আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রেরের মূল হোতা
ইউরোপ পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে শরিয়তপুরের চেয়ারম্যান :মান্নান ভাসানী


শরীয়তপুরের পালং থানার অন্তর্গত শৈলপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মান্নান ভাসানী নামের এক ব্যক্তি জনপ্রতিনিধির খোলসে এক ভয়ঙ্কর প্রতারক, আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রের হোতা এবং স্বেচ্ছাচারী অপরাধরাজত্বের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রকে পরিণত হয়েছেন। পিতা মোড়ল খানের উত্তরসূরি এই চেয়ারম্যানের মূল পরিচয় একজন বিদেশপ্রেমিক প্রতারক- বর্তমানে আয়ারল্যান্ডে থেকে ইউরোপগামী স্বপ্ন বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ ইউরো।
মানবপাচারের অভিযোগে জর্জরিত এই চেয়ারম্যান তার ইউনিয়নের সাধারণ জনগণকে ইউরোপে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা ফাঁদ পেতে বসেছেন। ইতোমধ্যেই তার হাতিয়ে নেওয়া ইউরোর পরিমাণ এক লাখ চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ও শৈলপাড়ার আমজাদ দিয়েছেন ২০,০০০ ইউরো, রাজীব ৩,০০০ ইউরো, আলম ২০,০০০ ইউরো, হাসান ১৫,০০০ ইউরো, রাজা কবির মিন্টু ১৫,০০০ ইউরো এবং লোকমানের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে রীতিমতো ২৮,৫০০ ইউরো।
তবে শুধু প্রতারণাই নয়- প্রতিবাদকারীদের জন্য বরাদ্দ থাকে প্রাণনাশের হুমকি, অপহরণের ভয় এবং বিচারবহির্ভূত ‘শেখ হাসিনার দলে আছি’ ধরণের দম্ভোক্তি। শৈলপাড়ার বাসিন্দা বেলাল উদ্দিন সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, “স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের এই চেয়ারম্যান এমন কোনো অপরাধ নেই যা সে করেনি। মানবপাচার, হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচার, সাধারণ মানুষকে হয়রানি, ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, ব্ল্যাকমেইলিং- সবই তার নিত্যদিনের কাজ।”
স্থানীয়দের মতে, আয়ারল্যান্ডে থেকে পরিচালিত হয় এই ইউনিয়নভিত্তিক বৈশ্বিক প্রতারণা চক্র। দেশের মাটিতে পদচিহ্ন না রাখলেও প্রভাব বিস্তার করছেন অনুগত ক্যাডার বাহিনী দিয়ে, যারা কথায় না শুনলে গায়েও হাত তোলে।
চেয়ারম্যান মান্নান ভাসানী প্রশাসন ও দলের প্রভাব ব্যবহার করে নিজের অপরাধ সাম্রাজ্যকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, যেখানে অভিযোগ করলেই উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীকেই। স্থানীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস করে না কেউ- যদি না তার পরিণতি হয় নিরুদ্দেশ, অপহরণ বা জেল-হাজত।
এমতাবস্থায়, এই দুর্ধর্ষ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে দ্রুত তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন এলাকাবাসী এবং দেশের বিবেকবান নাগরিকরা। নতুবা জনপ্রতিনিধির মুখোশে প্রতারকের এই দানবীয় উত্থান ভবিষ্যতে গ্রাম নয়- পুরো জেলা গিলে খাবে।
এখানেই শেষ নয় চলবে….