নির্বাচন না করার ঘোষণা অলি আহমদের
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আর অংশগ্রহণ করবেন না বলে জানিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম।
শনিবার (১২ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ধর্মপুর ইউনিয়নের বণিকপাড়া পূজামণ্ডপে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ে এ ঘোষণা দেন তিনি।
কর্নেল (অব.) অলি আহমদ জানান, নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। আজ আমি আপনাদের সামনে আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি। সে আমেরিকা-লন্ডনে লেখাপড়া করেছে। তাকে আপনাদের জন্যই গড়ে তুলেছি। ২০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছে। তার স্ত্রীও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।’
এ সময় বর্ষীয়ান রাজনীতিক অলি আহমদ তার নির্বাচনি এলাকা চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়ার আংশিক) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক সানিকে পরিচয় করিয়ে দেন। সানি এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য। অলি আহমদ বণিকপাড়া ছাড়াও উপজেলার যেসব মণ্ডপে যান, সেখানে ছেলেকে প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরেন।
পূজামন্ডপে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় ছেলেকে দেখিয়ে অলি আহমদ বলেন, ‘আপনাদের চিন্তা হচ্ছে, আমার স্থলাভিষিক্ত কে হবে? আপনাদের ছায়া দেবে কে? সে (ছেলে) আপনাদের খেদমত করবে। আমিও যতদিন বেঁচে থাকব, আপনাদের ছেড়ে যাব না।’
তিনি বলেন, ‘সঠিক সময়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করা উত্তম। এর মধ্যে সে ভুল করলে আমি ঠিক করে দিতে পারব। সুখে-দুঃখে আপনাদের পাশে থাকার দায়িত্ব আমি আমার ছেলের ওপর অর্পণ করলাম।’
আপনারা আমার ছেলের দায়িত্ব নিতে পারবেন কিনা- প্রশ্ন রেখে নেতাকর্মীকে হাত তুলতে বলেন অলি আহমদ। উপস্থিত নেতাকর্মী হাত তুলে প্রতিশ্রুতি দেন। এর পর তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর আমি এ এলাকায় আসিনি। কারণ আমি এলে, যারা আমার সঙ্গে দেখা করতে আসত, তাদের তৎকালীন স্বৈরাচার হাসিনা সরকার গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠাত। নেতা-কর্মীকে আমি বিপদে ফেলতে চাইনি।
পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে এলডিপি সভাপতি বলেন, ‘শেখ হাসিনার পরিবারের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের কোনো সম্পর্ক নাই। মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ মুজিব পাকিস্তানে এবং শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আশ্রয়ে। সে সময় আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার গল্প শোনায় আওয়ামী লীগ, এগুলো কি মানা যায়?’
তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি। সর্বপ্রথম স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য আমাকে বলা হয়েছিল। তখন মেজর জিয়াউর রহমান আমার সিনিয়র ছিলেন। এজন্য আমিই তাকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করার অনুরোধ করেছিলাম। তার প্রমাণ আমার কাছে এখনও আছে, চাইলে দেখতে পারেন।’
প্রসঙ্গত, অলি আহমদ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাকালীন সদস্য ছিলেন। তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়েও। ২০০৬ সালে বিএনপি ছেড়ে গঠন করেন এলডিপি।