সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বিশ্ব মা দিবস আজ

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: রবিবার, ১১ মে, ২০২৫, ১১:৪৩ এএম | 215 বার পড়া হয়েছে
বিশ্ব মা দিবস আজ

পৃথিবীর সব থেকে মধুর ডাক হলো ‘মা’। সন্তানের জন্য সব থেকে বেশি যে আত্মত্যাগ করতে পারে সে নামটিই হলো মা। স্বার্থপর এ দুনিয়াতে নিঃস্বার্থভাবে শুধু মাই আমাদের ভালোবাসতে পারেন। আজ বিশ্ব মা দিবস। মায়ের প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস পালন করা হয়। মায়ের সঙ্গে সন্তানের আত্মিক বন্ধন জন্ম-জন্মান্তরের। অটুট এ বন্ধনের প্রগাঢ় আবেগে তাড়িত হয়ে যুগে যুগে রচিত হয়েছে বহু গান, কবিতা, গল্প, আর উপন্যাস। সৃষ্টি হয়েছে বহু কালজয়ী শিল্পকর্ম। বাংলা সাহিত্যেও মাকে নিয়ে অসংখ্য কবিতা রয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মনে পড়া’, শামসুর রাহমানের ‘কখনো আমার মাকে’, হুমায়ুন আজাদের ‘আমাদের মা’, আল মাহমুদের ‘নোলক’, কালিদাসের ‘মাতৃভক্তি’ এমনই কিছু কালজয়ী বন্দনা। পৃথিবীর সকল যুগের সকল ধর্মে মা সম্মান রাখা হয়েছে সবচেয়ে উঁচুতে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভধারণ করে। তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার শোকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শোকরিয়া আদায় করো।’ (সুরা লোকমান, আয়াত: ১৪)।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষায় ‘মা’ ডাকের শব্দগুলোর মধ্যেও আছে উচ্চারণগত অদ্ভুত এক মিল। সবগুলো শব্দের শুরুই ‘এম’ অথবা ‘ম’বর্ণটি দিয়ে। জার্মান ভাষায় ‘মাট্টার’, ওলন্দাজ ভাষায় ‘ময়েদার’, ইতালিয়ান ভাষায় ‘মাদর’, চীনা ভাষায় ‘মামা’, প্রাচীন মিশরীয় ভাষায় ‘মাত’, সোয়াহিলি ভাষায় ‘মামা’ এবং আফ্রিকান, হিন্দি ও বাংলা ভাষায় ‘মা’। কীভাবে এই সাদৃশ্য ঘটল তা আজও এক বিরাট রহস্য।

তবে ভাষাবিদ রোমান জ্যাকবসন এর পেছনে যুক্তি দেখিয়েছেন যে, শিশুরা যখন তার মায়ের দুধ পান করে, তখন তারা তাদের মুখভর্তি অবস্থায় কিছু শব্দ করে। সেই শব্দগুলো নাক দিয়ে বের হয় বলে উচ্চারণগুলো অনেকটা ‘ম’-এর মতো শোনা যায়। তাই প্রায় সব ভাষায়ই ‘মা’ ডাকে ব্যবহৃত শব্দগুলো ‘ম’ বা ‘এম’ দিয়ে শুরু হয়। ‘মা’ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘মম’, যা পূর্বে ব্যবহৃত শব্দ ‘মাম্মা’র পরিবর্তিত রূপ। ধারণা করা হয়, ইংরেজি শব্দ মাম্মা এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘মাম্মা’ থেকে। যা ‘স্তন’ বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। এই শব্দ থেকে ‘ম্যামেল’ উৎপত্তি। যা কিনা স্তন্যপায়ী প্রাণীর ইংরেজি প্রতিশব্দ।

মূলত যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালনের প্রচলন শুরু হয় আমেরিকান সমাজকর্মী জুলিয়া ওয়ার্ড হোই নামের এক নারীর হাত ধরে। ১৮৭০ সালে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের সময় শান্তির প্রত্যাশায় জুলিয়া একটি ঘোষণাপত্র লেখেন। এটি মাদারস ডে প্রোক্লেমেশন নামে পরিচিত ছিল। এ ঘোষণার মধ্যে জুলিয়া রাজনৈতিক স্তরে সমাজ প্রতিষ্ঠায় নারীর দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে স্পষ্ট বক্তব্য রাখেন। এরপর যুদ্ধ শেষে পরিবারহীন অনাথদের সেবায় ও একত্রীকরণে নিয়োজিত হন মার্কিন সমাজকর্মী অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মেরি জার্ভিস।

এ সময় তারা জুলিয়া ওয়ার্ড ঘোষিত মা দিবস পালন করতে শুরু করেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে আনা রিভিজ জার্ভিস ১৯০৫ সালের ৫ মে মারা যান। তার মৃত্যুর পর মেয়ে আনা মায়ের স্বপ্ন পূরণে কাজ শুরু করেন। ১৯০৮ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার একটি গির্জায় আনা তার মায়ের স্মরণে অনুষ্ঠান করেন। একই বছর মার্কিন কংগ্রেস মা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব নাকচ করে। তবে হার মানেননি আনা। তিনি তার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মা দিবস পালিত হতে থাকে। অবশেষে আনার প্রচেষ্টা সফল হয়।

১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটিকে সরকারি ছুটি হিসেবেও ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে।

সিরাজুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

হরিপুরে প্রান্তিক কৃষাণীদের মাঝে জিংক ধান বিতরণ

ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩:২১ পিএম
[shared_counts] অ- অ+
হরিপুরে প্রান্তিক কৃষাণীদের মাঝে জিংক ধান বিতরণ

হারভেস্ট প্লাস রিয়্যাক্টস ইন প্রজেক্ট ও আরডিআরএস বাংলাদেশের আয়োজনে আজ( ৮ডিসেম্বর ) সোমবার ২০২৫ ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার কাঁঠালডাংগী বাজার ভাতুড়িয়া ফেডারেশনে ১২০জন কৃষাণীদের মাঝে প্রশিক্ষণ ও জিংক ধানের বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উক্ত হারভেস্ট প্লাস ও আরডিআরএস বাংলাদেশ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন রিঅ্যাক্টস ইন প্রজেক্টের আওতায় আজকের এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে মানবদেহে জিংকের গুরুত্ব, জিংকের প্রয়োজনীয়তা ও অভাবজনিত লক্ষণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও ব্রি ধান৭৪ ও ব্রি ধান১০২ জাতের ধানে জিংক এর পরিমাণ ও জিংক ধান উৎপাদন কৌশল, বীজ সংরক্ষণ পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে বক্তারা আলোচনা করেন।


হারভেস্ট প্লাস রিয়্যাক্ট ইন প্রক্লপে ও আরডিআরএস বাংলাদেশ রিঅ্যাক্টস- ইন প্রজেক্টের আওতায় আজ মোট ১২০ জন কিষানীকে প্রশিক্ষণ এবং প্রশিক্ষণ শেষে প্রতি জনকে ৪ কেজি হারে জিংক সমৃদ্ধ বিধান ৭৪ এর বীজ বিতরণ করা হয়েছে। কৃষক প্রশিক্ষণ ও বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ফেডারেশন সভাপতি জনাব,মো:মোবারক হোসেন, উপসহকারী কৃষি অফিসার দূর্গা চরণ রায়, আরডিআরএস এর কৃষি কর্মকরতা আব্দুল্লাহ আল-বাকী কমিউনিটি মবিলাইজার রবীনাথ রায়, এবং কমিউনিটি ফ্যাসিলিলিটেটর সহ স্হানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

আশরাফুজ্জামান সরকার, গাইবান্ধাঃ-

পলাশবাড়ীতে গ্রীন ফিল্ড স্কুলের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে ওয়ারিশদের সংবাদ সম্মেলন

ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩:১৬ পিএম
[shared_counts] অ- অ+
পলাশবাড়ীতে গ্রীন ফিল্ড স্কুলের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে ওয়ারিশদের সংবাদ সম্মেলন

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে পৈত্রিক জমি দখল করে স্কুল প্রতিষ্ঠার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওয়ারিশরা। ৭ ডিসেম্বর রবিবার রাত সাড়ে এগারোটায় পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগী আনছার আলী প্রধানসহ পরিবার সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাঁর ছেলে আফিরুল প্রধান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অভিযুক্ত জনাব নুরুন্নবী প্রধান সবুজ হলেন আনছার আলী প্রধানের জ্যাঠাতো ভাই। তিনি একজন মার্কিন প্রবাসী ও পলাশবাড়ীর গ্রীন ফিল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে তাঁদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওয়ারিশরা।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, নিজেদের অংশের জমি ফেরত পেতে বহুবার দাবি জানানো হলেও নুরুন্নবী প্রধান সবুজ তালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করেছেন। সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাঁরা গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্বত্ব ঘোষণাসহ ল্যান্ড সার্ভে মামলা দায়ের করেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মামলার আদেশের পরও বিরোধীয় তফসিলভুক্ত জমিতে স্কুল প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। উক্ত তফশিলভুক্ত জমিটি গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার নুরপুর মৌজা, জেএল-৪২, সিএস খতিয়ান নং-১০, দাগ নং-৪০৮-এর মোট ৪৬ শতক জমি।

তাঁরা বলেন, “পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত আমাদের ন্যায্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। তাই সবার কাছে সত্যটি তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন।”

সংবাদ সম্মেলনে পলাশবাড়ীর সুধী সমাজ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে সমস্যাটির ন্যায়সংগত সমাধানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ভুক্তভোগীরা।

এ সময় অন্যান্য ওয়ারিশদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শান্তনা বেগম, দুলাল প্রধান, বেলাল প্রধান, কাদের প্রধান ও সজিব প্রধান।

খলিফার কাঁধে আটার বস্তা

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩:১০ পিএম
[shared_counts] অ- অ+
খলিফার কাঁধে আটার বস্তা

ইসলামের ইতিহাসে হযরত উমর (রা.)-এর নাম আসলেই যে ছবিটি চোখের সামনে ভেসে ওঠে, তা হলো ন্যায়বিচার আর দায়িত্ববোধের এক জ্বলন্ত প্রতিমূর্তি। তিনি ছিলেন খলিফা, কিন্তু নিজেকে কখনো “রাজা” ভাবেননি। তিনি ভাবতেন নিজেকে প্রজার “দায়িত্বপ্রাপ্ত রাখাল” হিসেবে। আর সেই দায়িত্ববোধই তাঁকে রাতের অন্ধকারে মদিনার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে বাধ্য করত।
একবার মদিনায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। শস্যের দাম আকাশছোঁয়া। গরিব-দুঃখী মানুষের ঘরে চুলা জ্বলছে না। খলিফা উমর (রা.) দিনে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন, আর রাতে গোপনে বেরিয়ে পড়েন—শুধু দেখার জন্য তাঁর প্রজারা কেমন আছে।
এক রাতে, গভীর রাত। চাঁদের আলোয় মদিনার পথ ধূসর। উমর (রা.) আর তাঁর সঙ্গী (কেউ কেউ বলেন আসলাম, কেউ বলেন আবদুর রহমান ইবন আউফ রা.) শহরের বাইরে একটি উপত্যকার দিকে যাচ্ছিলেন। দূর থেকে শোনা যাচ্ছে বাচ্চাদের কান্না। কাছে গিয়ে দেখেন, একটি ছোট্ট তাঁবু। ভিতরে এক মহিলা আর তার কয়েকটি বাচ্চা। বাচ্চারা পেটে হাত দিয়ে কাঁদছে, “মা, খাবার! খাবার!”
মা বারবার বলছে, “ঘুমাও বাবা, এখনই রান্না হয়ে যাবে।”
কিন্তু হাঁড়িতে কিছুই নেই—শুধু পানি আর কয়েকটা পাথর। পাথর গরম করে সে বাচ্চাদের মিথ্যে আশ্বাস দিচ্ছে যে, খিচুড়ি হচ্ছে।
উমর (রা.) দূর থেকে পুরো দৃশ্য দেখলেন। তাঁর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। সঙ্গীকে বললেন, “চলো, একটু দাঁড়াও।” তারপর তিনি নিজেই এগিয়ে গিয়ে মহিলাকে জিজ্ঞেস করলেন,
“তোমার বাচ্চারা কেন কাঁদছে?”
মহিলা চিনতে পারেননি যে খলিফা এসেছেন। রাগে-দুঃখে বললেন,
“আমার স্বামী মারা গেছে। খাবার নেই। উমর কোথায়? সে কি জানে না তার প্রজারা না খেয়ে মরছে? আল্লাহ তার হিসাব নেবেন!”
এ কথা শুনে উমর (রা.) আর দাঁড়াতে পারলেন না। তিনি সঙ্গীকে বললেন, “চলো, তাড়াতাড়ি।”
দুজনে দৌড়ে মদিনায় ফিরলেন। বায়তুল মালের গুদামে গিয়ে উমর (রা.) নিজের হাতে এক বস্তা আটা, এক বোয়াম ঘি, খেজুর, মাংস—যা পাওয়া গেল সব তুলে নিলেন। তারপর নিজের কাঁধে বস্তা তুলে নিলেন।
সঙ্গী বললেন, “আমিরুল মুমিনিন! আমাকে দিন, আমি বয়ে নিয়ে যাব। আপনি খলিফা।”
উমর (রা.) গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,
“তুমি আমার এই বোঝা বইতে পারো, কিন্তু কিয়ামতের দিন যখন আল্লাহ জিজ্ঞেস করবেন, ‘আমার বান্দারা না খেয়ে কাঁদছিল, তুমি কী করেছিলে?’—তখন আমার গুনাহর বোঝা কে বইবে?”
সঙ্গী আর কথা বাড়ালেন না। দুজনে মিলে জিনিসপত্র নিয়ে আবার সেই তাঁবুতে পৌঁছালেন। উমর (রা.) নিজে হাঁড়ি চড়ালেন, আগুন জ্বালালেন, নিজের হাতে রুটি বানালেন, মাংস রান্না করলেন, খিচুড়ি তৈরি করলেন। বাচ্চাদের হাতে তুলে দিলেন।
কিছুক্ষণ আগেও যে বাচ্চারা কাঁদছিল, এখন তাদের মুখে হাসি। পেট ভরে খেয়ে তারা খেলা শুরু করল। মায়ের চোখেও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার পানি।
কিন্তু উমর (রা.) হাসছিলেন না। তিনি চুপ করে বসে আছেন, চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। সঙ্গী জিজ্ঞেস করলেন, “আমিরুল মুমিনিন, বাচ্চারা তো হাসছে, আপনি কাঁদছেন কেন?”
উমর (রা.) ধরা গলায় বললেন,
“আজ যদি আমি এদের কান্না না শুনতাম… যদি এই রাতে ঘুমিয়ে থাকতাম… তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ যখন জিজ্ঞেস করতেন, ‘আমার এই ক্ষুধার্ত বান্দী আর তার সন্তানদের জন্য তুমি কী করেছিলে?’—আমি কী জবাব দিতাম?”
তারপর তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন,
“ইয়া আল্লাহ! তুমি জানো, আমি চেষ্টা করেছি। যদি কোথাও কোনো প্রজা না খেয়ে থেকে থাকে, তবে তার গুনাহ আমার ঘাড়ে নিও না।”
সেই রাতে খলিফা বাড়ি ফিরলেন অনেক রাতে। কিন্তু তাঁর মন শান্তি পেয়েছিল। কারণ তিনি জানতেন—নেতা মানে ক্ষমতার মালিক নয়, নেতা মানে দায়িত্বের বোঝা কাঁধে নেওয়া মানুষ।
এই গল্প শুধু উমর (রা.)-এর নয়, এ গল্প প্রতিটি শাসকের জন্য, প্রতিটি দায়িত্বশীল মানুষের জন্য। যারা ক্ষমতায় থেকেও নিজেকে “খাদেম” মনে করে, তারাই ইতিহাসে অমর হয়ে থাকে।
রাদিয়াল্লাহু আনহু।