রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
রবিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

শোয়েব হোসেন

ট্রাফিক সম্প্রচার কার্যক্রমে আওয়ামী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য

ডেস্ক নিউজ
ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫, ৭:৪১ পিএম | 69 বার পড়া হয়েছে
ট্রাফিক সম্প্রচার কার্যক্রমে আওয়ামী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য

গাধা চেয়ার পেয়ে গেলে সে নিজেও সমস্যায় পরে, অন্যদেরও সমস্যায় ফেলে–২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনুসকে উদ্দেশ্য করে এভাবেই নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন

ফ্যাসিবাদ
আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ সমর্থক ও অঙ্গ সংগঠনের সক্রিয় কর্মী তাজুল ইসলাম সোহাগ। ২০২৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নিজের ফেসবুক ওয়ালে বর্তমান সরকারকে কটাক্ষ করে এমন পোস্ট দেয়ার পরও তাকে বাংলাদেশ বেতার ট্রাফিক সম্প্রচার কার্যক্রমে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করার সুযোগ করে দিয়েছেন বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) এ এস এম জাহিদ।

বাংলাদেশ বেতারের গুরুত্বপূর্ণ সেকশন ট্রাফিক সম্প্রচার কার্যক্রমের ডিরেক্টর সায়েদ মোস্তফা কামাল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে পারিবারিকভাবে জড়িত থাকার কারণে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও জুলাই যোদ্ধা এবং বর্তমান সরকার বিরোধীদের বেতারে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন নানাভাবে নানা উপায়ে। সায়েদ মোস্তফা কামাল সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া বাজারে তার বাড়ি। পিতা- মোঃ মোখলেসুর রহমান। তার মা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে তাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী, জুলাই আন্দোলনে রাজপথের অগ্রপথিক জোবায়দুল ইসলাম বুলেট ফ্যাসিবাদের সমর্থক ও দোসর হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ বেতারের বেশ কয়েকজন শিল্পী সম্পর্কে বেতার কর্তৃপক্ষকে অবগত করলেও কঠোর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বাংলাদেশ বেতার। এর নেপথ্যে রয়েছে ডিজি এ এস এম জাহিদ ও সায়েদ মোস্তফা কামালের চরম অনীহা ও উদাসীনতা। বাংলাদেশ বেতারে ঊর্ধ্বতন বেশকিছু অফিসার ফ্যাসিবাদের ঘোর সমর্থক হওয়ায় আওয়ামীপন্থী শিল্পীরা এখনো বেতারে অনুষ্ঠান করছে বহাল তবিয়তে।

অতি মেধাবীদের ভারে দেশ নাকি ভারাক্রান্ত– ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর নিজের ফেসবুক ওয়ালে জুলাই যোদ্ধাদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে এমন একটি পোস্ট দিয়েছিলেন বাংলাদেশ বেতার ট্রাফিক সম্প্রচার কার্যক্রমে কর্মরত অনুষ্ঠান উপস্থাপক তাজুল ইসলাম সোহাগ। ‌আওয়ামী ফ্যাসিবাদী রাজনীতির সাথে জড়িত তাজুল ইসলাম সোহাগের বেশকিছু ফেসবুক পোস্ট রয়েছে বর্তমান সরকার এবং জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাজুল ইসলাম সোহাগের এমন আচরণের বিষয়ে বেতার কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছিল অনেক আগেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, জুলাই যোদ্ধা এমনকি বর্তমান সরকারের কেউই বেতারের অভ্যন্তরে আওয়ামী সিন্ডিকেট সম্পর্কে না জানার কারণে আওয়ামীপন্থী বেতারের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আওয়ামীপন্থী শিল্পীদের পুনর্বাসনে একজোট হয়ে কাজ করছে গোপনে গোপনে।

অথচ ২০২১ সালে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার অভিযোগে বাংলাদেশ বেতারের উপস্থাপক ও সাংবাদিক নিশাত শাহরিয়ারকে চার বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ বেতারের সদর দপ্তরসহ সকল আঞ্চলিক কেন্দ্রে নিষিদ্ধ করে রেখেছিল বেতার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বর্তমান সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসসহ জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে তীব্র সমালোচনা করার পরও বহাল তবিয়তে বাংলাদেশ বেতার ট্রাফিক সম্প্রচার কার্যক্রমে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন তাজুল ইসলাম সোহাগ। সপ্তাহের প্রতি শনিবার দ্বিতীয় পালায় উপস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছেন বাংলাদেশ বেতারের আওয়ামীপন্থী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আস্থাভাজন এই অনুষ্ঠান উপস্থাপক। ‌

বর্তমান সরকার এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আদর্শে বিশ্বাসী মহলের উচিত বাংলাদেশ বেতারের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া এই বিষয়গুলোকে গুরত্বসহকারে দেখা এবং ফ্যাসিবাদ নির্মূলে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। দেশের সর্বোচ্চ প্রচার মাধ্যমে যদি ফ্যাসিবাদের উপস্থিতি সর্বদা পরিলক্ষিত হয় তাহলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা। এর দায় কোনোভাবেই বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ বেতারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারেন না।

ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারি আটক: ৫০ পিস ইয়াবা জব্দ

মোঃ মিজানুর সরকার টাঙ্গাইল প্রতিনিধি প্রকাশিত: রবিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:০১ এএম
ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারি আটক: ৫০ পিস ইয়াবা জব্দ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে দুই মাদক কারবারিকে আটক করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে উপজেলার ফসলান্দি এলাকার ইব্রাহীম খাঁ সরকারি কলেজের ২নং গেটের পাশের একটি নির্মাণাধীন দোতলা ভবনে মাদক কেনাবেচার সময় শাকের আলী (৩৭) কে আটক করা হয়। সে ফসলান্দি গ্রামের শুকুর হাজীর ছেলে। অপর জন মুন্নাফ (৫২) মাটিকাটা গ্রামের আনছের আলীর ছেলে, তাকে তার নিজ এলাকা মাটিকাটা থেকে আটক করা হয়। দুই জনকে মাদক দ্রব্য আইনে রবিবার ৭ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভূঞাপুর থানা পুলিশের একটি অভিযানিক দল দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করা হয়। উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে তার দেহ তল্লাশি করা হলে, তার পরিহিত কালো ট্রাউজারের ডান পকেট থেকে একটি সাদা পলিথিনে মোড়ানো ৫০ পিস হালকা কমলা রঙের ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়। ডিজিটাল পরিমাপক যন্ত্রে এর ওজন ৫ গ্রাম এবং আনুমানিক বাজার মূল্য ১৫ হাজার টাকা বলে জানা যায়।স্থানীয় দুই সাক্ষী এবং একজন পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে জব্দ তালিকা তৈরি করে আলামত জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শাকের আলী দাবি করে, এই ইয়াবা ট্যাবলেটগুলি সে মুন্নাফের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ মুন্নাফকেও তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। জানা যায়, আটককৃত উভয় আসামীর বিরুদ্ধেই আগে একাধিক মামলা রয়েছে। শাকের আলীর বিরুদ্ধে মাদক আইনে একটি মামলা রয়েছে। মুন্নাফের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, দ্রুত বিচার আইন এবং দণ্ডবিধির ধারায় মোট পাঁচটি মামলা বিচারাধীন আছে।

স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, এই দুই জন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং তারা যুবসমাজসহ সাধারণ মানুষকে মাদকের জালে ফেলছে। এ-ই বিষয়ে ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বিনিময়যোগ্য নয় শিশুপ্রাণ: ভূঞাপুরে মানবিকতার টোলবাজি

মোঃ আব্দুল হান্নান মিলন তালুকদার প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২:৫৭ পিএম
বিনিময়যোগ্য নয় শিশুপ্রাণ: ভূঞাপুরে মানবিকতার টোলবাজি

ভূঞাপুরে যমুনা সেতুর আঞ্চলিক সড়কের জিগাতলা নামক একটি স্থানে সংঘটিত এক করুণ ঘটনা আমাদের জাতীয় বিবেকের মূলে কুঠারাঘাত করেছে। মাত্র দশ বা পাঁচ টাকার জন্য-পথচারীদের, সম্ভবত নিরীহ শিশুদের পর্যন্ত ছুরিকাঘাতের এই চিত্র আমাদের সমাজের এক শ্রেণির মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের যে গভীরতা ও নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে, তা ভাষাহীন করে দেয়। এ কেবল একটি আইনি অপরাধ নয়, এ হল আমাদের সামষ্টিক মনুষ্যত্বের বিপর্যয়ের প্রতীকী অভিব্যক্তি। যেখানে অবকাঠামো উন্নয়ন ও মানবিকতার বিপর্যয় মিলিত হয় এই নির্মমতা যে স্থানে সংঘটিত, তা নিছক কাকতালীয় নয়। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকা দীর্ঘদিন যাবৎ যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম দুরবস্থা ও জনদুর্ভোগের কেন্দ্রস্থল। প্রধান মহাসড়কে যানজট এড়াতে উত্তরবঙ্গ থেকে আগত যানবাহনগুলোকে প্রায়শই ভূঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক সড়কের ২৯ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। এই বর্ধিত পথেও পাথাইলকান্দি, সিরাজকান্দি, ন্যাংড়া বাজার, ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ডের মতো এলাকায় যানজট ও ধীরগতির যন্ত্রণা পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। এমনকি সাম্প্রতিক সময়েও যমুনা সেতুর আগে ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানবাহন ধীরগতিতে ও থেমে থেমে চলাচল করছে। একদিকে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলেও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রেল সংযোগ, অন্যদিকে দুর্বল তদারকিতে বারবার দূর্ঘটনাকবলিত সেতু-এসব দৃশ্যপট আমাদের সামনে অবকাঠামোগত সাফল্য ও ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতার এক দ্বৈত চিত্র উপস্থাপন করে। কিন্তু জিগাতলার ঘটনা আমাদের দেখিয়ে দিল, এই ব্যবস্থাপনাগত ও নৈতিক ব্যর্থতা কখনও কখনও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পথচারীদের হাতে ছুরে ফেলা উরটাকা ধরতে কমল মতি শিশু দের ব্যাবহার করা হচ্ছে। শিশুটি প্রানের যুকি নিয়ে সে-ই টাকা ধরতে ছুটা ছুটি করতে দেখা যায়। শিশু নিরাপত্তা আজ প্রশ্নের মুখে। দশ টাকার লোভে একজন মানুষের জীবন বিপন্ন করার এই মানসিকতা সমগ্র জাতির জন্য এক ভয়াবহ সতর্কবার্তা। বাংলাদেশে

শিশুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট আইন ও নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু আইনের বইয়ের পাতা এবং রাস্তার বাস্তবতার মধ্যে এক দুস্তর পার্থক্য বিদ্যমান। আইন তখনই কার্যকর হয় যখন তা সমাজের প্রতিটি স্তরে মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিক চেতনার ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে থাকে। একটি শিশুর জীবনকে দশ টাকার বিনিময়যোগ্য মনে করা যে পতিত মানসিকতার পরিচয় দেয়, তার বিরুদ্ধে কেবল ফৌজদারি বিধিই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন গোটা সমাজের এক ঐক্যবদ্ধ, সাহসী ও নৈতিক অবস্থান।

জিগাতলার ঘটনার মতো যেকোনো নৃশংসতার বিরুদ্ধে শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সীমিত না থেকে সক্রিয় ও জোরালো সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলা খুবই প্রয়োজন।

আমাদের প্রত্যেকের উচিত নিজের আশেপাশের শিশুদের নিরাপত্তার প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখা। পথেঘাটে শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা দেখলে তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং প্রয়োজনে সামাজিকভাবে বাধা দেওয়া। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ, সহমর্মিতা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধার শিক্ষা জোরদার করা খুবই প্রয়োজন।

এধরণের ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে একটি উদাহরণ স্থাপিত হয় যে শিশুর প্রতি সহিংসতার কোনো সহ্যযোগিতা নেই।ভূঞাপুরের এই করুণ ঘটনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রকৃত উন্নয়ন শুধু সেতু, সড়ক বা রেললাইনে মাপা যায় না। প্রকৃত উন্নয়নের মাপকাঠি হল, একটি শিশু তার বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে কতটা নির্ভয়ে ও নিরাপদে হাঁটতে পারে। আসুন, আমরা সম্মিলিত কণ্ঠে বলি-একটি শিশুর প্রাণ, একটি পরিবারের ভবিষ্যৎ, আমাদের জাতির সম্ভাবনা, কোনোভাবেই দশ কিংবা পাঁচ টাকার বিনিময়যোগ্য নয়। আমাদের সমবেত সচেতনতাই পারে এই নৈতিক টোলবাজি রোধ করতে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।

টাঙ্গাইলে বিরল দৃষ্টান্ত: বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আপন দুই ভাই পিন্টু ও টুকু

মোঃ খন্দকার আউয়াল ভাসানী, টাঙ্গাইল প্রকাশিত: শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:০৮ এএম
টাঙ্গাইলে বিরল দৃষ্টান্ত: বিএনপির মনোনয়ন পেলেন আপন দুই ভাই পিন্টু ও টুকু

টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এক অভূতপূর্ব ঘটনা—একই দলে আপন দুই ভাইয়ের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তি। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে দুই ভাইকে প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে পাঠিয়েছে। টাঙ্গাইল–২ (ভূঞাপুর–গোপালপুর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। দীর্ঘ ১৬ বছরের কারাবরণ শেষে তিনি ইতোমধ্যে “মজলুম জননেতা” হিসেবে এলাকায় বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছেন। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও তৃণমূল রাজনীতিতে তার সক্রিয় ভূমিকা মনোনয়নের পর এলাকা জুড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে। অন্যদিকে টাঙ্গাইল–৫ (সদর) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন তার ছোট ভাই, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। ছাত্রদল থেকে রাজনীতির দীর্ঘ পথচলায় টুকু বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত মুখ। তার মনোনয়ন প্রাপ্তিতে দলে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের কাছে তিনি যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য নেতা হিসেবে বিবেচিত। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দুই ভাইয়ের একসাথে মনোনয়ন পাওয়া শুধু টাঙ্গাইলেই নয়, সারাদেশেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনাকে বহুজন ‘টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই ভূঞাপুর, গোপালপুর ও টাঙ্গাইল শহরে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা যায়। দলীয় কার্যালয়গুলোতে ভিড়, মিষ্টি বিতরণ এবং শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। স্থানীয় নেতাদের আশা—পিন্টু ও টুকুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, জনপ্রিয়তা ও মাঠ-পর্যায়ের কর্মক্ষমতা দলকে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী করবে এবং টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক সমীকরণেও গুরুত্বপূর্ণ বদল আনতে পারে। বিএনপির তৃণমূল মনে করছে, দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবেই দুই ভাইয়ের এ মনোনয়ন দলীয় সংগঠনকে সামনে নতুন প্রাণশক্তি দেবে এবং নির্বাচনী প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।