তুমি করলে দোষ নাই আর আমি বললেই দোষ


আমার বউ একটু বেশি ঝগড়াটে। তাকে প্রথমে সহজ সরল ভেবে আমার সারাজীবনের কুকীর্তি- সুকীর্তির কথা বলেছিলাম। সেটাই যে আমার জন্য পরিবর্তী কালের কঞ্চিসহ বাঁশ হবে তা বুঝতে পারিনি। মাঝে মাঝে সে আমাকে এমনভাবে অ্যাটাক করে, বুঝে উঠতে পারি না এটা আমার বউ না র্যাবের মহাপরিচালক।
বউকে বলেছিলাম, প্রথম যার সাথে প্রেম করেছিলাম সে ছিলো দুধের মতো ফর্সা। আর নামটাও ছিলো কত সুন্দর, প্রেমা।
তারপর প্রেমার সাথে ব্রেকাপ হওয়ার পর জান্নাতের সাথে প্রেম করলাম। তুমি জানো না বউ, মেয়েটাকে প্রথমে আমি চিনতেই পারিনি। কয়েকদিন বাদে বুঝলাম, মেয়েটা ধানী লংকা। উঠতে- বসতে, সাতবেলা আমার সাথে বাজে ব্যবহার করতো। তাই ওটাকে বিয়ে করার আগেই তালাক দিয়েছিলাম।
আর তোমার সাথে বিয়ে হবার আগে রুম্পার সাথে প্রেম করেছিলাম। মেয়েটার ব্যবহার এতো ভালো যে তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না। তোমার সাথে বিয়ে হয়ে গেলো বলে রুম্পাকে ছেড়ে দিতে হলো। মেয়েটা ছিলো একদম মধুর মতো।
আরো কয়েকটা প্রেমের কথা বলেছিলাম। এ জীবনে প্রেম তো আর কম করিনি। খাতা-কলম নিয়ে সেদিন বসেছিলাম বউয়ের সাথে, মোট ১৭ টা হয়েছিলো।
এই কথাগুলো আপন ভেবে বউকে বলেছিলাম। কিন্তু বউ যে এমন একটা কাজ করবে আমি জানতাম না। আমাকে প্রতিদিনের মতো সেদিনও বাজারের লিস্ট হাতে দিয়েছে। কিন্তু আমি লিস্ট পড়তে গিয়ে অবাক।
১. প্রেমা – ১ কেজি,
২. সুরাইয়া – ১০০ গ্রাম
৩. জান্নাত- ৫০০ গ্রাম
৪. রুম্পা – ২৫০ গ্রাম
৫. ববি – ২০ টাকার
আমি লিস্টের নাম পড়েই বউকে ডাক দিলাম। বউ সকাল সকাল ম*দ কি বেশি খাইছো নাকি। উল্টাপাল্টা ভালোই তো লিখেছো দেখছি!
বউ- আমি ঠিকই লিখেছি।
আমি- তুমি কিভাবে ঠিক লিখেছো। আমার প্রাক্তনদের নাম লিখেছো কেন?
বউ-আরে তুমি সেদিন বললা না প্রেমা দুধের মতো ছিলো। তার মানে প্রেমার নাম আর দুধ একই কথা।
আর সুরাইয়া বলে তোমার জীবনটা তেজপাতা বানাইয়া ফেলেছিলো, সেজন্য তেজপাতার জায়গায় সুরাইয়ার নাম লিখেছি।
আর মরিচের জায়গায় জান্নাতের নাম, মধুর জায়গায় রুম্পার নাম। আর তুমি সেদিন বললা ববিরে দেখলে তোমার এলাচের কথা মনে পড়ে যায়। তাই এলাচের নামের জায়গা ববির নাম।
তুমি যে আমারে এভাবে খোটা দিবা জানতাম না।
– আমার কি দোষ বলো। বাজার করতে দিলেই তুমি ভুলে যাও। লিস্ট করে দিলে সেটা হারিয়ে ফেলো। তাই এটা তোমার শাস্তি।
– তাই বলে এভাবে?
– ও প্রেম করার সময় মনে ছিলো না, তুমি করলে দোষ নাই আর আমি বললেই দোষ। যত দোষ নন্দ ঘোষ।
যাও বাজার করে আনো। নাইলে বাপের বাড়ি চলে যাবো কিন্তু!