রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মোঃ শাহজাহান বাশার

দুঃসময়ের কর্মীরাই অগ্রাধিকার পাচ্ছেন বিএনপির মনোনয়ন তালিকায়

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫, ২:৫০ পিএম | 111 বার পড়া হয়েছে
দুঃসময়ের কর্মীরাই অগ্রাধিকার পাচ্ছেন বিএনপির মনোনয়ন তালিকায়

আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই প্রেক্ষাপটে দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নভেম্বরের শুরুতেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে দলের বিভিন্ন টিম মাঠপর্যায়ে জরিপ চালাচ্ছে, নেতাকর্মী ও জনগণের মতামত নিচ্ছে, আর কোন্দলপূর্ণ এলাকায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকও করছে।

দলীয় সূত্র জানায়, প্রার্থী যাচাই-বাছাইয়ে বিএনপি এবার অতীতের তুলনায় বেশি সতর্ক ও বাস্তবভিত্তিক কৌশল নিচ্ছে। প্রার্থী নির্বাচনে প্রধান বিবেচনায় থাকছে—দলের দুঃসময়ে কার কতটা অবদান রয়েছে,কে কতটা হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন, এলাকাবাসীর কাছে কে বেশি গ্রহণযোগ্য,জনপ্রিয়তা ও তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক কতটা দৃঢ়।

সিনিয়র নেতারা প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করছেন। বিএনপি চায়—যাঁকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, তাঁকে ঘিরে যেন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে পারে।

গত সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচন ও প্রার্থী তালিকা প্রণয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি প্রার্থী নির্বাচনের দায়িত্ব নেন এবং নির্দেশ দেন—“প্রত্যেক আসনে একক প্রার্থীর পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”

স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মতে, প্রায় প্রতিটি আসনেই পাঁচ থেকে বারো জন পর্যন্ত সম্ভাব্য প্রার্থী আছেন, যাঁরা নিজ নিজ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন।এই অবস্থায় অক্টোবরের মধ্যেই বা সর্বোচ্চ নভেম্বরের শুরুতে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে—যেসব নেতা আন্দোলনের মাঠে সক্রিয় ছিলেন, দলীয় দুঃসময়ে পাশে ছিলেন, অথবা জনগণের কাছে জনপ্রিয়, তাঁরা প্রার্থী হবেন।তবে এটি প্রাথমিক তালিকা; মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত পরিবর্তন আসতে পারে।বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন—“এলাকায় সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীরাই বিএনপির মনোনয়ন পাবেন।

আমরা তৃণমূল থেকে শুরু করে জনগণের মধ্যে খোঁজ নিচ্ছি, কে আসলে মানুষের আস্থার জায়গায় আছেন তা যাচাই করা হচ্ছে।”

দলের সিনিয়র নেতারা বলেন, নভেম্বরের শুরুর দিকে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করলে আগামী দেড় মাসে তাঁদের জনপ্রিয়তা ও অবস্থানও যাচাইয়ের সুযোগ থাকবে।যদি কোনো প্রার্থী প্রত্যাশিত সাড়া না পান, তাহলে বিএনপি সেই আসনে নতুন বিকল্প প্রার্থীর চিন্তা করতে পারবে।

বৈঠকে বিএনপির জোটসঙ্গী ও সমমনা দলগুলোর আসন বণ্টন বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সূত্র জানায়, জোটের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ২৪৪টি আসনের তালিকা বিএনপির কাছে জমা পড়েছে।
তবে বিএনপি নেতারা বলছেন—“জোটের যেসব প্রার্থী এলাকায় জনপ্রিয় ও শক্ত অবস্থানে রয়েছেন, তাঁদেরকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

কিন্তু মূল্যায়নের নামে যেন আসন হারাতে না হয়, সেটিও গুরুত্ব পাচ্ছে।”

এ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি যে প্রাথমিক তালিকায় জোটের প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করা হবে কিনা। কিছু নেতা প্রস্তাব দিয়েছেন—প্রথমে কেবল বিএনপির প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করে পরবর্তীতে জোটের সঙ্গে চূড়ান্ত সমন্বয় করা হবে।

গত রবিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের শতাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
তিনি সেখানে নেতাদের উদ্দেশে বলেন—“মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়া বড় বিষয় নয়; সবাইকে ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, ৩০০ আসনে বিএনপির সব যোগ্য নেতাকে স্থান দেওয়া সম্ভব নয়।তাই যারা মনোনয়ন পাবেন না বা জোটের প্রার্থীদের জন্য আসন ছাড়বেন, তাঁদের সংরক্ষিত নারী আসন, টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীত্ব, বা বিভিন্ন সরকারি পদে মূল্যায়ন করার সুযোগ থাকবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন—“একটি দল যখন আন্দোলনে থাকে, সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই প্রার্থী বাছাই হয়ে যায়।আমরা চাই, সবাই ধানের শীষের পক্ষে একসঙ্গে কাজ করুক। বিজয়ী হলে বঞ্চিতদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে।”

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপি প্রার্থী তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে দলীয় ঐক্য ও মাঠ সংগঠন শক্তিশালী করতে চাইছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বরের শুরুতেই প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হলে মাঠে সক্রিয় নেতাকর্মীদের মধ্যে স্পষ্টতা ও উদ্দীপনা বাড়বে, যা নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারি আটক: ৫০ পিস ইয়াবা জব্দ

মোঃ মিজানুর সরকার টাঙ্গাইল প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:০১ এএম
ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারি আটক: ৫০ পিস ইয়াবা জব্দ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে উপজেলার ফসলান্দি এলাকার ইব্রাহীম খাঁ সরকারি কলেজের ২নং গেটের পাশের একটি নির্মাণাধীন দোতলা ভবনে মাদক কেনাবেচার সময় শাকের আলী (৩৭) কে আটক করা হয়। সে ফসলান্দি গ্রামের শুকুর হাজীর ছেলে। অপর জন মুন্নাফ (৫২) মাটিকাটা গ্রামের আনছের আলীর ছেলে, তাকে তার নিজ এলাকা মাটিকাটা থেকে আটক করা হয়। দুই জনকে মাদক দ্রব্য আইনে রবিবার ৭ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভূঞাপুর থানা পুলিশের একটি অভিযানিক দল দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়। উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে তার দেহ তল্লাশি করা হলে, তার পরিহিত কালো ট্রাউজারের ডান পকেট থেকে একটি সাদা পলিথিনে মোড়ানো ৫০ পিস হালকা কমলা রঙের ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়। ডিজিটাল পরিমাপক যন্ত্রে এর ওজন ৫ গ্রাম এবং আনুমানিক বাজার মূল্য ১৫ হাজার টাকা বলে জানা যায়।স্থানীয় দুই সাক্ষী এবং একজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে জব্দ তালিকা তৈরি করে আলামত জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শাকের আলী দাবি করে, এই ইয়াবা ট্যাবলেটগুলি সে মুন্নাফের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ মুন্নাফকেও তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। জানা যায়, আটককৃত উভয় আসামীর বিরুদ্ধেই আগে একাধিক মামলা রয়েছে। শাকের আলীর বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা রয়েছে। মুন্নাফের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, দ্রুত বিচার আইন এবং দণ্ডবিধির ধারায় মোট পাঁচটি মামলা বিচারাধীন আছে।

স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, এই দুই জন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং তারা যুবসমাজসহ সাধারণ মানুষকে মাদকের জালে ফেলছে। এ-ই বিষয়ে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিনিময়যোগ্য নয় শিশুপ্রাণ: ভূঞাপুরে মানবিকতার টোলবাজি

মোঃ আব্দুল হান্নান মিলন তালুকদার প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২:৫৭ পিএম
বিনিময়যোগ্য নয় শিশুপ্রাণ: ভূঞাপুরে মানবিকতার টোলবাজি

ভূঞাপুরে যমুনা সেতুর আঞ্চলিক সড়কের জিগাতলা নামক একটি স্থানে সংঘটিত এক করুণ ঘটনা আমাদের জাতীয় বিবেকের মূলে কুঠারাঘাত করেছে। মাত্র দশ বা পাঁচ টাকার জন্য-পথচারীদের, সম্ভবত নিরীহ শিশুদের পর্যন্ত ছুরিকাঘাতের এই চিত্র আমাদের সমাজের এক শ্রেণির মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের যে গভীরতা ও নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে, তা ভাষাহীন করে দেয়। এ কেবল একটি আইনি অপরাধ নয়, এ হল আমাদের সামষ্টিক মনুষ্যত্বের বিপর্যয়ের প্রতীকী অভিব্যক্তি। যেখানে অবকাঠামো উন্নয়ন ও মানবিকতার বিপর্যয় মিলিত হয় এই নির্মমতা যে স্থানে সংঘটিত, তা নিছক কাকতালীয় নয়। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকা দীর্ঘদিন যাবৎ যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম দুরবস্থা ও জনদুর্ভোগের কেন্দ্রস্থল। প্রধান মহাসড়কে যানজট এড়াতে উত্তরবঙ্গ থেকে আগত যানবাহনগুলোকে প্রায়শই ভূঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক সড়কের ২৯ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। এই বর্ধিত পথেও পাথাইলকান্দি, সিরাজকান্দি, ন্যাংড়া বাজার, ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ডের মতো এলাকায় যানজট ও ধীরগতির যন্ত্রণা পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। এমনকি সাম্প্রতিক সময়েও যমুনা সেতুর আগে ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহন ধীরগতিতে ও থেমে থেমে চলাচল করছে। একদিকে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলেও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রেল সংযোগ, অন্যদিকে দুর্বল তদারকিতে বারবার দূর্ঘটনাকবলিত সেতু-এসব দৃশ্যপট আমাদের সামনে অবকাঠামোগত সাফল্য ও ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতার এক দ্বৈত চিত্র উপস্থাপন করে। কিন্তু জিগাতলার ঘটনা আমাদের দেখিয়ে দিল, এই ব্যবস্থাপনাগত ও নৈতিক ব্যর্থতা কখনও কখনও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পথচারীদের হাতে ছুরে ফেলা উরটাকা ধরতে কমল মতি শিশু দের ব্যাবহার করা হচ্ছে। শিশুটি প্রানের যুকি নিয়ে সে-ই টাকা ধরতে ছুটা ছুটি করতে দেখা যায়। শিশু নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের মুখে। দশ টাকার লোভে একজন মানুষের জীবন বিপন্ন করার এই মানসিকতা সমগ্র জাতির জন্য এক ভয়াবহ সতর্কবার্তা। বাংলাদেশে

শিশুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট আইন ও নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু আইনের বইয়ের পাতা এবং রাস্তার বাস্তবতার মধ্যে এক দুস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। আইন তখনই কার্যকর হয় যখন তা সমাজের প্রতিটি স্তরে মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিক চেতনার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকে। একটি শিশুর জীবনকে দশ টাকার বিনিময়যোগ্য মনে করা যে পতিত মানসিকতার পরিচয় দেয়, তার বিরুদ্ধে কেবল ফৌজদারি বিধিই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন গোটা সমাজের এক ঐক্যবদ্ধ, সাহসী ও নৈতিক অবস্থান।

জিগাতলার ঘটনার মতো যেকোনো নৃশংসতার বিরুদ্ধে শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সীমিত না থেকে সক্রিয় ও জোরালো সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলা খুবই প্রয়োজন।

আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজের আশেপাশের শিশুদের নিরাপত্তার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা। পথেঘাটে শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং প্রয়োজনে সামাজিকভাবে বাধা দেওয়া। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ, সহমর্মিতা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধার শিক্ষা জোরদার করা খুবই প্রয়োজন।

এধরণের ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে একটি উদাহরণ স্থাপিত হয় যে শিশুর প্রতি সহিংসতার কোনো সহ্যযোগিতা নেই।ভূঞাপুরের এই করুণ ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রকৃত উন্নয়ন শুধু সেতু, সড়ক বা রেললাইনে মাপা যায় না। প্রকৃত উন্নয়নের মাপকাঠি হল, একটি শিশু তার বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে কতটা নির্ভয়ে ও নিরাপদে হাঁটতে পারে। আসুন, আমরা সম্মিলিত কণ্ঠে বলি-একটি শিশুর প্রাণ, একটি পরিবারের ভবিষ্যৎ, আমাদের জাতির সম্ভাবনা, কোনোভাবেই দশ কিংবা পাঁচ টাকার বিনিময়যোগ্য নয়। আমাদের সমবেত সচেতনতাই পারে এই নৈতিক টোলবাজি রোধ করতে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।

টাঙ্গাইলে বিরল দৃষ্টান্ত: বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আপন দুই ভাই পিন্টু ও টুকু

মোঃ খন্দকার আউয়াল ভাসানী, টাঙ্গাইল প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:০৮ এএম
টাঙ্গাইলে বিরল দৃষ্টান্ত: বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আপন দুই ভাই পিন্টু ও টুকু

টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এক অভূতপূর্ব ঘটনা—একই দলে আপন দুই ভাইয়ের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে দুই ভাইকে প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে পাঠিয়েছে। টাঙ্গাইল–২ (ভূঞাপুর–গোপালপুর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। দীর্ঘ ১৬ বছরের কারাবরণ শেষে তিনি ইতোমধ্যে “মজলুম জননেতা” হিসেবে এলাকায় বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছেন। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও তৃণমূল রাজনীতিতে তার সক্রিয় ভূমিকা মনোনয়নের পর এলাকা জুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে। অন্যদিকে টাঙ্গাইল–৫ (সদর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তার ছোট ভাই, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। ছাত্রদল থেকে রাজনীতির দীর্ঘ পথচলায় টুকু বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত মুখ। তার মনোনয়ন প্রাপ্তিতে দলে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের কাছে তিনি যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে বিবেচিত। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দুই ভাইয়ের একসাথে মনোনয়ন পাওয়া শুধু টাঙ্গাইলেই নয়, সারাদেশেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনাকে বহুজন ‘টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই ভূঞাপুর, গোপালপুর ও টাঙ্গাইল শহরে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়। দলীয় কার্যালয়গুলোতে ভিড়, মিষ্টি বিতরণ এবং শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। স্থানীয় নেতাদের আশা—পিন্টু ও টুকুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, জনপ্রিয়তা ও মাঠ-পর্যায়ের কর্মক্ষমতা দলকে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করবে এবং টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক সমীকরণেও গুরুত্বপূর্ণ বদল আনতে পারে। বিএনপির তৃণমূল মনে করছে, দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবেই দুই ভাইয়ের এ মনোনয়ন দলীয় সংগঠনকে সামনে নতুন প্রাণশক্তি দেবে এবং নির্বাচনী প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।