রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২
রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

বরেন্দ্র অঞ্চলে গ্রামে ওষুধের দোকানিরাই চিকিৎসকের ভূমিকায়

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪, ২:৩৩ পিএম | 146 বার পড়া হয়েছে
বরেন্দ্র অঞ্চলে গ্রামে ওষুধের দোকানিরাই চিকিৎসকের ভূমিকায়

রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির একেবারে প্রত্যন্তাঞ্চলের দেওলা গ্রাম। এ গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে এরশাদ আলী। নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেই শেষ করেছেন শিক্ষাজীবন। নিজ গ্রাম দেওলা-ভিমপাড়া মোড়ে পাকাঘর তুলে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে করছেন ওষুধের দোকান। নেই দোকানের ড্রাগ লাইসেন্স, নেই কোনো চিকিৎসার প্রশিক্ষণের সনদ। শিশু-কিশোর বৃদ্ধসহ নানা বয়সি রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসা দিচ্ছেন নিজেই। ডায়াবেটিস, হাইপ্রেসার, কাটা, ব্যথা, জ্বর-সর্দি হলেই নিয়মিত ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছেন রোগীদের।

একই উপজেলা বাধাইড় ইউপির বদলপুর গ্রামের জহরুল ইসলাম। প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত লেখাপড়া করেছিলেন তিনি। এরপর কৃষি কাজে যুক্ত হয়ে পড়েন। কৃষি কাজ ভালো না লাগায় গত ৬ বছর আগে গ্রামের মোড়ে টিনের ঢপে করেছেন মুদির দোকান। দোকানে চাল, ডাল তেল লবণসহ চা-পানের ব্যবস্থা আছে। তার দোকান ঘরের সদার মধ্যে এক পাশে রেখে সাজানো অ্যান্টিবায়োটিকসহ নানা রোগের ওষুধ। মুদি দোকানি জহরুল ইসলামের বেশি রোগী এলাকার আদিবাসীসহ শ্রমজীবী মানুষ। রোগের কথা শুনে নিজে দিচ্ছেন ওষুধ।

জীবন রক্ষাকারী ওষুধের ভয়ংকর ব্যবহার ও চিকিৎসার গল্প দুটি শুধু তানোর উপজেলার দেওয়া ও বদলপুর গ্রামের নয়। রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাসহ পুরো বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রতিটি গ্রাম ও মোড়ে এমন হাজারও ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকান গড়ে উঠেছে। আর মুদি দোকানে ওষুধ রাখার সংখ্যা আরও বেশি। এসব দোকানে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা হচ্ছে, দেওয়া হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক যার বেশিরভাগ নকল ওষুধ।

রাজশাহী জেলা ড্রাগিস্ট অ্যান্ড কেমিস্ট সমিতি আওতায় মুন্ডুমালা বাজারে রুবেল ফার্মেসি মালিক হালিমুজ্জামান রুবেল জানান, দেশের অনেক নামিদামি কোম্পানির নাম ব্যবহার করে এন্টিবায়োটিকসহ অনেক রকম নকল ওষুধ তৈরি করা হয়। এসব নকল ওষুধ কোম্পানির লোকজন লোভ দেখিয়ে গ্রামের ফার্মেসিগুলোকে তাদের ওষুধ বিক্রিতে উৎসাহ দেন। আর বেশি লাভের আশায় দোকানিরা নকল ওষুধ গ্রামের সহজ-সরল মানুষের কাছে উচ্চদামে বিক্রি করেন।

সরেজমিন গত এক সপ্তহ রাজশাহীর তানোর, গোদাগাড়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার গ্রামঞ্চলে ঘুরে দেখা যায়, এমন কোনো গ্রামের মোড় নেই যেখানে একাধিক ওষুধের দোকান গড়ে ওঠেনি। এসব গড়ে ওঠা ওষুধের দোকানিরা নিজেই চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে নানা ওষুধ দিয়ে থাকেন রোগীকে।

এসব বিষয়ে ড্রাগ লাইন্সেস বিহীন দেওয়া গ্রামে এরশাদ আলী ও বদলপুর মুদি দোকানি জহরুল ইসলামসহ একাধিক দোকানি বলেন, জ্বর-সর্দিতে নাপা ও স্যালাইন, গ্যাসের ওষুধ আমরা বিক্রি করে থাকি। হাতের কাছে ওষুধ পেয়ে গ্রামের মানুষের উপকার হয় বলে দাবি করেন তারা।

বাংলাদেশ ড্রাগিস্ট অ্যান্ড কেমিস্ট সমিতি রাজশাজী জেলা শাখার সহ-সভাপতি শামিম চৌধুরী বলেন, রাজশাহী জেলায় সমিতির আওতায় ৯শ’র বেশি ফার্মেসি রয়েছে। সমিতির ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়া একটিও অ্যান্টিবায়োটিক রোগীদের দেন না। সমিতির পক্ষ থেকে ড্রাগ লাইন্সেস ছাড়া গ্রামে গড়ে ওঠা ও মুদির দোকানে ওষুধ বিক্রি বিষয়ে গত মাসের ২৪ তারিখে জেলা শহরে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সে সেমিনারে জেলা সিভিল সার্জন ছাড়াও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকবেন। নকল ওষুধ ও গ্রামে যত্রতত্র গড়ে ওঠা ফার্মেসি বন্ধ করার বিষয়ে আলোচনা হবে।মুন্ডুমালা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্ম উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. দুরুল হুদা সকালের সময়কে বলেন, অযথা অ্যান্টাবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ দিলে রোগীর রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা হারাবে। লিভার, কিডনি ড্যামেজ হয়ে পড়বে। পরে জটিল রোগ হলে অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজে লাগবে না। আর নকল ওষুধ সেবন করলে রোগীর আরও ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে।

গাইবান্ধায় ‘নৈতিকতার দেয়াল’ ও ‘ভালো কাজের খাতা’ উদ্বোধন

মোঃ মিঠু মিয়া গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫, ১০:১৯ পিএম
গাইবান্ধায় ‘নৈতিকতার দেয়াল’ ও ‘ভালো কাজের খাতা’ উদ্বোধন

গাইবান্ধা জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা উন্নয়নের মাধ্যমে আগামী দিনের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, গাইবান্ধার উদ্যোগে ‘নীতিবান শিশু, সুখী বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে আজ শনিবার (৩ আগস্ট ২০২৫) গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ‘নৈতিকতার দেয়াল’ স্থাপন এবং ‘ভালো কাজের খাতা’ বিতরণের শুভ উদ্বোধন করেন গাইবান্ধা জেলার মান্যবর জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জনাব আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শিশুকালেই নৈতিক শিক্ষা দেওয়া হলে ভবিষ্যতে তারা সৎ, মানবিক ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। ‘নৈতিকতার দেয়াল’-এ শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভালো কাজের অঙ্গীকার ও চর্চার সুযোগ পাবে, আর ‘ভালো কাজের খাতা’ হবে আত্মমূল্যায়নের একটি কার্যকরী হাতিয়ার।

এই কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণ, সম্মান, দায়িত্ববোধ ও মানবিক গুণাবলির চর্চা উৎসাহিত করা হবে। জেলা প্রশাসনের এই ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে

নওগাঁয় ৩৬০ টাকার কর ৪২ হাজার, বর্ধিত কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ 

উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫, ১০:১০ পিএম
নওগাঁয় ৩৬০ টাকার কর ৪২ হাজার, বর্ধিত কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ 

নওগাঁ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল বাশির। এক বছর আগেও তার বাসাবাড়ির কর ছিল ৯০০ টাকা। এখন পৌরসভা থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার টাকা।

পানির সুবিধার্থে বাসায় বসিয়েছেন সাবমারসিবল পানির পাম্প। তাতে কর দিতে হবে ১৫০০ টাকা। অথচ বাড়েনি কোন নাগরিক সুবিধা, হয়নি তেমন কোন রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন। তাই জানালেন তীব্র প্রতিবাদ।

একইভাবে পৌরসভার বাসিন্দা আকতারুন আগে কর দিতেন ৩৬০ টাকা। হঠাৎ করে ৪২ হাজার ১ টাকা কর নির্ধারণ করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে তাকে । এমন নোটিশ পেয়ে তার চোখ কপালে। মাথার উপর যেন আসমান ভেঙে পড়েছে। আজ কর দিতে এসে তিনিও ক্ষোভ নিয়ে প্রতিবাদ জানালেন।

তাদের মতো একই প্রতিবাদে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন ৩ ওয়ার্ডের রাশেদুজ্জামান ও জলিলুর রহমানসহ আরও অনেকে।

নওগাঁ প্রথম শ্রেনির পৌরসভা হিসেবে নাগরিক সেবার মানোন্নয়ন না করে অযৌতিক ভাবে কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার ৩ আগষ্ট বেলা সাড়ে ১১ টায় শহরের মুক্তির মোড় পৌরভবনের সামনে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচী পালন করা হয়।

মানববন্ধন চলাকালে সেখানে উপস্থিত হয়ে তারা ক্ষোভের সহিত বলেন, আগে যে কর নির্ধারণ করা ছিল, সেগুলো আমরা সঠিক সময়ে পরিশোধ করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে এমন অযৌক্তিক কর বৃদ্ধি করা হয়েছে, যেটা আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। যারা দিনমজুর হিসেবে কাজ করে দিন পার করছি, তাদের পক্ষে এমন অযৌক্তিক কর নির্ধারণ মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ। বৈষম্যহীন যে বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন আমরা দেখছি, জানিনা সেই স্বপ্ন কেমন ভাবে পুরণ হবে বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেন। তাই দ্রুত এমন কর নির্ধারণ বাতিল করে সামঞ্জস্য কর নির্ধারণের দাবি জানান তারা।

এসময় নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এস.এম আজাদ হোসেন মুরাদ এর সভাপতিত্বে শিক্ষক জাহিদ রব্বানি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এর সমন্বয়ক জয়নাল আবেদিন মুকুলসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন। এসময় এক লাফে অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো কর দিতে কষ্ট হবে এমন পৌরবাসীন্দাসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন- ১৯৬৩ সালে স্থাপিত নওগাঁ পৌরসভা ১৯৮০ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে এবং ১৯৮৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। প্রায় ৩৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের পৌরসভাটির বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় দুই লাখ। শহরের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রধান সড়কের সংখ্যা ২০টি। এরমধ্যে পাকা রাস্তা হয়েছে ১৫০ কিলোমিটার আধা পাকা রয়েছে ৫০ কিলোমিটার এবং কাঁচা রাস্তা ১০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ রাস্তা চলাচলের অযোগ্য ও খানাখন্দে ভরা।

তিন দশকেরও বেশি সময় আগে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হলেও বাস্তবে নওগাঁ শহরের চিত্র এখনও যেন মফস্বলেরও নিচে। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, অচল ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও অপ্রতুল নাগরিক সেবার কারণে দুই লাখ জনগণের এই শহরে প্রতিদিনের জীবন এক আতঙ্কের নাম। নাগরিক সেবা বঞ্চিত হয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, ৩০ মিনিট বৃষ্টি হলে হাঁটু পানি জমে থাকে। সেই পানি নামতে লাগে ৫-৭ দিন। ভাঙা রাস্তায় চলাচলে জনদূর্ভোগ, সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকা ও সন্ধ্যার পর লাইটিং না থাকায় পৌরবাসীকে দীর্ঘদিন থেকে দূর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে।

নাগরিক সেবা বঞ্চিত হওয়ার পরও উল্টো পৌরবাসীর ওপর করের বোঝা চাপানো হচ্ছে। বর্ধিত কর প্রত্যাহার করে পূর্বের নিয়মে কর আদায়ের দাবী জানানো হয়। অন্যথায় আগামী ৭দিনের মধ্যে কর প্রত্যাহার না করা হলে কঠোর কর্মসূচী পালন করা হবে বলে জানান বক্তারা।

জানতে চাইলে পৌরসভার প্রশাসক টি.এম.এ. মমিন মুঠোফোনে বলেন, অযৌক্তিক কর নির্ধারণ কথাটি ঠিক না। এটা অতিরিক্ত হতে পারে। আর এটা আমার সিদ্ধান্ত না, সরকারের সিদ্ধান্ত। তবে আমাদের কর নির্ধারণ মূল্যায়ন কমিটি আছে, সেখানে আবেদন করলে তারা পুনবিবেচনা করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, অল্প দিনের মধ্যে ৩০ টি রাস্তার কাজ শুরু হবে। এছাড়া অন্যান্য রাস্তাগুলোরও কাজ করা হবে। আমি আশা করি আগামী তিন বছরের মধ্যে একটি রাস্তাও খারাপ থাকবে না। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রতি সপ্তাহে পরিস্কার করার। সর্বোপরি এইগুলো অনেক পুরাতন সমস্যা, আমাকে সকলে মিলে সহযোগিতা করলে সমাধানের চেষ্টা করবো।

উল্লেখ, ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স ও পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নওগাঁ পৌরসভার কর্তৃপক্ষ।

নরসিংদীর হাজিপুরে আলোচিত নেতা স্বপনের দেশত্যাগের প্রস্তুতি ,সম্পত্তি বিক্রি করে ভারতে পালানোর গুঞ্জনে এলাকায় তোলপাড়

তালাত মাহামুদ নরসিংদীর প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৩০ পিএম
নরসিংদীর হাজিপুরে আলোচিত নেতা স্বপনের দেশত্যাগের প্রস্তুতি ,সম্পত্তি বিক্রি করে ভারতে পালানোর গুঞ্জনে এলাকায় তোলপাড়

নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দোসর ও বিতর্কিত যুবলীগ নেতা স্বপন বিশ্বাস কে ঘিরে আবার ও উত্তাল জনমত। অভিযোগ উঠেছে, তিনি তার ভিটেমাটি, মিল-কারখানা এবং অন্যান্য মূল্যবান সম্পত্তি একে একে বিক্রি করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে তার ভাই ভারত চলে গেছে বলে ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

স্বপন বিশ্বাস নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এবং স্থানীয় যুবলীগের একজন সক্রিয় নেতা ছিলেন। পাশাপাশি, তিনি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অর্থদাতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে তিনি বিপুল বিত্তসম্পদের মালিক হন এবং ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠতা কাজে লাগিয়ে বহু অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

সম্প্রতি তার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মিল-কারখানা ও বসতভিটা বিক্রির বিষয়টি জনসম্মুখে আসার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, স্বপন বিশ্বাস তার সমস্ত সম্পদ নগদ করে নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চিরতরে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন।

এলাকাবাসীরা জানান, “স্বপনের পরিবার ইতোমধ্যে ভারতে গিয়ে বসবাস শুরু করেছে। এখন স্বপন নিজেও দেশের সকল সম্পদ বিক্রি করে পালানোর চেষ্টা করছে। আমরা সরকারের কাছে তার অবিলম্বে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানাচ্ছি।”

স্থানীয় সূত্র মতে, স্বপনের বিরুদ্ধে বিগত দিনে একাধিক অভিযোগ থাকলেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অথচ এখন তার আচরণ ও সম্পদ বিক্রির ঘটনা প্রমাণ করছে, কিছু না কিছু গোপন অপকর্মের প্রমাণ মুছে ফেলতেই তিনি দেশত্যাগের ছক কষছেন।

এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সচেতন মহল মনে করছেন, তদন্ত করে সত্য উদঘাটন ও প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়বে।

এলাকার সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “স্বপন বিশ্বাস আওয়ামী লীগ সরকারের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কোটি কোটি টাকা ইনকাম করেছে। এখন সবকিছু গুটিয়ে পালানোর মানেই হচ্ছে—তার অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা।”

স্থানীয়রা স্বপন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, তাকে আইনের আওতায় এনে জবাবদিহির মুখোমুখি করা না গেলে এর চেয়ে বড় দৃষ্টান্তহীনতা আর হতে পারে না। এ ব্যাপারে স্বপন বিশ্বাসের বক্তব্য নিতে গেলে তাকে এলাকায় পাওয়া যায়নি এলাকাবাসী জানিয়েছেন তিনি নরসিংদীতে থাকেন

error: Content is protected !!