শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
শনিবার, ৩১ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ছাগলনাইয়ায় মাদক ও নগদ টাকাসহ গ্রেফতার-১জন

মশি উদ দৌলা রুবেল ফেনী: প্রকাশিত: বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫, ৬:৫৫ পিএম | 66 বার পড়া হয়েছে
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ছাগলনাইয়ায় মাদক ও নগদ টাকাসহ গ্রেফতার-১জন

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ফেনী জেলা কার্যালয়ের অভিযানে ছাগলনাইয়ায় মাদক ও নগদ টাকাসহ গ্রেফতার-১জন।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।জানা যায়,মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর,ফেনী জেলা কার্যালয়ের রেইডিং টিম পরিদর্শক রাজু আহাম্মেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ছাগলনাইয়ার মিয়াজী পাড়ার শাখাওয়াত হোসেন মেজবাহ (৩১) এর বসতঘরে অভিযান পরিচালনা করে কোডিন মিশ্রিত ফেন্সিডিল ২৯ বোতল ও নগদ ১ লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে।উক্ত ঘটনায় জড়িত থাকার শাখাওয়াত হোসেন মেজবাহ (৩১) কে ঘটনাস্থল হতে গ্রেফতার করা হয়েছে।গ্রেফতারকৃত শাখাওয়াতকে আসামি করে ছাগলনাইয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মশি উদ দৌলা রুবেল ফেনী
০১৮১৪৯৪৮০৬২

লালমনিরহাট সীমান্তের জিরোলাইনে শিশুসহ ১৩ জন পুশইন ঠেকাতে বিজিবির কঠোর অবস্থান

চয়ন কুমার রায় লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫, ৬:৫৩ পিএম
লালমনিরহাট সীমান্তের জিরোলাইনে শিশুসহ ১৩ জন পুশইন ঠেকাতে বিজিবির কঠোর অবস্থান

এক হাতে এক বছরের মেয়ে মরিয়ম আভতারকে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ বসে আছেন মানিকজান বেগম। চোখ স্থির বাংলাদেশের দিকে—জিরোলাইন পেরিয়ে আরও এক কদম এগোলেই যেন নতুন আশার আলো, অথচ জানেন না সামনে সত্যিই মুক্তি আছে কিনা। সীমান্তে পুশইনের ঘটনা নতুন নয়, কিন্তু নারীদের কান্না আর শিশুর নিরুপায় মুখ এই ঘটনাকে করেছে আরও মর্মান্তিক।

বুধবার( ২৮ মে) ভোরে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের কুটিবাড়ী চওড়াটারী সীমান্তের জিরোলাইনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ১৩ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে এনে জড়ো করে। অভিযোগ, তাদের বাংলাদেশে পুশইন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বিএসএফ। খবর পেয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি এবং স্থানীয়রা সেখানে অবস্থান নেয়।

 

সীমান্তের ৯২৪ নম্বর মেইন পিলার ও সাব পিলার ৯ (এস)-এর কাছে জিরোলাইনে বসে থাকা এই ১৩ জনের দিকে এখন তাকিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীরা। তারা কেউই আর ফিরে যেতে পারছে না ভারতে, আবার ঢুকতেও পারছে না বাংলাদেশে। এই অবস্থায় কাটছে তাদের দু:সহ সময়—ভয়, অনিশ্চয়তা আর একরাশ ক্লান্তি নিয়ে।

দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোস্তাকিন আলী জানান, “আমি দূর থেকে তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, তারা ভারতের আসাম রাজ্যের দাররাং জেলার গলগাঁও থানার বাসিন্দা। তাদের কাছে ভোটার কার্ডসহ সমস্ত পরিচয়পত্র ছিল, কিন্তু বিএসএফ তা কেড়ে নিয়েছে।তিনি বলেন, আমরা স্থানীয়রা সীমান্তে অবস্থান নিয়েছি বিজিবির সঙ্গে। আমাদের এলাকায় এভাবে কাউকে জোর করে পাঠানো হলে সেটা আমরা মেনে নেব না।

জিরোলাইনে অবস্থানরত ব্যক্তিরা হলেন:আমানুল্লাহ হক (৫৭), নুরুল ইসলাম (৬৫), সেকেন্দার আলী (৬০), সোহরাব আলী (৪৮), মজিবর শেখ (৫৪), আব্দুল শেখ (৬৪), রোবেদা বেগম (৪৬), আছিয়া খাতুন (৫০), মানিকজান বেগম (৩৮), রেহানা খাতুন (৫৩), সবিরন নেছা (৫০), মনি বেগম (৩৬) ও  মরিয়ম আখতার (১)।

 

লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দূর্গাপুর কোম্পানি ক্যাম্পের কমান্ডার সুবদোর আব্দুস সালাম বলেন,আমরা বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের জন্য আহ্বান জানিয়েছি, কিন্তু তারা এখনো কোনো সাড়া দেয়নি। বিজিবি সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে আছেন এবং কাউকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রাও আমাদের সঙ্গে রয়েছে। আমরা যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত।

বর্তমান শ্রমজীবী মানুষের জীবনব্যবস্থা

মোঃ আলী শেখ, মাদারীপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫, ১১:১৪ পিএম
বর্তমান শ্রমজীবী মানুষের জীবনব্যবস্থা

লেখক >মো: ইমতিয়াজ চৌধুরী,অফিসার, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি।

সমাজের এক অদৃশ্য মেরুদণ্ডের নাম শ্রমজীবী মানুষ। তারা কোলাহল ময় শহরের নিঃশব্দ কারিগর, গ্রামের শান্ত জীবনের অদম্য নায়ক। সকালবেলা যখন শহরের অলিতে-গলিতে মানুষের পদচারণা শুরু হয়, তার অনেক আগে থেকেই তারা কর্মস্থলে পা ফেলেন। কেউ ঠেলাগাড়ি ঠেলে, কেউ রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে, কেউ আবার বস্তা বয়ে কিংবা মেশিন চালিয়ে জীবনের যুদ্ধ শুরু করেন। এই জীবন যুদ্ধের কোনো শেষ নেই, নেই কোনো স্থিরতা, কেবলই প্রয়োজন আর সংগ্রামের শেকলে বাঁধা এক অবিরাম চলা।

তাদের জীবনে নেই আরাম আয়েশের ছায়া। চারদিকে যেন কেবলই হিসেবের অংক—আজ কতটুকু আয় হবে, বাজারের দাম কত, ছেলেমেয়ের স্কুলের ফি জমা দেওয়া যাবে কি না, অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ কেনা সম্ভব হবে তো? একবেলার খাবার জোগাড় করতে গিয়ে কখনো কখনো দিনের দুবেলা ফাঁকা পড়ে থাকে। অথচ এই মানুষগুলোই জাতির ভিত নির্মাণ করে, উন্নয়নের ইট-পাথর জোগাড় করে।

শ্রমজীবী মানুষের জীবনে স্বপ্ন থাকে, কিন্তু সে স্বপ্ন যেন এক কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরের মতো—ধরা দেয়, আবার মিলিয়ে যায়। একজন পিতা চান তার সন্তান যেন তার মতো গাঁইট মাথায় না তোলে, বরং বইয়ের পাতায় জীবন গড়ে তোলে। কিন্তু বাস্তবতা বড় নিষ্ঠুর। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সামাজিক অসহযোগিতা এবং রাষ্ট্রীয় অবহেলায় সেই স্বপ্নগুলো ঝরে যায় অঙ্কুরেই। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে স্কুল ছেড়ে পাটের গুদামে, গার্মেন্টসে কিংবা হোটেলে ঢুকে পড়ে।

যে সমাজে শ্রমিকের অধিকার শুধুমাত্র কাগজে সীমাবদ্ধ, সেখানে শ্রমিকের মর্যাদা কল্পনা করা কঠিন। শ্রম আইন আছে, কিন্তু তার প্রয়োগ নেই। ন্যূনতম মজুরি নির্ধারিত হলেও অনেকেই তা পান না। নিরাপদ কর্মপরিবেশের কথা বলা হয়, কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা এক অলীক কল্পনা মাত্র। শ্রমজীবী মানুষদের নেই কোনো স্থায়িত্ব, নেই ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা। শুধু আজকের দিনটাই যেন একমাত্র উপলব্ধি।

তারপরও শ্রমজীবী মানুষের মুখে হাসি থাকে। খুব সাধারণ এক থালায় ভাত আর ডাল খেয়েও তারা তৃপ্তি খুঁজে পান। একে অপরকে সাহায্য করেন, প্রতিবেশীর বিপদে এগিয়ে আসেন। এই সহানুভূতি, এই মানবিকতা হয়তো কোনো বড় শিক্ষার পাঠ্যবইতে লেখা নেই, কিন্তু এই মানুষগুলোর প্রতিদিনের জীবনে তা উজ্জ্বল হয়ে ধরা দেয়।

তাদের কথা উঠলে অনেকেই উন্নয়নের গল্প বলেন, পরিসংখ্যানের অঙ্কে বোঝাতে চান সমাজ কতটা এগিয়েছে। কিন্তু সেই অগ্রগতির পেছনে শ্রমিকের ঘাম শুকিয়ে যায়, রক্ত ঝরে। অথচ উন্নয়নের আলো খুব কম সময়েই এসে পড়ে সেই টিনের চালা ঘরে, যেখানে এক শিশুর কান্না ভেসে আসে অনাহার কিংবা অপুষ্টির যন্ত্রণায়।

শ্রমজীবী মানুষের এই জীবন-সংগ্রাম থেকে মুক্তির উপায় কী? প্রয়োজন একটি মানবিক রাষ্ট্র, একটি দায়িত্বশীল সমাজ। যে রাষ্ট্র শ্রমিকের কণ্ঠ শোনে, তার ঘামের দাম দেয়, তার বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা দেয়। প্রয়োজন এমন এক সমাজ, যেখানে শ্রমিক হওয়া লজ্জার নয়, বরং গৌরবের। একটি সভ্যতা তখনই পরিপূর্ণ হয়, যখন তার প্রতিটি স্তরের মানুষ মর্যাদার সাথে বাঁচতে পারে।

শ্রমজীবী মানুষ শুধুমাত্র একটি শ্রেণি নয়, তারা এক বিশাল জনপদের প্রতিচ্ছবি। তাদের স্বপ্ন, কষ্ট, প্রেম, প্রতিবাদ—সবকিছু মিলিয়েই এক জীবন্ত সাহিত্য। সেই সাহিত্যে আছে চোখ ভেজানো বেদনা, আবার আছে জীবন জয়ের মহাকাব্যও। তাদের চোখে প্রতিদিন সূর্য ওঠে নতুন আশা নিয়ে, আর ডুবে যায় নিঃশব্দ স্বপ্নভঙ্গে। তবুও তারা বেঁচে থাকে, লড়াই করে, সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

এই শ্রমজীবী মানুষের জীবনব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে কোনো উন্নয়নই টেকসই নয়। তাই এখন সময় এসেছে তাদের প্রতি দায়িত্ব পালনের, তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার। কারণ তারাই এই সমাজের মৌল ভিত্তি, যাদের কাঁধে ভর করেই দাঁড়িয়ে আছে সভ্যতার উচ্চ মিনার।

রৌমারী সীমান্তে অবৈধ পুশইন উত্তেজনা ফাঁকাগুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড

রুহুল আমিন রুকু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
রৌমারী সীমান্তে অবৈধ পুশইন উত্তেজনা ফাঁকাগুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ), কুড়িগ্রামের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৩৭ জনকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রৌমারীর বড়াইবাড়ি সীমান্তে ঘটনার প্রতিবাদে বিজিবির বাধা, উত্তেজনা চরমে, ছোড়া হয়েছে ফাঁকা গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড।

স্থানীয় ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোর রাত চারটার দিকে রৌমারীর বড়াইবাড়ি সীমান্তের ১০৬৭ নম্বর পিলারের নিকটবর্তী নোম্যান্স ল্যান্ডে বিএসএফ ১৪ জন নারী-পুরুষকে পুশইন করার চেষ্টা করে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বিজিবি সদস্যরা বাধা দিলে দুই বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হলেও বিএসএফ সাড়া দেয়নি।
প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, পুশইনকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারী রয়েছেন। তারা সবাই ভারতের আসাম রাজ্যের নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে তারা সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করছেন।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা খোরশেদ আলম, ময়জুদ্দিনসহ কয়েকজন জানান, ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা কয়েকজনকে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিচ্ছিল। বিজিবি তাতে বাধা দিলে বিএসএফ সকাল ৬টার দিকে অন্তত চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এছাড়াও, বড়াইবাড়ি সীমান্তে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার ঘটনাও ঘটে।
জামালপুর ব্যাটালিয়নের ৩৫ বিজিবির সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত অ্যাডজুটেন্ট) শামসুল হক বলেন, “বিএসএফ অবৈধভাবে পুশইনের চেষ্টা করলে বিজিবি বাধা দেয়।
পুশইনকৃত ব্যক্তিরা কোন দেশের নাগরিক তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারা নোম্যান্স ল্যান্ডে রয়েছে। ঘটনাস্থলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উপস্থিত হয়েছেন।
এদিকে কুড়িগ্রাম-২২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহাবুব উল হক জানান, “আমাদের সেক্টরে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আরও ২৩-২৪ জনকে পুশইনের চেষ্টা করা হয়েছে।
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং বিস্তারিত পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, সীমান্ত এলাকায় বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিজিবি সদস্যরা স্থানীয়দের সহায়তায় সীমান্তে কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে।

error: Content is protected !!