সিকিউরিটি

একসময় ছেলেরা ভাবত যদি তারা ভদ্র, বিনয়ী ও চরিত্রবান হয়, তাহলে একদিন নিশ্চয়ই ভালো মেয়ের সঙ্গে তাদের বিয়ে হবে। তখন সমাজে এসব গুণের কদর ছিল। মেয়ের পরিবার খুঁজত এমন পাত্র, যার হাতে মেয়েকে দিলে সে নিরাপদে, শান্তিতে জীবন কাটাতে পারবে।
লোকজন বলত “চরিত্রবান ছেলের হাতে মেয়ে দিলে নিশ্চিন্ত থাকা যায়।”
সেই বিশ্বাসই ছিল বিয়ের ভিত্তি, ভালোবাসার মূল।
কিন্তু আজকের যুগে সেই বিশ্বাস হারিয়ে গেছে।
এখন পাত্রের গুণ বা চরিত্র নয়, দেখা হয় পকেটের গভীরতা।
কার হাতে কত টাকা, কোন গাড়ি আছে, কোথায় চাকরি করে এগুলোর ওপরই নির্ভর করে “ভালো পাত্র” হওয়ার যোগ্যতা।
যে ছেলে সারাদিন পরিশ্রম করে সততার সঙ্গে নিজের জীবন গড়ার চেষ্টা করছে, তার কদর এখন বিয়ের বাজারে প্রায় শূন্য।
আর যে ছেলে দামী পারফিউম, গাড়ি আর ব্র্যান্ডেড পোশাকে ঘুরে বেড়ায় সে রাতারাতি হয়ে যায় “ড্রিম বয়”।
এখনকার অনেক ছেলেই জানে চরিত্রবান হওয়ার দরকার নেই, ক্যারিয়ার আর ক্যাশ থাকলেই সব পাওয়া যায়।
তারা জানে, প্রেমের ইতিহাস, পার্টি, মদ, বা আবাসিক হোটেলের গল্প কেউ জানতে চায় না, যদি চাকরির টাইটেল বড় হয় আর ব্যাংক ব্যালেন্স মোটা হয়।
এই বাস্তবতা তাদের ভেতর থেকে নষ্ট করে দিচ্ছে; তারা বিশ্বাস হারাচ্ছে ভালো মানুষ হওয়ার প্রেরণায়।
অন্যদিকে মেয়েরাও অনেকটা দিকভ্রান্ত।
যাদের চোখ এখন টাকার ঝলক আর ব্র্যান্ডের জৌলুসে অভ্যস্ত, তারা “প্রেম বয়স মানে না” বললেও, বাস্তবে বেছে নিচ্ছে সেই পুরুষকে যার পকেটে আছে “সিকিউরিটি”, যার হাতে আছে ব্যাংকের চাবি।
অল্পবয়সী মেয়েদের অনেকেই এখন বুড়ো কিন্তু ধনী পুরুষের পাশে দাঁড়িয়ে বলে “ভালোবাসা বয়স দেখে না!”
কিন্তু তাদের মুখের হাসির পেছনে দেখা যায় হিসাবের খাতা যেখানে প্রেম নয়, লিখে রাখা আছে বিলাসবহুল ভবিষ্যতের স্বপ্ন।
যখন টাকাই হয়ে যায় সম্পর্কের একমাত্র মাপকাঠি, তখন ভালোবাসা নামের অনুভূতিটা হারিয়ে যায় হিসাবের পাতায়।
চরিত্রবান, সৎ, এবং স্বপ্নবাজ তরুণরা তখন পড়ে থাকে সমাজের এক কোণে, বুকভরা আশা নিয়ে, হয়তো এখনো কাউকে খুঁজছে যে ভালোবাসবে “মানুষটাকে”, পকেটকে নয়।
















