আদম ব্যাবসায়ী শাহীনের ভুয়া ভিসা দিয়ে প্রতারণা নিঃস্ব অনেক পরিবার


সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিদেশে উচ্চ বেতনে কাজের আশায় আদম ব্যাপারী কে টাকা দিয়ে বহু পরিবার প্রতারিত হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীরা তাড়াশ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের মৃত: তোজাম্মেল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ আলী শাহিন (৫০) এলাকায় একজন চিহ্ণিত আদম ব্যাপারী হিসেবে পরিচিত। সে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকার লোকজন কে প্রলুদ্ধ করে, বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণা মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। কিন্তু তিনি টাকা আত্মসাৎ করলেও একজনকেও বিদেশে পাঠাতে পারেননি মর্মে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
টাকা দেয়ার পর অভিযোগকারীরা নিজ খরচে ঢাকায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর তিন মাস কোর্স করার পর তাদের কে মেডিক্যাল করানো হয়। এরপর ধরিয়ে দেয়া হয় ভূয়া ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ও বিমানের টিকেট। কিন্ত ঘটনার এক বছরের অধিক সময় ধরে বিদেশে যেতে না পেরে সম্প্রতি তারা বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এসব ডুকুমেন্ট সবি জালিয়াতির মাধ্যমে করা হয়েছে। এ কারণে প্রতিকার চেয়ে ভূক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারীরা হলেন, তাড়াশ পৌর সদরের বাসিন্দা মো: আব্দুল আজিজের ছেলে মো: আরিফুল ইসলাম, বিনোদপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলাম, ধাপতেতুঁলিয়া গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর ও খুঁটিগাছা গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে আবুল বাশার।
এদের কে লিথুনিয়া, বুলগেরিয়া ও অস্টেলিয়া পাঠানোর কথা বলে অরিফুলের কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ, রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে আট লাখ ১৩ হাজার, জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে নয় লাখ টাকা ও আবুল বাশারের কাছ থেকে সাত লাখ ৮৩ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে শাহিন হাতিয়ে নেয়।
এ ছাড়াও উপজেলার কোহিত গ্রামের গোলাম মোস্তফার কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা, জামাল উদ্দিনের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা, নাটোরের গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড়ের খরপাড়ার শুভর কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা সহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার তার বিরদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারী আবুল বাশার জানান, আদম ব্যাপারী মোহাম্মদ আলী শাহিন কে টাকা দিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছে এসব পরিবার। তারা শাহীনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। বর্তমানে সে আত্মগোপনে রয়েছে। নিরুপায় হয়ে আমরা তাড়াশ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।তাড়াশ পৌর সদরের বাসিন্দা অরিফুল ইসলাম বলেন, তাকে অষ্ট্রেলিয়া পাঠানো কথা বলে ১০ লাখ টাকা নিয়েছে আদম ব্যাবসায়ী মোহাম্মদ আলী শাহিন। ভুয়া ভিসা, কোর্সের ভুয়া সনদ, ভুয়া ওয়ার্ক পারমিট ও বিমানের টিকেট ধরিয়ে দিয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এসবই জাল। এখন শাহীন ফোনও ধরছে না, টাকাও ফেরত দিচ্ছে না পাসপোর্ট ও ফেরত দিচ্ছে না।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে মোহাম্মদ আলী শাহিনের সাথে বারবার যোগযোগ করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পা-ওয়া যায়।
তাড়াশ থানার ওসি (তদন্ত) রুপ কর বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।