রেফারেন্সেই চাকরি
মেধার মূল্য কোথায়?


স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড—পাবনা জেলার মানুষের জন্য স্বপ্নের কর্মস্থল। তবে এই স্বপ্নে পৌঁছানোর পথ যেন ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে হাজারো মেধাবী তরুণের জন্য। কারণ, প্রতিষ্ঠানটির নিয়োগ ফরমেই স্পষ্টভাবে লেখা: “রেফারেন্স ছাড়া আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।”
এই একটি বাক্য অনেক সম্ভাবনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। সম্প্রতি স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল এর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়, শালগাড়ীয়ার স্কয়ার গেটে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়- হাজারো চাকরি প্রত্যাশীরা এসেছেন শুধুই একটা ফরম পাওয়ার আশায়। কিন্তু রেফারেন্স না থাকলে আবেদন করাই যেন অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রেফারেন্স কারা দিতে পারে?
কোম্পানির স্থায়ী কর্মী, নিকট আত্মীয়, বিশেষ করে যারা পদমর্যাদায় উঁচুতে, অথবা এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি—এই তিন’ধরনের মানুষদের রেফারেন্সই চাকরি পাওয়ার একমাত্র সিঁড়ি।
প্রশ্ন উঠছে—তাহলে মেধার স্থান কোথায়?
এই প্রশ্ন এখন পাবনার হাজারো তরুণ-তরুণীর মুখে। একজন স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী, অভিজ্ঞ, দক্ষ ও কর্মক্ষম ব্যক্তি যদি শুধুমাত্র রেফারেন্স না থাকার কারণে আবেদনও করতে না পারেন, তবে সেটি একটি বড় সামাজিক বৈষম্য নয় কি?
পাবনায় বিকল্প কর্মসংস্থান নেই বললেই চলে। পাবনা শহরে স্কয়ার ছাড়া তেমন কোনো বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বা গার্মেন্টস নেই, যেখানে শিক্ষিত বেকাররা আত্মনিয়োগ করতে পারে। সরকারিভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগও খুব সীমিত। তাই সবাই মুখ চেয়ে থাকে স্কয়ার গ্রুপের দিকে। কিন্তু এখানেও যদি পরিচয়ের, নিকটাত্মীয়তার দৌড়ই শেষ কথা হয়, তাহলে কীভাবে ঘুচবে বেকারত্ব?
জনগণের দাবি:
পাবনার মানুষের একটি প্রধান দাবি হলো—স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস এবং স্কয়ার গ্রুপ যেন মেধা, যোগ্যতা ও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালায়। রেফারেন্সের নামে বৈষম্য ও স্বজনপ্রীতির অবসান ঘটানো হোক। একটি উন্মুক্ত এবং স্বচ্ছ নিয়োগ পদ্ধতিই পারে পাবনার তরুণ সমাজকে আশার আলো দেখাতে।
জনসাধারণের প্রস্তাবনা:
১. রেফারেন্স প্রথা বাতিল করে মেধায় পরীক্ষার ব্যবস্থা।
২. অনলাইন আবেদন চালু করা।
৩. স্থানীয় প্রশাসনের তদারকি।
৪. সরকারিভাবে পাবনায় নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়া।