বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার স্বাস্থ্যসেবায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলো “মেহেরা হাসপাতাল”। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মানুষদের আস্থা অর্জনকারী এই প্রতিষ্ঠান এতদিন শুধুমাত্র একটি নির্ভরযোগ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে সম্প্রতি প্রথমবারের মতো সফল সিজার অপারেশনের মাধ্যমে একটি নবজাতকের জন্ম দেওয়ায় হাসপাতালটি আনুষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসা সেবার নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। মা ও নবজাতক দুজনই বর্তমানে সুস্থ এবং ভালো আছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মেহেদী হাসান ডালিম, যিনি পুরো প্রতিষ্ঠানটিকে সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে পরিচালনা করছেন, তার নেতৃত্বে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সদের সমন্বয়ে এই সিজার অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও নিরাপদ চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে অপারেশনটি সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। মেহেদী হাসান ডালিম বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল কাহালু ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া। আজ এই সফল সিজার সেই প্রচেষ্টার একটি ফলাফল।”
নবজাতকের পরিবার জানায়, “আমরা প্রথমে কিছুটা ভয় পাচ্ছিলাম, কারণ মেহেরা হাসপাতাল আগে পর্যন্ত সিজার সেবা চালু করেনি। কিন্তু মেহেদী হাসান ডালিম স্যারের আত্মবিশ্বাস এবং পুরো টিমের আন্তরিক সেবায় আমরা শান্তি পেলাম। মা ও শিশু দুজনই এখন সুস্থ, আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই প্রথম সফল সিজারের ঘটনা শুধু একটি পরিবারের জন্য নয়, বরং পুরো কাহালু অঞ্চলের জন্য এক আনন্দের বার্তা। এটি প্রমাণ করে যে সঠিক পরিকল্পনা, আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসক দল মিলিয়ে গ্রামীণ অঞ্চলেও উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা সম্ভব।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এ অঞ্চলে আগে মানসম্মত সিজার বা জরুরি সার্জারি সেবা পাওয়া সহজ ছিল না। অনেক পরিবারকে শহরের দূরবর্তী হাসপাতালে যেতে হতো, যা সময় ও অর্থের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতো। মেহেরা হাসপাতালের এই পদক্ষেপ এলাকার মানুষের জন্য আশার আলো বয়ে এনেছে।
বর্তমানে হাসপাতালটিতে উন্নতমানের অপারেশন থিয়েটার, ২৪ ঘণ্টা অন-কল চিকিৎসক সেবা, ল্যাব সুবিধা, প্রসূতি কক্ষ এবং নার্সিং সেবা চালু আছে। হাসপাতালটি ভবিষ্যতে শিশু বিভাগ, মেডিসিন ও সার্জারি ইউনিট সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে, যা পুরো এলাকার স্বাস্থ্যসেবার মান আরও বৃদ্ধি করবে।
প্রথম সফল সিজারের উপলক্ষে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে একটি বিশেষ উপহার প্রদান করে, যা এই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে আরও আনন্দময় করে তোলে। মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত হওয়ার পর পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে।
মেহেদী হাসান ডালিমের নেতৃত্বে মেহেরা হাসপাতালের এই সাফল্য প্রমাণ করে যে সঠিক নেতৃত্ব, দক্ষ চিকিৎসক দল এবং আন্তরিক সেবা গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনতে পারে। এটি শুধু হাসপাতালের সাফল্য নয়, বরং কাহালু অঞ্চলের চিকিৎসা সেবার একটি নতুন দিগন্তের সূচনা।

এস এম সালমান হৃদয়, বগুড়া