ভারতের উপর তাণ্ডব চালালেন স্মিথ


দিনের দ্বিতীয় ওভারে সাত নম্বরে যখন ব্যাটিংয়ে নামলেন জেমি স্মিথ, হ্যাটট্রিকের দুয়ারে দাঁড়িয়ে বোলার মোহাম্মদ সিরাজ। আগের দুই বলে আউট হয়ে গেছেন অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান জো রুট ও বেন স্টোকস। একশ রানের আগে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে দল। কিন্তু কিসের কী চাপ, সবকিছু যেন স্রেফ তুড়ি মেরে উড়িয়ে বিস্ফোরক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন স্মিথ।
এজবাস্টন টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে ১৪ চার ও ৩ ছক্কায় স্রেফ ৮০ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কিপার-ব্যাটসম্যান স্মিথ।
ভারতের বিপক্ষে টেস্টে ইংল্যান্ডের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজকোটে বেন ডাকেটের ৮৮ বলে সেঞ্চুরি ছিল আগের দ্রুততম।
ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে টেস্টে দ্রুততম সেঞ্চুরিও এখন স্মিথের। এখানে এতদিন চূড়ায় ছিলেন ভারতের কাপিল দেব। ১৯৮২ সালে কানপুরে ৮৬ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।
সব দল মিলিয়ে ভারতের বিপক্ষে স্মিথের চেয়ে কম বলে টেস্ট সেঞ্চুরি আছে আর কেবল তিনটি। ২০০৬ সালে লাহোরে পাকিস্তানের শাহিদ আফ্রিদি ৭৮ বলে, ২০১০ সালে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স ৭৫ বলে ও ২০১২ সালে পার্থে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার ৬৯ বলে সেঞ্চুরি করেন ভারতের বিপক্ষে।
ইংল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির তালিকায় স্মিথ আছেন যৌথভাবে তিন নম্বরে। তার মতো হ্যারি ব্রুক ৮০ বলে সেঞ্চুরি করেন ২০০২ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে। একই বছর ট্রেন্ট ব্রিজে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৭ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন জনি বেয়ারস্টো।
১৯০২ সালে দা ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭৬ বলে সেঞ্চুরি করে চূড়ায় আছেন গিলবার্ট জেসপ, ব্যাটিংয়ে যার কাছে আক্রমণই ছিল শেষ কথা।
গিলবার্টের প্রায় ১২৩ বছর পুরোনো রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন স্মিথ। একপর্যায়ে তার রান ছিল ৬১ বলে ৮৪। পরের ১৪ বলে ১৬ রান করতে পারলেই নতুন রেকর্ড, কিন্তু স্মিথের লেগে যায় ১৯ বল।
লাঞ্চের আগে শেষ ওভারে ৯৩ থেকে স্পিনার রাভিন্দ্রা জাদেজাকে পরপর দুটি বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।
১২ টেস্টের ক্যারিয়ারে ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি। প্রথমটি করেছিলেন গত বছরের অগাস্টে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
এ দিন চাপের মুখে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলে চার মেরে শুরু করেন স্মিথ। পেসার প্রাসিধ কৃষ্ণার একই ওভারে টানা পাঁচ বলে চারটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ৪৩ বলে। নজরকাড়া ব্যাটিং প্রদর্শনীতে পরে পা রাখেন সেঞ্চুরিতে।
১০২ রানে অপরাজিত থেকে লাঞ্চ বিরতিতে যান স্মিথ। তখন ৯১ রানে অপরাজিত ব্রুক বিরতির পরই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১৩৭ বলে।|