সোমবার, ৪ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২
সোমবার, ৪ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

রাণীনগরে হাজার হাজার পথচারীর গলার কাঁটা সরু রেলগেট

মোঃ আব্দুল মালেক, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৫, ৪:৩৭ পিএম | 152 বার পড়া হয়েছে
রাণীনগরে হাজার হাজার পথচারীর গলার কাঁটা সরু রেলগেট

মোঃ আব্দুল মালেক, রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে রেলগেট ও রেলস্টেশন মোড় নামক দুটি স্থান। বিশেষ করে নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়ক ও রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ সড়ক দুটি প্রশস্তকরণ হওয়ার কারণে দুটি সড়ক দিয়ে ছোট-বড় যানবাহনের চলাচল কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া প্রতিদিন ট্রেন চলাচলের সময় রেলগেট বন্ধ করা হলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আর সেই যানজটের কবলে পড়ে প্রতিদিনই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কয়েকটি জেলার পথচারীদের।

উত্তরবঙ্গের নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারীসহ বগুড়ার কিছু অঞ্চলের মানুষ বর্তমানে নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ফলে এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিনই কয়েক হাজার ছোট-বড় যাত্রীবাহী ও মালবাহী যানবাহন চলাচল করে। এছাড়া প্রতিদিনই উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহীর সঙ্গে যোগাযোগকারী যাত্রীবাহী ও মালবাহী ছোট-বড় ৩০টি ট্রেন চলাচল করে। ফলে সরু রেলগেইটের কারণে দিনের সিংহ ভাগ সময়ই ট্রেন চলাচলে যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ঈদের সময় চারদিক দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে এবং ট্রেন চলাচলের সময় সরু রেলগেইট বন্ধ থাকার কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। এতে করে যানজটের শিকার হয়ে প্রতিদিনই হাজার হাজার পথচারীদের শত শত কর্মঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলে স্থানীয়রা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করে। দ্রুতই সড়কের মতো রেলগেইট ও রেলস্টেশন মোড়ে আধুনিকতার ছোঁয়ার মাধ্যমে প্রশস্তকরণ বর্তমানে সময়ের দাবী।

উপজেলার আবাদপুকুর এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, অফিসিয়াল বিভিন্ন কাজ করতে উপজেলা পরিষদে যেতে কিংবা জরুরী কোন রোগীকে উপজেলা এবং জেলা সদর হাসপাতালে নিতে হলে রেলগেইট পার হতে হয়। ফলে রেলগেইটে এসে যানজটে আটকে পড়ার কারণে অনেক রোগীকে মৃত্যুবরণও করতে হয়েছে। যাতায়াতের অধিকাংশ সময়ই সরু রেলগেইটে এসে যানজটের কবলে পড়তে হয়। আর ঈদের সময় এসে যানবাহনের চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘন্টায় ঘন্টায় যানজটের শিকার হতে হচ্ছে। রেলগেইটের দুই পাশের মহাসড়ক ও সড়কে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও সরু রেলগেইটের কারণে তার কোন সুফল মিলছে না।

উপজেলা সদরের অটোভ্যান চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, সরু রেলগেইট বর্তমানে আমাদের গলার কাঁটাতে পরিণত হয়েছে। যখন ট্রেনের কারণে গেইট বন্ধ থাকে তখন দুই পাশে প্রায় কিলোমিটার সড়ক জুড়ে যানবাহনের জট লেগে যায়। বিশেষ করে সরু রেলগেইটের পাশ দিয়ে একজন মানুষ কিংবা সাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচলের কোন ব্যবস্থা না থাকায় যানজট আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এমন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে দ্রুতই রেলগেইট সংলগ্ন এলাকা থেকে পরিত্যক্ত ভবন ও দোকানগুলো ভেঙ্গে রেলগেইটের সড়ক ও মোড় বড় করার কোন বিকল্প নেই।

রাণীনগর রেলস্টেশনের সহকারি মাস্টার আতিকুল ইসলাম বলেন, রাণীনগরের উপর দিয়ে দিনের বেলায় ব্রডগেজ ও মিটারগেজ মিলে ১৬টি ট্রেন আর রাতের বেলায় ১৪টি ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া মালবাহী বিভিন্ন ট্রেনতো আছেই। বিশেষ করে দিনের বেলায় ট্রেন চলাচলের সময় ছোট্ট রেলগেইটটি অধিকাংশ সময়ই বন্ধ রাখতে হয়। এতে করে গেইট পার হওয়ার সময় ব্যস্ততম দুটি সড়ক ও মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এই বিষয়টি আমরাও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি।

সান্তাহার রেলওয়ে বিভাগের উর্দ্ধতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী আব্দুর রহমান মুঠোফোনে জানান, রাণীনগরের রেলস্টেশন ও রেলগেইটসহ আরো কয়েকটি রেলগেইট আধুনিকায়ন করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত ভাবে আবেদন প্রেরণ করেছি। অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় কাজ শুরু করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাকিবুল হাসান জানান, দুটি ব্যস্ততম সড়কের মাঝে সরু রেলষ্টেশন ও রেলগেট মোড় এই দুটি কারণে উপজেলাবাসীর দ্রুত চলাচলে প্রতিনিয়তই বিঘ্ন ঘটছে। অধিকাংশ সময় উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূর্বপ্রান্তে যেতে রেলগেট এলাকায় এসে দীর্ঘ সময় ধরে যানজটের শিকার হতে হয়। এই দুটি মোড়কে প্রশস্তকরণ করে কিভাবে যানজট মুক্ত করা যায় সেই বিষয়ে রেল বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্রুতই যোগাযোগ করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নওগাঁ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রাশেদুল হক রাসেল জানান, রাণীনগরের ওই দুটি মোড় প্রশস্তকরণের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করা খুবই জরুরী। প্রতিদিনই কেউ না কেউ যানজট নিয়ে ফোন করে। এছাড়া এক দিক থেকে অপর দিকের রাস্তার কোন অংশ দেখতে না পাওয়ার কারণে মাঝে মধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। এমন সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য স্থানীয় প্রশাসন রেল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে জায়গাটি আমাদের কাছে হস্তান্তর করলে আমরা রেলগেইট প্রশস্তকরণ কাজ শুরু করার প্রকল্প গ্রহণ করবো।

নওগাঁ জেলা বিএনপির কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত নির্বচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ প্রতিনিধিঃ প্রকাশিত: রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
নওগাঁ জেলা বিএনপির কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত নির্বচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

নওগাঁ জেলা শাখা বিএনপির কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে।  এবারের নির্বাচন শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক পদে তিনটিতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

রবিবার (৩ আগষ্ট) রাতে তফসিল ঘোষণা করেন নওগাঁ জেলা বিএনপির নির্বাচন প্রধান সমন্বয়ক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি মো. রেজাউল করিম বাদশা।

নির্বাচনী তফসিলে জানানো হয়, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ৪ আগষ্ট, মনোনয়ন ফরম বিক্রি হবে ৪ আগষ্ট সকাল ১১টা থেকে দুপুর  ১টা।

জমা নেওয়া হবে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৩টা। মনোনয়ন ফরম যাচাই বাছাই হবে ৪ আগষ্ট বিকাল ৩ টা থেকে ৪টায়।

মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ৪ আগষ্ট বিকেল ৪টা থেকে বিকাল ৫টা। প্রতীক বরাদ্দ সন্ধ্যা ৬টায়। ভোট গ্রহণের তারিখ ১১ আগষ্ট বেলা ২টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।

তফসিলে আরও উল্লেখ করা হয়, একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী একটি পদে মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন।

বিষয়টি ঢাকাপ্রকাশকে নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম রেজাউল ইসলাম রেজু। তিনি জানান, কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছেন। তফসিল অনুযায়ী সবকিছু হবে।

প্রায় ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ কাউন্সিল। তাই কাউন্সিলকে ঘিরে রয়েছে ব্যাপক উদ্দীপনা। এরমধ্যে কাউন্সিলকে সফল করতে গঠন করা হয়েছে উপ-কমিটি। কাউন্সিলে ১৪১৪ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন ও বিভিন্ন ইউনিট এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ১০০০ ডেলিগেট উপস্থিত থাকবেন।

কাউন্সিলে আমন্ত্রণ জানানো হবে- বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অন্তত ১০০ জন অতিথিকে।

এর আগে, ২০১০ সালে শহরের নওগাঁ শহরের নওযোয়ান মাঠে  দলের কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক হন জাহিদুল ইসলাম ধলু।

সর্বশেষ ২০২২ সালে আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়। সেখানে আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু ও বায়েজিদ হোসেন পলাশকে সদস্য সচিব হিসেবে ৩১ সদস্য অনুমদিত হয় ।

এবারের কাউন্সিলকে ঘিরে লাখো নেতাকর্মীর সমাগম হবে বলে ধারণা আয়োজকদের।

গাইবান্ধায় ‘নৈতিকতার দেয়াল’ ও ‘ভালো কাজের খাতা’ উদ্বোধন

মোঃ মিঠু মিয়া গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫, ১০:১৯ পিএম
গাইবান্ধায় ‘নৈতিকতার দেয়াল’ ও ‘ভালো কাজের খাতা’ উদ্বোধন

গাইবান্ধা জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা উন্নয়নের মাধ্যমে আগামী দিনের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, গাইবান্ধার উদ্যোগে ‘নীতিবান শিশু, সুখী বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে আজ শনিবার (৩ আগস্ট ২০২৫) গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ‘নৈতিকতার দেয়াল’ স্থাপন এবং ‘ভালো কাজের খাতা’ বিতরণের শুভ উদ্বোধন করেন গাইবান্ধা জেলার মান্যবর জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জনাব আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শিশুকালেই নৈতিক শিক্ষা দেওয়া হলে ভবিষ্যতে তারা সৎ, মানবিক ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। ‘নৈতিকতার দেয়াল’-এ শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভালো কাজের অঙ্গীকার ও চর্চার সুযোগ পাবে, আর ‘ভালো কাজের খাতা’ হবে আত্মমূল্যায়নের একটি কার্যকরী হাতিয়ার।

এই কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণ, সম্মান, দায়িত্ববোধ ও মানবিক গুণাবলির চর্চা উৎসাহিত করা হবে। জেলা প্রশাসনের এই ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে

নওগাঁয় ৩৬০ টাকার কর ৪২ হাজার, বর্ধিত কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ 

উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫, ১০:১০ পিএম
নওগাঁয় ৩৬০ টাকার কর ৪২ হাজার, বর্ধিত কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ 

নওগাঁ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল বাশির। এক বছর আগেও তার বাসাবাড়ির কর ছিল ৯০০ টাকা। এখন পৌরসভা থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার টাকা।

পানির সুবিধার্থে বাসায় বসিয়েছেন সাবমারসিবল পানির পাম্প। তাতে কর দিতে হবে ১৫০০ টাকা। অথচ বাড়েনি কোন নাগরিক সুবিধা, হয়নি তেমন কোন রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন। তাই জানালেন তীব্র প্রতিবাদ।

একইভাবে পৌরসভার বাসিন্দা আকতারুন আগে কর দিতেন ৩৬০ টাকা। হঠাৎ করে ৪২ হাজার ১ টাকা কর নির্ধারণ করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে তাকে । এমন নোটিশ পেয়ে তার চোখ কপালে। মাথার উপর যেন আসমান ভেঙে পড়েছে। আজ কর দিতে এসে তিনিও ক্ষোভ নিয়ে প্রতিবাদ জানালেন।

তাদের মতো একই প্রতিবাদে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন ৩ ওয়ার্ডের রাশেদুজ্জামান ও জলিলুর রহমানসহ আরও অনেকে।

নওগাঁ প্রথম শ্রেনির পৌরসভা হিসেবে নাগরিক সেবার মানোন্নয়ন না করে অযৌতিক ভাবে কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার ৩ আগষ্ট বেলা সাড়ে ১১ টায় শহরের মুক্তির মোড় পৌরভবনের সামনে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচী পালন করা হয়।

মানববন্ধন চলাকালে সেখানে উপস্থিত হয়ে তারা ক্ষোভের সহিত বলেন, আগে যে কর নির্ধারণ করা ছিল, সেগুলো আমরা সঠিক সময়ে পরিশোধ করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে এমন অযৌক্তিক কর বৃদ্ধি করা হয়েছে, যেটা আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। যারা দিনমজুর হিসেবে কাজ করে দিন পার করছি, তাদের পক্ষে এমন অযৌক্তিক কর নির্ধারণ মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ। বৈষম্যহীন যে বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন আমরা দেখছি, জানিনা সেই স্বপ্ন কেমন ভাবে পুরণ হবে বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেন। তাই দ্রুত এমন কর নির্ধারণ বাতিল করে সামঞ্জস্য কর নির্ধারণের দাবি জানান তারা।

এসময় নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এস.এম আজাদ হোসেন মুরাদ এর সভাপতিত্বে শিক্ষক জাহিদ রব্বানি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এর সমন্বয়ক জয়নাল আবেদিন মুকুলসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন। এসময় এক লাফে অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো কর দিতে কষ্ট হবে এমন পৌরবাসীন্দাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন- ১৯৬৩ সালে স্থাপিত নওগাঁ পৌরসভা ১৯৮০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে এবং ১৯৮৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। প্রায় ৩৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের পৌরসভাটির বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় দুই লাখ। শহরের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রধান সড়কের সংখ্যা ২০টি। এরমধ্যে পাকা রাস্তা হয়েছে ১৫০ কিলোমিটার আধা পাকা রয়েছে ৫০ কিলোমিটার এবং কাঁচা রাস্তা ১০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ রাস্তা চলাচলের অযোগ্য ও খানাখন্দে ভরা।

তিন দশকেরও বেশি সময় আগে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হলেও বাস্তবে নওগাঁ শহরের চিত্র এখনও যেন মফস্বলেরও নিচে। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও অপ্রতুল নাগরিক সেবার কারণে দুই লাখ জনগণের এই শহরে প্রতিদিনের জীবন এক আতঙ্কের নাম। নাগরিক সেবা বঞ্চিত হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, ৩০ মিনিট বৃষ্টি হলে হাঁটু পানি জমে থাকে। সেই পানি নামতে লাগে ৫-৭ দিন। ভাঙা রাস্তায় চলাচলে জনদূর্ভোগ, সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকা ও সন্ধ্যার পর লাইটিং না থাকায় পৌরবাসীকে দীর্ঘদিন থেকে দূর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে।

নাগরিক সেবা বঞ্চিত হওয়ার পরও উল্টো পৌরবাসীর ওপর করের বোঝা চাপানো হচ্ছে। বর্ধিত কর প্রত্যাহার করে পূর্বের নিয়মে কর আদায়ের দাবী জানানো হয়। অন্যথায় আগামী ৭দিনের মধ্যে কর প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর কর্মসূচী পালন করা হবে বলে জানান বক্তারা।

জানতে চাইলে পৌরসভার প্রশাসক টি.এম.এ. মমিন মুঠোফোনে বলেন, অযৌক্তিক কর নির্ধারণ কথাটি ঠিক না। এটা অতিরিক্ত হতে পারে। আর এটা আমার সিদ্ধান্ত না, সরকারের সিদ্ধান্ত। তবে আমাদের কর নির্ধারণ মূল্যায়ন কমিটি আছে, সেখানে আবেদন করলে তারা পুনবিবেচনা করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, অল্প দিনের মধ্যে ৩০ টি রাস্তার কাজ শুরু হবে। এছাড়া অন্যান্য রাস্তাগুলোরও কাজ করা হবে। আমি আশা করি আগামী তিন বছরের মধ্যে একটি রাস্তাও খারাপ থাকবে না। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রতি সপ্তাহে পরিস্কার করার। সর্বোপরি এইগুলো অনেক পুরাতন সমস্যা, আমাকে সকলে মিলে সহযোগিতা করলে সমাধানের চেষ্টা করবো।

উল্লেখ, ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স ও পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নওগাঁ পৌরসভার কর্তৃপক্ষ।

error: Content is protected !!