✍️দিলরুবা আক্তার পারভীন
অভিমানের ভাষা


অভিমানের ভাষা বিভিন্ন রকম হতে পারে, কারণ এটি নির্ভর করে ব্যক্তি, পরিস্থিতি এবং সম্পর্কের ওপর। তবে সাধারণত অভিমানের ভাষার কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকে:
সরাসরি প্রকাশ না করা
অভিমানী ব্যক্তি সরাসরি তার ক্ষোভ বা দুঃখ প্রকাশ করেন না। বরং, তিনি নীরবতা, মুখ গোমড়া করে থাকা, বা এড়িয়ে চলার মাধ্যমে তার অনুভূতি বোঝানোর চেষ্টা করেন। উদাহরণস্বরূপ, কেউ জিজ্ঞাসা করলে “কিছু হয়নি” বলে এড়িয়ে যেতে পারেন, যদিও তার আচরণে স্পষ্ট যে কিছু হয়েছে।
নীরবতা
অভিমানের একটি প্রধান দিক হলো নীরবতা। অভিমানী ব্যক্তি কথা বলা কমিয়ে দেন বা একেবারেই চুপ করে যান। এর মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চান যে তিনি কষ্ট পেয়েছেন এবং অন্যজনের কাছ থেকে মনোযোগ বা জিজ্ঞাসা আশা করেন।
শারীরিক ভাষা
কথার পাশাপাশি অভিমানের প্রকাশ শারীরিক ভাষায়ও দেখা যায়। যেমন: মুখ গোমড়া করে রাখা, ভ্রু কুঁচকানো, পাশ ফিরে বসা বা দাঁড়ানো, চোখাচোখি এড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
ঠারেঠোরে কথা বলা
অনেক সময় অভিমানী ব্যক্তি সরাসরি অভিযোগ না করে ঠারেঠোরে বা পরোক্ষভাবে কথা বলেন। যেমন, “আমার কথা কি আর কারো মনে থাকে?” অথবা “আমি না থাকলে কি কারো কিছু আসে যায়?” – এমন ধরনের কথা বলে তিনি বোঝাতে চান যে তিনি অবহেলিত বোধ করছেন।
ছোট ছোট ইঙ্গিত
অভিমানী ব্যক্তি এমন কিছু ছোট ছোট ইঙ্গিত দিতে পারেন যা থেকে অন্যজন বুঝতে পারে যে তিনি অভিমান করেছেন। যেমন, পছন্দের জিনিস প্রত্যাখ্যান করা, সামান্য বিষয়ে খুঁতখুঁত করা বা অহেতুক রাগ দেখানো।
প্রত্যাশা
অভিমানের ভাষার পেছনে একটি গভীর প্রত্যাশা থাকে। অভিমানী ব্যক্তি চান যে অন্যজন তার অভিমানের কারণ খুঁজে বের করুক, তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুক এবং তার যত্ন নিক। এটি এক প্রকার মনোযোগ আকর্ষণেরও চেষ্টা হতে পারে।
সম্পর্কের গভীরতা
অভিমান সাধারণত ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। বাবা-মা, ভাই-বোন, বন্ধু বা প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে অভিমান বেশি হয়, কারণ এই সম্পর্কগুলোতে একে অপরের প্রতি অধিকারবোধ এবং প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে।
সংক্ষেপে, অভিমানের ভাষা হলো এক প্রকার নীরব অভিযোগ বা পরোক্ষ আবেদন, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার কষ্ট বা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং অন্যজনের কাছ থেকে সহানুভূতি বা বোঝাপাপের প্রত্যাশা করেন।