জোড়গাছা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনিয়ম ও কবর উচ্ছেদের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি!!


আহসান হাবিব শিবলু বগুড়া প্রতিনিধি:
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার জোড়গাছা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মো. এনামুল বারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম, ছাত্রী হেনস্তা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় এনামুল বারীর পুনর্বহালের আবেদনের প্রেক্ষিতে। এ বিষয়ে তদন্তে সরেজমিনে আসেন বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রমজান আলী আকন্দ। তদন্ত চলাকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ জুড়ে শতশত শিক্ষার্থী ও অভিভাবক “এনামুল বারীর অপসারণ চাই”, “দুর্নীতিবাজ শিক্ষক নয়, ন্যায় চাই” শ্লোগানে বিক্ষোভ করেন।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ— এনামুল বারী বিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক অনিয়মে জড়িত, ছাত্রীদের হেনস্তা করেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন। তিনি অতীতে বিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজন করে ছাত্রছাত্রীদের বাধ্য করতেন অংশ নিতে, যা শিক্ষা পরিবেশ নষ্ট করেছে।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেরাজুল ইসলাম, রিমন ইসলাম, রিদয়, আকাশ ইসলাম, আশিকুল হক তারেক, শুভ, জাহিদ, আসিফ, নিলুফা, বিপ্লব, খুশি, লিজা, ও রিমিদের পক্ষে কথা বলেন—মেরাজুল ইসলাম বলেন স্যার আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, ভয় দেখান। রিমন ইসলাম বলেন তিনি স্কুলকে নিজের রাজনৈতিক মঞ্চ বানিয়ে ফেলেছেন।নিলুফা আক্তার বলেন ছাত্রীদের হেনস্তা করা হয়, আমরা আর তাকে শিক্ষক হিসেবে চাই না।রিদয় ইসলাম বলেন আমরা নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে পড়ালেখা করতে চাই।
সাবেক শিক্ষার্থী রানা ইসলাম বলেন, আমাদের বিদ্যালয় একসময় এলাকায় শিক্ষার আদর্শ প্রতিষ্ঠান ছিল। এখন তার অনিয়মে সুনাম নষ্ট হয়েছে। আমরা চাই, স্কুলের মর্যাদা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অন্য সাবেক শিক্ষার্থী খাইরুন নেছা বলেন,বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার কবর স্কুল প্রাঙ্গণে অবস্থিত, অথচ এনামুল বারী সেটি উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই কবর আমাদের গর্বের অংশ, এটি সরানোর চেষ্টা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস মুছে ফেলার সমান। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রমজান আলী আকন্দ অভিযোগগুলো মনোযোগ সহকারে শুনে বলেন,আমি সব অভিযোগ লিখিতভাবে নিচ্ছি। ২–৩ কর্মদিবসের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে একটি ন্যায্য ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
এ সময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম বাবলু, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহিনুর রহমান, অভিভাবক ফজলুল করিম, লিটন, মিলটন, মিজানুরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, এই আন্দোলন স্কুলের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখার প্রয়াস মাত্র, কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়।