
তাৎক্ষণিক আইনী পর্যালোচনা:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে। যাতে ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।
শনিবার রাতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু আইন কি বলে? আমার বিশ্বাস, সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে যাচ্ছে। যে আইনের প্রয়োগ করে ইতিপূর্বে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ উক্ত সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য যে, ধারা ১৮ অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হলে একই আইনের চতুর্থ অধ্যায় ও ১৭ ধারা অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ও সন্ত্রাসী কার্যে জড়িত হিসাবে গণ্য করতে হবে।
এই আইনের ৮ ও ৯ ধারা মোতাবেক নিষিদ্ধ সত্ত্বার সদস্যপদ গ্রহণ ও সমর্থন করাটাও ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে। সেক্ষেত্রে ৬ মাস থেকে ৭বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডও হতে পারে। নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে তার বিস্তারিত বিবরণ ধারা ২০ এ উল্লেখিত রয়েছে।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে, তাৎক্ষণিকভাবে উপরোল্লিখিত জেল-জরিমানার বিধান কার্যকর হবে।