রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

জনগণের ইচ্ছায় রাষ্ট্রপতির অর্ডারঃ সাংবিধানিক সংকটের ইঙ্গিত

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৩২ পিএম | 36 বার পড়া হয়েছে
জনগণের ইচ্ছায় রাষ্ট্রপতির অর্ডারঃ সাংবিধানিক সংকটের ইঙ্গিত

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সাম্প্রতিক একটি “অর্ডার” বা আদেশ জারি দেশের রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি শুধু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়; এটি বাংলাদেশের সাংবিধানিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্রের ক্ষমতার কাঠামো এবং জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রয়োগপদ্ধতির ওপর গভীর প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে। রাষ্ট্রপতি এর আগে সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদের আলোকে অধ্যাদেশ জারি করেছেন, যা একটি স্বীকৃত ও সীমাবদ্ধ ক্ষমতা। কিন্তু এবার তিনি অধ্যাদেশ নয়, বরং “জনগণের পরম অভিপ্রায়ের ক্ষমতাবলে” একটি “অর্ডার” জারি করেছেন, এবং এখানেই পুরো সমস্যার জন্ম।
বাংলাদেশের সংবিধানে জনগণের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি থাকলেও তার প্রয়োগের একমাত্র বৈধ পথ হলো সংবিধান-সময় পরীক্ষিত প্রতিষ্ঠানসমূহ। রাষ্ট্রপতি জনগণের সরাসরি ম্যান্ডেটধারী নন; তিনি পরোক্ষভাবে নির্বাচিত একটি সাংবিধানিক পদ। তাঁর দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রের কার্যসম্পাদন করা। সংবিধানের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রপতির সর্বোচ্চ ক্ষমতা নির্ধারিত এবং তা অতিক্রম করার কোনো অধিকার তিনি রাখেন না। সে কারণে “জনগণের অভিপ্রায়” নামে একটি আদেশ জারি করা মূলত সংবিধানিক কাঠামোর বাইরে গিয়ে একধরনের বিপ্লবী বৈধতা দাবি করার মতো। রাষ্ট্রপতি যদি মনে করেন জনগণ তাঁকে এই বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে, তবে তা সংবিধানের কোথায় এবং কীভাবে নিহিত আছে—তার ব্যাখ্যাও প্রয়োজন।
এখানে সবচেয়ে বড় সাংবিধানিক সংকট হলো একটি “ডুয়াল ক্যারেক্টর” বা দ্বৈত চরিত্রের সৃষ্টি। রাষ্ট্রপতি কি সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান, নাকি গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী জনগণের সরাসরি প্রতিনিধি? এই দুই অবস্থান একসঙ্গে বহন করা সম্ভব নয়। সংবিধানিক বৈধতা আসে আইনের বিধান থেকে; বিপ্লবী বৈধতা আসে জনগণের সরাসরি রাস্তায় দাঁড়িয়ে সৃষ্ট ক্ষমতা থেকে। রাষ্ট্রপতি যদি দ্বিতীয় অবস্থান গ্রহণ করেন, তবে সংবিধান বহাল রেখে তাঁর পদক্ষেপ মূলত সাংবিধানিক কর্তৃত্বকে অকার্যকর করে দেয়। অথচ তিনি সংবিধান স্থগিত ঘোষণা করেননি, কিংবা বিপ্লবী সরকার গঠনের কোনো প্রক্রিয়াও শুরু করেননি। ফলে একটি সাংঘর্ষিক ও অস্পষ্ট অবস্থার জন্ম হয়েছে।
এই আদেশ প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক দুই ক্ষেত্রেই যে অচলাবস্থা সৃষ্টি করতে পারে, তা এখনই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। সংবিধান যদি সর্বোচ্চ আইন না থাকে, তবে সংসদ কীভাবে আইন প্রণয়ন করবে? প্রশাসন কার আদেশ মানবে—সংসদীয় আইন না রাষ্ট্রপতির “জনগণের অভিপ্রায়” ভিত্তিক আদেশ? বিচার বিভাগ কীভাবে এই আদেশের বৈধতা নির্ধারণ করবে? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, ভবিষ্যতে যখন নির্বাচিত সংসদ গঠিত হবে, তখন রাষ্ট্রপতির এই অর্ডার তাদের চোখে কী বৈধতা পাবে? এমন একটি অবস্থায় নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে বিভিন্ন সময়ে সামরিক শাসন কিংবা একদলীয় ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে “বিপ্লবী আদেশ” বা “বিচ্যুত ক্ষমতা” ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু তখন সংবিধান খোলাখুলিভাবে স্থগিত, সংশোধিত বা সীমিত করা হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতি তার থেকে আলাদা এবং আরও জটিল। কারণ সংবিধান কার্যত বহাল, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা উপেক্ষিত; রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকেও সংবিধানের ঊর্ধ্বে অবস্থান নিচ্ছেন।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটি সুস্পষ্ট পথ প্রয়োজন। সর্বপ্রথম, রাষ্ট্রপতির এই আদেশের সাংবিধানিকতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট ব্যাখ্যা অত্যন্ত জরুরি। কারণ রাষ্ট্রপতি যদি সংবিধানের সীমা ছাড়িয়ে থাকেন, তবে তা বিচার বিভাগের রুলিং ছাড়া কোনোক্রমেই প্রতিষ্ঠা পেতে পারে না। দ্বিতীয়ত, জনগণের অভিপ্রায় যদি সত্যিই পরিবর্তনের দাবি জানায়, তবে তা বাস্তবায়নের পথ সংবিধানসঙ্গত রাজনৈতিক সংলাপ ও নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে আসতে হবে। রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব কখনো ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত হতে পারে না; তা হলে গণতন্ত্রের ভিত্তি নড়ে যায়।
রাষ্ট্রপতির এই আদেশ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক নতুন ধাপ নয়; বরং একটি নতুন সংকটের সূচনা। এটি দেখিয়ে দিয়েছে, জনগণের সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক, এর প্রয়োগ সংবিধান-নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর মধ্যেই হতে হবে। নইলে রাষ্ট্র ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু অস্থির হয়ে পড়ে এবং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পথ আরও জটিল হয়ে যায়।

ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারি আটক: ৫০ পিস ইয়াবা জব্দ

মোঃ মিজানুর সরকার টাঙ্গাইল প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:০১ এএম
ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারি আটক: ৫০ পিস ইয়াবা জব্দ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে উপজেলার ফসলান্দি এলাকার ইব্রাহীম খাঁ সরকারি কলেজের ২নং গেটের পাশের একটি নির্মাণাধীন দোতলা ভবনে মাদক কেনাবেচার সময় শাকের আলী (৩৭) কে আটক করা হয়। সে ফসলান্দি গ্রামের শুকুর হাজীর ছেলে। অপর জন মুন্নাফ (৫২) মাটিকাটা গ্রামের আনছের আলীর ছেলে, তাকে তার নিজ এলাকা মাটিকাটা থেকে আটক করা হয়। দুই জনকে মাদক দ্রব্য আইনে রবিবার ৭ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভূঞাপুর থানা পুলিশের একটি অভিযানিক দল দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়। উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে তার দেহ তল্লাশি করা হলে, তার পরিহিত কালো ট্রাউজারের ডান পকেট থেকে একটি সাদা পলিথিনে মোড়ানো ৫০ পিস হালকা কমলা রঙের ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়। ডিজিটাল পরিমাপক যন্ত্রে এর ওজন ৫ গ্রাম এবং আনুমানিক বাজার মূল্য ১৫ হাজার টাকা বলে জানা যায়।স্থানীয় দুই সাক্ষী এবং একজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে জব্দ তালিকা তৈরি করে আলামত জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শাকের আলী দাবি করে, এই ইয়াবা ট্যাবলেটগুলি সে মুন্নাফের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ মুন্নাফকেও তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। জানা যায়, আটককৃত উভয় আসামীর বিরুদ্ধেই আগে একাধিক মামলা রয়েছে। শাকের আলীর বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা রয়েছে। মুন্নাফের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, দ্রুত বিচার আইন এবং দণ্ডবিধির ধারায় মোট পাঁচটি মামলা বিচারাধীন আছে।

স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, এই দুই জন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং তারা যুবসমাজসহ সাধারণ মানুষকে মাদকের জালে ফেলছে। এ-ই বিষয়ে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিনিময়যোগ্য নয় শিশুপ্রাণ: ভূঞাপুরে মানবিকতার টোলবাজি

মোঃ আব্দুল হান্নান মিলন তালুকদার প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২:৫৭ পিএম
বিনিময়যোগ্য নয় শিশুপ্রাণ: ভূঞাপুরে মানবিকতার টোলবাজি

ভূঞাপুরে যমুনা সেতুর আঞ্চলিক সড়কের জিগাতলা নামক একটি স্থানে সংঘটিত এক করুণ ঘটনা আমাদের জাতীয় বিবেকের মূলে কুঠারাঘাত করেছে। মাত্র দশ বা পাঁচ টাকার জন্য-পথচারীদের, সম্ভবত নিরীহ শিশুদের পর্যন্ত ছুরিকাঘাতের এই চিত্র আমাদের সমাজের এক শ্রেণির মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের যে গভীরতা ও নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে, তা ভাষাহীন করে দেয়। এ কেবল একটি আইনি অপরাধ নয়, এ হল আমাদের সামষ্টিক মনুষ্যত্বের বিপর্যয়ের প্রতীকী অভিব্যক্তি। যেখানে অবকাঠামো উন্নয়ন ও মানবিকতার বিপর্যয় মিলিত হয় এই নির্মমতা যে স্থানে সংঘটিত, তা নিছক কাকতালীয় নয়। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকা দীর্ঘদিন যাবৎ যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম দুরবস্থা ও জনদুর্ভোগের কেন্দ্রস্থল। প্রধান মহাসড়কে যানজট এড়াতে উত্তরবঙ্গ থেকে আগত যানবাহনগুলোকে প্রায়শই ভূঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক সড়কের ২৯ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। এই বর্ধিত পথেও পাথাইলকান্দি, সিরাজকান্দি, ন্যাংড়া বাজার, ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ডের মতো এলাকায় যানজট ও ধীরগতির যন্ত্রণা পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। এমনকি সাম্প্রতিক সময়েও যমুনা সেতুর আগে ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহন ধীরগতিতে ও থেমে থেমে চলাচল করছে। একদিকে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলেও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রেল সংযোগ, অন্যদিকে দুর্বল তদারকিতে বারবার দূর্ঘটনাকবলিত সেতু-এসব দৃশ্যপট আমাদের সামনে অবকাঠামোগত সাফল্য ও ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতার এক দ্বৈত চিত্র উপস্থাপন করে। কিন্তু জিগাতলার ঘটনা আমাদের দেখিয়ে দিল, এই ব্যবস্থাপনাগত ও নৈতিক ব্যর্থতা কখনও কখনও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পথচারীদের হাতে ছুরে ফেলা উরটাকা ধরতে কমল মতি শিশু দের ব্যাবহার করা হচ্ছে। শিশুটি প্রানের যুকি নিয়ে সে-ই টাকা ধরতে ছুটা ছুটি করতে দেখা যায়। শিশু নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের মুখে। দশ টাকার লোভে একজন মানুষের জীবন বিপন্ন করার এই মানসিকতা সমগ্র জাতির জন্য এক ভয়াবহ সতর্কবার্তা। বাংলাদেশে

শিশুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট আইন ও নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু আইনের বইয়ের পাতা এবং রাস্তার বাস্তবতার মধ্যে এক দুস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। আইন তখনই কার্যকর হয় যখন তা সমাজের প্রতিটি স্তরে মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিক চেতনার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকে। একটি শিশুর জীবনকে দশ টাকার বিনিময়যোগ্য মনে করা যে পতিত মানসিকতার পরিচয় দেয়, তার বিরুদ্ধে কেবল ফৌজদারি বিধিই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন গোটা সমাজের এক ঐক্যবদ্ধ, সাহসী ও নৈতিক অবস্থান।

জিগাতলার ঘটনার মতো যেকোনো নৃশংসতার বিরুদ্ধে শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সীমিত না থেকে সক্রিয় ও জোরালো সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলা খুবই প্রয়োজন।

আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজের আশেপাশের শিশুদের নিরাপত্তার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা। পথেঘাটে শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং প্রয়োজনে সামাজিকভাবে বাধা দেওয়া। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ, সহমর্মিতা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধার শিক্ষা জোরদার করা খুবই প্রয়োজন।

এধরণের ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে একটি উদাহরণ স্থাপিত হয় যে শিশুর প্রতি সহিংসতার কোনো সহ্যযোগিতা নেই।ভূঞাপুরের এই করুণ ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রকৃত উন্নয়ন শুধু সেতু, সড়ক বা রেললাইনে মাপা যায় না। প্রকৃত উন্নয়নের মাপকাঠি হল, একটি শিশু তার বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে কতটা নির্ভয়ে ও নিরাপদে হাঁটতে পারে। আসুন, আমরা সম্মিলিত কণ্ঠে বলি-একটি শিশুর প্রাণ, একটি পরিবারের ভবিষ্যৎ, আমাদের জাতির সম্ভাবনা, কোনোভাবেই দশ কিংবা পাঁচ টাকার বিনিময়যোগ্য নয়। আমাদের সমবেত সচেতনতাই পারে এই নৈতিক টোলবাজি রোধ করতে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।

টাঙ্গাইলে বিরল দৃষ্টান্ত: বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আপন দুই ভাই পিন্টু ও টুকু

মোঃ খন্দকার আউয়াল ভাসানী, টাঙ্গাইল প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:০৮ এএম
টাঙ্গাইলে বিরল দৃষ্টান্ত: বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আপন দুই ভাই পিন্টু ও টুকু

টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এক অভূতপূর্ব ঘটনা—একই দলে আপন দুই ভাইয়ের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে দুই ভাইকে প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে পাঠিয়েছে। টাঙ্গাইল–২ (ভূঞাপুর–গোপালপুর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। দীর্ঘ ১৬ বছরের কারাবরণ শেষে তিনি ইতোমধ্যে “মজলুম জননেতা” হিসেবে এলাকায় বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছেন। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও তৃণমূল রাজনীতিতে তার সক্রিয় ভূমিকা মনোনয়নের পর এলাকা জুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে। অন্যদিকে টাঙ্গাইল–৫ (সদর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তার ছোট ভাই, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। ছাত্রদল থেকে রাজনীতির দীর্ঘ পথচলায় টুকু বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত মুখ। তার মনোনয়ন প্রাপ্তিতে দলে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের কাছে তিনি যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে বিবেচিত। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দুই ভাইয়ের একসাথে মনোনয়ন পাওয়া শুধু টাঙ্গাইলেই নয়, সারাদেশেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনাকে বহুজন ‘টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই ভূঞাপুর, গোপালপুর ও টাঙ্গাইল শহরে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়। দলীয় কার্যালয়গুলোতে ভিড়, মিষ্টি বিতরণ এবং শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। স্থানীয় নেতাদের আশা—পিন্টু ও টুকুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, জনপ্রিয়তা ও মাঠ-পর্যায়ের কর্মক্ষমতা দলকে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করবে এবং টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক সমীকরণেও গুরুত্বপূর্ণ বদল আনতে পারে। বিএনপির তৃণমূল মনে করছে, দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবেই দুই ভাইয়ের এ মনোনয়ন দলীয় সংগঠনকে সামনে নতুন প্রাণশক্তি দেবে এবং নির্বাচনী প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।