Experience of Life


জীবনের পথে চলতে গেলে আপনাকে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষের মুখোমুখি হতে হবে। কখনো ভিড় ঠেলে এগোতে হবে, কখনো আবার কানে আসবে বহু ধরনের কথা, যার অধিকাংশেরই কোনো গন্তব্য নেই, কোনো অর্থ নেই, শুধু শব্দের কোলাহল। আপনি যা করবেন তা হলো, নীরবতা ও উপেক্ষার চর্চা।
কারণ এই জীবন আপনার, পছন্দ আপনার, সিদ্ধান্তও একান্ত আপনার। কোথাও যদি নেগেটিভিটিকে দানা বাঁধতে দেখেন, নির্দ্বিধায় সরে আসুন। আলো চাইলে অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসতেই হয়।
জীবনে এমন কিছু মানুষ আসবে, যারা মুখে বন্ধুত্বের কথা বলবে কিন্তু অন্তরে পুষে রাখবে ঈর্ষার বিষ। তারা চাইবে, আপনি ব্যথিত হোন, ভেঙে পড়ুন। আর তারা যেন সহানুভূতির ছদ্মবেশে আপনাকে দেখিয়ে দিতে পারে, আপনি কতটা দুর্বল। আপনি সেই সুযোগ তাদের দেবেন না। অযথা তর্কে জড়াবেন না, বোঝানোর প্রয়াসেও যাবেন না।
কেউ যদি আপনাকে অবজ্ঞা করে, উপহাস করে তবে শান্ত হাসি দিন। নীরবতা হোক আপনার সবচেয়ে শক্তিশালী উত্তর। আপনি যতোটা সম্ভব আপনার সময় ও শক্তি সংরক্ষণ করুন, সেটাই আপনার প্রকৃত বিজয়।
আপনার চারপাশ যখন নিন্দুকদের শব্দে প্রকম্পিত, ঠিক তখনই আপনি নিজেকে অন্যভাবে ব্যস্ত রাখুন। একটি ভালো বই হাতে নিন, প্রিয়জনের সাথে কিছু সময় কাটান, প্রকৃতির রঙে আঁকুন জীবন, গুছিয়ে ফেলুন আপন ঘর, পছন্দের গান শুনুন, সিনেমা দেখুন, গাছ লাগান, খেলাধুলা করুন, ফটোগ্রাফিতে মগ্ন হন, কিংবা ইবাদত করুন।
মনে রাখবেন, প্রতিক্রিয়া না দেওয়াই সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিবাদ। দিনশেষে আপনি জানেন আপনি কে, কী করেন, আর কী হতে চান। যারা অবমাননা করছে, তাদের প্রভাব আপনার জীবনের গতিপথে কোনো রেখাই আঁকে না।
নিজের চারপাশে একটি মমতাময় বলয় গড়ে তুলুন। পরিবার, প্রকৃত বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে। তাদের সঙ্গে থাকুন, যাদের সামনে আপনি আয়নার মতো স্বচ্ছ হয়ে দাঁড়াতে পারেন, যাদের সামনে নিজেকে নিঃসংকোচে তুলে ধরতে পারেন। কেবল তারাই আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ, বাকিরা শুধুই পটভূমি। মোটকথা, বিশ্বটাকে সুন্দর দেখতে চাইলে আগাছা ছেঁটে ফেলুন।
সব কথার উত্তর দিতে হয় না, প্রতিটি কটাক্ষের জবাব দিতে হয় না, সবকিছুর ব্যাখ্যা দেওয়ার কোনো দায় নেই আপনার কাঁধে। যে বোঝে, সে ব্যাখ্যা ছাড়াও বোঝে; যে বোঝে না, সে হাজার ব্যাখ্যাতেও অন্ধই থেকে যাবে।
তাই নিজের শান্তি, নিজের অগ্রগতি, নিজের স্বপ্নের পেছনে সময় দিন।
জীবনটা এক অপার সম্ভাবনার মিছিল। যদি আপনি বুঝতে পারেন কোন দিকে তাকালে আলো পাওয়া যায়, আর কোন দিকটা কাঁটা বিছানো। কাঁটাগুলো পেরিয়ে হাসিমুখে চলতে শেখাই হলো সাহসিকতা।
আর এই সাহসই গড়ে তোলে এক শক্তিশালী, আত্মপ্রত্যয়ী, সার্থক মানুষ।