শুক্রবার, ৮ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২
শুক্রবার, ৮ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ৫:৫৫ এএম | 98 বার পড়া হয়েছে
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ বা আগামী নির্বাচন কবে হবে এ ব্যাপারে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হলেও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, সরকার কখন মেয়াদ ঠিক করবে সেটা সরকারকে বলতে হবে। সরকার না বলা পর্যন্ত সেটা তো সরকারের মেয়াদ হচ্ছে না।

গত শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণ শেষে নিউইয়র্কে ভয়েস অব আমেরিকা বাংলাকে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন আনিস আহমেদ। গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।

বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করার মাধ্যমে দেশে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে যেন সক্ষম হয়, সেজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে তার দৃঢ় সমর্থন দিয়ে যাওয়ার কথা জানান বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন সেনাপ্রধান।

সেনাপ্রধানের বক্তব্যের সূত্র ধরে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে এ কথা থেকে কি ধরে নেয়া যায় যে, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ হবে ১৮ মাস। এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘সেটা আপনি ইচ্ছা করলে ধরতে পারেন। কিন্তু সরকারের মতামত তো না সেটা। সরকার তো কোনো মত দেয়নি এ পর্যন্ত। কাজেই সরকার কখন মেয়াদ ঠিক করবে সেটা সরকারকে বলতে হবে। সরকার না বলা পর্যন্ত সেটা তো সরকারের মেয়াদ হচ্ছে না।’

বিষয়টি পরিষ্কার করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান আরো বলেন, ‘আমাদেরই বলতে হবে। আমাদেরকেই বলতে হবে। আমাদের মুখ থেকে যখন শুনবেন তখন সেটাই হবে তারিখ।’

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের একটি দৃশ্যমান টানাপোড়েন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস জানান, এটি একটি আইনগত বিষয় এবং আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের দুজনেরই দুই দেশেরই স্বার্থ হলো অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, মধুর সম্পর্ক গড়ে তোলা। মাঝে মাঝে কতগুলো প্রশ্ন এসে যায় যেখানে সম্পর্কে একটু চির ধরে। যেমন সীমান্তে গুলি করলো, বাচ্চা মেয়ে মারা গেলো, বাচ্চা ছেলে মারা গেলো, এগুলো মনে কষ্ট দেয়।…এটাতে আমরা মনে করি না যে সরকার ইচ্ছা করে, ভারতের সরকার ইচ্ছা করে এসব করেছে। যে সমস্ত কারণে এসব ঘটে, সেসব কারণগুলো যেন আমরা উৎখাত করতে পারি, যাতে এধরনের ঘটনা না ঘটে, যাতে নিরাপদে মানুষ জীবন নিয়ে চলাফেরা করতে পারে।’

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ছিল ছাত্ররা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেও ছাত্রদের প্রতিনিধি রয়েছে। তবে সরকারের বাইরে যারা আছে এমন অনেক ছাত্রকে আমরা দেশের নানা ক্ষেত্রে, নানা প্রতিষ্ঠানে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে।

শিক্ষার্থীরাই দেশ চালাচ্ছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘চালানো উচিত বলছি। চালাচ্ছে বলছি না। চালানো উচিত। তরুণদের হাতে ছেড়ে দেয়া, আমি বরাবরই বলে এসছি, এখানে এ দায়িত্ব পালন করার আগে থেকেই বলছি যে তরুণদের হাতে, কারণ তারাই তাদের ভবিষ্যৎ রচনা করবে।’

সেনাবাহিনীর কমিশন অফিসারদের ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতা দেয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনুস বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের হত্যা করাসহ পুলিশের গণবিরোধী ভূমিকায় জনগণের মধ্যে পুলিশের ব্যাপারে যে নেতিবাচক অনুভূতি তৈরি হয়, সে কারণে গণ-অভ্যুত্থানের পর পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়। পুলিশকে দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা যাচ্ছিল না। এ কাজে আনসার নিয়োগ করেও ফল আসেনি। তাই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সেনাবাহিনীকে দুমাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নানা রকমের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। সমাবেশ হচ্ছে। তাতে বিশেষ করে আমাদের পোশাক শিল্প কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের অসন্তোষ দেখা গেলো। সেগুলো নিয়ে মনে করলাম যে, এভাবে চলতে দিলে তো বাড়তে আরম্ভ করবে, তখন এ প্রসঙ্গ উঠলো যে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়ার জন্য।…তারা বলছে আমরা তো আছিই কিন্তু, আমাদেরকে তো কেউ পরোয়া করছে না। কারণ আমাদের তো কোনো ক্ষমতা নেই। আমাদেরকে একটা ক্ষমতা থাকলে তারা হয়তো আমাদেরকে গণ্য করবে…তখন আমরা তাদেরকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিলাম।’

সেনাবহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০ সেপ্টেম্বর তিনি বলেন, ‘আমাদের মতে তখনই এ ক্ষমতা দেয়া দরকার, যখন মনে হবে সংবিধান নিয়মের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু এ সংবিধান এখনো ভালো আছে, যেখানে রাজনৈতিক নেতা কর্মীরাই সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছেন, সেখানে সেনাবহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে মানে নতুন নতুন সমস্যা তৈরি করা।’

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলো, বিশেষ করে পুলিশ হত্যার ঘটনাগুলো তদন্ত বিচার করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যে যেখানে অপরাধ করেছে তার বিচার হবে। তা না হলে তো বিচার সম্পন্ন হবে না।’

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এই বৈঠক হয়েছে সার্কভূক্ত একটি দেশ হিসেবে। ‘তার মানে এই নয় যে সবকিছু পাল্টে গেছে।’

একাত্তরে গণহত্যার বিষয়ে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা না চাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘সেটা পৃথক বিষয়। এটা কীভাবে হবে সেটা পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হবে। কিন্তু সার্ক একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। আমরা চাই এটা শক্তিশালী হোক এবং সেই চেষ্টা আমি করে যাব।’

গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা ও পুলিশ নিহত ও আহতের ঘটনায় সরকারের ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘যে যেখানে অপরাধ করেছে, সে তার শাস্তি পাবে। একটার বিচার হবে, আরেকটার হবে না—এটার বিরুদ্ধেই তো গণঅভ্যুত্থান হলো। কাজেই অপরাধ করলেই তার শাস্তি পেতে হবে।’

পাহাড়ে সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিয়ে বর্তমান সরকার বিশেষভাবে চিন্তিত কি না জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা সব জায়গায় শান্তি চাই। কোনো কোনো জায়গায় হয়তো অপারগ হয়েছি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আমরা ইচ্ছা করে এটা করছি না। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছিল, সেটা ঠিকও হয়ে গেছে। এমন ঘটনা ঘটলে সরকারের দায়িত্ব তা সমাধান করা। মানুষের মধ্যে সৌহার্দ নিয়ে আসা।’

পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘এত বছরের একটা সমস্যা এত অল্প সময়ের একটি সরকার সমাধান করে ফেলবে, এটা আশা করা ঠিক হবে না। বহু বছরের চেষ্টায় শান্তি চুক্তি হয়েছে। সেটাও মানছে না। আবার নতুন করে শান্তি চুক্তি করতে হবে কি না, সেটা দেখতে হবে। আমাদের সরকার সেটা পেরে উঠবে না। পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার এসে এটা করবে।’

রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মর্যাদা দেয়া বিষয়ে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘তাদেরকে শরণার্থী মর্যাদা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দিয়েছে এবং ইউএনএইচসি সেখানে কাজ করছে।’

নতুন করে রোহিঙ্গা আসতে চাইলে বাংলাদেশ তাদের গ্রহণ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা একটা আন্তর্জাতিক সমস্যা। আন্তর্জাতিক আইন আছে। সেই অনুযায়ী সবাই মিলে এটা দেখা হবে। যখন কারো জীবন শঙ্কা দেখা দেয় তখন সে অন্য দেশে আশ্রয় চায়। তারা আসতে চাইছে আর আমরা দরজা বন্ধ করে দেবো, সেটা হবে না। এটা আইন বিরুদ্ধ কাজ।’ জাতিসংঘের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বৈঠকগুলোতে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আগের সরকার সব ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সেখান থেকে পুণর্জাগরণ করতে হবে। এর জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা কমিশন গঠন করছি। ছয়টি করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি সংবিধান নিয়ে। আরো কমিশন আসছে।’

সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সারাদেশ একমত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কী বিষয়ে বা কীভাবে হবে, সেটা নিয়ে বিতর্ক হবে। কমিশন একটা রূপরেখা দেবে, সেটা নিয়ে সারাদেশে বিতর্ক করার সুযোগ তৈরি করা হবে, যেন রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করে এবং সবাই মিলে ঠিক করে যে এই সংশোধন এখনই করবে নাকি পরবর্তীতে। যে সংবিধান আমাদের আছে, এটা দিয়ে দেশ চলবে না। চললে আবারো একই ঘটনার সৃষ্টি হবে।’

সংবিধান সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আইনি ব্যাপার। আমরা এখন কাজ করছি কী প্রয়োজন সেটা নিয়ে। আইনসঙ্গতভাবে কীভাবে সেটা হবে তা পরবর্তীতে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।’

স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীরা এখন দেশের রাজনীতিতে সামনের দিকে চলে আসছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের সংবিধান বলে, প্রত্যেকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। সেই অধিকার আমার নিশ্চিত করতে হবে। সংবিধানের বিধান থেকে আমি বের হয়ে আসতে পারি না। তারা যদি অপরাধ করে তাহলে শাস্তি পাবে। কিন্তু রাগ করে তাকে দুশমন ভাবতে পারি না, তার অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। এটা কোনো রাষ্ট্র করতে পারে না, করলে সেটা অচল রাষ্ট্র হবে।’

বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য সংস্কারের পর নির্বাচন দেয়া এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।

ঢাকা গাজীপুরে এক সাংবাদিককে জবাই করে হত্যা ক্রাইম রিপোর্টারদের উদ্বেগ

তালাত মাহামুদ বিশেষ প্রতিনিধি প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:১৯ এএম
ঢাকা গাজীপুরে এক সাংবাদিককে জবাই করে হত্যা ক্রাইম রিপোর্টারদের উদ্বেগ

ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫ খ্রী: গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিন কে জবাই করে হত্যা করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। এ ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রাষ্ট্র যন্ত্রের অচলাবস্থাকে দায়ী করেছেন।

গাজীপুরে একদিনের ব্যবধানে আনোয়ার হোসেন নামে বাংলাদেশের আলো পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধিকে ইট দিয়ে থেঁতলে আহত করা হয়েছে থানার সামনে। তার পরদিন আজ বৃহস্পতিবার রাতে আসাদুজ্জামান তুহিন কে জবাই করে হত্যা করা হয়।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নরসিংদী জেলা ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মাসুদ রানা বাবুল এ ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রতি রাষ্ট্র যন্ত্রের নীরবতাকে দায়ী করে অবিলম্বে হত্যাযজ্ঞের নৃশংস ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।

বিলাইছড়িতে ২ দিনের সফরে জেলা প্রশাসক– মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ 

সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৬:২৩ এএম
বিলাইছড়িতে ২ দিনের সফরে জেলা প্রশাসক– মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ 

বিলাইছড়ি (রাঙ্গামাটি) প্রতিনিধি- রাঙ্গামাটির দুর্গম বিলাইছড়ি উপজেলায় শিক্ষা ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শনে ২ দিন সফর করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। প্রশাসক গত ৬ আগস্ট বুধবার ২ দিনের সফরে ফারুয়ার সাইচল ও ফারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন এবং দুর্গম ফারুয়া বাসীর সঙ্গে মত বিনিময় করেন। এছাড়াও ৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা চত্বরে পুলিশের একটি চৌকস দল প্রশাসককে গার্ড অব অনার করেন। পরে বিলাইছড়ি কলেজে প্রভাষক – অভিভাবক- শিক্ষার্থীদের ত্রিপক্ষীয় সভায় যোগদেন এবং কলেজের সুবিধা -অসুবিধার কথা জানেন। পরে গাছের চারা রোপণ করেন। এছাড়াও সফরে দুপুরে বিলাইছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে কুশল বিনিময়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ব্যাগ বিতরণ, উপজেলা কর্মকর্তা ও জন প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময় এবং বিকালে মুপ্প্যাচড়া ঝর্ণা পরিদর্শন করেন।

সফরে বিলাইছড়ি উপজেলা প্রশাসন, কর্মকর্তা- কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা পুষ্পমাল্য দিয়ে প্রশাসককে বরণ করেন। এবং তাদের প্রাণের দাবি,উপজেলায় আবু সাইদ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ, বিলাইছড়ি কলেজটি জাতীয়করণ, দুর্গম বড়থলি ও ফারুয়া ইউনিয়নসহ বিদ্যুৎ বিহীন এলাকাগুলো সোলার প্যানেলে সৌর বিদ্যৎতের সু-ব্যবস্থা এবং মোবাইল নেটওয়ার্কে আওতায় নিয়ে আসা। হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য জনবল বাড়ানো। এছাড়াও বিলাইছড়ি টু ফারুয়া পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ উন্নত করা। গাছকাটা ছড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সকল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ এবং বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো এমপিওভূক্তকরণের দাবি তুলে ধরেন।

জবাবে প্রশাসক হাবিব উল্লাহ বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠাপনে উপজেলা সকলের অবদানের কথা স্বীকার করেন।ইতোমধ্যে শিক্ষা প্রকৌশল থেকে একটি ভবন বরাদ্দ হয়েছে। খুব শ্রীঘ্রই ৩ তলা ১ টি ভবন হবে।পাশাপাশি উন্নয়ন বোর্ড হতে ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।তবে উন্নয়ন বোর্ডের এই ভবনটি হবে হোস্টেল। সেটি কোন দিকে হোস্টেল ও ভবন হবে স্থানীয়দের ঠিক করার দায়িত্ব দেন।তিনি শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্যে বলেন, স্বপ্ন দেখতে হবে, চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। দারিদ্র তোমার দূর্বলতা নয়।দারিদ্র কোনো অপরাধ নয়। “চেষ্টা” তোমাকে সফলতায় পৌঁছাতে পারবে। তিনি আরো বলেন, দারিদ্র বিমোচনের জন্য অন্যান্য পেশা পাশাপাশি ট্যুরিজমের উপর গুরুত্ব দেন এবং সিএইচটি রেগুলেশনের কথা বলেন।পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নে আশ্বাস দেন এবং গণ-অভ্যুত্থানে নিহত আবু সাইদ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণে প্রতিশ্রুতি দেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মামুনুল হক, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ সালাম ফকির, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.সুরজিত দত্ত, উপজেলা কৃষি অফিসার রাজেশ প্রসাদ রায়, থানা অফিসার ইনচার্জ মানস বড়ুয়া,১ নং বিলাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান,উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিরালা কান্তি চাকমা, বিলাইছড়ি কলেজের প্রভাষক ইয়াসমিন সুলতানা মনি, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সুবিনয় চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক শান বিজয় চাকমা, কার্বারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুপকুমার চাকমা, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অসীম চাকমাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা – কর্মচারী, জন প্রতিনিধি এবং শিক্ষকবৃন্দ ।

রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৮৭৮কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

মো: রাসেল মোল্লা রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৬:২০ এএম
রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৮৭৮কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, আওয়ামীলীগ নেতা ও রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ৮৭৮ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল ৭আগস্ট বৃহস্পতিবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ(সিআইডি) বাদী হয়ে গুলশান থানায় এ মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে আদালতের নির্দেশে তাদের ১৩টি ব্যাংক হিসাব এবং যমুনা ফিউচার পার্কের ১ লাখ বর্গফুট কমার্শিয়াল স্পেস ক্রোক করা হয়েছে।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, রংধনু বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জমি ক্রয় বা পাওয়ার অব অ্যাটর্নি গ্রহণ করে তা বিক্রয় করা হয়। রফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আহমেদ অপু ও মেহেদী হাসান দিপু ২০২২ সালের ৮মার্চ বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুরুখী সমবায় সমিতির কাছে ৭দশমিক ৫৭৫১ একর জমি বিক্রি করেন। পরবর্তীতে ওই জমির মধ্য থেকে ৬ দশমিক ৩৩৭৫ একর জমি ২০২২ সালের ১ জুন বসুন্ধরা গ্রুপের ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি লিমিটেডের কাছে পুনরায় বিক্রি করে ৫৭ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া পুলিশের বহুমুখী সমবায় সমিতিতে বালিভরাটের ভূয়া কার্যাদেশ দেখিয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ২৭০ কোটি এবং ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ গ্রহণ করেন। একইভাবে ইসলামী ব্যাংক বারিধারা শাখা থেকেও ভূয়া মূল্যায়ণ কপির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ গ্রহন করেন।

অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা এসব অর্থ ফেরত না দিয়ে বিদেশে পাচার করেন। এদের একজন ক্যারাবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ অ্যান্টিগা ও বারবুডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করে।

অর্থ পাচার, জালিয়াতি ও প্রতারণা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ২(৫)(৬)(১৪) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধে গতকাল ৭আগস্ট বৃহস্পতিবার সিআইডি গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৪।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অর্থ ও সম্পত্তি ক্রোকের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে৷

error: Content is protected !!