রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২
রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

দক্ষিণপন্থীদের উত্থানে

‘বামপন্থী বিএনপি’ উদ্বিগ্ন যে কারণে

এফ শাহজাহান ক্রাইসিস অ্যানালাইসিস ২৭ জুলাই ২০২৫ প্রকাশিত: রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ৩:২৭ পিএম | 79 বার পড়া হয়েছে
‘বামপন্থী বিএনপি’ উদ্বিগ্ন যে কারণে

তিন প্রজন্মের পরীক্ষিত দল বিএনপি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘প্রথম প্রজন্ম’। আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ‘দ্বিতীয় প্রজন্ম’ এবং চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘তৃতীয় প্রজন্ম’।
শুরু থেকেই জাতীয়তাবাদী ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী এই বিএনপির পরিচয় ছিল ডানপন্থী রাজনৈতিক দল হিসেবে। বিএনপির ঘনিষ্টতাও ছিল দক্ষিণপন্থী তথা ইসলামপন্থীদের সঙ্গে।
দেশের মানুষ সব সময় প্রত্যাশা করেছে যে, ইসলামপন্থীদের সঙ্গে ডানপন্থী বিএনপি জোটবদ্ধ থেকেই ভারতপন্থী আর বামপন্থীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করবে।
সম্প্রতি হঠাৎ করে জাতীয়তাবাদী ইসলামী আদর্শের সেই তিন প্রজন্মের বিএনপিকে রূপান্তরিত করে নতুন এক পরিচয়ে ‘বামপন্থী বিএনপিকে’ হাজির করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি গতকাল ২৬ জুলাই এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে দক্ষিণপন্থীদের উত্থানে উদ্বিগ্ন হওয়ার কথা বলে প্রমান করেছেন, তার দল বিএনপি এখন দক্ষিনপন্থার বিরুদ্ধে। অর্থাৎ বিএনপি এখন একটি ‘বামপন্থী’ রাজনৈতিক দল।
প্রথম আলোয় দেওয়া ঐ সাক্ষাতকারের প্রশ্ন ছিলো-‘‘তাহলে কি আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পর দেশের রাজনীতিতে দক্ষিণপন্থীদের উত্থান হতে যাচ্ছে ? আপনি কী দেখেন ?’’
এর জবাবে মির্জা ফখরুল বলেছেন,‘‘আমিও দেখছি। সে জন্য আমি উদ্বিগ্ন। আমি বাংলাদেশকে সব সময় একটা সত্যিকার অর্থে উদারপন্থী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে দেখতে চাই এবং এখানে গণতন্ত্র হবে সবচেয়ে বড় বিষয়। সেই জায়গায় যদি এখন এমন এমন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান হয়, যারা গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না। পরিষ্কার ঘোষণা দিয়ে করে না। আবার তারা নিজেরা জোর করে চাপিয়ে দিতে চায় মতবাদকে, এটা নি:সন্দেহে এলার্মিং সিচুয়েশন।’’
দক্ষিণপন্থীদের পরিচয় দিতে গিয়ে মির্জা সাহেব বলেন,‘‘কিছু কিছু দলের মধ্যে এমনও কথা আছে যে মহিলাদের তারা কিছুতেই সামনে আনতে চায় না। মহিলাদের তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা তো দূরের কথা, তারা সামাজিক ক্ষমতায়নও করতে চায় না।’’
এর পর এই প্রশ্নের উত্তরে মির্জা সাহেব বলেন,‘‘এসব দলের যদি উত্থান হয় এই দেশে, তাহলে তো পিছিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো পথ থাকবে না।’’
ঐ সাক্ষাৎকারে মির্জা সাহেব অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেছেন যে, দক্ষিণপন্থীরা গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না। দক্ষিণপন্থীদের উত্থান হলে দেশ পিছিয়ে যাবে।
তাঁর কথায় সত্যিকার অর্থে উদারপন্থী গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে হলে দক্ষিণপন্থীদের উত্থান ঠেকিয়ে বামপন্থীদের উত্থান ঘটাতে হবে।
মির্জা সাহেবের এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, জাতীয়তাবাদী ইসলামী আদর্শ ঝেড়ে ফেলে দিয়ে বিএনপি এখন আগাগোড়া খাঁটি বামপন্থী দলে পরিণত হয়েছে এবং সেই কারণে বাংলাদেশে ডানপন্থীদের উত্থানে বিএনপি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
অথচ এতোদিন দেশবাসী জেনে এসেছেন যে, জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপি দক্ষিণপন্থী তথা ডানপন্থী রাজনৈতিক দল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার আমলেও জাতীয়তাবাদী ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী বিএনপি দক্ষিণপন্থী ছিলো। বেগম খালেদা জিয়ার আমলেও সেই বিএনপি দক্ষিণপন্থীই ছিলো।
বর্তমান চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সময়ে এসে হঠাৎ করে দলটির মহাসচিব ডানপন্থীদের উত্থানে উদ্বিগ্ন হয়ে জাতীয়তাবাদী ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী বিএনপিকে দক্ষিণপন্থী থেকে রুপান্তরিত করে বামপন্থী হিসেবে জাহির করলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে আগাড়গাড়া একজন খাঁটি বামপন্থী মানুষ। তাঁর মিশনই ছিলো ডানপন্থী বিএনপিকে বামপন্থীতে রূপান্তরিত করা। তিনি সেই মিশনে সফল হয়েছেন।
দু:খজনকভাবে বিএনপিতে এখন ভারতপন্থী, আওয়ামী পন্থী এবং বামপন্থীদের প্রভাব বেশি। প্রথম প্রজন্মের বিএনপি এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের বিএনপিতে ভারতপন্থী-আওয়ামী পন্থী এবং বামপন্থীদের অবস্থান থাকলেও তাঁরা কোনঠাসা অবস্থায় ছিলেন। এখন তৃতীয় প্রজন্মের বিএনপি চালাচ্ছে অতীতে ঘাপটি মেরে থাকা সেই ভারতপন্থী, আওয়ামী পন্থী এবং বামপন্থীরা। তাই ডানপন্থী বিএনপির এই বামপন্থীতে রূপান্তর হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
বামপন্থীরাই এখন বিএনপি চালাচ্ছে বলে বিএনপির ‘ডানপন্থী প্রজন্ম’ চাপা পড়ে গেছেন। সম্ভবত সে কারণেই আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকেও দৃশ্যপটের আড়ালে রাখা হয়েছে।
একারণেই বিএনপির ত্রিকালদর্শী জনতা বিএনপির এই রূপান্তরে তেমন একটা হোঁচট খায়নি। তারা খুব সহজেই বিএনপির এই রূপান্তর মেনে নিয়েছেন।
তবে এতোদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে পথ চলা মানুষের জিজ্ঞাসা, দক্ষিণপন্থী বিএনপির হঠাৎ করে বামপন্থীতে রূপান্তরের আসলে উদ্দেশ্য কী ?
এই প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারবেন কেবলমাত্র বিএনপির মহাসচিবই। তবে মির্জা সাহেবের এই উদ্বিগ্ন হওয়ার বক্তব্যে আরো বেশি উদ্বিগ্ন হয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ।
আন্দোলনের মহাসচিব এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব “দক্ষিণপন্থীদের উত্থান” সম্পর্কিত এক প্রশ্নে যেভাবে উত্তর দিয়েছেন, তাতে জনমনে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভুল বার্তা দেবে।
বিএনপির মহাসচিবের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনুস আহমদ আরো বলেন, ‘আমরাও বাংলাদেশে রাজনীতি করছি। আমরা তো এমন কোনো শক্তির উত্থান দেখছি না। তিনি যদি এমন কোনো শক্তির উত্থান দেখেন, তাহলে তা পরিষ্কার করে বলা উচিত। কিন্তু তা না করে অনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে এমন নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করাকে আমরা অশুভকর বলে মনে করছি। তাঁর এই বয়ান পতিত ফ্যাসিবাদের বয়ানকে সমর্থন করে।’
ডানপন্থী বিএনপিকে বামপন্থীতে রূপান্তরিত করার আসল উদ্দেশই হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিতাড়িত ফ্যা.সিবাদের পূনর্বাসন করা। হাজার হাজার শহীদের রক্তে কেনা ২য় স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করা।
জোটবদ্ধ জাতির রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের মাধ্যমে ভারতীয় অধিপত্যবাদ খতমের চেতনাকে নস্যাত করার জন্যই রক্তঝরা চব্বিশের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পর থেকে পলাতক আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে বিএনপিকে সামনে আনার চেষ্টা চলেছে।
এবার সেই চেষ্টারই অনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দিনাজপুরে বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

মো: মেহেদী হাসান ফুয়াদ দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫৫ পিএম
দিনাজপুরে বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

২ আগষ্ট শনিবার বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- রাজ-২২৬৭) এর নব নির্বাচিত কার্য্যকরী কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নব- নির্বাচিত সভাপতি- মোঃ আব্দুস সাত্তার, সহ সভাপতি- মোঃ শরিফুল ইসলাম সেলি, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনিসুর রহমান, সহ সাধারণ সম্পাদক, আবুল কালাম (১), সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ এনামুল হক, অর্থ সম্পাদক- আবুস সালাম ও কার্র্য্যনির্বাহী পরিষোধের সদস্য মোঃ কমর আলী শেখ ও মোঃ বিশালকে ইউনিয়নের গঠনতন্ত্র অনুর্যায়ী শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশান দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি রবিউল আউয়াল খোকা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবিবর রহমান। উল্লেখ্য, বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- রাজ-২২৬৭) এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২ জুলাই ‘২০২৫। নির্বাচনে উপরোক্ত ৮জন প্রার্থী বিজয়ী হন।

দেশের উন্নয়ন ও ন্যায় বিচারে ধানের শীষের প্রতি জনগণের আস্থা : ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ

বগুড়া থেকে মোঃ হাফিজুর রহমান প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫১ পিএম
দেশের উন্নয়ন ও ন্যায় বিচারে ধানের শীষের প্রতি জনগণের আস্থা : ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ

গাবতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, গাবতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জনাব ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ জানিয়েছেন —
আমাদের দেশ চলে মানুষের ঘাম আর পরিশ্রমের করের টাকায়। প্রতিটি রাস্তা, স্কুল, হাসপাতাল, সরকারি সেবা ও অবকাঠামো জনগণের টাকায় গড়ে উঠেছে।
কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট শাসন আর আজকের কর্তৃত্ববাদী মনোভাব দেশের মানুষের ন্যায্য অধিকারকে অবমূল্যায়ন করেছে — মানুষের ভোটাধিকার হরণ হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়েছে, গণতন্ত্রকে পদদলিত করা হয়েছে। স্বজনপ্রীতি, লুটপাট আর দুর্নীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে জিম্মি করে রেখেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিশ্বাস করে—গণতন্ত্র মানে শুধু ভোট নয়, মানুষের কথা শোনা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
আমাদের আপোষহীন নেত্রী, তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার রক্ষায় আজও আপোষহীনভাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। বিএনপি জনগণের অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে সবসময়ই জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপি সরকারের সময় দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পথে ছিল, গণতন্ত্র ও মানুষের কথা বলার অধিকার সুরক্ষিত ছিল — যা আজ হরণ হয়েছে।
আগামী নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাই—আপনাদের শক্তি ও অধিকারকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়ন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিজয়ের প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিন, আপনার আস্থা ও বিশ্বাস প্রকাশ করুন।
বিএনপি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পক্ষে। দেশের প্রতিটি টাকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করাই আমাদের অঙ্গীকার। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকাটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তি।
আমরা বিশ্বাস করি—ধানের শীষে জনগণের এই আস্থা গণতন্ত্র, উন্নয়ন আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হয়ে উঠবে।

মধ্যবয়স্ক নারীর ভালবাসা এক নীরব নদীর মতো

Masud Parves প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৪৯ পিএম
মধ্যবয়স্ক নারীর ভালবাসা এক নীরব নদীর মতো

মধ্যবয়সী নারীকে বাইরে থেকে দেখে কেউ বুঝতে পারে না, তার ভেতর কতটা জীবন বয়ে চলে। তার মুখে হয়তো একরাশ শান্তি, চোখে একটুখানি ক্লান্তি—কিন্তু এই চেহারার ভেতরে আছে এক গভীর নদী, যেটা ধীরে ধীরে বয়ে যায়। এই নদী যেন নীরব, তবে থেমে নেই। প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, ভালোবাসা, হারানো-বিলুপ্ত কিছু স্মৃতি—সব মিলে তার কামনা তৈরি হয় এক নতুন রূপে, এক অনন্য ভাষায়।
এই বয়সে সে আর কারো মন জেতার জন্য হাসে না। সে নিজেকে লুকিয়ে রাখে না, সাজিয়ে তোলে না কেবল কারো নজর কাড়ার জন্য। বরং সে নিজেকে ভালোবাসে গভীরভাবে। জানে—তার শরীর ঠিক যেমন, তেমনটাই সুন্দর। তার যৌনতা এখন আর দেহের খেলায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে বোঝাপড়ার, সম্মান আর সংবেদনের জায়গা।
তরুণ বয়সের কামনা হঠাৎ জ্বলে ওঠে, হঠাৎ নিভেও যায়। সেখানে থাকে আবেগের ঝড়, না বুঝে ফেলার এক উন্মাদনা। কিন্তু মধ্যবয়সী নারীর কামনা অনেক বেশি ধৈর্যের, অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসের। সে জানে, কীভাবে তার শরীরের প্রতিটি প্রতিক্রিয়া বোঝে নিতে হয়। সে জানে, কখন আগলে রাখতে হয় নিজেকে, আর কখন খুলে দিতে হয় সমস্ত দরজা।
এই নারী কাউকে ছুঁতে চায়—কিন্তু ছোঁয়াটার আগে সে বোঝে নেয় সেই মানুষটার ভেতরটা। সে শুধু শরীর খোঁজে না—সে এমন একজন সঙ্গী খোঁজে, যার স্পর্শে থাকে শ্রদ্ধা, যার চোখে থাকে নিরাপত্তা। সে জানে কার পাশে ঘুমালে শান্তি নামে, আর কার পাশে থাকলে ভালোবাসা শুকিয়ে যায়।
তার কামনা আর শিশুর মতো নিষ্পাপ নয়। বরং তাতে এক ধরনের প্রাপ্তবয়স্ক মমতা থাকে, থাকে বোঝাপড়া। সে জানে কখন চাওয়া, কখন না বলা। সে জানে, ‘না’ বলাটাও নিজের প্রতি এক রকম ভালোবাসা। তার ভালোবাসা এখন আর পাগলামি নয়—তা গভীর, সযত্নে বাছাই করা, বোধসম্পন্ন।
সমাজ হয়তো ভাবে এই বয়সের নারী নিঃসাড়, নিঃস্পৃহ। কিন্তু তারা জানে না, তার ভেতরটায় প্রতিদিন ঢেউ খেলে যায়। তার চোখে জমে থাকা পুরনো গল্পের আলো ঝিলমিল করে, তার হাসিতে মিশে থাকে না বলা ভালোবাসার রেশ। এই নারী চাইলেই কারো জীবনে নীরবে ঢুকে যেতে পারে, আবার কাউকে বিদায়ও জানাতে পারে নিঃশব্দে—এক বিন্দু তিক্ততা ছাড়াই।
তার যৌনতা আজ আর কারো কাছ থেকে অনুমতি চায় না। সে নিজের শরীর, নিজের কামনা, নিজের মনের দায়িত্ব নিজেই নেয়। সে জানে—কে তার জলের গভীরে স্নান করার যোগ্য, আর কে কেবল পাথর ছুড়ে জল ঘোলা করতে চায়।
মধ্যবয়স মানে ক্ষয় নয়, সেটি এক নবজন্ম। একজন নারী এই বয়সে এসে হয়তো সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল হয়—যেন সন্ধ্যার আলোয় জ্বলে ওঠা দীপ, যা সারা দিনের ক্লান্তিকে শান্ত করে। তার কামনা আগুন নয়—তা আলো। তা জ্বলিয়ে দেয় না, তা গায়ে মেখে থাকে।
এক নদী, যে জানে কখন কার দিকে পথ খুলে দিতে হয়, আর কখন নিজেকে আগলে রাখতে হয়।
যে জানে, ভালোবাসা মানে কারো হাত ধরা নয়—বরং কারো হাতে নিজের হাত রাখার মতো আত্মবিশ্বাস অর্জন করা।

error: Content is protected !!