বিয়ে: ভাগ্যের খেলা, ভালোবাসার যুদ্ধ


বিয়ে মানে কেবল একটা অনুষ্ঠানের নাম না। বিয়ে মানে একজন অপরিচিত মানুষকে হঠাৎ করে নিজের সবচেয়ে ব্যক্তিগত জায়গাটায় ঢুকতে দেওয়া। একসাথে ঘুমানো, জাগা, ভালো লাগা— এমনকি কষ্টগুলো পর্যন্ত ভাগ করে নেওয়া।
আমার পরিচিত এক আপুর গল্প মনে পড়ে।
ছোটবেলা থেকেই খুব মিষ্টি আর ভদ্র মেয়ে ছিলেন। স্বপ্ন ছিল— জীবনসঙ্গী হবে একজন বুঝদার মানুষ, যার চোখে থাকবে সম্মান, কথায় থাকবে শ্রদ্ধা, আর আচরণে থাকবে নিরাপত্তা। পরিবারের কথায় হঠাৎ করেই বিয়ের প্রস্তাব আসে এক সুপাঠ্য, স্থিতিশীল পরিবার থেকে। ছেলেটার সাথে তেমন বেশি কথাও হয়নি। কিন্তু মা-বাবার মতামতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে রাজি হয়ে গেলেন।
বিয়ের প্রথম কয়েক মাস ঠিকই চললো। হাসি, ঘোরাঘুরি, ছবি তোলা— বাইরের দুনিয়ার চোখে পারফেক্ট একটা দম্পতি।
কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারলেন— ছেলেটি খুব ভালো একজন ‘ছেলে’ হলেও, খুব খারাপ একজন ‘জীবনসঙ্গী’।
সে কথা শুনে না, অনুভূতি বোঝে না, রেগে গেলে গায়ে হাত তোলে না ঠিকই—but তার শব্দ দিয়ে শরীর না, আত্মা কেঁপে ওঠে।
মেয়েটি চুপ থাকে। বলে, “সব ঠিক হয়ে যাবে সময়ের সঙ্গে।”
কিন্তু সময় তো কেবল মানুষকে মানিয়ে নেওয়ার শিক্ষা দেয়, সমাধান নয়।
একদিন আমি তাকে বলেছিলাম,
“চলে আয় আপু। এই জীবন তোর একার না, তুই তোর ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য।”
সে হেসে বলল,
“ভাই, আমি এখন বুঝি— দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে বিয়ে।
ভাগ্য করে যদি ঠিক মানুষটা মেলে, তাহলে জীবনটা স্বর্গ।
আর যদি ভুল মানুষ হয়, তাহলে সেটা কবর পর্যন্ত নিয়ে যায়।
তখন ভালোবাসা না, ‘সহ্য’ হয়ে ওঠে সম্পর্কের ভিত্তি।
আর মেয়েরা? তারা তখন শুধু সবকিছুতে মানিয়ে নিতে শিখে যায়… কাঁদতে কাঁদতে হাসতে শিখে যায়…”
এই গল্পটা শুধু একজনের না— এমন হাজারো মেয়ে, ছেলে আছেন এই সমাজে, যারা ভদ্রতা, মান-ইজ্জত, পরিবারের চাপ, কিংবা ‘সমাজ কী বলবে’ ভয় পেয়ে প্রতিদিন নিজের ভালোবাসার স্বপ্নগুলোকে কবর দেয়।
তবুও, কেউ কেউ এখনো বিশ্বাস রাখে— একদিন ঠিক সেই মানুষটা আসবে, যার সাথে জীবনটা সত্যিই “জীবন” হয়ে উঠবে।