বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২

ইউনূস-মোদির বৈঠক কী বার্তা দিচ্ছে

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫, ৪:০৫ পিএম | 112 বার পড়া হয়েছে
ইউনূস-মোদির বৈঠক কী বার্তা দিচ্ছে

গত বছর ৫ আগস্টের পর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের চরম টানাপড়েন শুরু হয়। দুই দেশের মধ্যে কোনোমতেই গোলছিল না বরফ। এই টানাপড়েনের মধ্যেই থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আট মাসের মাথায় দুই দেশের সরকার প্রধানের এটি প্রথম বৈঠক। এই বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তারা বলছেন, এক বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্কে সব অস্বস্তি দূর হয়ে যাবে না। কিন্তু এটি দুই পক্ষকে ভবিষ্যতে গঠনমূলক আলোচনার জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা এবং উৎসাহ দেবে। অস্বস্তিকে পাশ কাটিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক কিংবা অস্বস্তি পুষে রেখেই কাজের সম্পর্ক স্থাপন যাই হোক না কেন দুই দেশের পথচলা শুরু হয়ে গেল ব্যাংককের এই বৈঠক থেকে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তার ভারতে আশ্রয় নেওয়াকে ঘিরে দুই দেশের মধ্য অস্বস্তি শুরু হয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে – এমন বক্তব্য দিতে দেখা যায় ভারতের গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে। মূলত এ ধরনের পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্কের অস্বস্তি বাড়ে। সম্পর্কেও চরম টানাপড়েন শুরু হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করতে চাইছে। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে ভারতের অবস্থান পরিষ্কার নয় বলে অভিযোগ করে আসছে বাংলাদেশ।

এছাড়া ভারতে বসে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার বিষয় নিয়েও ঢাকা আপত্তি জানিয়েছে একাধিকবার। এ নিয়ে দুই দেশই একে অন্যের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে এর আগে। সেই সাথে গত বছরের জুলাই থেকেই বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভারতের ভিসা দেওয়া প্রায় বন্ধ রয়েছে। সেইসাথে সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গ তো আছেই। আর সবশেষ সম্প্রতি চীন সফরের সময় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য সম্পর্কে অধ্যাপক ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বেড়ে যায় বলে বিশ্লেষকরা বলছেন। সেখানে তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যকে ‘ল্যান্ডলকড” বা ভূ-বেষ্টিত এবং এই অঞ্চলে বাংলাদেশ হলো সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

ড. ইউনূসের কথার সূত্র ধরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিমসটেকে ভারতের কৌশলগত ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি মূলত দেশটির ৬৫০০ কিলোমিটার উপকূলরেখা এবং বিমসটেকের ৫টি সদস্য দেশের সঙ্গে ভৌগোলিক সংযুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন। এমন নানা ইস্যুতে গত আট মাস ধরে দুই দেশের সম্পর্কে আস্থার ঘাটতি দেখা দেয়ার প্রেক্ষাপটে ব্যাংককে ড. ইউনূস এবং নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার বৈঠকের রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে ড. ইউনূস ও মোদির মধ্যে বৈঠক হওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। সে সময় দুই নেতার সফরসূচির মধ্যে ভিন্নতার কারণে বৈঠক হয়নি। ডিসেম্বরে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বাংলাদেশ সফর করেছেন। এছাড়া পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন একাধিকবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ড. ইউনূস ও মোদির বৈঠক ফলপ্রসূ ও গঠনমূলক হয়েছে : প্রেস সচিব
গত শুক্রবার দুপুরে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত ইউনূস-মোদি বৈঠক নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যতগুলো ইস্যু আছে, তার সব কটি নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব কটি বিষয় আলোচনায় তুলেছেন। আলোচনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, ভারতে বসে তিনি যেসব উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন সে প্রসঙ্গ, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, গঙ্গার পানি চুক্তির নবায়ন, তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গ এসেছে। দুই শীর্ষ নেতার আলোচনা ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ হয়েছে।’ প্রথমবারের মতো দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে হওয়া এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ড. ইউনূসের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ব্যাংককে ইউনূস-মোদির বৈঠকের বিষয় নিয়ে গতকাল শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে এমনটাই জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, ‘শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যু উত্থাপনের সময়ও নেতিবাচক ছিলেন না মোদি। তাই হাসিনাকে ঢাকায় প্রত্যর্পণ করা হবে বলে বিশ্বাস প্রেস সচিবের। সেই সঙ্গে তিনি বিশ্বাস করেন হাসিনার বিচার দেখতে পাবেন। বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাজের প্রশংসা করেন।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মোদি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক থাকাকালীন আমরা আপনার প্রতি তার (শেখ হাসিনার) অসম্মানজনক আচরণ দেখেছি। কিন্তু আমরা আপনাকে সম্মান জানিয়েছেন।”

ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ একটু নতুন বাস্তবতায় নিজেদের তৈরি করার চেষ্টা করছে। ফলে প্রতিবেশী, বন্ধু, সহযোগী সবার সাথে নতুন করে আন্ডারস্ট্যান্ডিং দাঁড় করানোর ব্যাপারে তারা আন্তরিক। নতুন সম্ভাবনায় সহযোগীদের তারা পাশে পেতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, শীর্ষ পর্যায়ে পারস্পরিক আলোচনা হলে এক ধরনের দায়বদ্ধতা তৈরি হয়। তারা আগের বক্তব্যের পুনরুল্লেখ করেছেন মোটা দাগে। তারপরও একটা কমন (সাধারণ) জায়গা তৈরি করতে হবে। দুই পক্ষই কিছু কিছু ছাড় দিলে আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে পৌঁছানো সম্ভব।’

ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবতার নিরিখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত শুক্রবার দুপুরে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুই দেশের শীর্ষ দুই নেতার এই বৈঠকে নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের সংখ্যালঘু, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি ঢাকা-দিল্লির সম্পর্ক খারাপ হয় বা পরিবেশ নষ্ট হয়, এমন বক্তব্য পরিহার করার আহ্বানও জানিয়েছেন। তিনি নিজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এ অধ্যাপক ইউনূসের সাথে তার বৈঠক সম্পর্কে লিখেছেন।

নরেন্দ্র মোদী এক্স এ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেছি। ভারত বাংলাদেশের সাথে একটি গঠনমূলক ও জনগণ কেন্দ্রিক সম্পর্কের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ-ও লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা, অন্তর্ভুক্তি ও গণতন্ত্রের প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা রোধের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি এবং হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’

এই বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সাবেক কূটনীতিকেরা। তারা বলছেন, বৈঠকে দুই নেতা নিজ নিজ দেশের অবস্থানই তুলে ধরেছেন। তবে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা শুরুর বিষয়কে দুই দেশই গুরুত্ব দিচ্ছে বলে তারা মনে করেন। ব্যাংককে দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকের পর সেখানে প্রেসব্রিফিং করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।

তিনি জানান, নরেন্দ্র মোদি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ পুনরায় ব্যক্ত করেন এবং বাংলাদেশ সরকারকে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখার আহ্বান জানান।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ দেখতে চায় ভারত। বৈঠকে সে কথা তুলে ধরেছেন নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি জনগণের কল্যাণের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এবং বাংলাদেশ-ভারত দীর্ঘদিনের সহযোগিতার মাধ্যমে পারস্পরিক সুসম্পর্ক নিশ্চিত করেছে।

তিনি আরো বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবতানির্ভর, ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। সীমান্ত নিরাপত্তার প্রশ্নও আলোচনায় এসেছে দুই নেতার বৈঠকে। সীমান্তে সাধারণ বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। আর ভারত এবার সীমান্তে অবৈধ যাতায়াত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র সচিব জানান, সীমান্তের ক্ষেত্রে সীমান্ত নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য আইনের কঠোর প্রয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। একই সাথে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপরও নরেন্দ্র মোদী গুরুত্বারোপ করেছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের প্রসঙ্গ তুলেছেন। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের কাছে। তিনি এই প্রশ্নে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেছেন, এটি আলোচনার বিষয়বস্তু নয় এবং এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধ পাওয়ার কথা জানিয়েছে।

বিমসটেকের পরবর্তী সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের নেতৃত্বে জোটের আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
ইউনূস-মোদি বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠককে বিএনপি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহজাহানপুরে নিজ বাসায় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ইউনূস-মোদি বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি। তবে যদি দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আলোচনা হয়, তবে সেটা ভালো। সামনে ড. ইউনূস আরও ভালো কিছু বয়ে আনবেন বলে প্রত্যাশা করি।’

ড. ইউনূস-মোদি বৈঠক নিয়ে যা জানাল এনসিপি
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘থাইল্যান্ডে ড. ইউনুস ও মোদির বৈঠককে আমরা প্রাথমিকভাবে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। সরকারের পক্ষ থেকে উত্থাপিত শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, সীমান্ত হত্যা বন্ধ, গঙ্গার পানি চুক্তির নবায়ন, তিস্তা চুক্তির প্রসঙ্গ বিষয়ে কথা বলেছে সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ।’ ভারতকে অবশ্যই বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খা ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বৈঠকটি দেশের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসবে : পার্থ
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপক্ষীয় যে আলোচনার হয়েছে, তা আমাদের দেশের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসবে। শনিবার বিকেলে ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে ভোলায় এসে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আন্দালিব রহমান পার্থ।

নরসিংদীর রায়পুরা মেঘনা নদীতে জলদস্যুতা ও চাঁদাবাজ নুরুল ইসলাম, হারুন, হান্নানের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন

তালাত মাহামুদ বিশেষ প্রতিনিধি প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:১৮ পিএম
নরসিংদীর রায়পুরা মেঘনা নদীতে জলদস্যুতা ও চাঁদাবাজ নুরুল ইসলাম, হারুন, হান্নানের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় মেঘনা নদীতে জলদস্যুতা ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে , প্রতিবাদ ,মানববন্ধন, কর্মসূচি পালন করেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবে । নৌপথে চলাচলকারী ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের উদ্যোগে এ মানববন্ধনে , অংশ নেন ভৈরব ও রায়পুরা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, মির্জাচরের আওয়ামী লীগের দোসর রসুনের ছেলে নুরুল ইসলাম, বাশগাড়ির যুবলীগ নেতা হারুন ও নিলক্কার হান্নান দীর্ঘদিন ধরে স্পোর্টস বোট ও ট্রলারে করে মেঘনা নদীতে , সশস্ত্র তাণ্ডব চালাচ্ছে। গরু ব্যবসায়ী ও মোদি ব্যবসায়ীদের মালামাল ছিনতাই, অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি ,ও জনসাধারণের উপর গুলি চালানোর মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা।

এছাড়া ও নদীর চরাঞ্চলে অবৈধভাবে চুম্বুক , ড্রেজার বসিয়ে মাটি উত্তোলনের অভিযোগ ইতিপূর্বে একাধিকবার করা হয়েছে। নদীপথে চলাচল কারী কার্গো ট্রলার থেকে চাঁদা আদায়ের মতো ঘটনা , প্রতিনিয়ত চালিয়েছে বলে জানায় বিশ্বস্ত সূত্র।

এ ব্যাপারে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে , বিএনপির কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বলেন“এই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা আমাদের দলের কেউ নয়।” রায়পুরা উপজেলার বিএনপির , সাধারণ সম্পাদক ,আব্দুর রহমান খোকন ,বলেন “নুরুল ইসলাম, হান্নান ও হারুন আওয়ামী লীগের দোসর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করছি, তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করুন।” সন্ত্রাস চাঁদাবাজদের বিএনপি দলে কোন স্থান নেই । এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় । ইতি পর্বে নুরুল ইসলাম গং মির্জাচরে মানববন্ধনে গুলি বর্ষন করেন এবং গ্রামবাসীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।

তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রায়পুরা থানায় আছে । তৎকালীন সময়ের বহু ঘটনা জাতীয় দৈনিক পত্রিকা সহ নরসিংদী জেলার বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় একাধিক নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে

এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ।

সৌরভ চত্বরের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার

  তৌহিদুর রহমান শেরপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:০৪ পিএম
সৌরভ চত্বরের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ‘সৌরভ চত্বর’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিতর্কিত এক ব্যক্তির উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা-সমালোচনা দেখা দিয়েছে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

৫ আগস্ট, মঙ্গলবার সকালে ঝিনাইগাতী থানা মোড়ে শহীদ ছাত্রনেতা সৌরভের নামে নির্মিত ‘সৌরভ চত্বর’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন, ইউএনও মো. আশরাফুল আলম রাসেল। এ সময় শহীদ সৌরভের পিতা, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল আমিন, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

তবে অনুষ্ঠান শেষে ফটোসেশনে ঝিনাইগাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলার আসামি সারোয়ার হোসেনের ছবি ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই অভিযোগ করেন, জনপ্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা রাজনৈতিক সুবিধাভোগীদের পুনর্বাসনের কৌশল হিসেবে এমন আয়োজন করছেন।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হলে উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতায় ও পুলিশের বিশেষ উদ্যোগে বিতর্কিত ব্যক্তি সারোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ঝিনাইগাতী থানা পুলিশ।

বিষয়টি নিয়ে ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, “আমি সারোয়ার হোসেন নামে কাউকে চিনি না, তাকে আমন্ত্রণ জানানো তো দূরের কথা। শহীদ সৌরভের বাবা তাঁকে আত্মীয় হিসেবে নিজেই সঙ্গে এনেছেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিংবা মামলার আসামি, এসব তথ্য আমার জানা ছিল না। আমি এই ভিত্তিহীন অপপ্রচারের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “স্মৃতিচারণমূলক এ অনুষ্ঠানটি ছিল সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এবং একটি শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর নিঃস্বার্থ প্রয়াস। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কোনো বিতর্কিত ব্যক্তি উপস্থিত থাকলে সেটিকে প্রশাসনের অভিপ্রায় হিসেবে ব্যাখ্যা করা অনুচিত।”

সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইউএনও বলেন, “সত্যতা যাচাই না করে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য ও গুজব ছড়ানো সামাজিক দায়িত্বের পরিপন্থী। একজন শহীদের নামের সাথে জড়িত অনুষ্ঠানে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করাও অত্যন্ত দুঃখজনক।”

দশঘর মাদরাসা কমিটিতে আওয়ামীলীগের দোসর নাসির সভাপতি হওয়ার পায়তারা:এলাকায় ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রকাশিত: বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১:০১ পিএম
দশঘর মাদরাসা কমিটিতে আওয়ামীলীগের দোসর নাসির সভাপতি হওয়ার পায়তারা:এলাকায় ক্ষোভ

ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের রাজ্জাকীয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা,দশঘরের ম্যানেজিং কমিটিতে আওয়ামীলীগের দোসর এমপি মানিকের ঘনিষ্টজন দশঘর গ্রামের মাষ্টার নাসির উদ্দীন সভাপতি হওয়ার পায়তারা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এতে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে প্রতিষ্টানের প্রধান উলামালীগের সদস্য মাও:মুশাহিদ আলী তাঁর বিগত দিনের নিজের অপকর্ম যাতে প্রকাশ না পায় এজন্য এই আওয়ামী ডেবিলকে সভাপতি করতে তৎপরতা চালাচ্ছেন।

মাদরসার অভিভাবকদের বক্তব্য হচ্ছে ,আওয়ামীলীগের এই দোসরকে সভাপতি করলে মাদরাসা উন্নয়ন কাজ থেকে বঞ্চিত হবে।সরকারের নির্দেশনা রয়েছে।

বর্তমানে কোন শিক্ষা প্রতিষ্টানের কমিটিতে যেন নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের কোন দোসর সভাপতি হতে না পারে।মাষ্টার নাসির উদ্দিন যে আওয়ামীলীগের নেতা ও এমপি মানিকের একনিষ্ট সহযোগী ছিল, তা ছাতকের রাজনৈতিক মহলে সবার জানা।তাই নাসির উদ্দনীন সভাপতি হলে আগামী নির্বাচনে যারাই অত্র আসনে এমপি বা উপজেলা চেয়ারম্যান হবেন স্বাভাবিক ভাবে এ কারণে অত্র মাদরাসা উন্নয়ন কাজে আগ্রহী হবেন না বলে আশংকা করা হচ্ছে।

তাই,দশঘর মাদরাসায় যাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের কোন ডেভিল সভাপতি হতে না পারে এজন্য এলাকাবাসী ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

error: Content is protected !!