মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২
মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

✍️ মোঃ আব্দুল কাদের, শিক্ষক ও গবেষক

ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির পরিণতিঃ পলকের প্রতীকী পতন

✍️ মোঃ আব্দুল কাদের, শিক্ষক ও গবেষক প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ৪:১৯ পিএম | 69 বার পড়া হয়েছে
ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির পরিণতিঃ পলকের প্রতীকী পতন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘তরুণ নেতৃত্ব’ একসময় আশার আলো হয়ে উঠেছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর স্বপ্ন নিয়ে কিছু নেতাকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল নতুন প্রত্যাশা। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জুনাইদ আহমেদ পলক। এক তরুণ, মেধাবী ও তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন নেতা হিসেবে তিনি যেমন তারুণ্যের প্রতিনিধি হয়ে উঠেছিলেন, তেমনি সরকারি প্রশাসনেও তিনি হয়ে উঠেছিলেন ক্ষমতার বলয়কেন্দ্র। কিন্তু, ২৪-২৫ সালের ধারাবাহিক ঘটনায় তাঁর উত্থানের গল্প এখন রূপান্তরিত হয়েছে পতনের প্রতীকে।
পলকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রাথমিক অভিযোগ ওঠে ২০২৪ সালের শেষ দিকে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্তে নামে এবং আবিষ্কার করে, তাঁর নামে প্রায় ৮.৭৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য এবং ৩২ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন। তদন্তে আরও উঠে আসে, এই সম্পদ তাঁর ২৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ছড়িয়ে আছে, যার মধ্যে কিছু অ্যাকাউন্ট তাঁর স্ত্রী অরিফা জেসমিনের নামে খোলা হয়েছে। বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (BFIU) দেশের সব ব্যাংককে তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার নির্দেশ দেয়। এসব তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই জনমনে ক্ষোভ বাড়তে থাকে, যেটি কেবল সামাজিক মাধ্যমে নয়, বরং বাস্তব ময়দানেও প্রতিফলিত হতে থাকে।
তদন্ত চলাকালে পলকের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমন করতে প্রশাসনিক শক্তি ব্যবহার করেছেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখানো, দলীয় নিয়ন্ত্রণে পছন্দের প্রার্থীকে জয়ী করতে সরকারি যন্ত্র ব্যবহারের মতো কর্মকাণ্ড তাঁর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা ডেকে আনে। অনেক সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি তাঁর আচরণকে “ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ” বলেও আখ্যা দেন।
২০২৫ সালের শুরুর দিকে ঢাকার একটি আদালত পলকের জামিন বাতিল করে তাঁকে গ্রেফতারের আদেশ দেন। পরে তাঁকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। একইসঙ্গে তাঁর অবৈধ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দের নির্দেশ আসে। এই ঘটনায় তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আরও একাধিক হত্যা চেষ্টার মামলা নতুনভাবে খোলা হয় এবং আদালতে ‘shown arrested’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।
জুনাইদ আহমেদ পলকের ক্ষেত্রে সবচেয়ে করুণ বিষয় হলো, তিনি হয়তো সত্যিকার অর্থেই একসময় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চিন্তা করেছিলেন। তাঁর উদ্যোগে কিছু ডিজিটাল প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হয়েছিল, যা প্রশংসিত হয়েছিল আন্তর্জাতিক পরিসরেও। কিন্তু যখন সেই প্রজেক্টগুলোতেই স্বজনপ্রীতি, ঘুষ ও নিয়োগ বাণিজ্য ঢুকে পড়ে, তখন জনগণের বিশ্বাস আর থাকে না। তথ্যপ্রযুক্তির ভবিষ্যৎ আশাবাদের বদলে তা হয়ে পড়ে গোষ্ঠীস্বার্থে ভরা অন্ধকার চিত্র।
রাজনৈতিকভাবে এটি একটি বিপজ্জনক বার্তা। জনগণ যাদের সামনে রাখে ভবিষ্যতের রূপকার হিসেবে, যদি তারা অনিয়ম, আত্মসাৎ ও প্রশাসনিক দমননীতির চর্চা করে, তাহলে প্রজন্মের কাছে রাজনীতি হয়ে পড়ে অবিশ্বাস ও ভয়ের জায়গা। পলকের পতন তাই শুধু একজন রাজনীতিবিদের ঘটনা নয়, বরং এটি তরুণ নেতৃত্বের প্রতি এক বড় প্রশ্নচিহ্ন।
পলকের এই ঘটনা প্রবাহ প্রমাণ করে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয় যখন তা নৈতিকতা থেকে বিচ্যুত হয়, তখন সময়ই তার বিচার করে। আর ইতিহাস কখনো ভুলে না। আজ তিনি কারাগারে, তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ, স্থাবর সম্পত্তি জব্দ, জনসমর্থন মুখ থুবড়ে পড়েছে। এগুলো সবই রাজনৈতিক অহংকারের চূড়ান্ত ধ্বংসের পূর্বাভাস।
পরিশেষে, এখানে একটি বার্তাই স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, ক্ষমতা যত বড়ই হোক না কেন, যদি তা সেবার চেয়ে দখলের হাতিয়ার হয়ে ওঠে, তবে তার পতন অনিবার্য। ইতিহাস তার প্রমাণ বহন করে, এবং জুনাইদ আহমেদ পলক হয়ে আছেন তার নতুনতম প্রতীক।

“হংকং থেকে ১২৩ কোটি টাকার চোরাচালান! ন্যাশনাল প্রতারক ইব্রাহিম এখন পলাতক

টঙ্গী প্রতিনিধি প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫, ২:০৪ পিএম
“হংকং থেকে ১২৩ কোটি টাকার চোরাচালান! ন্যাশনাল প্রতারক ইব্রাহিম এখন পলাতক

২০১৫ সালে ইতালি পাঠানোর নামে বাংলাদেশ থেকে ৪২ জনের পাসপোর্ট ও নগদ অর্থ হাতিয়ে নেয় ইব্রাহিম শেখ নামের এক প্রতারক। প্রতারণার সেই অঙ্ক তখনই দাঁড়িয়েছিল প্রায় দুই কোটি তিন লাখ টাকায়। এরপর থেকেই ইব্রাহিম যেন হয়ে ওঠেন আন্তর্জাতিক চোরাকারবারির ‘প্রতীক’।

পরবর্তীতে ২০১৬ সালে অবৈধ পথে দালালের মাধ্যমে হংকং পাড়ি জমান তিনি। হংকংয়ে পৌঁছেই সেখানে গড়ে তোলেন একাধিক প্রতারণার নেটওয়ার্ক। ইউরোপ পাঠানোর নামে টাকা আত্মসাৎ, নকল আইফোন ও সোনা বিক্রি, এমনকি বাংলাদেশ থেকে নকল পণ্য পাচার—সবই চলতে থাকে একই ছকের ভেতরে।

স্থানীয় সূত্র বলছে, হংকং-এ অবস্থানকালে ইব্রাহিম একাধিক বিয়ে করেছেন পরিচয় গোপন করে। তার প্রতিটি প্রতারণার পেছনে ছিল সুপরিকল্পিত জালিয়াতি।

সম্প্রতি গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসেছে, হংকং থেকে বাংলাদেশে ফিরেও থেমে থাকেননি এই ‘ন্যাশনাল প্রতারক’। আনুমানিক ১২৩ কোটি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দেশে এনে লুকিয়ে রেখেছেন একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এমনকি মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, প্রতারণা, মাদক, চোরাচালান—সবকিছুতে সম্পৃক্ত এই ইব্রাহিম এখন দেশের ভেতরেই অবস্থান করছেন ছদ্মবেশে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে কীভাবে এতদিন ধরেই তার অপকর্ম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হলো? প্রতারিত পরিবারগুলো চাইছেন দ্রুত এই চক্রের মূলহোতা ইব্রাহিমকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হোক।

কাহালুতে ভাসমান অবস্থায় যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

মো:স্বাধীন খান বিশেষ প্রতিনিধি প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫, ২:০১ পিএম
কাহালুতে ভাসমান অবস্থায় যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার

বগুড়ার কাহালুতে জমির ড্রেনের পানিতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে কর্নিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের বয়স আনুমানিক ৩০-৩৫ বছর। তাঁর পরিচয় শনাক্তে কাজ করছে পুলিশ বলে জানিয়েছেন কাহালু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নিতাই চন্দ্র সরকার।

কুড়িগ্রাম সদরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বেতারাঘাতে ছাত্র অসুস্থ 

রুহুল আমিন, রুকু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫, ১:৫৪ পিএম
কুড়িগ্রাম সদরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বেতারাঘাতে ছাত্র অসুস্থ 

কুড়িগ্রাম সদরের হরিম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকার বেতারাঘাতে এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গত ৪ আগস্ট ২০২৫ ইং দুপুরে বিদ্যালয়ের শ্রেনী কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

জানাযায়, বিদ্যালয়ের ৫ ম শ্রেনীর ক্লাসে হাসিনা খাতুন নামের এক শিক্ষিকা বেতারাঘাত করেন। এ সময় হাতে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হলে রাকিবুল হাসান রাকিবকে বিদ্যালয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাটিয়ে দেয়া হয়। এর পর বাড়িতে হাত ফুলে গিয়ে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হলে তাকে সন্ধ্যায় তার অভিভাবক কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। রাকিব বলেন, হাসিনা আপা বড় বড় তিনটি প্রশ্ন লেখতে বলেন। আমি একটু পড়ে লেখতে চাইলেই বেত দিয়ে আমাকে খুব জোড়ে মারেন।এখন আমার হাতে অনেক ব্যাথা হচ্ছে। রাকিবের বাবা আব্দুস সালাম বলেন, আমার ছেলেকে পড়া-লেখা শিখানোর জন্য স্কুলে দিয়েছি। শিক্ষকের মার খেয়ে হাসপাতালে আসার জন্য নয়। আমি এর বিচার চাই। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা শাহনাজ বেগম বলেন,ঘটনার সময় আমি স্কুলের বাহিরে ছিলাম। শুনেছি হাসিনা বেত দিয়ে মেরেছে এতেই রাকিব ব্যাথা পায়। হাসিনা বেগম বলেন, আমি তাকে পড়ার জন্য মারিনি,মেরেছি নির্দাশিকা লাঠি দিয়ে দুষ্টুমি করার জন্য। উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আলহাজ্ব বুলবুল হোসেন বলেন,আমি আমার অফিসের এক স্টাফ এর নিকট বিষয়টি শুনলাম। প্রধান শিক্ষিকাকে ফোনে পাইনি। কাল ছুটি আছে অফিস খুললেই জেনে ব্যবস্তা নিবো।

error: Content is protected !!