শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২
শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন নিরাপদ শাক সবজি

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: সোমবার, ৫ মে, ২০২৫, ৩:০৯ পিএম | 54 বার পড়া হয়েছে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন নিরাপদ শাক সবজি

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ (৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন) মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। WHO-2014| World Health Organization – Diabetes Country Profile, 2016- এর মতে বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে প্রতি বছর মারা যায় ৬ হাজার ৬০ জন পুরুষ এবং ৪ হাজার ৭৬০ নারী। যাদের বয়স ৩০-৬৯ বছরের মধ্যে। ৭০ বা তার ওপরের বয়সে মারা যায় ৮ হাজার ২২০ জন পুরুষ এবং ৭ হাজার ৩৯০ জন নারী। ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য জটিলতায় ভোগে পুরুষ ৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং নারী ৭ দশমিক ৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর দেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। কিন্তু পারিবারিক পর্যায়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্যের সমন্বয়ে পরিপূর্ণ পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যগ্রহণ এখনো একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী বর্তমানে দুই ধরনের অপুষ্টির শিকার।

যেমন- খাদ্যের অভাবজনিত পুষ্টিহীনতা এবং জ্ঞানের অভাবে খাদ্য সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক রোগসমূহ, যেমন- ডায়াবেটিস,স্থূলতা, স্ট্রোক, হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, ক্যান্সার ইত্যাদি। জেনে রাখা জরুরি যে, খাদ্যসংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদি রোগে মৃত্যুর হার অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর হারের চেয়ে বহুগুণ বেশি। খাদ্য তালিকায় শাকসবজি ও ফলমূল যোগ করে, খাবারে বৈচিত্র্যতা এনে অনুপুষ্টির অভাব যাকে ‘হিডেন হাংগার’ বলে দূর করে এই অসংক্রামক রোগসমূহকে প্রতিরোধ করা যায়।

ডায়াবেটিস হলো একটি দীর্ঘমেয়াদি বিপাকে ত্রুটিজনিত রোগ। আমরা সারা দিন যেসব খাবার খাই তা পরিপাকের পর অধিকাংশই গ্লুকোজ হিসেবে রক্তে মিশে যায়। দেহকোষগুলো আমাদের শরীরে শক্তি ও তাপ উৎপাদনের জন্য এই গ্লুকোজ গ্রহণ করে, আর এই কাজটি সম্পাদনের জন্য দেহকোষগুলোকে নির্ভর করতে হয় ইনসুলিন নামক এক প্রকার হরমোনের ওপর যা অগ্ন্যাশয় থেকে নিসৃত হয়।

ডায়াবেটিস হলে অগ্ন্যাশয় থেকে এই ইনসুলিন নিঃসরণে ব্যাঘাত ঘটে বা কম নিঃসৃত হয় অথবা অকার্যকর হওয়ায় কোষে গ্লুকোজের ঘাটতি ঘটে এবং রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যায়। এই অবস্থাকেই ডায়াবেটিস বলে।

কারো রক্তে গ্লুকোজ সুনির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলেই তাকে ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় রক্তে গ্লুকোজ মাত্রা অভুক্ত অবস্থায় ৬ দশমিক ১ মি. মোল/লি. এবং গ্লুকোজ খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর ৭ দশমিক ৮ মি.মোল/লি. এর নিচে থাকতে হবে।

আর যদি ডায়াবেটিস হয়ে যায়, তাহলে তা নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা সেটা বোঝা যাবে যদি রক্তে গ্লুকোজ মাত্রা অভুক্ত অবস্থায় ৪ দশমিক ৪-৬ দশমিক ১ মি.মোল/লি., খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর ৪ দশমিক ৪-৮ দশমিক ০ মি.মোল/লি. এর মধ্যে থাকে এবং হিমোগ্লোবিন এ১ সি-৭ শতাংশের নিচে থাকে। গর্ভকালীন সময়ে অভুক্ত অবস্থায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৫ দশমিক ৩ মি.মোল/লি. এবং খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর ৬ দশমিক ৭ মি.মোল/লি. এর নিচে থাকতে হবে।

যাদের ডায়াবেটিস হয়েছে তাদের উচিত এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। আর যাদের এখনো হয় নাই তাদের উচিত এটাকে প্রতিরোধ করা। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ডায়াবেটিস হবে ৭ম বৃহত্তম মরণ ব্যাধি।

ডায়াবেটিস আজীবনের একটি অসংক্রামক রোগ। বংশগত, পরিবেশগত, অলস জীবন যাপন, অসম খাদ্যাভ্যাসের কারণে এ রোগ হতে পারে। এর চিকিৎসার মূল উপাদান হচ্ছে শিক্ষা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং প্রয়োজনে ওষুধ। এগুলোর সমন্বয়ে শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করতে হবে, পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

রক্তের গ্লুকোজের প্রধান উৎস হলো খাবার দাবার। এজন্যই ডায়াবেটিস হলে খাদ্য সম্পর্কে বিশেষভাবে সচেতন হতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ডায়াবেটিস হলে মানুষ খুব চিন্তায় পড়ে যায়, এই বুঝি তার রিজিক চলে গেল। আসলে কি তাই? আসল কথা হলো খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা ডায়াবেটিস হওয়ার আগেও যেমন থাকে, ডায়াবেটিস হওয়ার পরেও ঠিক একই রকম থাকে। পুষ্টির কোনো তারতম্য হয় না।

পার্থক্য হলো ডায়াবেটিস হলে খাবারের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয় এবং প্রতিদিনই কোনো না কোনো ব্যায়াম করতে হয়, যার উদ্দেশ্য হলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাস্থ্যকে ভালো রাখা। ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য কেমন হবে সেটা সবারই জানা দরকার।

যেসব খাবার খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায় সেসব খাবার যেমন- মিষ্টি জাতীয় খাবার, সাদা ভাত, সাদা রুটি, সিদ্ধ আলু ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে রেখে যেসব খাবার খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দেরিতে এবং ধীরে ধীরে বাড়ে যেমন আঁশ জাতীয় শাকসবজি, ফল, মাছ/মাংস, ডিম, দুধ জাতীয় খাবার ইত্যাদি খাবারের তালিকায় যাতে থাকে সে দিকটা খেয়াল রাখতে হয়।

ডায়াবেটিস রোগীর খাবারে শাকসবজির গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। সারা বছরই এ দেশে নানা ধরনের শাকসবজি উৎপাদন হয়। প্রকৃতির এই নেয়ামতকে বিজ্ঞানসম্মত কাজে লাগিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা ও প্রতিরোধ করা যায়। ডায়াবেটিস রোগীর সুবিধার জন্য

শাকসবজিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
১। শর্করা সম্বলিত সবজি যেমন- আলু, মিষ্টি কুমড়া, কাঁচা কলা, বরবটি, থোড়, মোচা, বিট, শিম, মাটির নীচের কচু, গাজর, কাঁকরোল, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, শালগম, ইঁচড়, ঢেঁড়স, বেগুন, মটর শুঁটি, কচুরমুখী, পাকা টমেটো।

২। শর্করাবিহীন শাকসবজি যেমন- সব ধরনের শাক, যেমন লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, কলমিশাক, ডাঁটাশাক, কচুশাক ইত্যাদি এবং সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, ওলকপি, কাঁচা টমেটো, কাঁচা পেপে, শসা, খিরা, উচ্ছে, করলা, ঝিঙা, চিচিঙা, পটোল, লাউ, চালকুমড়া, ডাঁটা, সজনা, ধন্দুল, ক্যাপসিকাম, কাঁচামরিচ, মাশরুম ইত্যাদি।

উপরোক্ত শাকসবজিগুলো প্রতিটি মৌসুমেই কোনটা না কোনটা উৎপাদিত হয়। ডায়াবেটিস রোগীর উচিত প্রতিদিন একই ধরনের শাকসবজি না খেয়ে পাঁচ মিশালী শাকসবজি খাওয়া। এতে করে সব ধরনের শাকসবজির ভিটামিন মিনারেলসহ শরীরের কাজে লাগবে, খাবারে বৈচিত্র্য আসবে, পেট ভরবে, মনে পরিতৃপ্তি আসবে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। বীজ যেমন- পরিবেশ পেলে গজিয়ে উঠে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসও তেমনই বেড়ে যায় নানা ধরনের রোগ হওয়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ পেলে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে হার্ট, কিডনি, লিভার, চোখ নষ্ট হয়ে যায়, নানা রকম ক্যান্সার হতে পারে, এমনকি শরীরের মাংসেও পচন ধরতে পারে। গর্ভকালীন সময়েও নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, গর্ভস্থ শিশু মৃত এবং প্রতিবন্ধী হতে পারে, অর্থাৎ ডায়াবেটিস এহেনও কোনো রোগ বা জটিলতা নেই যেটা জন্মাতে সাহায্য করে না।

আল্লাহ তায়ালা শাকসবজির ভেতর এতই নিয়ামত দিয়ে রেখেছেন যে সারা বছর যেসব শাকসবজি পাওয়া যায় তা দিয়েই এসব রোগ প্রতিরোধ করা যায়। প্রতিদিনের খাবারে আঁশযুক্ত শাকসবজি থাকতে হবে। বিভিন্ন প্রকার শাক, তরি-তরকারি যেমন শিম, বরবটি, মাশরুম, লাউ, কুমড়া, গাজর, কাঁচা কলা, ডাঁটা এগুলোর বাইরের আবরণ হচ্ছে সেলুলোজ, একে আঁশও বলা যায়।

এগুলো হজম হয় না, রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়তে দেয় না, ওজনও বাড়ায় না। এগুলো খাদ্যনালীর আর্দ্রতা পরিশোষণ করে ক্ষুদ্রান্ত্র পার হয়ে মলের সাথে বৃহদন্ত্রে উপস্থিত হয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং মলত্যাগে সাহায্য করে। সুতরাং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণসহ এসব খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য এমন কি কোলন ক্যান্সারও দূর করে। রক্তস্বল্পতায় শাকসবজির গুরুত্ব অনেক।

পালংশাক, লালশাক,পেঁয়াজ, গাজর, মুলা, বিট, মিষ্টি আলু, টমেটো, খোসাসহ আলু, কচুশাক, লেটুস পাতা, শিম, বরবটি ইত্যাদিতে লৌহ ও ফলিক এসিড রয়েছে। সবজির মধ্যে বীট রক্তশূন্যতা রোধে খুবই উপকারী। এতে রয়েছে পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সালফার, আয়োডিন, লৌহ, কপার, ভিটামিন বি-২, বি-৬, বি-১২ এবং ভিটামিন সি। উচ্চমানের লৌহের জন্য এটি রক্তের লোহিত কণিকা সক্রিয় করতে ও উৎপাদন করতে সাহায্য করে। দেহে ফ্রেশ অক্সিজেন সরবরাহও করে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রক্তে কোলস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যেটা হার্টের জন্য ক্ষতিকর। নায়াসিন কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটা পাওয়া যায় আঁশযুক্ত সবুজ শাক সবজি, খোসাসহ আলুতে। তাছাড়া কাঁচা রসুনও খাওয়া যেতে পারে।
তাজা শাকসবজি আমাদের প্রক্রিয়াজাত করে খেতে হয় অর্থাৎ রান্না করে খেতে হয়। রান্নার ওপরও ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে শর্করার বাড়া-কমা অনেকটা নির্ভর করে। যেমন- আলুর চিপস বা ফ্রেন্সফ্রাইয়ের চেয়ে সিদ্ধ আলু খেলে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। গাজর কাঁচা না খেয়ে সিদ্ধ অবস্থায় খেলে শর্করার পরিমাণ দ্রুত বেড়ে যায়। শর্করা সংবলিত সবজিগুলো অনেকক্ষণ ধরে রান্না করলে সহজে হজম হয়ে শোষণ হয় এবং দ্রুত রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

শাক সবজি যেগুলো কাঁচা ও টাটকা খাওয়া যায় সেগুলো কাঁচা অবস্থায় খেলেই উপকার বেশি পাওয়া যায়। যেগুলো খোসাসহ রান্না করা যায় সেগুলো খোসাসহ রান্নাই ভালো। তবে সবজি বেশি সিদ্ধ না করে একটু কাঁচা কাঁচা করে রান্না করা উচিত। এতে স্বাদ, গন্ধ, রঙ এবং ভিটামিন অটুট থাকে।

বর্তমানে অপুষ্টির সমস্যা নিরসনে সারা বিশ্বে ড্রাগ বেসড অ্যাপ্রোচের তুলনায় ফুড বেসড অ্যাপ্রোচ অধিক টেকসই বলে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ এর মাধ্যমে নিজস্ব উৎপাদিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, কর্ম সংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন, পরিবেশ উন্নয়ন এবং চিকিৎসা খাতে ব্যয় কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়নে ফুড বেসড অ্যাপ্রোচের ভূমিকা অপরিসীম।

সুতরাং আসুন আমরা সকলে মিলে কৃষি উৎপাদনে স্বয়ং সম্পূর্ণতার পাশাপাশি খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করে একটি সুস্থ জাতি গঠনে সহায়তা করি।

‘স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপদ শাক সবজি ও ফল খাই, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এর তুলনা নাই’।

দিনাজপুরে বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

মো: মেহেদী হাসান ফুয়াদ দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫৫ পিএম
দিনাজপুরে বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত কার্য্যনির্বাহী সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত

২ আগষ্ট শনিবার বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- রাজ-২২৬৭) এর নব নির্বাচিত কার্য্যকরী কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ ও অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নব- নির্বাচিত সভাপতি- মোঃ আব্দুস সাত্তার, সহ সভাপতি- মোঃ শরিফুল ইসলাম সেলি, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনিসুর রহমান, সহ সাধারণ সম্পাদক, আবুল কালাম (১), সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ এনামুল হক, অর্থ সম্পাদক- আবুস সালাম ও কার্র্য্যনির্বাহী পরিষোধের সদস্য মোঃ কমর আলী শেখ ও মোঃ বিশালকে ইউনিয়নের গঠনতন্ত্র অনুর্যায়ী শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশান দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি রবিউল আউয়াল খোকা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার হবিবর রহমান। উল্লেখ্য, বাহাদুর বাজার কুলি শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং- রাজ-২২৬৭) এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২ জুলাই ‘২০২৫। নির্বাচনে উপরোক্ত ৮জন প্রার্থী বিজয়ী হন।

দেশের উন্নয়ন ও ন্যায় বিচারে ধানের শীষের প্রতি জনগণের আস্থা : ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ

বগুড়া থেকে মোঃ হাফিজুর রহমান প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৫১ পিএম
দেশের উন্নয়ন ও ন্যায় বিচারে ধানের শীষের প্রতি জনগণের আস্থা : ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ

গাবতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, গাবতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জনাব ফজলে রাব্বি মন্ডল ফিরোজ জানিয়েছেন —
আমাদের দেশ চলে মানুষের ঘাম আর পরিশ্রমের করের টাকায়। প্রতিটি রাস্তা, স্কুল, হাসপাতাল, সরকারি সেবা ও অবকাঠামো জনগণের টাকায় গড়ে উঠেছে।
কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট শাসন আর আজকের কর্তৃত্ববাদী মনোভাব দেশের মানুষের ন্যায্য অধিকারকে অবমূল্যায়ন করেছে — মানুষের ভোটাধিকার হরণ হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত হয়েছে, গণতন্ত্রকে পদদলিত করা হয়েছে। স্বজনপ্রীতি, লুটপাট আর দুর্নীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে জিম্মি করে রেখেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বিশ্বাস করে—গণতন্ত্র মানে শুধু ভোট নয়, মানুষের কথা শোনা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
আমাদের আপোষহীন নেত্রী, তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার রক্ষায় আজও আপোষহীনভাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। বিএনপি জনগণের অধিকার, অর্থনৈতিক মুক্তি এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে সবসময়ই জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপি সরকারের সময় দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পথে ছিল, গণতন্ত্র ও মানুষের কথা বলার অধিকার সুরক্ষিত ছিল — যা আজ হরণ হয়েছে।
আগামী নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাই—আপনাদের শক্তি ও অধিকারকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়ন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিজয়ের প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিন, আপনার আস্থা ও বিশ্বাস প্রকাশ করুন।
বিএনপি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পক্ষে। দেশের প্রতিটি টাকার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করাই আমাদের অঙ্গীকার। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকাটাই গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তি।
আমরা বিশ্বাস করি—ধানের শীষে জনগণের এই আস্থা গণতন্ত্র, উন্নয়ন আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হয়ে উঠবে।

মধ্যবয়স্ক নারীর ভালবাসা এক নীরব নদীর মতো

Masud Parves প্রকাশিত: শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫, ৪:৪৯ পিএম
মধ্যবয়স্ক নারীর ভালবাসা এক নীরব নদীর মতো

মধ্যবয়সী নারীকে বাইরে থেকে দেখে কেউ বুঝতে পারে না, তার ভেতর কতটা জীবন বয়ে চলে। তার মুখে হয়তো একরাশ শান্তি, চোখে একটুখানি ক্লান্তি—কিন্তু এই চেহারার ভেতরে আছে এক গভীর নদী, যেটা ধীরে ধীরে বয়ে যায়। এই নদী যেন নীরব, তবে থেমে নেই। প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, ভালোবাসা, হারানো-বিলুপ্ত কিছু স্মৃতি—সব মিলে তার কামনা তৈরি হয় এক নতুন রূপে, এক অনন্য ভাষায়।
এই বয়সে সে আর কারো মন জেতার জন্য হাসে না। সে নিজেকে লুকিয়ে রাখে না, সাজিয়ে তোলে না কেবল কারো নজর কাড়ার জন্য। বরং সে নিজেকে ভালোবাসে গভীরভাবে। জানে—তার শরীর ঠিক যেমন, তেমনটাই সুন্দর। তার যৌনতা এখন আর দেহের খেলায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে বোঝাপড়ার, সম্মান আর সংবেদনের জায়গা।
তরুণ বয়সের কামনা হঠাৎ জ্বলে ওঠে, হঠাৎ নিভেও যায়। সেখানে থাকে আবেগের ঝড়, না বুঝে ফেলার এক উন্মাদনা। কিন্তু মধ্যবয়সী নারীর কামনা অনেক বেশি ধৈর্যের, অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসের। সে জানে, কীভাবে তার শরীরের প্রতিটি প্রতিক্রিয়া বোঝে নিতে হয়। সে জানে, কখন আগলে রাখতে হয় নিজেকে, আর কখন খুলে দিতে হয় সমস্ত দরজা।
এই নারী কাউকে ছুঁতে চায়—কিন্তু ছোঁয়াটার আগে সে বোঝে নেয় সেই মানুষটার ভেতরটা। সে শুধু শরীর খোঁজে না—সে এমন একজন সঙ্গী খোঁজে, যার স্পর্শে থাকে শ্রদ্ধা, যার চোখে থাকে নিরাপত্তা। সে জানে কার পাশে ঘুমালে শান্তি নামে, আর কার পাশে থাকলে ভালোবাসা শুকিয়ে যায়।
তার কামনা আর শিশুর মতো নিষ্পাপ নয়। বরং তাতে এক ধরনের প্রাপ্তবয়স্ক মমতা থাকে, থাকে বোঝাপড়া। সে জানে কখন চাওয়া, কখন না বলা। সে জানে, ‘না’ বলাটাও নিজের প্রতি এক রকম ভালোবাসা। তার ভালোবাসা এখন আর পাগলামি নয়—তা গভীর, সযত্নে বাছাই করা, বোধসম্পন্ন।
সমাজ হয়তো ভাবে এই বয়সের নারী নিঃসাড়, নিঃস্পৃহ। কিন্তু তারা জানে না, তার ভেতরটায় প্রতিদিন ঢেউ খেলে যায়। তার চোখে জমে থাকা পুরনো গল্পের আলো ঝিলমিল করে, তার হাসিতে মিশে থাকে না বলা ভালোবাসার রেশ। এই নারী চাইলেই কারো জীবনে নীরবে ঢুকে যেতে পারে, আবার কাউকে বিদায়ও জানাতে পারে নিঃশব্দে—এক বিন্দু তিক্ততা ছাড়াই।
তার যৌনতা আজ আর কারো কাছ থেকে অনুমতি চায় না। সে নিজের শরীর, নিজের কামনা, নিজের মনের দায়িত্ব নিজেই নেয়। সে জানে—কে তার জলের গভীরে স্নান করার যোগ্য, আর কে কেবল পাথর ছুড়ে জল ঘোলা করতে চায়।
মধ্যবয়স মানে ক্ষয় নয়, সেটি এক নবজন্ম। একজন নারী এই বয়সে এসে হয়তো সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল হয়—যেন সন্ধ্যার আলোয় জ্বলে ওঠা দীপ, যা সারা দিনের ক্লান্তিকে শান্ত করে। তার কামনা আগুন নয়—তা আলো। তা জ্বলিয়ে দেয় না, তা গায়ে মেখে থাকে।
এক নদী, যে জানে কখন কার দিকে পথ খুলে দিতে হয়, আর কখন নিজেকে আগলে রাখতে হয়।
যে জানে, ভালোবাসা মানে কারো হাত ধরা নয়—বরং কারো হাতে নিজের হাত রাখার মতো আত্মবিশ্বাস অর্জন করা।

error: Content is protected !!