সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২
সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে পড়েছেন গভীর দুশ্চিন্তায়

সার সংকটে দিশেহারা গোমস্তাপুরের আমন ধান চাষিরা

মোঃ তুহিন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ প্রকাশিত: শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫, ২:৫০ পিএম | 43 বার পড়া হয়েছে
সার সংকটে দিশেহারা গোমস্তাপুরের আমন ধান চাষিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার সাধারণ কৃষকরা চলতি আমন মৌসুমে ধান চাষ করে কাঙ্ক্ষিত রাসায়নিক সার না পেয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। তারা কী করবেন, কিভাবে চাষাবাদ চালিয়ে যাবেন—তা বুঝে উঠতে পারছেন না। কারো নিজের জমি, কেউ নিয়েছেন বর্গা, কেউবা করছেন তেভাগা ভিত্তিতে—প্রতিটা ক্ষেত্রেই ধানের ফলন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না সার কৃষকরা অভিযোগ করছেন, সার সংগ্রহে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। তারপরও মিলছে না নির্দিষ্ট পরিমাণ ইউরিয়া, টিএসপি কিংবা ডিএপি। ফলে ধানের সঠিক বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল গফুর বলেন,
“ভোরে এসে সার ডিলারের লাইনে দাঁড়িয়েছি, দুপুর গড়িয়ে গেছে, এখনো বলা হচ্ছে—‘স্টক শেষ’। এইভাবে আমরা কীভাবে চাষ করবো?”

বর্গাচাষি রহিম উদ্দিন জানান,
“জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেছি। টাকা ধার করে বীজ ও সেচ করেছি। এখন যদি সারের অভাবে ফলন না হয়, তাহলে দেনা শোধ করবো কীভাবে?”

তেভাগা ভিত্তিতে চাষ করা আরেক কৃষক কালাম শেখ বলেন,
“মালিকের সঙ্গে চুক্তি করে ধান ফলাতে নেমেছি। এখন সার না পেলে তো ধানই হবে না। আমি কী ভাগ দিবো আর কী রাখবো?”

এরই মধ্যে অনেক ধান চাষী অভিযোগ করেছে বাগান ও পুকুরে অতিরিক্ত সার ব্যবহারের ফলে সার সংকটের সৃষ্টি হচ্ছে এগুলো তারা কৃষি অফিসের তদারকির জন্য দাবি জানিয়েছেন।

এছাড়াও জানা যায় অনেক কৃষক বিঘা প্রতি এক বস্তা করে সার জমিতে ব্যবহার করছে, যেখানে কৃষি অফিসের ভাষ্যমতে বিঘা প্রতি ২০- ২৫ কেজি সার এক বিঘা জমির চাষাবাদের জন্য যথেষ্ট কিন্তু এই মাত্রাতিরিক্ত সার ব্যবহার কারণে অনেকাংশে সারের সংকট হয়ে উঠছে।

আবার অনেক কৃষক অভিযোগ করেছে যে বরাদ্দ আসে, তা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। কিন্তু কিছু অসাধু লোক এই সুযোগে সার কালোবাজারে তুলছে, এটা সত্যি। প্রশাসন কঠোর হলে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হতে পারে।”

এ বিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাকলাইন হোসেন বলেন,
“আমরা সার বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।আমারা বিভিন্ন এলাকায় সেমিনার করে কৃষকদের জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহিত করছি। তবে রাসায়নিক সারের ঘাটতি মেটাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সারের সংকট কেটে যাবে।

ভবিষ্যৎ শঙ্কা সচেতন মহলের অনেকে বলছেন, ধান উৎপাদনের মৌসুমে সার সংকট দীর্ঘস্থায়ী হলে এর প্রভাব শুধু কৃষকের ওপর নয়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ওপরও পড়বে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে প্রান্তিক কৃষক ও দিনমজুর শ্রেণি।

গোমস্তাপুরের কৃষকরা আজ শুধুই ধান নয়, ভবিষ্যৎ জীবনধারণের জন্য লড়ছেন। সরকার যদি সময়মতো পর্যাপ্ত সার সরবরাহ এবং কালোবাজার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আমন মৌসুমে ধানের ফলন ও কৃষকের জীবিকা—দুটোই চরম হুমকির মুখে পড়বে।

বগুড়ার আটাপাড়া এলাকায় শিক্ষিকা স্বামীকে বটিতে কুপিয়ে গুরুতর আহত

এস এম সালমান হৃদয়, বগুড়া: প্রকাশিত: রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫, ৬:১১ পিএম
বগুড়ার আটাপাড়া এলাকায় শিক্ষিকা স্বামীকে বটিতে কুপিয়ে গুরুতর আহত

বগুড়া শহরের আটাপাড়া এলাকায় এক নৃশংস ঘটনার মাধ্যমে সম্প্রদায়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিনইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা খাইরুন্নেসা সুমি তার স্বামী মতিউর রহমানকে গত শনিবার ৯ আগস্ট বটিতে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার দিন আটাপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আচমকা কথাকাটাকাটি শুরু হয়। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে শিক্ষিকা খাইরুন্নেসা সুমি তার রাগ অশান্তি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্বামীকে হাতে থাকা বটিতে কোপাতে শুরু করেন। এতে মতিউর রহমান গুরুতরভাবে আহত হন। আহত ব্যক্তিকে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে বগুড়ার টিএমএসএস হাসপাতালে নিয়ে যায়, যেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

এই ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং আহত স্বামী ও অভিযুক্ত স্ত্রী উভয়ের বক্তব্য নিয়েছে। প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

স্থানীয়রা আশাহত যে পারিবারিক কলহ এভাবে মারাত্মক রূপ নেবে। তারা সবাই পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শান্তির পরিবেশ বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।

গোমস্তাপুরে গরুর ল্যাম্পি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষতির মুখে খামারিরা :চাই বিনামূল্যে ভ্যাকসিন 

মোঃ তুহিন ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ প্রকাশিত: রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫, ৬:০৭ পিএম
গোমস্তাপুরে গরুর ল্যাম্পি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষতির মুখে খামারিরা :চাই বিনামূল্যে ভ্যাকসিন 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গবাদিপশুর মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ (Lumpy Skin Disease – LSD)। এ ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর শরীরে চাকা চাকা ফোলা দাগ, উচ্চ জ্বর, দুর্বলতা ও খাওয়ার অনীহা দেখা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে গরুর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে। ফলে খামারিদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

এই রোগটি সাধারণত বর্ষাকাল ও শরৎকালে বেশি দেখা যায়, যখন বাতাসে আর্দ্রতা থাকে এবং মশা-মাছির প্রজনন বেড়ে যায়। কারণ, এই ভাইরাস মূলত মশা, মাছির মাধ্যমে গরুর দেহে প্রবেশ করে ছড়িয়ে পড়ে।

উপজেলার মিরাপুর গ্রামের খামারি সাব্বির হাসান বলেন,

“আমার একটি গরু হঠাৎ করে দুর্বল হয়ে পড়ে, তারপর গোটা গোটা ফোলা দেখা যায়। ডাক্তার এসে জানান এটি ল্যাম্পি ভাইরাস। এখন চিকিৎসা চলছে, তবে প্রতিদিন অনেক খরচ হচ্ছে। যদি আগেই ভ্যাকসিন দিতে পারতাম, তাহলে হয়তো গরুটি এতটা অসুস্থ হতো না। আরো বলেন যদি প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে উক্ত ভাইরাসের টিকা দেয়া হয় তাহলে আমাদের মতো ছোট ছোট খামারি ‘রা উপকৃত হতাম।

পাথরপূজা গ্রামের খামারি বুলবুল আহমেদ বলেন,

“এই রোগে শুধু গরু নয়, আমরা খামারিরাও ভেঙে পড়ছি। একদিকে চিকিৎসার খরচ, অন্যদিকে কাজ বন্ধ। সময়মতো টিকা দিতে পারলে অনেক ক্ষতি এড়ানো যেত।”

তেঁতুলতলা গ্রামের খামারি বাবু জানান,

“একটি গরুতে ভাইরাস ধরা পড়ার পর সব চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি। অনেক টাকা খরচ করেও শেষ রক্ষা হয়নি। যদি পশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেয়ার ব্যবস্থা করে তাহলে গ্রামিণ প্রান্তিক খামারিদের উপকার হতো।

এ নিয়ে উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি মো. আনারুল ইসলাম বলেন,

“ল্যাম্পি ভাইরাস গোমস্তাপুরের খামারিদের জন্য বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। গরু হারিয়ে অনেকেই পথে বসার উপক্রম। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উচিত দ্রুত মাঠপর্যায়ে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া ও সচেতনতা বাড়ানো।

ডি এইচ এম এস ,ডাঃ আব্দুল ওয়াদূদ বলেন,ল্যাম্পি ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর আলাদা যত্ন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং টিকা প্রয়োগই হতে পারে এর একমাত্র কার্যকর প্রতিকার। একই সঙ্গে খামারিদের সচেতনতা বাড়ানো এবং সরকারের কাছে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার উপর জোর দাবি তার।

গোমস্তাপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা …….. ওয়াসিম আকরাম বলেন,

“ল্যাম্পি ভাইরাস একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, যা মশা-মাছির মাধ্যমে ছড়ায়। আতঙ্ক নয়, সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসাই এই রোগ নিয়ন্ত্রণের উপায়। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন বিতরণের জন্য আলোচনা করছি দ্রুত এই সমস্যা সমাধান দেওয়ার জন্য এবং খামারিদের চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছি।

সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে নওগাঁর রাণীনগরে সাংবাদিকদের মানববন্ধন

মোঃ আব্দুল মালেক, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫, ৬:০২ পিএম
সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে নওগাঁর রাণীনগরে সাংবাদিকদের মানববন্ধন

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা ও সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে নওগাঁর রাণীনগরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সাংবাদিকরা। রোববার বেলা ১১টার দিকে রাণীনগর উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দদের ব্যানারে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সিনিয়র সাংবাদিক হারুনুর রশিদের সভাপতিত্বে ও রহিদুল ইসলাম রাইপের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম, ওহেদুল ইসলাম মিলন, সাহাজুল ইসলাম, সুকুমল কুমার প্রামানিক, আব্দুর রউফ রিপন, মামুনুর রশিদ, আওরঙ্গজেব হোসেন রাব্বী, কাজী রহমান প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা- গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা ও দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার সাংবাদিক আনোয়ার হোসেনকে হত্যা চেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। এছাড়া জড়িত সকল সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সারাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি জানান।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে রাণীনগর উপজেলায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সকল সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

error: Content is protected !!