দিলরুবা আক্তার পারভীন
অকৃতজ্ঞ জাতি


আমার মনে হয় পৃথিবীর সবচাইতে অকৃতজ্ঞ জাতি হচ্ছি আমরা। আপনি আপন ভেবে যার জন্য যা কিছুই করেন না কেন কোন লাভ নেই। সে আপনার কৃতজ্ঞতা স্বীকার তো করবেই না বরং পারলে আপনাকে গলা টিপে হত্যা করবে। ভাবটা এমন যে ,তার উপকার করে আপনিই মহা অন্যায় কাজ করে ফেলেছেন সুতরাং শাস্তি তো আপনাকেই পেতে হবে।আপনি পথে-ঘাটে যদি কোন কুকুরকে দেখেন, একটু হাসেন, মাথায় হাত বুলিয়ে দেন, দেখবেন সে তার লেজ নাড়িয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। আর যদি ১০/২০ টাকা খরচ করে একটি রুটি, কেক বা পাউরুটি কিনে দেন তাহলে তো কথাই নেই। লেজ নাড়িয়ে পিছু পিছু চলে আসবে যতদূর দেখা যায়। পাললে বাড়ি চলে আসে। এই কৃতজ্ঞতাটুকু শুধু আপনি প্রতিটি অবুঝ প্রাণীর মধ্যেই দেখতে পাবেন। শুধু পাবেন না আমাদের মত বুদ্ধিমান প্রাণীদের মাঝে। আপনি তাদের যতই আদর যত্ন করবেন কোন লাভ নাই। সে খুঁজে খুঁজে আপনার দোষ বের করবে ই। পারলে দাগি আসামি বানিয়ে খুনি বানাবে। কথায় বলে না*কলিজা রেঁধে খাওয়ালেও বলবে তেল কম হইছে, নুন কম হইছে ,মসলা কম হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি*। মানে কোন শুকরিয়া নাই। আমি এমন একজন প্রবাসীকে চিনি সে তার ছোট ভাইয়ের ব্যাংক লোন এক কোটি টাকা পরিশোধ করার পরের দিন থেকেই শত্রুতে পরিণত হয়েছে। পারলে খুন করে বসে যাতে টাকা আর দিতে না হয়।*তোমার অনেক আছে* এই অজুহাত তুলে বাপের বিশাল সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছে। বঞ্চিত করার জন্য যতটা নিচে নামতে হয় তাই তারা করেছে। এটাতো হলো মাত্র একটি পরিবারের গল্প। আমাদের দেশে এরকম বহু পরিবার আছে। এমন হলে মানুষ কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াবে? এমন অকৃতজ্ঞ ঘরে ঘরে ,সমাজে ,রাষ্ট্রে। সব আমাদের চোখের সামনে হয়েছে। । সব ভোগ করছি, চোখ জুড়াচ্ছি কিন্তু স্বীকার করছি না। কতো অকৃতজ্ঞ আমরা। ভাবটা এমন স্বীকার করলে মনে হয় পাপ হয়ে যাবে। এভাবে সবাই অকৃতজ্ঞ হয়ে গেলে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে না । সমাজ রাষ্ট্রের জন্য কিছু করার প্রেরণা পাবে না। আজ সবাই যখন চোখ বুজে আছি এভাবে অন্ধকারেই থাকতে হবে। যখন চোখ খুলবে আর কোন পথ থাকবে না। নিকষ অন্ধকার ছাড়া আর কোন রং দেখা যাবে না। সুতরাং সাধু সাবধান, প্রিয় দেশবাসী সচেতন হোন।