ধামইরহাটে উদ্যোক্তা তৈরিতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে সামাজিক সংগঠন “মানবসেবা “
গোলজার রহমান ধামইরহাট প্রতিনিধি( নওগাঁ)
বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দিন দিন শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মেধাবী শিক্ষিতরা কর্মসংস্থান ও চাকুরীর জন্য যখন হন্যে হয়ে রাস্তায় নেমেছে, ঠিক তখন ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও কর্মসংস্থান সৃষ্টির এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে ধামইরহাট অঞ্চল ভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন “মানবসেবা”নামে একটি সংগঠন।
নওগাঁর ধামইরহাটে সামাজিক এই সংগঠনের সভাপতি রাসেল মাহমুদ এর সঙ্গে কথা হয় তার সংগঠন ‘মানবসেবা সম্পর্কে। রাসেল মাহমুদ জানায় ২০১৮ সালে কিছু বন্ধু-বান্ধব ও উপদেষ্টা কে সঙ্গে নিয়ে শুরু করি আমাদের এই সংগঠন। সংগঠনের প্রথমে মূল মন্ত্র ছিল অসহায় মানুষের সেবায় নিয়োজিত হবো আমরা সবাই।
জানা যায় ধামইরহাটের কৃতি সন্তান মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল মহোদয় ভূমি আপিল বোর্ডের সচিব (অবসর) ও চকময়রাম সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক এস এম খেলালি ই রব্বানী মানবসেবা সংগঠনের উপদেষ্টা হিসাবে সর্বদাই রাসেল মাহমুদকে উপদেশ দিয়ে আসছে । তাছাড়া রাসেল মামুদের সঙ্গে রয়েছে সৎ ও নিষ্ঠাবান কিছু বন্ধুবান্ধব। রাসেল মাহমুদ জানান তাদের সংগঠনটি যেসব কাজ করেন তার মধ্যে রয়েছে -(১)মাসিক মিসকিন/ ভিক্ষুকদের খাবার বিতরণ ২)ঈদে এতিম শিশু ও গরিব শিশুদের ঈদের জামাও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ ৩)রাস্তার দুই পাশে ফলজ ও বনজ গাছ রোপন ৪)পাখিদের অভয়াস্রম তৈরি করে দেওয়া ৫)প্রান্তিক ভিক্ষুকদের স্বাবলম্বী করার জন্য ছাগল বিতরণ বা ভেড়া বিতরণ করা এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করা হয়।
মানব সেবা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা রাসেল মাহমুদ আরো বলেন বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফসার মহোদয়ের অনুপ্রেরণায় আমরা নতুন একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। নতুন এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা ধামইরহাট বাজার এলাকার নিমতলী মোড় ও পোস্ট অফিস রোডে দুটি সেলুনের দোকানে মানবসেবার ব্যবস্থাপনায় পৃথক ভাবে ৪/৫ জনকে সেলুনের প্রশিক্ষণ প্রদান করছি এই প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে যাচ্ছে দক্ষ কারিগর শ্রী মানিক চন্দ্র মালী ও শ্রী উৎপল।প্রশিক্ষণ শেষে তাদের সেলুন কাজে ব্যবহৃত সকল পন্য মানবসেবা থেকে বিনামুল্যে এককালীন সরবরাহ করা হবে এবং পর্যায়ক্রমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সেলুনের কারিগর মানিক চন্দ্র মালী জানান, আমি প্রতিদিন ৭ শত থেকে ১ হাজার টাকার ব্যবসা করে আয় করি। মানবসেবা উদ্যোগে সেলুনের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি, যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তারাও এক সময় আয় করতে পারবে এবং নিজেরা স্বাবলম্বী হবে।
সেলুন প্রশিক্ষণ নিতে আসা সঞ্জয় কুমার ও জয় জানান, আমরা বেকার থাকতে চাই না, নিজেরা সেলুন দিব, তাই আমরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। সেলুন প্রশিক্ষণ নিয়ে অর্থ উপার্জণ করতে চাই।’
অপর প্রশিক্ষনার্থী বলেন,‘আমি বেকার থাকতে চাই না, লেখাপড়ার পাশাপাশি সেলুনের কাজ করে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করতে চাই।’বর্তমানে আমি অনার্সে পড়াশোনা করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কোন কর্মকে ছোট করে দেখার কিছু নেই।মানুষ সৎভাবে আয় করার জন্য যেকোনো কাজই করতে পারে , আমি উদ্যোক্তা সংগঠন মানবসেবাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই যে তারা উপজেলা প্রশাসনের আহবানে সাড়া দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরীর এ কাজে অংশগ্রহণ করেছে। আমি আরো সাধুবাদ জানাই যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে ছোট ছোট উদ্যোক্তা তৈরি হতে চাচ্ছে তাদেরকে। ভবিষ্যতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আরো নতুন নতুন কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে।
আমরা আশা করব মানব সেবার সংগঠনের মত আরো সংগঠন আমাদের এই কাজে সাহায্য করবে।
গোলজার রহমান
ধামইরহাট প্রতিনিধি
০১৭৬৮৬৭০৫৬০
০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং