ভালোবাসা আর সংসার


বিয়ের পরে একটা সংসার ডান দিকে যাবে না বাম দিকে — এর মূল চালক হলো স্বামী।
সংসার অবশ্যই স্ত্রী গুছিয়ে রাখে, কিন্তু সংসার গুছিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব একজন পুরুষের।
তাই একজন ভালো পুরুষকে বিয়ে করা অনেক জরুরি।
ভালোবাসা আর সংসার করা — দুইটা এক জিনিস না।
সময়ের সাথে সাথে কিন্তু মানুষ বদলায়।
আপনি নিজের বদলানো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, কিন্তু আরেকজন ভালো হবে নাকি খারাপ — এটা আপনি চাইলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
তাই ভালোবাসার পরেও বিয়ের অনেক বছর পর অনেক সমস্যা দেখা যায়।
একজন পুরুষ যদি সঠিক হয়, তাহলে সংসার এমনি নিজে থেকেই সুন্দরভাবে চলে।
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একজন সংসারিক পুরুষ কেমন হওয়া উচিত এবং তার মধ্যে কি কি থাকা উচিত বা থাকা উচিত নয়, তাই লিখব।
🌸দায়িত্বহীন পুরুষ🌸
সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ হলো দায়িত্বশীল হওয়া।
যে পুরুষ কানে শুনেও শোনে না, প্রয়োজন দেখার পরেও অন্ধের মতো ভান করে বসে থাকে,যে সংসারে থেকেও থাকে না — উড়ে ঘুরে বেড়ায়, সংসারের সমস্যাকে নিজের সমস্যা মনে করে না,
দায়িত্ব দেখলেই অজুহাত করে পালিয়ে যায় —
সেই পুরুষ কোনোদিন আপনাকে শান্তি দেবে না।
🌸বেকার, ধান্ধাবাজ পুরুষ🌸
এখন অনেকে এসে বলবে —
“Taka dekhe biye kore meyera”, “Takai shob”, bla bla.
ভাই, আপনি একজন স্ত্রীকে বিয়ে করে তার ৫টা মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে না পারেন?
তাহলে আপনি কেন বিয়ে করবেন??
আপনি যখন একজন মেয়েকে বিয়ে করেন, you are the guardian of that girl!!
বাংলাদেশের আইন, ইসলাম — সব বলে, একজন মেয়েকে বিয়ে করলেyou must have to provide her a good house, food, clothes and all basic needs!
ভালোবাসা ঠিক আছে।আপনি যখন ভালোবাসেন, তখন আপনারা দুজন থাকেন ওই ভালোবাসায়, কিন্তু আপনারা যখন বিয়ে করেন, তখন একটা পুরো সমাজ আর আপনার সন্তান সেই বিয়েতে চলে আসে।যদি পুরুষ স্বনির্ভর না হয়, তাহলে এর খারাপ প্রভাব আপনার সন্তানদের ওপরেও পড়ে।আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
আপনি আত্মীয়স্বজনকেও ঠিকভাবে মেইনটেইন করতে পারবেন না।মৌলিক চাহিদা চাওয়া কোনো অপরাধ না — এটা অধিকার!
যদি আপনি স্বামী হিসেবে তা পূরণ করতে না পারেন, তাহলে সেটা আপনার দোষ!
🌸চরিত্রহীনতা🌸
একটা বড় সংখ্যক পুরুষ আছে বাংলাদেশে, যাদের চরিত্রে সমস্যা আছে।এবং তারা এটা জীবনে কোনোদিনও স্বীকার করবে না!
তারা ছেসরামি করবে, কিন্তু যুক্তি দেখাবে।
তারা ৪টা বিয়ে করবে, কারণ ইসলাম না — reason tader character e problem!কিন্তু বিয়ের সময় ব্যবহার করবে ইসলামকে।
একটা বিয়েতে যখন আপনার সঙ্গী চরিত্রহীন হয় — এর চেয়ে পেইনফুল আর কিছু হতে পারে না।And trust me!
আপনি সব বদলাতে পারবেন, কিন্তু এই চরিত্রের সমস্যা বদলাতে পারবেন না।কারণ এটা একটা রোগ!!!! চরিত্রবান পুরুষ আল্লাহর সবচেয়ে সুন্দর উপহার। যার চরিত্র ভালো, সে এক নারী নিয়েই ১০০ বছর কাটিয়ে দিতে পারবে। যে পুরুষের চরিত্র ভালো, তার নিজের স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীকে নিয়ে এসব ভাবতেই ঘৃণা আসার কথা।
🌸গ্রহণযোগ্যতা না থাকা (Acceptance)🌸
সংসার জীবনে দুজন মানুষ একসাথে থাকে, উঠে-বসে।
অনেক কিছু মিলবে, অনেক কিছু মিলবে না — এটা স্বাভাবিক।
একজন পুরুষ যেহেতু একজন নারীর অভিভাবক, তাকে সেইভাবেই অনেক কিছু গ্রহণ করতে হয়।
স্ত্রীর ছোট ছোট ভুল থেকে শুরু করে তার উদ্বেগ, হতাশা, সমস্যা, বয়সের ছাপ, বিশৃঙ্খলতা — সব কিছুই গ্রহণ করতে হবে।
কেউ ১০০% পারফেক্ট না, কেউ ১০০% সার্ভ করে না।
যে পুরুষ যত বেশি গ্রহণ করতে পারে, সংসারে তত বেশি শান্তি।
🌸বোঝাপড়া (Understanding)🌸
একজন understanding husband পাওয়া একজন মেয়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
না হলে সংসারজীবন খুব কঠিন হয়ে যায়।
স্ত্রীর সমস্যা বুঝে সেই অনুযায়ী ইতিবাচকভাবে আচরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
স্ত্রীর শরীর খারাপ হলে তার যত্ন নেওয়া, কাজে সাহায্য করা —
যে কোনো সমস্যা হলে বা স্ত্রী বিপদে পড়লে তাকে পজিটিভভাবে সাহায্য করা — এটা একজন understanding স্বামীর লক্ষণ।
🌸ঠান্ডা মাথা🌸
রাগ আসলে কম-বেশি সবার থাকে, কিন্তু বিয়ের পরে সেটা কন্ট্রোল করতে হয়।
ইসলামেও রাগ থাকা কোনো ভালো বা কুল জিনিস না।
এটা একটা খারাপ গুণ — রাগ শয়তানের চরিত্র, মানুষের হতে পারে না।দু’জন একসাথে থাকলে অনেক কিছু মিলবে না।
না মিললে রাগ উঠবে, কথা কাটাকাটি হবে —
তাই বলে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা উচিত না, গালাগালি করাও উচিত না।
এই জিনিসগুলো কোনো সুস্থ বা স্বাভাবিক মানুষ করে না!
একমাত্র পশুদের দ্বারাই এমন আচরণ সম্ভব।
আপনি জীবনের শেষ সময় শান্তিতে থাকবেন না অশান্তিতে — এটা নির্ভর করে আপনার জীবনসঙ্গীর ওপর।
তাই আবেগ না, বিবেক দিয়ে জীবনসঙ্গী বেছে নেবেন।