০৯ সালের পর থেকে ভারতের সঙ্গে যত চুক্তি হয়েছে তার প্রত্যেকটা ধারা-উপধারা জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। ভারতের সঙ্গে কী কী চুক্তি হয়েছে তাজনগণকে জানাতে হবে। এগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে, যেখানে ভারতের ও ফ্যাসিবাদের দোসর থাকতে পারবে না;
৫. বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউকে শহীদ আবরারের নামে নামকরণ করতে হবে, কারণ শহীদ আবরার এই ফ্যাসিবাদ আন্দোলনের প্রথম শহীদ। মনে রাখতে হবে, শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচার নেতা। আর শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের আইকন হচ্ছে শেখ মুজিব;
৬. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের মনোনয়ন অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কারণ এই পুতুলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল জালিয়াতির মাধ্যমে;
৭. এবং আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে কারাগারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম এবং বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টুর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে হবে।

ইতালি প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা: দোষীদের বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

অপি মুন্সী : শিবচর ( মাদারীপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৪০ পিএম
ইতালি প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা: দোষীদের বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

 

মাদারীপুরে মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ইতালি প্রবাসীর স্ত্রী সুমাইয়া আক্তারের আত্মহত্যার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের পরিবার।
রোববার দুপুরে মাদারীপুর শহরের একটি সাংবাদিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত সুমাইয়ার মা রুমি বেগম অভিযোগ করে বলেন, বছরখানেক আগে সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের ভরুয়াপাড়া গ্রামের সরোয়ার হাওলাদারের ছেলে ইতালি প্রবাসী জহিরুল হাওলাদারের সঙ্গে বিয়ে হয় রাজৈর উপজেলার কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের নাসির হাওলাদারের মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের।
বিয়ের পর স্ত্রীকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিলেও জহিরুলের পরিবার এতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ নিয়ে দাম্পত্য জীবনে শুরু হয় কলহ। একপর্যায়ে বিয়ের সময় দেওয়া স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করে সুমাইয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে স্বামীর পরিবার। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সুমাইয়া বাবার বাড়ি ফিরে আসেন।

গত মঙ্গলবার রাতে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথাকাটাকাটির পর সুমাইয়া ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরদিন সন্ধ্যায় নিহতের মরদেহ বাবার বাড়িতে দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা নাসির হাওলাদার গত ৫ নভেম্বর রাজৈর থানায় জহিরুল হাওলাদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তবে এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
অন্যদিকে, মামলার বিষয়টি জানাজানি হলে জহিরুলের বাবা সরোয়ার হাওলাদার ৬ নভেম্বর মাদারীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সুমাইয়ার বাবাসহ আটজনের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেন।

এই অবস্থায় ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান নিহতের স্বজনরা।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের বাবা নাসির হাওলাদার, মা রুমি বেগম, চাচা কালাম হাওলাদার ও মামা হিরু তালুকদারসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ খান বলেন, “এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আসামিদের গ্রেফতারের অভিযানও চলছে।

বিএনপিতে অনৈক্য

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাব ও সমাধান

এম. এ. কাদের (শিক্ষক ও গবেষক) প্রকাশিত: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:২৫ পিএম
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাব ও সমাধান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অধ্যায় রচনা করেছিল ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। স্বাধীনতার পর জাতীয় ঐক্য পুনর্গঠন ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রত্যয়ে বিএনপির জন্ম হয়। “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” ছিল দলের মূল আদর্শ, যার ভিত্তিতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, ইসলামি মূল্যবোধ, এবং জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
দলের লক্ষ্য ছিল একটি স্বনির্ভর, ন্যায়ভিত্তিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। ১৯৯১, ২০০১ ও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে বিএনপি প্রশাসনিক দক্ষতা ও গণতান্ত্রিক চর্চার কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও, সমালোচনার মুখে পড়ে দুর্নীতি, দলীয়করণ ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের কারণে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিএনপি এক জটিল সঙ্কটে আবদ্ধ। একদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততার অভাব, অন্যদিকে দলীয় ঐক্যের ঘাটতি ক্রমে রাজনৈতিক শক্তিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। দলীয় নেতৃত্বের অনুপস্থিতি বিশেষ করে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রবাসবাস কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে সিদ্ধান্তহীনতা সৃষ্টি করেছে।
এই শূন্যতায় আভ্যন্তরীণ কোন্দল স্পষ্টত দৃশ্যমান। মনোনয়ন বণ্টনে অসন্তোষ, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, জেলা পর্যায়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি আস্থাহীনতা এবং দলীয় পদবণ্টনে বঞ্চিত নেতাদের ক্ষোভ আজ বিএনপিকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় যেসব নেতা “তারেক-ঘনিষ্ঠ” বা “বদরুদ্দোজা ঘরানার” ট্যাগে বিভক্ত হচ্ছেন, তারা মাঠে একে অপরের বিপক্ষে কাজ করছেন—যা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
কেন্দ্র ও তৃণমূলে সম্পর্কহীনতা এখন বিএনপির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। অনেক সময় স্থানীয় নেতারা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আগ্রহী নন, কারণ তাদের মনে হয়, কেন্দ্র মাঠের বাস্তবতা বোঝে না। দলীয় কাউন্সিল বা নিয়মিত আলোচনা না থাকায় এই দূরত্ব আরও বেড়েছে। মাঠ পর্যায়ে অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্রীয় নেতারা জনগণের দুর্ভোগ বা আন্দোলনের ত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন করেন না।
এমন পরিস্থিতিতে দলের ভিতরে “কাদা ছড়াছড়ি” রীতিমতো জনসমক্ষে চলে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতাদের পরস্পরের প্রতি তীর্যক মন্তব্য ও দোষারোপ বিএনপির ভাবমূর্তিকে ক্রমশ ক্ষয় করছে। যে ঐক্যের মাধ্যমে সরকারবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত হওয়ার কথা ছিল, তা এখন ব্যক্তিগত ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছে।
এর প্রভাব পড়ছে সরাসরি আগামী জাতীয় নির্বাচনে। বিএনপি যদি ঐক্যবদ্ধ কৌশল তৈরি না করে, তাহলে মাঠ পর্যায়ে প্রার্থী একাধিক হওয়া, ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা, ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত এজেন্টের অভাব এবং প্রচারে সমন্বয়হীনতা দলের জন্য ভয়াবহ হতে পারে। তৃণমূলের হতাশা ও বিভক্তির কারণে ভোটারদের আস্থাও ক্ষুণ্ণ হবে—যা শেষ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলকে সুবিধা এনে দেবে।
তবে এই সংকট থেকে উত্তরণের উপায় এখনো আছে, যদি বিএনপি দলীয় আত্মসমালোচনা ও গবেষণাভিত্তিক সংস্কারের পথে হাঁটে। নিচে কয়েকটি গবেষণামূলক পরামর্শ উল্লেখ করা হলো—
১. দলীয় কাঠামোর পুনর্গঠন: কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃত্বের মধ্যে স্বচ্ছ যোগাযোগ স্থাপন ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ।
২. মনোনয়ন নীতির সংস্কার: ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, যোগ্যতা ও জনআস্থাভিত্তিক প্রার্থী নির্ধারণের মানদণ্ড প্রবর্তন।
৩. প্রবাসী নেতৃত্বের কার্যকর সম্পৃক্ততা: বিদেশে থাকা নেতৃত্বের অনলাইন কাউন্সিল বা ভার্চুয়াল নীতিনির্ধারণী সভার নিয়মিত আয়োজন।
৪. রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সেল: তরুণ কর্মীদের জন্য রাজনৈতিক শিক্ষাক্রম চালু করা।
৫. দলীয় গণতন্ত্র জোরদার: নিয়মিত অভ্যন্তরীণ নির্বাচন ও মতবিনিময় সভা আয়োজন।
৬. ডিজিটাল যোগাযোগ কাঠামো: কেন্দ্র ও জেলা পর্যায়ে ডিজিটাল নেটওয়ার্ক গড়ে দলীয় সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রচার।
৭. নারী ও তরুণ নেতৃত্বের উত্থান: নতুন প্রজন্মকে নেতৃত্বে আনতে সংরক্ষিত পদ ও সুযোগ।
৮. গণআন্দোলন পুনর্গঠন: দলীয় কর্মসূচিকে জনগণের মৌলিক সমস্যা—মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, দুর্নীতি—এর সঙ্গে যুক্ত করা।
৯. মিডিয়া ব্যবস্থাপনা: নেতিবাচক প্রচারণা মোকাবিলায় তথ্যভিত্তিক ও গবেষণামূলক প্রতিক্রিয়া টিম গঠন।
১০. ঐক্যের জন্য ‘সংলাপ ফোরাম’: দলের প্রবীণ ও তরুণদের সমন্বয়ে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্ল্যাটফর্ম তৈরি।
বিএনপির সামনে এখন সময় অল্প, কিন্তু সুযোগ যথেষ্ট। যদি তারা নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ভুলে গিয়ে একক লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে—গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের আস্থা পুনরায় অর্জনের—তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুধু তাদের জন্য নয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্যও এক নতুন সূচনা হতে পারে।

এম. এ. কাদের (শিক্ষক ও গবেষক)

রূপগঞ্জ আসনে ধানের শীষে মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজু রহমান ভূঁইয়া দিপুর পক্ষে দাউদপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:১৯ পিএম
রূপগঞ্জ আসনে ধানের শীষে মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজু রহমান ভূঁইয়া দিপুর পক্ষে দাউদপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

নারায়ণগঞ্জ ১ রূপগঞ্জ আসনে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপুর পক্ষে দাউদপুর ইউনিয়ন বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত।উক্ত নির্বাচনী প্রস্তুতি সভায় দাউদ পুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এডভোকেট হেলাল উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ও দাউদ পুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ সুলতান মাহমুদ সিনিয়র সহ সভাপতি নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র দল,শফিক সরকার সাবেক সহ সভাপতি নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র দল, মোঃ আহসান উল্লাহ মাস্টার সিনিয়র সহ সভাপতি দাউদ পুর ইউনিয়ন বিএনপি,রিয়াদ ভূইয়া কিরন সিনিয় যুগ্ম সম্পাদক দাউদ পুর ইউনিয়ন বিএনপি,আবুল কালাম সাংগঠনিক সম্পাদক দাউদ পুর ইউনিয়ন বিএনপি,সিপন সাংগঠনিক সম্পাদক দাউদ পুর ইউনিয়ন বিএনপি,মেহেদী হাসান মিঠু সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল,আশিকুর রহমান রুবেল সাধারণ সম্পাদক দাউদ পুর ইউনিয়ন যুবদল,ইসাক সরকার সাবেক সভাপতি দাউদ পুর ইউনিয়ন ছাত্রদল সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।