ফলাফল নয়, নতুন শুরুর আহ্বান — শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে হাজী জসিম উদ্দিনের অনুপ্রেরণামূলক বার্তা


মো. শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর সারাদেশের অনেক শিক্ষার্থী আজ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। অনেকে ভাবছে—পৃথিবীটা যেন থেমে গেছে, স্বপ্নগুলো ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এমন এক সময়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রেরণাদায়ক ও সাহস জাগানো বার্তা দিয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী হাজী জসিম উদ্দিন।
তিনি বলেছেন, “তোমরা মনে করতে পারো সব শেষ, কিন্তু আমি তোমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে বলছি—এটি কোনো শেষ নয়, এটি এক নতুন শুরু।”
হাজী জসিম উদ্দিন বলেন, গত এক দশক ধরে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল একটি মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে। কৃত্রিম সাফল্যের হার দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত দক্ষতা অর্জনের পথ থেকে দূরে রাখা হয়েছে। মান যাচাই ছাড়াই পাশের হার বাড়ানো হয়েছে। তাই এবারের ৫৭ শতাংশ পাশের হারই দেশের প্রকৃত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিফলন।
তিনি আরও বলেন, “আজ যারা অকৃতকার্য হয়েছে, তারা আসলে এই ভঙ্গুর শিক্ষাব্যবস্থার শিকার, অপরাধী নয়।”
এবার প্রায় পাঁচ লক্ষ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে—যা এক ভয়াবহ বাস্তবতা। হাজী জসিম উদ্দিন মনে করেন, এই সংখ্যাটিই হতে পারে একটি মানসম্মত শিক্ষার আন্দোলনের সূচনা।
তিনি বলেন, “তোমরা যদি সবাই আবার একসাথে চেষ্টা কর, নতুন উদ্যমে গুণগত শিক্ষার দিকে মনোযোগ দাও, তাহলে আগামী বছরই তোমরা হবে বিজয়ী।”
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন—নিজেকে দোষারোপ করা বন্ধ করো। ফলাফল তোমার একার দায় নয়। পুরনো ব্যবস্থার ত্রুটি তোমাকে পিছিয়ে দিয়েছে। এখন সামনে এগিয়ে যাও।
গুণমানভিত্তিক পড়াশোনা শুরু করো। মুখস্থ নয়, বোঝার চেষ্টা করো। শেখার জন্য পড়ো, পাশ করার জন্য নয়।
সঠিক গাইডলাইন অনুসরণ করো। যোগ্য শিক্ষক, অনলাইন রিসোর্স ও গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াও।
ছোট ছোট লক্ষ্য ঠিক করো। প্রতিদিনের সামান্য অগ্রগতি এক বছরে বিশাল পরিবর্তন আনতে পারে।
মানসিক শক্তি গড়ে তোলো। পরিবার, শিক্ষক ও বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখো, মনোবল ধরে রাখো।
তিনি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে বলেন, জীবনে সফলতার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। বহু মহান ব্যক্তিত্ব বারবার ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু হাল ছাড়েননি। তাই এক বছরকে নতুন সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাও। এই সময় তোমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে পারে।
হাজী জসিম উদ্দিন আরও বলেন,“তোমরা আজ একটি পতনশীল শিক্ষা ব্যবস্থার শিকার হলেও, নতুন বাংলাদেশ এখন সততার পথে হাঁটছে। তোমরাই হবে সেই প্রজন্ম যারা গুণমানভিত্তিক শিক্ষায় শিক্ষিত, যোগ্য ও আত্মবিশ্বাসী নাগরিক।”
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আহ্বান জানান—“হাল ছেড়ো না সন্তানেরা। আমরা তোমাদের পাশে আছি, তোমাদের শিক্ষকরা পাশে আছেন, দেশ তোমাদের পাশে আছে। ২০২৬-এ তোমরাই দেখিয়ে দেবে—তোমাদের আসল শক্তি।”