দেশের স্বার্থে ড.ইউনুস সরকার ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত জরুরি বলে মনে করেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। ঐকমতের ভিত্তিতে ফ্যাসিবাদের বিচার,রাষ্ট্রীয় সংস্কার, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি ও একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে না পারলে জুলাই অভ্যুত্থানের স্বপ্ন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন তিনি।শনিবার ২৬ শে এপ্রিল রাত ৮টায় ফেনী শহরের রয়েল সালমন রেস্টুরেন্টে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী প্রত্যাশা, প্রেক্ষাপট ও সংস্কারের তরঙ্গে বদলে যেতে উন্মুখ ফেনী শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী শাহ আলম বাদল।ফেনী জেলা এবি পার্টির সদস্য সচিব প্রভাষক ফজলুল হকের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আহ্বায়ক মাস্টার আহসান উল্লাহ।নাগরিক সভায় মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যারা জনগণের অধিকার কেড়ে নেয় জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে তারা একসময় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।আজ ফেনীসহ দেশের প্রায় সব জেলার বড় বড় আওয়ামী লীগ নেতারা আত্মগোপনে চলে গেছেন।পাড়ায় মহল্লায় আওয়ামী লীগের যেসব নেতারা আছেন তাদের মাথা হেট হয়ে আছে।অথচ কিছুদিন আগেও তাদের দাপটে মানুষ কথা বলতে পারেনি।তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ বার বার ভুল করে ও ক্ষমা চায়।কিন্তু সুযোগ পেলেই তারা আবার বাকশাল ও ফ্যাসিবাদ কায়েম করে।ফেনীতে বিএনপি-জামায়াত,হেফাজত ও এবি পার্টিসহ বিভিন্ন দলের নেতা কর্মীদের ওপর নির্মম নির্যাতনের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন,সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। আমরা বিশৃঙ্খলা চাই না,আমরা চাই ন্যায়সঙ্গত বিচার ও খুনি লুটেরাদের শাস্তি।সংস্কার ও নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর বিভেদকে খুবই দুঃখজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন,দেশের স্বার্থে ড.ইউনুস সরকার ও বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি-এবি পার্টি-গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিভিন্ন ইসলামী দলসহ গণঅভ্যুত্থানের সব রাজনৈতিক পক্ষের ঐকমত্য জরুরি।ফেনীতে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়,মেডিকেল কলেজ ও চীনের অর্থায়নে আধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানান তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন,দলমত নির্বিশেষে এটা ফেনীর জনগণের প্রাণের দাবি।এজন্য ফেনীর সকল মানুষ একদিন একযোগে প্রতীকী অনশন পালনের কর্মসূচি রাখার প্রস্তাব দেন তিনি।সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টি ফেনী জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক আফলাতুল বাকী ফেনী,যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহের হোসেন বাহার,যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন আনসারী,নজরুল ইসলাম কামরুল,সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাত সাজু, কোষাধ্যক্ষ শাহ আলম শাহীন সুলতানী,প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক হাবীব উল্যাহ মিয়াজী,সমাজসেবা সম্পাদক এবি সিদ্দিক,ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও ফেনী পৌর সদস্য সচিব অধ্যাপক রিজওয়ানুল খায়ের,সহ-দপ্তর সম্পাদক নাজরানা হাফিজ অম্লান,নারী বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা আক্তার মনি,সহ-নারী বিষয়ক সম্পাদক শানু,ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলা আব্দুল হাফিজ খন্দকার,সদস্য প্রভাষক মোজাম্মেল হোসেন, কাজী জাহাঙ্গীর আলম,ফখরুল ইসলাম মুরাদ,ফেনী সদর উপজেলা সদস্য সচিব আবু সাইদ,যুগ্ম সদস্য সচিব হাফেজ কামরুল,সোনাগাজী উপজেলা শাখার আহবায়ক রহমত উল্লাহ মিজান,সদস্য সচিব ওয়াসিউর রহমান খসরু ছাগলনাইয়া উপজেলা শাখার সমন্বয়ক নাফিজ ইমতিয়াজ শিমুল,সহ-সমন্বয়ক শরীফুল ইসলাম লিংকন,এবি যুব পার্টির আহ্বায়ক শফি উল্লাহ পারভেজ, সদস্য সচিব এসএম ইব্রাহিম সোহাগ প্রমুখ।মতবিনিময় সভায় ফেনী-২ আসনের ১২টি ইউনিয়নের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।তারা নিজ নিজ এলাকার সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে নানা মতামত তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।এই সময় ফেনীর বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৩০ জনেরও অধিক লোক এবি পার্টির চেয়ারম্যানের হাতে ফুল দিয়ে দলে যোগদান করেন।এর আগে শনিবার সকালে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে গণসংযোগ করেন তিনি।এই সময় একটি উঠান বৈঠকেও বক্তব্য রাখেন।বিকেল ৩টায় ফেনী শহরের মিজান রোডে দলের নতুন কার্যালয় উদ্বোধন ও দলের নেতা কর্মীদের এক রাজনৈতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।