রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২
রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

পিতার ভালোবাসা

ইউ বি টিভি ডেস্ক প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১:৪৯ পিএম | 312 বার পড়া হয়েছে
পিতার ভালোবাসা

রোজকার মতো সেদিনও রাতের খাবার শেষে বাবার কাছে গিয়েছিলাম। বাবা এখন ছোট ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন, তাই আমি প্রতিদিনই তাঁদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কাটাতে যাই। আমরা দুই পিতা-পুত্রের রোজকার আড্ডা হয়।

সেদিনও বাবা তাঁদের ওয়ানপ্লাস স্মার্ট টিভিতে সানি দেওলের ‘নারসিম্মা’ সিনেমা দেখছিলেন। এই টিভিটা আমি জোর করে তাঁদের জন্য CSD ক্যান্টিন থেকে কিনে দিয়েছিলাম। বাবা সানি দেওলের বড় ভক্ত—তাঁর প্রায় সব সিনেমাই দেখেছেন, শুধু ‘মহল্লা ৮০’ বাদে। সেটা ভালো লাগেনি, তাই প্রথম ১৫ মিনিটেই ছেড়ে দিয়েছিলেন।

আমি বললাম, “আজ আপনাকে ‘গদর ২’ দেখাবো।”
আমার OTT সাবস্ক্রিপশনে বাবার টিভিতে ‘গদর ২’ চালিয়ে দিলাম।

বাবা জিজ্ঞেস করলেন, “অফিস কেমন চলছে? স্টাফরা কষ্ট দিচ্ছে না তো?”

আমি হেসে বললাম, “না বাবা, স্টাফদের কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, আর কিভাবে আদর আর শাসনের ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়, সেটা তো আপনার থেকেই শিখেছি।”

এই সময় আমাদের প্রতিদিনকার চায়ের কাপ চলে আসে—একটা ফিকে চা বাবার জন্য (বাবার ডায়াবেটিস আছে), আর একটা আমার জন্য মিষ্টি চা। আমরা প্রতিদিন ঠিক এই সময় একসাথে বসে চা খাই।

চা শেষ করে বাবা বিছানায় শুয়ে পড়লেন আর আমি প্রতিদিনের মতো তাঁর পা কোলের ওপর তুলে নিয়ে মালিশ করতে লাগলাম।

হঠাৎ তিনি বললেন, “কোনো সমস্যা আছে?”

আমি বললাম, “না না, কিছু না।”

তিনি গম্ভীর মুখে বললেন, “আমি তোর বাবা। তোর মন বুঝি। আজ অফিসে অটোতে গেছিস, গাড়ি নি‌য়ে কেন গেলি না?”

আমি একটু হেসে বললাম, “এমনিই…”

তিনি আবার বললেন, “ঠিক করে বল, কি হয়েছে?”

আমি ধীরে ধীরে বললাম, “এইবার মেয়ের MBBS ভর্তি হওয়ার জন্য অনেক খরচ হয়ে গেছে। তাই গাড়ির ইন্স্যুরেন্স করাতে পারিনি। চারদিন পর বেতন পেলেই করাবো।”

“কত টাকা লাগে ইন্স্যুরেন্সে?”

“এই ধরুন, নয় হাজার চারশো টাকার মতো।”

বাবা সঙ্গে সঙ্গে মা’কে ডাকলেন, “সাবিত্রী! আমার ছোট ব্যাগটা এনে দে।”

মা এসে ব্যাগটা দিলেন আর দালানে গিয়ে বসে পড়লেন।

বাবা ব্যাগ খুলে দশ হাজার টাকা বের করে আমার হাতে দিলেন। বললেন,
“তোর বাবা এখনো বেঁচে আছে… তুই একজন অফিসার, অটো করে অফিসে যাবি না… কাল থেকে গাড়ি নিয়ে যাবি।”

আমি বললাম, “থাক বাবা, আর চারদিনের তো কথা।”

বাবা কিছুটা রেগে গিয়ে বললেন, “এত বড় হয়ে গেছিস যে এখন তোর বাবার কথা মানবি না? চুপচাপ রাখ আর পা টিপ।”

আমি আবার পা টিপতে লাগলাম।

একটু পরে বাবা বললেন, “এখন থেমে যা, আমার কাছে এসে শুয়ে পড়।”

বাবা তাঁর হাতের তালু মাথার নিচে রেখে শুয়ে ছিলেন—এটাই ছিল তাঁর ঘুমানোর ভঙ্গি। এতে তাঁর হাত ও কনুই একটা ত্রিভুজাকৃতি বালিশের মতো হয়ে যেত। আমি সবসময় সেই হাতে মাথা রেখে তাঁর পাশে শুয়ে পড়তাম। আজও ঠিক তাই করলাম।

টিভিতে তখন ‘গদর ২’ চলছিল। সেই দৃশ্য—যেখানে তারা সিং (সানি দেওল) তাঁর ছেলেকে একটি বুলেট মোটরবাইক কিনে দেয়। এই দৃশ্য দেখে বাবা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন।

তিনি বললেন, “সঞ্জু! আমারও ইচ্ছা ছিল, যখন তুই কলেজে পড়তি, তখন তোকে একটা বাইক কিনে দিই… কিন্তু পারিনি। পরিস্থিতি এমন ছিল যে তোমাদের শুধু লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়াটাই ছিল বড় সাফল্য… আমি বোধহয় ভালো বাবা হতে পারিনি।”

আমি চোখ ভিজে যেতে যেতে বললাম,
“না বাবা, এমন কথা বলবেন না। আপনি আমাদের সবকিছুই দিয়েছেন। আপনি কখনো ঘুষ খাননি, সৎ উপায়ে আমাদের মানুষ করেছেন। আজ আমরা যা কিছু, সব আপনার কারণেই। বাবা, আমি আপনাকে ভালোবাসি।”

বাবাও আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, “আই লভ ইউ সঞ্জু।”

আমি তাঁকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লাম…

… হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। বুকের কাছে একটা বালিশ চেপে ধরা ছিল।

চোখ খুলতেই মনে পড়ল—বাবা তো ২০১১ তেই আমাদের ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে গেছেন।

রাত তখন চারটা। মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠল… চোখ বেয়ে জল পড়তে লাগল…

বাবাকে খুব মনে পড়ছে। ফোন খুলে বাবার একটা ছবি বের করে বুকের উপর রাখলাম। চোখ বন্ধ করে তাঁকে অনুভব করছি… মনে মনে বারবার শুধু একটা কথাই বলে যাচ্ছি—

“বাবা, আমি আপনাকে ভালোবাসি… বাবা, আমি খুব মিস করি আপনাকে।”

অপি মুন্সী : শিবচর (মাদারীপুর ) প্রতিনিধি

মাদারীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

অপি মুন্সী : শিবচর (মাদারীপুর ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫, ৪:০৫ পিএম
মাদারীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে মাদারীপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার সকালে কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে কালকিনি ও ডাসার উপজেলার গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘একজন সাংবাদিককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা শুধু একটি ব্যক্তিগত হত্যাকাণ্ড নয়, এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’

তারা আরো বলেন, ‘যদি দ্রুত বিচার না হয়, তাহলে সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবে।’

মানববন্ধনে কালকিনি উপজেলার সিনিয়র সাংবাদিক খন্দকার শামীম, যুগান্তরের সাংবাদিক এইচএম মিলন, ঢাকা প্রতিদিনের প্রতিনিধি নাসির উদ্দিন লিটন, জনকণ্ঠের সাংবাদিক জাফরুল হাসান, আনন্দ টিভির জেলা প্রতিনিধি মম হারুন অর রশীদ, মাইটিভির প্রতিনিধি শেখ লিয়াকত এবং একুশে টিভির সাংবাদিক মো: রকিবুজ্জামান, অপি মুন্সী একাত্তর বাংলা টিভির সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে সাংবাদিক তুহিনকে ধাওয়া করে। তিনি ঈদগাঁ মার্কেটের একটি চায়ের দোকানে আশ্রয় নিলেও দুর্বৃত্তরা দোকানের ভেতরে ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পরদিন নিহতের বড় ভাই সেলিম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, র‌্যাব ও পিবিআই যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে।

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জে টর্নেডো তে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে সেলিম রেজা

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ- প্রকাশিত: শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫, ৪:০৩ পিএম
সিরাজগঞ্জে টর্নেডো তে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে সেলিম রেজা

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সেলিম রেজা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভয়াবহ টর্নেডোতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন।
শনিবার (৯ আগস্ট) সকাল ১১টায় তিনি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের চরচিলগাছা গ্রাম পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ টর্নেডোয় ক্ষতিগ্রস্ত ১১ পরিবারের মাঝে ঘর নির্মাণের জন্য ১ বান্ডিল করে ঢেউটিন ও আরও ১২ পরিবারের মধ্য ২ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।
এই মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র প্রভাষক আঃ সালাম, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এডভোকেট রবিউল হাসানসহ উপজেলা,পৌর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
স্থানীয়রা সেলিম রেজার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, দুর্যোগের এই সময়ে তার এই সহায়তা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্তদের নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে কিছুটা হলে সহায়তা করবে।

মোঃ মিঠু মিয়া গাইবান্ধা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে প্রথমবারের মতো মিনি স্টেডিয়ামের উদ্বোধন

মোঃ মিঠু মিয়া গাইবান্ধা প্রকাশিত: শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫, ২:৫৫ পিএম
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে প্রথমবারের মতো মিনি স্টেডিয়ামের উদ্বোধন

গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় প্রথমবারের মতো একটি মিনি স্টেডিয়ামের উদ্বোধন হয়েছে। খেলাধুলার প্রসার এবং খেলোয়াড়ের সংখ্যা বৃদ্ধির পরও দীর্ঘদিন ধরে মাঠ সংকটে থাকা এই উপজেলায় বোয়ালিয়া (শিববাড়ি) এলাকায় নির্মিত শহীদ জুয়েল রানা উপজেলা মিনি স্টেডিয়াম আজ শনিবার (৯ আগস্ট) সকাল ১০টায় উদ্বোধন করা হয়।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া তাঁর কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধনের ঘোষণা দেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক এ.কে.এম. হেদায়েতুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর ডা. আব্দুর রহিম সরকার, গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি বুলবুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সানোয়ার হোসেন দিপু, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, ইসলামি আন্দোলন উপজেলা সভাপতি আকরাম হোসেন রাজু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন সিরাজী, ইসলামি যুব আন্দোলন জেলা সভাপতি মুফতি তৌহিদুল ইসলাম তুহিন, এনসিপি উপজেলা সমন্বয়ক ডা. জাহাঙ্গীর আলমগীর এবং শহীদ জুয়েলের বাবা-মা।

অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দল, ক্রীড়াবিদ, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

error: Content is protected !!